সোমবার ০৮ ডিসেম্বর ২০২৫, অগ্রাহায়ণ ২৪ ১৪৩২, ১৭ জমাদিউস সানি ১৪৪৭

ব্রেকিং

ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি : ক্লাস শুরু ১ জানুয়ারি, ‘চূড়ান্ত হচ্ছে’ অধ্যাদেশ মাগুরায় সংঘর্ষে আহত যুবকের মৃত্যু, ফের সংঘাতে আহত ৫০ ভোট: এবার নিবন্ধন পেল ৮১ স্থানীয় পর্যবেক্ষক প্রতিষ্ঠান ক্ষমতায় যাওয়ার অপেক্ষায় জামায়াত, বললেন পরওয়ার কারাগারে শওকত মাহমুদ, রিমান্ড শুনানি বৃহস্পতিবার বিটিভি-বেতারে সিইসির তফসিল-সংক্রান্ত ভাষণ রেকর্ড ১০ ডিসেম্বর খালেদা জিয়ার লন্ডনযাত্রা আরো পেছাল মহানবীকে কটূক্তি: তিতুমীরের শিক্ষার্থী বিশ্বজিৎ রিমান্ডে উৎসবমুখর নির্বাচনের জন্য সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা রিমান্ডে দিলে হার্ট অ্যাটাক করতে পারি: আদালতকে নাসার নজরুল আনিসুল-মঞ্জুর নেতৃত্বে নতুন জোটের আত্মপ্রকাশ মোহাম্মদপুরে মা-মেয়ে হত্যায় গৃহকর্মী, ধারণা পুলিশের সাবেক মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীসহ ১৬ জনকে ট্রাইব্যুনালে হাজির ভারতের গোয়া নাইটক্লাব অগ্নিকাণ্ডে নিহত ২৫ জনের মধ্যে নেপালি ৪ জন নিউইয়র্কে ইসরাইল, কাতার ও যুক্তরাষ্ট্রের ত্রিপক্ষীয় বৈঠক অনুষ্ঠিত

শিশু

আজ ঝালকাঠি ও নলছিটি হানাদারমুক্ত দিবস

 প্রকাশিত: ২১:১১, ৮ ডিসেম্বর ২০২৫

আজ ঝালকাঠি ও নলছিটি হানাদারমুক্ত দিবস

ঝালকাঠি, ৮ ডিসেম্বর ২০২৫ (বাসস): আজ ৮ ডিসেম্বর ঝালকাঠি ও নলছিটি পাক হানাদারমুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতিরোধের মুখে পাক হানাদার বাহিনী ও তাদের দোসররা পালিয়ে যায়। বহু ত্যাগের পর ঝালকাঠি সদর ও নলছিটির নারী-পুরুষ, শিশু কিশোরসহ সর্বস্তরের মানুষ বিজয়ের উচ্ছ্বাসে স্লোগানে স্লোগানে মেতে ওঠে। ঝালকাঠি সদর ও নলছিটিতে উড়ানো হয় স্বাধীন বাংলার পতাকা। 

 

ঝালকাঠি জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের আহ্বায়ক মোস্তফা কামাল মন্টু বাসসকে জানান, ১৯৭১ সালের ৮ ডিসেম্বর বিজয়ের বেশে বীর মুক্তিযোদ্ধারা শহরে প্রবেশ করেন। জেলার সব জায়গায় আনন্দ উল্লাসে মেতে ওঠেন স্বাধীনতাকামী জনতা।

 

তিনি জানান, ১৯৭১ এর ২৭ এপ্রিল ভারী কামান আর মর্টার শেলের গোলা নিক্ষেপ করতে করতে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ঝালকাঠি শহরের দখল নেয়। এরপর থেকে পাকিস্তানি বাহিনী রাজাকারদের সহায়তায় ৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত জেলাজুড়ে হত্যা, ধর্ষণ আর লুটপাটসহ নারকীয় নির্যাতন চালায়।

 

মুক্তিযোদ্ধা সংসদের আহ্বায়ক আরো জানান, প্রতিদিন জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে নিরীহ বাঙালি নারী পুরুষ ধরে নিয়ে নির্মম নির্যাতন চালানো হতো। তাদের ঝালকাঠি পৌরসভা খেয়াঘাট এলাকায় সারিবদ্ধভাবে দাঁড় করিয়ে গুলি করে হত্যা করা হতো। বীর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রবল প্রতিরোধে টিকতে না পেরে ৭ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় শহরে কারফিউ জারি করে রাতের আঁধারে ঝালকাঠি ছেড়ে পালিয়ে যায় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী। পরে মুক্তিযোদ্ধারা থানা ঘেরাও করে সন্ধ্যায় ঝালকাঠি থানার পুলিশকে নিরস্ত্র করেন। ৮ ডিসেম্বর ঝালকাঠি শহর ও নলছিটি হানাদারমুক্ত হয়। এসময় বীর মুক্তিযোদ্ধারা বিজয় মিছিল বের করেন।

 

ঝালকাঠি জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিলের সাবেক ডেপুটি কমান্ডার দুলাল সাহা বাসসকে বলেন, ৭ ডিসেম্বর আমরা নিশ্চিত হই ঝালকাঠি থানার পুলিশ ও তাদের দোসররা পরাজয় মেনে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ৮ ডিসেম্বর সকালে মুক্তিযোদ্ধারা ও মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের মানুষেরা শহরে আসলে শহর এবং বিভিন্ন ইউনিয়নের হাজার হাজার মানুষ লাল সবুজের পতাকা হাতে রাস্তায় নেমে আসে। মুক্তির আনন্দে সেদিন আমাদের চোখে ছিল আনন্দের অশ্রু। একদিকে বিজয়ের আনন্দ, অপরদিকে লাখ লাখ শহীদের আত্মত্যাগ, মা-বোনদের সম্ভ্রম হারানোর বেদনা আমাদের চোখের জলে স্মরণ করেছি।

 

ঝালকাঠির বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ ঈমাম বলেন, ১৯৭১ সালের ২৭ এপ্রিল ভারী কামান আর মর্টার শেলের গোলা নিক্ষেপ করতে করতে পাক হানাদার বাহিনী ঝালকাঠি শহরের দখল নিয়ে নেয়। এরপর থেকে পাক বাহিনী রাজাকাদের সহায়তায় ৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত জেলজুড়ে হত্যা, ধর্ষণ, লুট আর আগ্নিসংযোগসহ নারকীয় নির্যাতন চালায়।

 

তিনি বলেন, জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে প্রতিদিন নিরীহ বাঙালিদের ধরে নিয়ে নির্মম নির্যাতন চালিয়ে পৌরসভা খেয়াঘাট এলাকায় সারিবদ্ধভাবে দাঁড় করিয়ে গুলি করে হত্যা করা হতো। এছাড়া জেলার বিভিন্ন স্থানে অসংখ্য মুক্তিযোদ্ধা ও বাঙালিদের হত্যা করে মাটি চাপা দেওয়া হয়া।

 

তিনি আরো বলেন, মুক্তিযোদ্ধাদের প্রবল প্রতিরোধে টিকতে না পেরে ৭ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় শহরে কারফিউ জারি করে রাতের আঁধারে ঝালকাঠি ছেড়ে পালিয়ে যায় পাকবাহিনী। পরে মুক্তিযোদ্ধারা থানা ঘেরাও করে সন্ধ্যায় ঝালকাঠি থানার পুলিশকে নিরস্ত্র করে মুক্তিযোদ্ধারা। ওসিসহ পুলিশ সদস্যরা আত্মসমর্পণ করে। হানাদার মুক্ত হয় ঝালকাঠি জেলা। দিনটি পালন উপলক্ষে জেলা প্রশাসন, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ও বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন নানা কর্মসূচি পালন করেন।