আরেক ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থার শঙ্কা রেখে ঘরে ফিরিনি - নাহিদ ইসলাম

নতুন সংবিধানের দাবিতে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে এনসিপির সমাবেশে বক্তব্য দেন নাহিদ ইসলাম।
আওয়ামী লীগ সরকার পতনের দাবিতে ঘোষিত এক দফা আন্দোলনের বর্ষপূর্তিতে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আয়োজিত সমাবেশে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নেতারা আবারও ফ্যাসিবাদবিরোধী সংগ্রামের প্রত্যয় পুনর্ব্যক্ত করেছেন। সমাবেশে বক্তৃতা দিতে গিয়ে এনসিপির সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম বলেন, “একটি ফ্যাসিবাদী শাসনব্যবস্থা হটিয়ে আরেকটি ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থার সম্ভাবনা রেখে আমরা ঘরে ফিরিনি।”
গত বছর জুলাই-আগস্টের অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেওয়া ছাত্র সংগঠনের পক্ষ থেকে এক দফা দাবি ঘোষণা করেছিলেন নাহিদ ইসলাম। সেই ধারাবাহিকতায় আজ রোববার সন্ধ্যায় আয়োজিত এই সমাবেশে তিনি বলেন, “আমরা নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত ও ফ্যাসিবাদবিরোধী ব্যবস্থার জন্য এনসিপি গঠন করেছি। জনগণের দীর্ঘদিনের ক্ষোভ ও আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নে ছাত্র–শ্রমিক–জনতা নিয়ে গড়া এই রাজনৈতিক দল কাজ করবে।”
সমাবেশে ‘নতুন বাংলাদেশের ইশতেহার’ শিরোনামে ২৪ দফা কর্মসূচি ঘোষণা করেন নাহিদ। এতে নতুন সংবিধান প্রণয়ন, দ্বিতীয় প্রজাতন্ত্র গঠন, রাষ্ট্রীয় সংস্কার, আইনের শাসন ও দুর্নীতিমুক্ত প্রশাসনসহ শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষি, শ্রম, জলবায়ু ও পররাষ্ট্রনীতির ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়।
এনসিপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্যসচিব তাসনিম জারা বলেন, “আমাদের রাজনীতি হবে সমস্যাভিত্তিক। আমরা মানুষের কথা শুনে তাদের সমস্যার সমাধানে কাজ করতে চাই। রাজনীতিকে এমনভাবে সাজাতে চাই, যাতে প্রবাসীরাও ভোট দিতে পারেন এবং প্রতিটি নাগরিকের অধিকার নিশ্চিত হয়।”
তিনি আরও বলেন, “স্বাস্থ্যখাতকে প্রযুক্তিনির্ভর করে গড়ে তুলব। প্রতিটি নাগরিকের জন্য থাকবে স্বাস্থ্য ডেটাবেজ, যাতে ভুল চিকিৎসা ও অপ্রয়োজনীয় পরীক্ষা বন্ধ হয়। পাশাপাশি প্রাথমিক চিকিৎসা ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করব।”
উত্তরাঞ্চল থেকে আসা এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক সারজিস আলম বলেন, “আমরা আর মুজিববাদী সংবিধান চাই না। বাহাত্তরের সংবিধান ছিল একটি দলের দলিল, সেটি বাংলাদেশের জনগণের নয়। আজ আমরা নতুন সংবিধানের দাবি জানাতে এসেছি।”
তিনি দাবি করেন, গত বছরের আন্দোলনে শহীদ হওয়া অনেক কর্মীর পরিবার আজও বিচার ও পুনর্বাসনের অপেক্ষায় আছেন। “আমরা সেই শহীদদের জন্য বিচার চাই, তাদের পরিবার ও আহতদের জন্য পুনর্বাসন ও চিকিৎসার নিশ্চয়তা চাই,” বলেন সারজিস।
সমাবেশে দলের কেন্দ্রীয় ও আঞ্চলিক নেতারা উপস্থিত ছিলেন।