শনিবার ১৩ ডিসেম্বর ২০২৫, অগ্রাহায়ণ ২৯ ১৪৩২, ২২ জমাদিউস সানি ১৪৪৭

ব্রেকিং

ওমান উপসাগরে ট্যাঙ্কার জব্দ, বাংলাদেশিসহ ১৮ ক্রুকে আটক করেছে ইরান হাদিকে গুলির পেছনে ‘বিরাট শক্তি’, ঐক্যবদ্ধ থাকার ঘোষণা রাজনৈতিক দলগুলোর হাদির আততায়ীকে ধরিয়ে দিতে ৫০ লাখ টাকা পুরস্কার ঘোষণা হাদির পরিবারের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার সাক্ষাৎ, সর্বোত্তম চিকিৎসার আশ্বাস বিএনপির ৩১ দফায় জুলাই যোদ্ধাদের অধিকার যুক্ত করাসহ ৫ দাবি ২৫ ডিসেম্বর নতুন গণতান্ত্রিক জোয়ারের সূচনা হবে: আমীর খসরু জামায়াতে যোগ দিলেন বিএনপির সাবেক এমপি আখতারুজ্জামান মেসির কাছে ক্ষমা চাইলেন মমতা, সল্টলেকের ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন ব্রাজিলের বিচারকের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার জাতিসংঘ: পশ্চিম তীরে ইসরাইলি বসতি ২০১৭ সালের পর সর্বোচ্চ যুদ্ধবিরতির আহ্বানের পরও থাইল্যান্ডের বোমাবর্ষণ: কম্বোডিয়া

জাতীয়

বিএনপির ৩১ দফায় জুলাই যোদ্ধাদের অধিকার যুক্ত করাসহ ৫ দাবি

 প্রকাশিত: ১৫:৪৮, ১৩ ডিসেম্বর ২০২৫

বিএনপির ৩১ দফায় জুলাই যোদ্ধাদের অধিকার যুক্ত করাসহ ৫ দাবি

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) ৩১ দফা রাষ্ট্র মেরামতের অঙ্গীকারনামা এবং পরবর্তী সব কর্মসূচিতে জুলাই যোদ্ধাদের ন্যায্য অধিকার স্পষ্টভাবে যুক্ত করাসহ ৫ দফা দাবি জানিয়েছে ২৪ জুলাই যোদ্ধা আন্দোলন (কেন্দ্রীয় কমিটি)। একই সঙ্গে জুলাই যোদ্ধাদের ত্যাগ যেন ইতিহাসে হারিয়ে না যায়, সে অনুরোধও জানানো হয়। 

শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের কাছে ৫ দফা দাবি তুলে ধরেন ২৪ জুলাই যোদ্ধা আন্দোলন (কেন্দ্রীয় কমিটি)। সংগঠনটির নেতারা জানান, তাদের দাবি বিএনপির শীর্ষ নেতৃত্বের কাছে, বিশেষ করে দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের কাছে পৌঁছে দেওয়ার উদ্দেশ্যেই এ আয়োজন করা হয়েছে বলে জানায় সংগঠনটি।

সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের আহ্বায়ক মো. রেজাউল কবির রেজা ৫ দফা দাবি উপস্থাপন করেন। এ সময় সংগঠনের সদস্যসচিব মো. আব্দুল্লাহ আল মামুন এবং ২৪ জুলাই যোদ্ধা আন্দোলন কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক (দপ্তরের দায়িত্বে) সালমান হোসেন উপস্থিত ছিলেন।

ওসমান হাদির ওপর হামলার তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানিয়ে এবং তার দ্রুত আরোগ্য কামনা করে সংগঠনের আহ্বায়ক মো. রেজাউল কবির রেজা বলেন, যারা এই ঘটনা ঘটিয়েছে তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই। একই সঙ্গে হাসপাতালে হাদিকে দেখতে যাওয়ায় মির্জা আব্বাসকে অপমান করার ঘটনারও নিন্দা জানান তিনি।

তিনি বলেন, জুলাই আন্দোলন শুধু কোনো রাজনৈতিক মুহূর্ত ছিল না; এটি ছিল আমাদের রক্ত, আশা ও হারিয়ে যাওয়া ভবিষ্যৎ নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা এক যুদ্ধক্ষেত্র। জুলাই আন্দোলনের সেই কঠিন সময়ে আমরা জীবনের নিরাপত্তা, পরিবার ও ভবিষ্যৎ সবকিছু পেছনে ঠেলে রাস্তায় নেমেছিলাম। গুলিতে মানুষ মরেছে, নির্যাতনে হাজারো তরুণ পঙ্গু হয়েছে, শত শত পরিবার ভেঙে গেছে। এই পুরো সময়জুড়ে আমরা শুধু স্বাধীনতা, গণতন্ত্র ও ন্যায়বিচারের স্বপ্ন নিয়ে দাঁড়িয়ে ছিলাম।

তিনি বলেন, বিএনপির ঘোষিত ৩১ দফা রাষ্ট্র মেরামতের প্রস্তাবনায় কিংবা সাম্প্রতিক আন্দোলন কর্মসূচিতে জুলাই যোদ্ধাদের অবস্থান, পুনর্বাসন, দায়িত্ব, নিরাপত্তা বা ভবিষ্যৎ নিয়ে কোথাও কোনো স্পষ্ট পরিকল্পনা নেই। এই নীরবতা কষ্ট দেয়, হতাশ করে এবং আমাদের ত্যাগকে প্রশ্নের মুখে দাঁড় করায়। এ কারণেই আজ আমরা আমাদের পাঁচটি মৌলিক দাবি তুলে ধরছি। এগুলো শুধু দাবি নয়, এগুলো আমাদের অস্তিত্ব, আমাদের ভবিষ্যৎ।

সংবাদ সম্মেলনে উত্থাপিত ৫ দফা দাবি হলো—

১। জুলাই যোদ্ধাদের জন্য পৃথক পুনর্বাসন ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা ঘোষণা: আন্দোলনে আহত, ক্ষতিগ্রস্ত, পরিবারহারা বা জীবিকা হারানো যোদ্ধাদের জন্য একটি স্পষ্ট পুনর্বাসন পরিকল্পনা চাই। এটি মানবিক দায়িত্ব, নৈতিক দায়িত্ব এবং রাজনৈতিকভাবে অপরিহার্য।

২। সব জুলাই যোদ্ধাদের জন্য বিশেষায়িত আইনি সহায়তা কমিটি গঠন: মিথ্যা মামলা, হয়রানি, গ্রেপ্তার ও থানায় নির্যাতনের বিরুদ্ধে বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্দেশনায় একটি ডেডিকেটেড লিগ্যাল সাপোর্ট সেল গঠনের দাবি জানাই। যারা আন্দোলনে সবচেয়ে বেশি এগিয়ে ছিল, তারা এখন মামলার বোঝা নিয়ে জীবন পার করছে। 

৩। আহত জুলাই যোদ্ধাদের জন্য মেডিকেল সাপোর্ট ও চিকিৎসা টিম গঠন: গুলিবিদ্ধ, পঙ্গু, চোখ হারানো ও ট্রমাগ্রস্ত যোদ্ধাদের জন্য দলীয় অর্থায়ন বা সহযোগিতায় চিকিৎসা সহায়তা, কাউন্সেলিং ও সাপোর্ট সেশন চালু করতে হবে। এরা রাষ্ট্রের জন্য যুদ্ধ করেছে; আজ তাদের শরীর রাষ্ট্রীয় দমননীতিতে ক্ষতবিক্ষত। দায়িত্ব এড়ানো যায় না।

৪। জুলাই যোদ্ধাদের রাজনৈতিক ও সংগঠনগত স্বীকৃতি নিশ্চিতকরণ: দলীয় নীতিতে আমাদের ভূমিকা ও অবস্থান স্পষ্টভাবে উল্লেখ করতে হবে। যারা জীবন বাজি রেখে রাজপথে দাঁড়িয়েছে, ভবিষ্যৎ রাজনীতিতে তাদের অবস্থান কী তা পরিষ্কার করতে হবে।

৫। আহত জুলাই যোদ্ধাদের যথাযথ মূল্যায়ন দলীয়ভাবে নিশ্চিত করা: যারা আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ হয়েছেন, চোখ হারিয়েছেন, পঙ্গু হয়েছেন কিংবা শারীরিক ও মানসিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন তাদের ত্যাগ ও অবদান দলীয়ভাবে স্বীকৃতি দিতে হবে।