আফগানিস্তানের সঙ্গে আলোচনার মধ্যেই সীমান্তে সংঘর্ষ, প্রাণহানির খবর দিল পাকিস্তান
আফগানিস্তান সীমান্তের কাছে একাধিক সংঘর্ষে ৫ পাকিস্তানি সেনা ও ২৫ জঙ্গি নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে পাকিস্তান।
কয়েক বছরের মধ্যে দুই প্রতিবেশীর ভেতর হওয়া সবচেয়ে রক্তক্ষয়ী সংঘাতের পর দুই দেশের প্রতিনিধিরা যখন আলোচনা চালাচ্ছে তখন ইসলামাবাদের তরফ থেকে এ সংঘর্ষ ও প্রাণহানির খবর এল, বলছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
রোববার পাকিস্তানের সামরিক বাহিনীর গণমাধ্যম শাখা জানায়, শুক্র ও শনিবার পাকিস্তানের উত্তরপশ্চিমের পাহাড়ি এলাকা কুররম ও নর্থ ওয়াজিরিস্তান দিয়ে আফগানিস্তান থেকে অনুপ্রবেশের চেষ্টা চালিয়েছিল জঙ্গিরা।
“এই অনুপ্রবেশ চেষ্টা নিজেদের ভূমি থেকে বিস্তৃত সন্ত্রাসবাদ মোকাবেলায় আফগান সরকারের উদ্দেশ্য নিয়ে সন্দেহ তৈরি করছে”, বলেছে তারা।
পাকিস্তান সামরিক বাহিনীর এ বক্তব্য নিয়ে রয়টার্স তালেবান সরকারের প্রধান মুখপাত্র ও তাদের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করলেও তাৎক্ষণিকভাবে তাদের কাছ থেকে প্রতিক্রিয়া পায়নি।
আফগানিস্তানে ক্ষমতাসীন তালেবানরা অবশ্য আগে থেকেই জঙ্গিদের আশ্রয় দেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে। তারা বলেছে, পাকিস্তানের সামরিক অভিযান আফগানিস্তানের সার্বভৌমত্ব লঙ্ঘন করছে।
চলতি মাসের শুরুর দিকে দুই প্রতিবেশী দেশ যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েছিল, তার পুনরাবৃত্তি রুখতে দুই দেশের কর্মকর্তারাই এখন তুরস্কের ইস্তাম্বুলে আলোচনা চালাচ্ছেন। ২০২১ সালে তালেবান কাবুলের ক্ষমতা পুনর্দখলের পর পাকিস্তান-আফগানিস্তানের মধ্যে অক্টোবরের মতো এত তীব্র সংঘর্ষ আর দেখা যায়নি।
ইসলামাবাদের অভিযোগ, সম্প্রতি তাদের বাহিনীগুলোর ওপর হামলা চালানো জঙ্গিরা আফগানিস্তানে নিরাপদ আশ্রয়ে থেকেই কার্যক্রম চালাচ্ছে। ওই জঙ্গিদের নির্মূলে পাকিস্তান আফগানিস্তানে বিমান হামলা চালালে পরে দুই পক্ষের মধ্যে সীমান্তে তুমুল গুলিবিনিময় শুরু হয় ও সংঘর্ষ বেঁধে যায়।
পরে গত সপ্তাহের রোববার উভয় দেশ দোহায় একটি যুদ্ধবিরতিতে পৌঁছায়।
এদিকে শনিবার পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ বলেছেন, যুদ্ধবিরতি চলছে এবং আফগানিস্তানও শান্তি চায় বলে তার বিশ্বাস।
কিন্তু দুই দেশ যদি ইস্তাম্বুলে কোনো চুক্তিতে পৌঁছাতে না পারে তাহলে ফের যুদ্ধ শুরু হয়ে যাবে কাবুলকে হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন তিনি।
শুক্র ও শনিবার যারা হামলা চালিয়েছে তাদেরকে ‘ফিতনা আল খারিজি’ বা ‘বাইরের মদদপুষ্ট সন্ত্রাসী’ বলে অভিহিত করেছে পাকিস্তানের সামরিক বাহিনী। জঙ্গিবাদী আদর্শে উদ্বুদ্ধ ও ‘বিদেশিদের মদদপুষ্টদের’ ক্ষেত্রে এই তকমা ব্যবহার করে তারা।