নভেম্বরে গণভোট, আরপিও আর সংশোধন নয়: ইসিকে জামায়াত
জোটগতভাবে ভোট করলেও নিজ দলের প্রতীকে নির্বাচন করতে হবে—এমন বিধান যেন কোনোভাবেই বদলানো না হয়, সেই দাবি নির্বাচন কমিশনের কাছে তুলে ধরেছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী।
সেই সঙ্গে জুলাই সনদ বাস্তবায়নের জন্য আগামী মাসেই গণভোট আয়োজনের দাবি তুলেছে দলটি।
মঙ্গলবার প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ এম এম নাসির উদ্দিনের সঙ্গে বৈঠক শেষে এসব দাবি তুলে ধরার কথা জানিয়েছেন জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার।
জোটে ভোট করলেও নিজ দলের প্রতীকে নির্বাচন করতে হবে—এমন বিধান সংবলিত গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) সংশোধন অধ্যাদেশে বৃহস্পতিবার চূড়ান্ত অনুমোদন দেয় উপদেষ্টা পরিষদ।
তবে এ বিধান নিয়ে আপত্তি তুলে জোটভুক্ত যেকোনো দলের প্রতীকে ভোট করার বিদ্যমান নিয়ম বহাল রাখার দাবি তুলেছে বিএনপি। সেই সঙ্গে দলটি সংসদ নির্বাচন ও গণভোট একসঙ্গে আয়োজনের কথা বলেছে।
জামায়াত নেতা গোলাম পরওয়ার বলেন, “ভোটের আগেই বিএনপি লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড লঙ্ঘনের মতো আচরণ করছে। কোনোভাবেই আরপিও আর সংশোধন করা যাবে না। নভেম্বরেই গণভোট করতে হবে।”
জামায়াতের ১৮ দফা দাবি
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করতে ইসির সঙ্গে বৈঠকে ১৮ দফা দাবি উত্থাপন করা হয়েছে বলে জানান জামায়াতে ইসলামী সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার।
তিনি বলেন, “নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে বৈঠকটি হয়েছে অত্যন্ত খোলামেলা, আন্তরিক ও সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে। প্রতিটি বিষয় নিয়ে দীর্ঘ আলোচনা হয়েছে। কমিশন আমাদের বক্তব্য মনোযোগ দিয়ে শুনেছেন ও কিছু বিষয়ে ব্যাখ্যা দিয়েছেন।
“আমরা তাদের আন্তরিকতা নিয়ে সন্তুষ্ট। আমরা লিখিতভাবে আমাদের ১৮ দফা দিয়েছি, বলেছি এর বাস্তবায়ন ছাড়া সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়।”
মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, “১৮ দফা দাবির মধ্যে অন্যতম হলো—জাতীয় নির্বাচনের আগে গণভোট আয়োজন করতে হবে এবং তা আগামী নভেম্বরের মধ্যেই সম্পন্ন করতে হবে। কারণ জনগণকে ভোটের আগে জাতীয় সনদে প্রস্তাবিত কাঠামোগত পরিবর্তন সম্পর্কে জানতে হবে।”
তিনি বলেন, “একই দিনে জাতীয় নির্বাচন ও গণভোট হলে টেকনিক্যাল ও নিরাপত্তাজনিত জটিলতা দেখা দিতে পারে। তাই গণভোট আলাদা সময়ে আয়োজনের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।”
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সুপারিশে নির্বাচন কমিশন সম্মতি জানানোর পর সরকার আরপিও সংশোধনে সায় দিয়েছে।
জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, “আরপিও সংশোধন চূড়ান্ত হয়েছে। আমরা ইতিমধ্যে সংশোধিত বিধান মেনে নিয়েছি।
“এখন আবার পরিবর্তনের দাবি করা লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড লঙ্ঘনের সমান। ভোটের চার মাসে আগে বিএনপির এ দাবি এটি সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য অশনিসংকেত।”
ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা হিসেবে ইসলামী ব্যাংকসহ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের নিয়ে বিএনপির আপত্তির বিষয়ে মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, “যেকোনো দল বা প্রতিষ্ঠানকে রাজনৈতিকভাবে টার্গেট করা অত্যন্ত দুঃখজনক। আমরা এমন নেতিবাচক রাজনীতি চাই না।”
বৈঠকে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এ টি এম মাছুম, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল রফিকুল ইসলাম খান, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এইচ এম হামিদুর রহমান আযাদ, মতিউর রহমান আকন্দ, নুরুল ইসলাম বুলবুল, সেলিম উদ্দিন।