বুধবার ১৬ জুলাই ২০২৫, আষাঢ় ৩১ ১৪৩২, ২০ মুহররম ১৪৪৭

ব্রেকিং

এনবিআর সংস্কার পরিষদের বহু সদস্যের ‘ক্ষমা প্রার্থনা’, মাঠে ফেরার প্রস্তুতি ৭.৭৫ কোটি টাকার স্থাপনা ভেঙে নতুন স্মৃতিস্তম্ভ গড়ার কাজ শুরু ইসরায়েল আমাকে হত্যা করতে চেয়েছিল: ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান সংস্কার ছাড়া যেনতেন নির্বাচন চায় না জামায়াত: শফিকুর রহমান আশরাফুল, সাকিবদের পর এবার নতুনদের চিনছে শ্রীলঙ্কা বিচার ও সংস্কারকে নির্বাচনের মুখোমুখি করা যাবে না: সাকি সংখ্যানুপাতিক ব্যবস্থায়(পিআর) ‘ভবিষ্যৎ বিভক্তি’র শঙ্কা তারেক রহমানের জুলাই বিপ্লব নিয়ে কটূক্তি করায় কুষ্টিয়ায় ট্রাফিক পুলিশ সদস্য ক্লোজড কলেজ প্যাডে ছাত্রদলের প্রচারণা? অধ্যক্ষের ব্যাখ্যা ঘিরে বিতর্ক মধ্যপ্রাচ্যে ইসরায়েলের সংঘাত বিস্তার: বিশ্লেষণ কলম্বিয়ায় পাহাড়ধসে মৃত্যু ১৬, নিখোঁজ অন্তত ৮ “ত্রাণ নিতে এলে গুলি করতাম”—গাজার ঘটনায় মুখ খুললেন ইসরায়েলি সেনারা তেহরানে ধ্বংসস্তূপে উদ্ধার চলছেই, মৃতের সংখ্যা ছাড়াল ৪৫০ ইরানে বাংলাদেশিদের সহায়তায় হটলাইন চালু উপদেষ্টার গাড়িবহর আটকে বিক্ষোভ: সিলেটে তিনজন কারাগারে ইসরায়েলের টার্গেটে ইরানের রাষ্ট্রীয় সম্প্রচার ভবন লন্ডনে ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও তারেক রহমানের বৈঠক ১৩ জুন তারেক রহমান শিগগিরই দেশে ফিরবেন: ফখরুল রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হবে কাঁচের মতো স্বচ্ছ ঘর: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা নির্বাচনের ঘোষিত সময় মাথায় রেখে যথাসময়ে রোডম্যাপ দেবে ইসি: উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন তুললেন ছাত্রদল নেতা নাছির উদ্দিন মণিপুরে আবার উত্তেজনা, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে প্রশাসনের চাপে ঢাকার ৪ থানায় সক্রিয় অর্ধশতাধিক অপরাধী দল জাতীয় নির্বাচন ২০২৬ সালের এপ্রিলের প্রথমার্ধে: প্রধান উপদেষ্টা প্রধান উপদেষ্টার ঘোষণায় জাতির প্রত্যাশা পূরণ হয়নি: সালাহউদ্দিন আহমদ জুলাই সনদ–ঘোষণাপত্র হলে ঘোষিত সময়ে নির্বাচনে আপত্তি নেই: এনসিপি ২৫ কিলোমিটার যানজট, ২৪ ঘণ্টায় পারাপার ৬৪ হাজার যানবাহন বান্দরবানের রুমা ও থানচি ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা আংশিকভাবে প্রত্যাহার গাজায় যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবে যুক্তরাষ্ট্রের ভেটো, জাতিসংঘ নিরাপত্তা গরম মসলার বাজার শীতল: ক্রেতা কমে যাচ্ছে, দাম কিছুটা স্থিতিশীল ঈদে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে দই-মিষ্টি মজুত, রংপুরে হিমাগারে অভিযান ও দুই লাখ টাকা জরিমানা বান্দরবানের লামায় পাহাড় ধসের শঙ্কায় ৬০ রিসোর্ট বন্ধ নির্বাচন নিয়ে তরুণদের প্রতি অসত্য অভিযোগ ও বাস্তবতা ভারতের মুসলমানদের কেন বারবার দেশপ্রেমের প্রমাণ দিতে হয় সংবিধান পরিবর্তন ছাড়া ফ্যাসিবাদ বিলোপ সম্ভব নয়: এনসিপি মুখ্য সমন্বয়ক একুশের বন্ধুত্বে আগামীর পথচলা: বার্ষিক সম্মেলনে ২১তম বিসিএস প্রশাসন ফোরাম বিজিএমইএ`র নতুন নেতৃত্বে আসছেন বাবু, নিরঙ্কুশ জয়ের ইঙ্গিত জিলহজ মাসের আমল ও কোরবানির তাৎপর্য চট্টগ্রামে নারীকে লাথির ঘটনায় ভাইরাল আকাশ চৌধুরী বহিষ্কৃত, জামায়াতের বিবৃতি সংকট নিরসনে উদ্যোগ নেই, আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিল পবিস শ্রমিকরা আনচেলত্তির স্বপ্ন - রিয়াল মাদ্রিদের মতো করে খেলাবেন ব্রাজিলকে ডিমের দাম এখনো চড়া, ডজন ১৩০–১৪০ টাকায় বিক্রি বৈরী আবহাওয়ার কারণে নোয়াখালীর হাতিয়া দ্বীপের সঙ্গে সারাদেশের নৌ-যোগাযোগ বন্ধ হারের পর লিটনের মনোভাব - এখনো দুই ম্যাচ বাকি কাল থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য দেশের সব জুয়েলারি দোকান বন্ধ ঘোষণা যুক্তরাষ্ট্র চীনা শিক্ষার্থীদের ভিসা বাতিলের প্রক্রিয়া শুরু করবে ডিএনএ টেস্ট করে নামফলক ও মর্যাদা চায় শহীদ পরিবারের সদস্যরা বেতন না পেয়ে ডাকাতি, জাহাজের চিফ ইঞ্জিনিয়ারসহ তিনজন আটক “বাংলাদেশে কৌশলগত স্বার্থ নেই দক্ষিণ কোরিয়ার”—রাষ্ট্রদূত পার্ক ইয়ং সিক “শাপলার হত্যাকাণ্ডের বিচার চাই”—হেফাজতের বিবৃতি মির্জা আব্বাস: “করিডর আর স্টারলিংক আনা হচ্ছে আরাকান আর্মির জন্য” জিলহজ মাসের চাঁদ দেখে যে দোয়া পড়বেন নির্বাচনের আগে যতটুকু দরকার, ততটুকুই সংস্কার করতে হবে: মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম ‘চিন্তার স্বাধীনতাও হারাচ্ছি?’— নারী কমিশন বিতর্কে গীতিআরার উদ্বেগ ইউক্রেনে রাশিয়ার টানা হামলায় নিহত ১২, কঠোর চাপের আহ্বান জানালেন জেলেনস্কি সংস্কার, বিচার ও নির্বাচন – তিনটি কঠিন দায়িত্ব পালনে সচেষ্ট আমরা জুলাই অভ্যুত্থান ক্ষমতার পালাবদল নয়, এটি মৌলিক সংস্কার: নাহিদ হলুদ সাংবাদিকতা’ বিরোধী স্লোগানে উত্তাল শিক্ষক মিছিল ভারতের নিষেধাজ্ঞায় আখাউড়া বন্দর দিয়ে রপ্তানি কমেছে ৪০% বিএনপির অবস্থান কর্মসূচি চলছে, দুই উপদেষ্টার পদত্যাগ দাবি জাতীয় স্বার্থে অভিমান ভুলে দায়িত্বশীল হওয়ার আহ্বান : জামায়াত আমির আন্দোলনের পর অবশেষে নিয়োগ পেলেন ৪৩তম বিসিএসের বাদ পড়া ১৬২ জন নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠনের দাবিতে ইসির সামনে এনসিপির বিক্ষোভ কাল বাংলাদেশে স্টারলিংকের যাত্রা, স্যাটেলাইট ইন্টারনেটের নতুন যুগ শুরু নরওয়ের দৃঢ় সমর্থন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি বিগত সরকারের সময় প্রতিষ্ঠানগুলো ধ্বংসপ্রাপ্ত, এমন অবস্থা ছিল যে খতিবকেও পালাতে হয়েছিল: বাণিজ্য উপদেষ্টা গায়ের জোরে নগর ভবন দখল করে আন্দোলন চালাচ্ছে বিএনপি আবারও রাজপথে নামার ইঙ্গিত আসিফের, সতর্ক করলেন হাসনাত গোপন অধ্যাদেশ বাতিলের দাবিতে আন্দোলন স্থগিত, ২০ মে আলোচনায় বসবে ঐক্য পরিষদ ভারতের আমদানি নিষেধাজ্ঞা সীমান্ত বাণিজ্যে অনিশ্চয়তা তৈরি করছে ভারতের নতুন সিদ্ধান্তে উত্তর-পূর্বাঞ্চল দিয়ে বাংলাদেশি ভোগ্যপণ্য আমদানি বন্ধ গত ৯ মাসে জুলাই-যোদ্ধাদের ওপর ৩৮টি হামলা জবি’র ৪ দফা দাবি মেনে নেওয়ায় আন্দোলনের সমাপ্তি ঘোষণা ডিবি থেকে মুক্তির পর আন্দোলনে উল্লাস জবি শিক্ষার্থীর গাজা দখলে নেওয়ার আকাঙ্ক্ষা পুনর্ব্যক্ত করলেন ট্রাম্প শাহরিয়ার হত্যাকাণ্ডে বিচার নিশ্চিতের অঙ্গীকার উপদেষ্টা আসিফের সোনার দাম ভরিতে কমল ৩ হাজার ৪৫২ টাকা, নতুন দর কার্যকর শুক্রবার থেকে ঢাবি শিক্ষার্থীর মৃত্যু: নিরাপত্তা নিশ্চিতে বড় পদক্ষেপ প্রশাসনের আওয়ামী লীগের কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধে ভারতের উদ্বেগ শ্রীনগরজুড়ে বিস্ফোরণ, যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের অভিযোগ ওমর আব্দুল্লাহর উপদেষ্টা পরিষদের সিদ্ধান্ত: আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে শাহবাগ অবরোধ ‘চলবে’, শনিবার গণজমায়েত ড্রোন যুদ্ধ: ভারত-পাকিস্তান বিরোধের নতুন অধ্যায় আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে সরকার গুরুত্বসহকারে বিবেচনায় নিচ্ছে: প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং আ.লীগ নিষিদ্ধ না হওয়া পর্যন্ত শাহবাগ ছাড়বেন না আন্দোলনকারীরা ‘আপ বাংলাদেশ’–এর আত্মপ্রকাশ পূর্বঘোষণা ছাড়া ভারত সফরে সৌদি প্রতিমন্ত্রী, পাকিস্তান-ভারত উত্তেজনায় কূটনৈতিক তৎপরতা তুঙ্গে দ্রুত সিদ্ধান্ত না এলে সারা দেশ থেকে ঢাকা অভিমুখে মার্চের হুঁশিয়ারি নাহিদ ইসলামের দেশীয় ওষুধ কোম্পানি রেনাটাকে ৭০০ কোটি টাকা ঋণ দিচ্ছে আইএফসি তারেক রহমান: সরকার হয়তো স্বৈরাচারের দোসরদের দেশত্যাগে সহায়তা করছে জাতীয় নিরাপত্তা ইস্যুতে ভারতের নির্দেশে ৪ বাংলাদেশি টিভি চ্যানেল ইউটিউবে বন্ধ

ইসলাম

ঈদকে ‘ওয়ীদ’ বানাবেন না

শাঈখুল ইসলাম হযরত আব্দুল মালেক হাফি.

 প্রকাশিত: ২৩:১৯, ৯ মে ২০২৩

ঈদকে ‘ওয়ীদ’ বানাবেন না

আরবী ভাষায় ‘ঈদ’ অর্থ আনন্দ আর ‘ওয়ীদ’ অর্থ অভিশাপ। আল্লাহর করুণা অভিশাপে পরিণত হয় নেয়ামতের বে কদরী করার দ্বারা কিংবা নেয়ামতের অপব্যবহার করার দ্বারা। ঈদ আল্লাহ তাআলার নেয়ামত। প্রত্যেক জাতির ঈদ তথা উৎসব রয়েছে। আল্লাহ তাআলা মুসলমানদেরকে দু’টো ঈদ ( ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আযহা) দান করেছেন।

বাহ্যত অনেকের মনে হতে পারে যে, এটাও অন্যান্য জাতির পর্ব-উৎসবের মতোই একটি উৎসবমাত্র, কিন্তু বাস্তবতা এই যে,  ইসলামী ঈদ অন্যান্য জাতির পর্ব-উৎসব থেকে সব দিক থেকে স্বাতন্ত্রের অধিকারী। স্বরূপ ও তাৎপর্য এবং বিধান ও উদযাপন-পদ্ধতি সব দিক থেকে এতে ভিন্নতা রয়েছে। এ বিষয়টি সংক্ষিপ্ত আকারে আলকাউসারের অক্টোবর-নভেম্বর ’০৬ সংখ্যায় প্রকাশিত হয়েছিল।

যদি ইসলামী ঈদকে শুধু একটি বার্ষিক উৎসব গণ্য করা হয় এবং অন্যান্য জাতির মতো ঈদের সঙ্গেও মনগড়া কার্যকলাপ যুক্ত করা হয় তবে নিঃসন্দেহে ঈদ ‘ওয়ীদ’-এ (অভিশাপে) রূপান্তরিত হবে। আমাদের সমাজে এখন ঈদ উপলক্ষে যে পন্থা-পদ্ধতি প্রচলিত তাতে ঈদ ‘ওয়ীদ’-এ (অভিশাপে) পরিণত হওয়ার মতো অনেক বিষয় বিদ্যমান। যথা :

১. ঈদুল ফিতরের তাৎপর্য এই যে, রমযানের মতো মাস লাভ করা এবং রোযার মতো ইবাদতের তাওফীকপ্রাপ্ত হওয়ার কারণে আল্লাহ তাআলার শোকর আদায় এবং তাঁর বড়ত্ব ও মহিমা বর্ণনা। কিন্তু এই ‘মুসলিম সমাজে’ হাজারো আল্লাহর বান্দা এমন পাওয়া যায় যাদের না রোযার গুরুত্ব আছে, না নামাযের, কিন্তু ঈদের ‘শোভাযাত্রায়’ তারা সবার চেয়ে অগ্রগামী। যদি ঈদের দিনই তাদের আত্মোপলব্ধি হয় এবং খালেস দিলে তওবা করে আহকামে শরীয়তের পাবন্দীর দিকে ফিরে আসা হয় তবে তো অতি উত্তম, অন্যথায় এদের স্বভাব-চরিত্রই এই যে, আকাইদ ও আ’মাল এবং ফরয-ওয়াজিবের কোনো মূল্য তাদের কাছে নেই,তারা নিজেদের মুসলমানিত্বের প্রমাণ শুধু এমন হাতেগোনা কিছু দিবসে প্রদান করতে আগ্রহী যেগুলোতে কিছু আনুষ্ঠানিকতা রয়েছে। আর সেগুলোর সঙ্গেও তাদের সম্পর্ক শুধু আনুষ্ঠানিকতার মধ্যেই সীমাবদ্ধ। বলাবাহুল্য যে, এই মানসিকতা- সে  দ্বীনী জ্ঞানশূন্যতার কারণে হোক বা বুদ্ধিবৃত্তিক (?) কারণে- অত্যন্ত দুঃখজনক। এটা ইসলমের অত্যন্ত ভুল রূপায়ন। কোনো সন্দেহ নেই যে, এই ধরনের মানসিকতা আল্লাহ তাআলার অভিশাপকে ত্বরান্বিত করে। আল্লাহ তাআলাই আমাদের হেদায়েত ও হেফাযতের মালিক। তাঁর নিকটেই হেদায়েত ও হেফাযত প্রার্থনা করি।

২. রমযানের মর্যাদা ও পবিত্রতা বিনষ্ট করার মধ্যেও যাদের কোনো সংকোচ বোধ হয় না তাদেরকে ঈদগাহে উপস্থিত দেখা যায়। রমযান মাসে না সিনেমাহলগুলোর উপর কোনো নিয়ন্ত্রন, না ভিসিআর, ডিশ, পত্র-পত্রিকার অশ্লীল বিষয় ও পাতাগুলোর উপর কোনো নিয়ন্ত্রন। আর না প্রকাশ্যে পানাহার এবং হোটেল-রেস্তোরা, কফিশপ, রেস্ট হাউস  ইত্যাদির বিলাসিতা ও অশ্লীলতার উপর কোনো বিধিনিষেধ। না রাষ্ট্রীয়ভাবে, না সামাজিকভাবে। আর না ওইসব লোকদের মধ্যে এতটুকু চক্ষুলজ্জা যে, যে মাসে বড় বড় শয়তানকে শৃঙ্খলাবদ্ধ করা হয় সে মাসে তো অন্তত নিজেদেরকে এবং নিজেদের অধীনস্থদেরকে অশ্লীল কার্যকলাপ থেকে বিরত রাখা কর্তব্য।

চিন্তার বিষয় এই যে, এইসব লোক কিন্তু ঈদগাহে উপস্থিত থাকে। ঈদগাহে উপস্থিত হওয়া যদি তওবার নিয়তে হয়, নিজেকে অপরাধী মনে করে হয় এবং ঈদের নেয়ামতের কদরদানীর জন্য হয় তবে তো খুবই উত্তম, কিন্তু বাহ্যিক অবস্থাদৃষ্টে এমন মনে হয় না; বরং শুধু একটা আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করাই উদ্দেশ্য বলে মনে হয়। বলাবাহুল্য যে, এই মানসিকতাও লা’নত ও অভিশাপের কারণ এবং ঈদকে ‘ওয়ীদে’ রূপান্তরিত করার মাধ্যম।

৩. ঈদ ইসলামের শিআর (নিদর্শন)। ঈদের দিনগুলো অত্যন্ত বরকতপূর্ণ। ইসলামে ‘শিআর’-এর প্রসঙ্গটি অত্যন্ত নাযুক ও সংবেদনশীল। বিশেষ বরকতপূর্ণ সময়গুলোর মর্যাদা বিনষ্ট করা অত্যন্ত ভয়াবহ। সামান্য চিন্তা করলেই আমরা বুঝতে পারি যে, ঈদকে কেন্দ্র করে সিনেমাহলগুলোতে এবং বিভিন্ন টিভি-চ্যানেলে যে বিশেষ উদ্যোগ-আয়োজন গ্রহণ করা হয়ে থাকে- এটা কি এই ইসলামী নিদর্শনের প্রকাশ্য ও খোলাখুলি অমর্যাদা করা নয়? এসব বিষয়ের ব্যবস্থাপনা এবং প্রচার-প্রচারণায় যারা যেকোনোভাবে অংশগ্রহণ করে এবং যারা এসব অশ্লীল দৃশ্য অবলোকনের মাধ্যমে ঈদ-উৎসব উদযাপন করে তারা সবাই কি এই ‘শিআরে ইসলাম’-ইসলামের নিদর্শনের অমর্যাদার সঙ্গে জড়িত নয়? ভেবে দেখুন, অবশেষে এটা কি ঈদ থাকল না ওয়ীদে রূপান্তরিত হল?

৪. ইসলামের এই গুরুত্বপূর্ণ নিদর্শনের অমর্যাদার আরেকটি বিষয় নারীদের মধ্যে দেখা যায়। শহরে ও গ্রামে ঈদের দিনগুলোতে নারীরা বেপর্দা বের হয়। সৌন্দর্যের প্রদর্শনী করে রাস্তা-ঘাটে ঘুরতে থাকে। এ বাড়ি থেকে সে বাড়ি, এ জায়গা থেকে সে জায়গা ...।

পর্দাহীন যদি হতেই হয় তবুও অন্তত ইসলামী ঈদের দিনগুলোতে সংযত থাকা উচিত। নিজের উপর এতখানি অত্যাচার তো করা উচিত নয় যে, ইসলামী নিদর্শনগুলোরও অমর্যাদা করতে আরম্ভ করলেন! এই ঈদ তো পাশ্চাত্য সভ্যতা আমাদের প্রদান করেনি, এটা প্রদান করেছে ইসলাম। অতএব ইসলামের বিধান মোতাবেক তা উদযাপন করাই মুসলমানের কর্তব্য। পাশ্চাত্যের ফ্যাশন, পাশ্চাত্যের নগ্নতা ও অশ্লীলতাকে এর সঙ্গে সংযু্ক্ত করা কি মুসলমানের কাজ হতে পারে?

৫. ঈদকে ‘ওয়ীদ’ ও অভিশাপ বানানোর আরেকটি রীতি আজকাল মহামারীর মতো ছড়িয়ে পড়েছে এবং সমাজের অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে গিয়েছে। যেহেতু ধরে নেওয়া হয়েছে যে, ইসলামী ঈদ নিছক একটি উৎসব কিংবা এতে উৎসবের দিকটিই প্রধান তাই তা উদযাপনের জন্য সাজসজ্জার সীমাতিরিক্ত আয়োজনে ডুবে যেতে দেখা যায়। রমযানের শেষ দশক এ কাজেই বরবাদ হয়ে যায়। এই সময় দিন-রাত মার্কেট ও শপিংমলগুলোতে প্রচন্ড ভিড় থাকে। পুরুষের চেয়ে নারীদের ভীড়ই বেশি, আর অধিকাংশই বেপর্দা। মজার বিষয় এই যে, এই কেনাকাটায় ওইসব লোকেরাই সবচেয়ে অগ্রগামী, যাদের না রয়েছে রোযা-তারাবীর চিন্তা, না রমযানের মর্যাদা রক্ষার অনুভূতি। তাদের তো প্রকৃতপক্ষে ঈদগাহেই উপস্থিত হওয়ার অধিকার থাকে না অথচ তারাই ঈদ-শপিংয়ে সবচেয়ে বেশি ব্যস্ত। হাদীস শরীফে কুরবানী ঈদ সম্পর্কে এসেছে যে- ‘যার কুরবানী করার ইরাদা নেই সে যেন ঈদগাহে না আসে।’ কুরবানী, যা ওয়াজিব কিংবা (কোনো কোনো মাযহাব মতে) সুন্নতে মুয়াক্কাদা সেটা পরিত্যাগ করার কারণেই যখন এই ধমক দেওয়া হল যে, সে যেন ঈদগাহে না আসে তাহলে রোযার মতো ফরয বিধান যারা পরিত্যাগ করে তাদের কীভাবে ঈদগাহে হাজির হওয়ার অধিকার থাকে? হাঁ, কেউ যদি নিজেকে অপরাধী মনে করে অনুতপ্ত হয়ে ঈদগাহে উপস্থিত হয় তাহলে সেটা ভিন্ন কথা।

একটি শ্রেণী-মাশাআল্লাহ- রোযা রাখেন কিন্তু রমযানের শেষ দশকে তারাবী ছেড়ে তারাও ঈদ শপিংয়ের চক্করে ফেঁসে যান। আমাদের ভুলে গেলে চলবে না যে, রমযানে দিবসের করণীয় হল রোযা আর রাতের করণীয় তারাবী ও তাহাজ্জুদ। তারাবী হল সুন্নতে মুয়াক্কাদা। এ থেকে বঞ্চিত থাকার অর্থ হল হাফেযের মুখ থেকে কুরআন মজীদ শ্রবণ করা থেকে বঞ্চিত থাকা। এটা কত বড় ক্ষতিগ্রস্ততা!

এরপর যখন নারীরা নির্লজ্জ বেপর্দা হয়ে মার্কেটগুলো দখল করে বসে আছে তখন পুরুষরা যদি তাদের ঈমানকে রক্ষা করার জন্য এবং দৃষ্টির হেফাযতের জন্য সংকল্পবদ্ধ হয়ে মার্কেটে ঘোরাঘুরি বর্জন করেন তাহলে কী অসুবিধা?

কিছু মানুষ এমনও আছেন যারা মাশাআল্লাহ রোযার সঙ্গে তারাবীরও পাবন্দী করেন এবং তারাবীতে খতমও করে থাকেন, কিন্তু তারা পনেরো বা বিশ রমযানের মধ্যেই খতম শেষ করে দেন এবং শেষ দশকে শুধু সূরা তারাবী পড়ে থাকেন, জামাতের সঙ্গে কিংবা একা। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই কুরআন খতম থেকে আগে ফারেগ হওয়ার উদ্দেশ্য থাকে বাইরে যাওয়া আসায় সুবিধা সৃষ্টি করা। অথচ গোটা রমযানের মধ্যে শেষ দশকের ফযীলতই সবচেয়ে বেশি। এজন্যই এতে ইতিকাফ এবং লায়লাতুল কদর তালাশ করার আদেশ দেওয়া হয়েছে। রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এবং সালাফে সালেহীন রমযানের প্রথম বিশ দিনের তুলনায় শেষ দশকে নামায, তেলাওয়াত এবং অন্যান্য ইবাদতে অনেক বেশি মেহনত করতেন। এজন্য শেষ দশকের রাতগুলো খুব বেশি করে আবাদ রাখা কর্তব্য। এই বরকতময় রাতগুলো কোনোভাবেই মার্কেটিংয়ের পিছনে নষ্ট করা উচিত নয়।

এখানে একটা বড় ভুল ধারণা এই যে, অধিকাংশ মানুষ ঈদের দিনের জন্য নতুন পোশাক পরিধান করা এবং অন্যদের পরিধান করানো বা হাদিয়া দেওয়াকে ঈদের অপরিহার্য অংশ মনে করে অথচ এই কথাটা একদম গোড়া থেকেই সঠিক নয় যে, ঈদের জন্য নতুন কাপড় মাসনূন; বরং দলীল দ্বারা শুধু এটুকু প্রমাণ হয় যে, নিজের কাছে বিদ্যমান কাপড়গুলোর মধ্যে উত্তম ও পরিষ্কার কাপড়টি পরিধান করবে।

كَانَ ابْنُ عُمَرَ يَلْبَسُ فِيْ الْعِيْدَيْنِ أَحْسَنَ ثِيَابِهِ

এক প্রস্থ উত্তম কাপড় বানিয়ে কিংবা ক্রয় করে তা জুমআ  ও ঈদে পরিধান করাতে কোনো অসুবিধা নেই। রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে একটি উত্তম পোশাক ছিল যা তিনি জুমআ, ঈদে কিংবা বিভিন্ন প্রতিনিধিদলের সঙ্গে সাক্ষাত করার সময় পরিধান করতেন। -আসসুনানুল কুবরা বায়হাকী ৩/২৮০-২৮১; যাদুল মাআদ ১/৪২৫

মোটকথা, পরিষ্কার ধোয়া কাপড় যা বিদ্যমান কাপড়গুলোর মধ্যে যে কাপড়টি  সবচেয়ে উত্তম তা ঈদের দিন পরিধান করা কাম্য। যদি ঘটনাক্রমে তা নতুনও হয় তাহলেও অসুবিধা নেই, কিন্তু প্রত্যেক ঈদের জন্য নতুন কাপড়ের ব্যবস্থা করাকে মাসনূন মনে করা একদম ঠিক নয় এবং এর ওপর শরীয়তের কোনো দলীলও বিদ্যমান নেই।

মুসলমানদের আর্থিক স্বচ্ছলতার যুগ অতীত হয়েছে (যখন তাদের দ্বীন ও ঈমানের হালতও বর্তমানের চেয়ে হাজার গুণ ভালো ছিল) কিন্তু ইতিহাস থেকে এটা প্রমাণ করা যায় না যে, তাদের কাছে রমযান ও ঈদুল ফিতর বিশেষ ব্যবসা-বাণিজ্যের মওসুম ছিল, যেখানে ঈদের জন্য বিশেষ উদ্যোগ-আয়োজন থাকত। এখন তো বিষয়টি শুধু কাপড়ের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়, নতুন কাপড়ের সঙ্গে চাই নতুন জুতো, মহিলাদের সাজসজ্জার সকল উপকরণ নতুন হওয়া চাই, বাচ্চাদের জন্যও সবকিছু নতুন হওয়া চাই। ঘরের আসবাবপত্র নতুন হওয়া চাই। পুরানো শুধু একটি বস্ত্তই, তা হচ্ছে ঈমান ও আমল। একে উন্নত ও নতুন করার কোনোই আয়োজন নেই। বলাবাহুল্য, মুসলিম সমাজের এটা এক দুর্ভাগ্যজনক চিত্র, যার নজির বিগত শতাব্দীগুলোতে পাওয়া যাবে না।

কেউ বলতে পারেন যে, ইসলামে জায়েয সাজসজ্জাকে বৈধ রাখা হয়েছে এবং ঈদের সময় তা পছন্দনীয়ও বটে? অবশ্যই পছন্দনীয় তবে একে সীমার মধ্যে রাখা হলে। মুবাহ সাজসজ্জার মধ্যেও বাড়াবাড়ি করা নিষেধ। এরপর এখানে আলোচনা শুধু সাজসজ্জা সম্পর্কেই নয়; বরং এতে সীমালঙ্ঘন করে রমযানের সবচেয়ে বরকতময় সময়গুলোকে বিনষ্ট করা সম্পর্কেও। প্রশ্ন এই যে, শরীয়তে এই প্রান্তিকতাও কি কাম্য ও পছন্দনীয়, নাউযুবিল্লাহ?! এরপর মুবাহ ও বৈধ  সাজসজ্জাকে  বাহানা বানিয়ে যারা অবৈধ সাজসজ্জার পেছনে পড়ে যায় তাদের কথা তো ভিন্নই!

মোটকথা, রমযনের শেষ দশক নিজেকে এবং নিজেদের পরিবার-পরিজনকে অন্যান্য ঝামেলা থেকে মুক্ত করে ইবাদতে নিমগ্ন করা উচিত। নফল নামায, তেলাওয়াত, যিকর ও দুআ ইত্যাদিতে মশগুল হওয়া কর্তব্য। নিজেও ইতিকাফ করার চেষ্টা করবে এবং ঘরের অন্যান্য লোকদেরকেও ইতিকাফের সুযোগ করে দেওয়ার চেষ্টা করবে। মহিলাদেরকে এ বিষয়ে উদ্বুদ্ধ করবে। একই বছর সবার পক্ষে সম্ভব না হলে পালাক্রমে করার চেষ্টা করবে। আর দুই তিন দিনের নফল ইতিকাফ তো প্রতি রমযানে প্রত্যেকেই করতে পারেন।

আমাদের মনে রাখা উচিত যে, রমযানের শেষ দিনগুলো ঈদ-উদযাপনের প্রস্ত্ততি গ্রহণের জন্য নয়; বরং ঈমান ও আমলের তরক্কীর জন্য। আমরা যদি আমাদের কর্মের মাধ্যমে এর বিপরীত কিছু প্রমাণ করি তাহলে সেটা হবে ইসলামের অত্যন্ত ভুল রূপায়ন। আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে হেফাযত করুন ও সাহায্য করুন। আমীন।

আলকাউসার