যশোরে আলোচনায় ‘কম বয়সী’ প্রার্থী শ্রাবণ
									যশোরের ছয়টি আসনের মধ্যে পাঁচটির দলীয় মনোনয়ন চূড়ান্ত করেছে বিএনপি। এর মধ্যে কম বয়সি ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি রওনাকুল ইসলাম শ্রাবণ মনোনয়ন পেয়ে আলোচনার সৃষ্টি করেছেন।
সোমবার ২৩৮ প্রার্থীর সম্ভাব্য তালিকা ঘোষণা করেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এ সময় বেশ কয়েকজন তরুণ প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেন।
তার মধ্যে রয়েছে যশোর-৬ (কেশবপুর) আসনে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি রওনকুল ইসলাম শ্রাবণ।
এ ছাড়া যশোর-১ (শার্শা) আসনে মফিকুল হাসান তৃপ্তি, যশোর-২ (ঝিকরগাছা-চৌগাছা) আসনে সাবিরা সুলতানা মুন্নি, যশোর-৩ (সদর উপজেলা) আসনে অনিন্দ্য ইসলাম অমিত, যশোর-৪ আসনে ইঞ্জিনিয়ার টি এস আইয়ুবের নাম ঘোষণা করা হয়।
যশোর-৫ (মনিরামপুর) আসনে এখনও পর্যন্ত কাউকে মনোনয়ন দেওয়া হয়নি।
দলীয় মনোনয়ন পেয়েই যশোরে ফিরেছেন সব নেতা। মঙ্গলবার তারা যশোর শহরে প্রয়াত বিএনপি নেতা ও সাবেক মন্ত্রী তরিকুল ইসলামের মৃত্যুবার্ষিকীর কর্মসূচিতে অংশ নেন।
বয়স চল্লিশের রওনাকুল ইসলাম শ্রাবণ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলায় পড়াশোনা শেষ করেছেন। ২০২২ সালে তিনি ছাত্রদলের সভাপতি হন আর ২০২৩ সালে বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্যের পদ পান।
স্থানীয়ভাবে তার পরিবার আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। তার বাবা উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি কাজী রফিকুল ইসলাম উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ছিলেন। তার বড় ভাই মুস্তাফিজুল ইসলাম সাগরদাঁড়ি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ছিলেন। আরেক ভাই মোজাহিদুল ইসলাম উপজেলা যুবলীগের সাবেক আহ্বায়ক। আর ছোট ভাই আযাহারুল ইসলাম উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক আহ্বায়ক।
এই অবস্থার মধ্যেও শ্রাবণ জাতীয়তাবাদী রাজনীতির বার্তা নিয়ে তৃণমূলে গেছেন এবং নেতাকর্মীদের সংগঠিত করেছেন।
রওনাকুল ইসলাম শ্রাবণ বলেন, “আমরা যারা ছাত্ররাজনীতি করি আমাদের সবার টার্গেট থাকে নিজ জেলা বা উপজেলায় জনগণের প্রতিনিধিত্ব করা। আমার আত্মবিশ্বাস ছিল, দল আমার দীর্ঘ দিনের ত্যাগ, পরিশ্রমের মূল্যায়ন করবে।
“আমার পারিবারিক ব্যাকগ্রাউন্ড নির্বাচনে কোনো প্রভাব ফেলবে না। আমি চাই, কেশবপুরবাসী সবার মন জয় করেই, ধানের শীষ প্রতীকের হাত ধরেই এ আসনটিকে আমি উপহার দিতে চাই।”
একমাত্র নারী প্রার্থী হয়েছেন যশোর-২ আসনের সাবিরা সুলতানা মুন্নী। তিনি ঝিকরগাছা উপজেলা বিএনপির সভাপতি ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান। তার স্বামী যশোর জেলা বিএনপির অর্থ বিষয়ক সম্পাদক এবং ঝিকরগাছা উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি নাজমুল ইসলামকে ২০১১ সালের ১৪ ডিসেম্বর অপহরণ করে হত্যা করা হয়।
সাবিরা সুলতানা মুন্নি বলেন, “আমার স্বামী নাজমুল ইসলামের অবর্তমানে আমি ঝিকরগাছা-চৌগাছাবাসীর কাছে আমার দায়িত্বের জায়গা থেকে এসেছিলাম। দীর্ঘ ১৫ বছর আমি কাজ করেছি। যুবসমাজকে সঙ্গে নিয়ে আমি কাজ করতে চাই। দলমত নির্বিশেষে সবার জনপ্রতিনিধি আমি হতে চাই।”
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক (খুলনা বিভাগ) অনিন্দ্য ইসলাম অমিত বলেন, “একটি বৃহৎ দলে একাধিক মনোনয়ন প্রত্যাশী থাকে। কিন্তু তারপরেও একজনকে বেছে নিতে হয়। সেই কারণে দল একজনকে বেছে নিতে পেরেছে।
“আমি বিশ্বাস করি, সবাই দেশের বৃহত্তর স্বার্থে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জাতীয়তাবাদী শক্তির বিজয় সুনিশ্চিত করবার জন্য যার যার জায়গা থেকে কাজ করব।”
যশোরের আটটি উপজেলা নিয়ে গঠিত ছয়টি সংসদীয় আসনে মোট ভোটার ২৪ লাখ সাত হাজার ৬৫৫ জন।