মেসির কাছে ক্ষমা চাইলেন মমতা, সল্টলেকের ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন
সল্টলেক স্টেডিয়ামে লিওনেল মেসির অনুষ্ঠানে নজিরবিহীন বিশৃঙ্খলা ও অব্যবস্থাপনার ঘটনায় ক্ষমা চেয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শনিবারের এই অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনায় তিনি গভীরভাবে শোকাহত ও লজ্জিত বলে জানিয়েছেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থতা ও অব্যবস্থাপনার কারণ অনুসন্ধানে তাৎক্ষণিকভাবে একটি উচ্চপর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
স্টেডিয়াম খালি হওয়ার প্রায় ৩০ মিনিট পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে (সাবেক টুইটার) নিজের ক্ষোভ প্রকাশ করেন মমতা। তিনি লেখেন, “আজ সল্টলেক স্টেডিয়ামে যে অব্যবস্থাপনার সাক্ষী হতে হলো, তাতে আমি গভীরভাবে বিচলিত ও স্তম্ভিত।” মুখ্যমন্ত্রী আরও জানান, তিনি নিজেও হাজারো ক্রীড়াপ্রেমীর মতো মেসির এক ঝলক দেখার অপেক্ষায় ছিলেন এবং স্টেডিয়ামের পথেই ছিলেন। এই ঘটনায় তিনি লিওনেল মেসি, তার অগণিত ভক্ত ও ক্রীড়াপ্রেমীদের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করেন।
পরিস্থিতি এতটাই নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গিয়েছিল যে, আমন্ত্রিত বিশেষ অতিথি হওয়া সত্ত্বেও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, সাবেক ক্রিকেট অধিনায়ক সৌরভ গাঙ্গুলী এবং বলিউড তারকা শাহরুখ খান স্টেডিয়ামের ওই অনুষ্ঠানে যোগ দিতে পারেননি।
ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির প্রধান হিসেবে আছেন অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি অসীম কুমার রায়। অন্য দুই সদস্য হলেন রাজ্যের মুখ্য সচিব মনোজ পান্ত এবং স্বরাষ্ট্র সচিব নন্দিনী চক্রবর্তী। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, এই কমিটি পুরো ঘটনা পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্ত করে দায়ীদের চিহ্নিত করবে এবং ভবিষ্যতে যাতে এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি না ঘটে, তার জন্য প্রয়োজনীয় সুপারিশ প্রদান করবে।
শনিবার সকালে স্টেডিয়ামে মোহনবাগান বনাম ডায়মন্ড হারবার ম্যাচ চলাকালীন মেসি পৌঁছান। তার গাড়ি মাঠে প্রবেশ করতেই সেখানে উপস্থিত কর্মকর্তা ও মাঠের ভেতরের লোকজন গাড়ির দিকে দৌড়ে যান। এতে গ্যালারিতে থাকা সাধারণ দর্শকরা ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। তারা মাঠে বোতল ও চেয়ার ছুড়তে শুরু করেন এবং একপর্যায়ে মাঠে নেমে পড়েন। পরিস্থিতি সামাল দিতে বিধাননগর পুলিশকে লাঠিচার্জ করতে হয়। নিরাপত্তার স্বার্থে মেসিকে দ্রুত মাঠ থেকে বের করে নিয়ে যাওয়া হয়।
২০১১ সালের পর এটি ছিল মেসির দ্বিতীয় কলকাতা সফর, যা শেষ পর্যন্ত এক তিক্ত অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে শেষ হলো।