বুধবার ০৫ নভেম্বর ২০২৫, কার্তিক ২১ ১৪৩২, ১৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৭

ব্রেকিং

জনসংযোগের সময় গুলিবিদ্ধ চট্টগ্রাম-৮ আসনে বিএনপির প্রার্থী এরশাদ পাঁচ ব্যাংক অকার্যকর ঘোষণা, ভেঙে দেওয়া হলো পর্ষদ মূল্যস্ফীতি কমে ৮.১৭%, ৩৯ মাসের সর্বনিম্ন ডেঙ্গুতে ২৪ ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ১০ মৃত্যু মাইলস্টোন দুর্ঘটনার তদন্ত প্রতিবেদন প্রধান উপদেষ্টার কাছে জমা সিআরআই জালিয়াতি : জয়, পুতুলসহ ৮ জনের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা পদ ছেড়ে ভোট করবো: অ্যাটর্নি জেনারেল এনসিপি এককভাবে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে: নাহিদ ইসলাম নাসার নজরুল কাঠগড়ায় বসতে চাইলেন টুল ভাল্লুকের আক্রমণের পর সেনা মোতায়েন করল জাপান চীনকে লক্ষ্য করে ফেন্টানাইল-সম্পর্কিত শুল্ক কমানোর আদেশে ট্রাম্পের স্বাক্ষর চকরিয়ায় সড়ক দুর্ঘটনায় একই পরিবারের ৫ জন নিহত খাগড়াছড়ির মহালছড়ি বাজারে আগুনে পুড়ল ২৩ দোকান বগুড়ায় তারেক রহমানের পক্ষে ধানের শীষে ভোট চেয়ে লিফলেট বিতরণ রামপালে বিএনপি’র সভা শেষে ফেরার পথে সড়ক দুর্ঘটনায় তিন কর্মী নিহত যুক্তরাষ্ট্রের বৃহত্তম শহর নিউ ইয়র্কের প্রথম মুসলিম মেয়র মামদানি টাইফুন কালমায়েগির তাণ্ডব, ফিলিপিন্সে অর্ধ শতাধিক মৃত্যু

জাতীয়

নির্বাচনের পর দেশ ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্থিতিশীল হবে: সেনাসদর

 প্রকাশিত: ২০:২৭, ৫ নভেম্বর ২০২৫

নির্বাচনের পর দেশ ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্থিতিশীল হবে: সেনাসদর

, ৫ নভেম্বর, ২০২৫ (বাসস): নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার পর দেশের স্থিতিশীলতা আরও সুদৃঢ় হবে এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসবে বলে উল্লেখ করেছেন সেনা সদর দফতরের আর্মি ট্রেনিং অ্যান্ড ডকট্রিন কমান্ড (আর্টডক)-এর জেনারেল অফিসার কমান্ডিং (জিওসি) লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. মাইনুর রহমান।

তিনি বলেন, ‘দেশের জনগণের মতো বাংলাদেশ সেনাবাহিনীও সরকারের নির্ধারিত রূপরেখা অনুযায়ী একটি অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও উৎসবমুখর নির্বাচন প্রত্যাশা করছে।

আমরা বিশ্বাস করি, নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলে দেশের স্থিতিশীলতা আরও দৃঢ় হবে, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে এবং সেনাবাহিনী তখন সেনানিবাসে ফিরে যেতে পারবে। আমরা সেই সময়টির অপেক্ষায় রয়েছি।’

আজ বুধবার সেনাসদরে আয়োজিত ইন এইড টু সিভিল পাওয়ারের আওতায় নিয়োজিত সেনাবাহিনীর কার্যক্রম সম্পর্কিত এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে লেফটেন্যান্ট জেনারেল মাইনুর রহমান এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, সরকার এখন পর্যন্ত নির্বাচনের যেটুকু রূপরেখা প্রণয়ন করেছে, তার আলোকে সেনাবাহিনী প্রাথমিক ও প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে। বর্তমানে সীমিত আকারে প্রশিক্ষণ কার্যক্রম পরিচালিত হলেও নির্বাচনের সময় সেনাবাহিনীর করণীয় বিষয়গুলোকে বিশেষভাবে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।

লেফটেন্যান্ট জেনারেল মাইনুর রহমান বলেন, শান্তিকালীন সময়ে সেনাবাহিনীর মূল দায়িত্ব হলো যুদ্ধের জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করা। আমরা সবসময় বলি- ‘উই ট্রেইন এস উই ফাইট’ অর্থাৎ আমরা যেভাবে যুদ্ধের প্রস্তুতি নেই, সেভাবেই প্রশিক্ষণ গ্রহণ করি। তবে গত ১৫ মাস ধরে সেনাবাহিনী বেসামরিক প্রশাসনের সহায়তায় মাঠে কাজ করছে।

এতে প্রশিক্ষণ কার্যক্রম কিছুটা ব্যাহত হচ্ছে, কিন্তু দায়িত্ব পালনে সেনাবাহিনী সর্বদা দৃঢ় ও পেশাদার।

গত ১৫ মাস ধরে সেনাবাহিনী বেসামরিক প্রশাসনের সহায়তায় মাঠে থেকে দায়িত্ব পালন করছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এই সময়টি সেনাবাহিনীর জন্য ছিল অত্যন্ত চ্যালেঞ্জিং। দেশের বিভিন্ন স্থানে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় কাজ করতে গিয়ে অনেক প্রতিকূল পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হয়েছে। তবে সেনাসদস্যরা সর্বোচ্চ পেশাদারিত্ব নিয়ে দায়িত্ব পালন করেছেন।

তিনি বলেন, এ ধরনের পরিস্থিতি বাংলাদেশের জন্য প্রতিদিনের ঘটনা নয়। সেনাবাহিনী দেশের স্বার্থে সর্বদা প্রস্তুত ছিল এবং থাকবে। আমরা আশা করছি, শিগগিরই একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে এবং সেনাবাহিনী আবার তাদের নিয়মিত প্রশিক্ষণ ও পেশাগত কর্মকাণ্ডে ফিরে যেতে পারবে।

লেফটেন্যান্ট জেনারেল মাইনুর রহমান বলেন, সেনাবাহিনী সব সময় রাষ্ট্রের অংশ হিসেবে সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী কাজ করে। যে কোনো দুর্যোগ বা চ্যালেঞ্জিং পরিস্থিতিতে সেনাবাহিনী জনগণের পাশে ছিল এবং ভবিষ্যতেও থাকবে। দেশের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা, দুর্যোগ মোকাবিলা, অবকাঠামো উন্নয়ন কিংবা আন্তর্জাতিক শান্তিরক্ষা-সব ক্ষেত্রেই বাংলাদেশ সেনাবাহিনী তাদের সক্ষমতা ও দক্ষতা প্রমাণ করেছে।

তিনি বলেন, নির্বাচন হলে জনগণের আস্থা আরও বাড়বে, দেশ স্থিতিশীল হবে এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সম্পূর্ণ স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসবে। সেনাবাহিনী তখন সেনানিবাসে ফিরে গিয়ে প্রশিক্ষণ, আধুনিকীকরণ ও কৌশলগত উন্নয়নের কাজে মনোনিবেশ করবে।

সেনাসদরের এই কর্মকর্তা বলেন, একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনই দেশের সামগ্রিক শান্তি, স্থিতিশীলতা ও অগ্রগতির পূর্বশর্ত। সেনাবাহিনী সেই লক্ষ্য বাস্তবায়নে সর্বোচ্চ সহযোগিতা ও দায়িত্ব পালন করতে প্রস্তুত।

এক প্রশ্নের জবাবে লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. মাইনুর রহমান বলেন, ‘আমরা লক্ষ্য করছি কিছু স্বার্থান্বেস্বী মহল সেনাবাহিনীকে প্রশ্নবিদ্ধ করার জন্য মিথ্যা-বানোয়াট ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে অপপ্রচার চালাচ্ছে। তাই আমি দেশবাসীকে নিশ্চিত করতে চাই-সেনাবাহিনীর প্রতিটি সদস্য সেনাবাহিনী প্রধান এবং সেনাবাহিনীর সিনিয়র লিডারশিপের প্রতি অনুগত ও বিশ্বস্ত রয়েছে। আগের যেকোনো সময়ের তুলনায় আমাদের সেনাবাহিনীর সদস্যরা আরো বেশি ঐক্যবদ্ধ এবং আমাদের ভ্রাতৃত্ববোধ আরো বেশি সুদৃঢ়। তাই সকলকে আমরা বলবো-চলুন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অপপ্রচারকে পেছনে ফেলে ঐক্যবদ্ধভাবে আমরা সকলে সামনের দিকে এগিয়ে যাই। যেই দায়িত্ব সেনাবাহিনীকে দেয়া হয়েছে এবং ভবিষ্যতে যেই দায়িত্ব দেয়া হবে-সেনাবাহিনী তা যথাযথভাবে পালন করেছে এবং ভবিষ্যতেও করবে।’

আগামী নির্বাচনে মাঠ পর্যায়ে ৯০ হাজার থেকে ১ লাখ সেনা সদস্য নিয়োজিত থাকবে বলেও জানান এই সেনা কর্মকর্তা, যা অন্যান্য যেকোনো নির্বাচনী সময়ের থেকে অনেক বেশি।

এছাড়াও প্রেস ব্রিফিং করেন ও সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন মিলিটারি অপারেশনস -এর পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল দেওয়ান মোহাম্মদ মনজুর হোসেন এবং সেনাসদরের এজি শাখার পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মুস্তাফিজুর রহমান।