স্বাস্থ্য খাত সংস্কার প্রতিবেদন সংশোধনের উদ্যোগ

স্বাস্থ্য খাত সংস্কার কমিশনের সুপারিশ নিয়ে সিরডাপে আয়োজিত সংলাপে বক্তারা
স্বাস্থ্য খাত সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনে যেসব ভুল বা অসংগতি রয়েছে, তা সংশোধনের কাজ চলছে বলে জানিয়েছেন কমিশনের এক সদস্য। প্রতিবেদনে স্বাস্থ্য খাত নিয়ে জনগণের গণতান্ত্রিক প্রত্যাশার প্রতিফলন ঘটেছে উল্লেখ করে বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, ২০২৫ সালের মধ্যেই বাস্তবায়নযোগ্য সুপারিশগুলোর তালিকা তৈরি করা জরুরি।
আজ রোববার সকালে রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে ‘সংস্কার কমিশন সুপারিশ পর্যালোচনা ও উত্তরণের উপায়’ শীর্ষক এক সংলাপে এসব আলোচনা হয়। অনুষ্ঠানটির আয়োজন করে পাওয়ার অ্যান্ড পার্টিসিপেশন রিসার্চ সেন্টার (পিপিআরসি) এবং ইউএইচসি ফোরাম। এতে বক্তারা কমিশনের প্রতিবেদনের দুর্বলতা তুলে ধরার পাশাপাশি এর সুপারিশ বাস্তবায়নে করণীয় দিকগুলো নিয়েও মতামত দেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক সৈয়দ আবদুল হামিদ বলেন, প্রতিবেদনটি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ‘বিল্ডিং ব্লকস’ মডেলের ভিত্তিতে তৈরি। তবে সংস্কার বলতে আমূল পরিবর্তনের যে কথা বোঝায়, সেটি এতে পুরোপুরি প্রতিফলিত হয়নি। তিনি বলেন, “এই দলিলটি দীর্ঘমেয়াদে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে, তাই ভুলত্রুটি সংশোধন জরুরি।”
কমিশনের সদস্য অধ্যাপক সৈয়দ আকরাম হোসেন জানান, প্রতিবেদন সংশোধনের কাজ চলমান। প্রতিবেদনে অনেক বানান ভুল, অসংলগ্ন বাক্য ও বিভ্রান্তিকর তথ্য রয়েছে, যা দূর করা হচ্ছে।
পিপিআরসির নির্বাহী চেয়ারম্যান হোসেন জিল্লুর রহমান বলেন, প্রতিবেদন চূড়ান্ত নয়—এখন এর সুপারিশগুলো সামাজিকভাবে গ্রহণযোগ্য ও বাস্তবায়নযোগ্য করে তোলা গুরুত্বপূর্ণ। তিনি বলেন, “২০২৫ সালের মধ্যেই বাস্তবায়নযোগ্য সুপারিশের তালিকা তৈরির কাজ শুরু হওয়া দরকার।”
আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক অধ্যাপক আবুল কালাম আজাদ, অর্থনীতিবিদ রুমানা হক, ইউএইচসি ফোরামের মো. আমিনুল হাসানসহ অনেকে। তাঁরা প্রতিবেদনের সমালোচনা করলেও এর প্রয়োজনীয়তা ও সময়োপযোগিতা স্বীকার করেন।
বাংলাদেশ ঔষধ শিল্প সমিতির জ্যেষ্ঠ ভাইস প্রেসিডেন্ট এম মোসাদ্দেক হোসেন বলেন, “ওষুধের দাম নয়, মানসম্পন্ন ও সহজপ্রাপ্য ওষুধ নিশ্চিত করতে হবে। মান নিয়ে কোনো ছাড় দেওয়া যাবে না।”
আইসিডিডিআরবির সাবেক জ্যেষ্ঠ বিজ্ঞানী ইকবাল আনোয়ার বলেন, “রাজনৈতিক বিভাজন বা বিতর্কে পড়ে যাতে প্রতিবেদন বাস্তবায়নে বাধা না আসে, তা নিশ্চিত করতে হবে।”
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন হালিদা হানুম আখতার, সৈয়দ লিয়াকত আলী, আবু মোহাম্মদ জাকির হোসেন ও খন্দকার এ মামুন।