শনিবার ২১ জুন ২০২৫, আষাঢ় ৮ ১৪৩২, ২৪ জ্বিলহজ্জ ১৪৪৬

ব্রেকিং

তেহরানে ধ্বংসস্তূপে উদ্ধার চলছেই, মৃতের সংখ্যা ছাড়াল ৪৫০ ইরানে বাংলাদেশিদের সহায়তায় হটলাইন চালু উপদেষ্টার গাড়িবহর আটকে বিক্ষোভ: সিলেটে তিনজন কারাগারে ইসরায়েলের টার্গেটে ইরানের রাষ্ট্রীয় সম্প্রচার ভবন লন্ডনে ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও তারেক রহমানের বৈঠক ১৩ জুন তারেক রহমান শিগগিরই দেশে ফিরবেন: ফখরুল রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হবে কাঁচের মতো স্বচ্ছ ঘর: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা নির্বাচনের ঘোষিত সময় মাথায় রেখে যথাসময়ে রোডম্যাপ দেবে ইসি: উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন তুললেন ছাত্রদল নেতা নাছির উদ্দিন মণিপুরে আবার উত্তেজনা, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে প্রশাসনের চাপে ঢাকার ৪ থানায় সক্রিয় অর্ধশতাধিক অপরাধী দল জাতীয় নির্বাচন ২০২৬ সালের এপ্রিলের প্রথমার্ধে: প্রধান উপদেষ্টা প্রধান উপদেষ্টার ঘোষণায় জাতির প্রত্যাশা পূরণ হয়নি: সালাহউদ্দিন আহমদ জুলাই সনদ–ঘোষণাপত্র হলে ঘোষিত সময়ে নির্বাচনে আপত্তি নেই: এনসিপি ২৫ কিলোমিটার যানজট, ২৪ ঘণ্টায় পারাপার ৬৪ হাজার যানবাহন বান্দরবানের রুমা ও থানচি ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা আংশিকভাবে প্রত্যাহার গাজায় যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবে যুক্তরাষ্ট্রের ভেটো, জাতিসংঘ নিরাপত্তা গরম মসলার বাজার শীতল: ক্রেতা কমে যাচ্ছে, দাম কিছুটা স্থিতিশীল ঈদে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে দই-মিষ্টি মজুত, রংপুরে হিমাগারে অভিযান ও দুই লাখ টাকা জরিমানা বান্দরবানের লামায় পাহাড় ধসের শঙ্কায় ৬০ রিসোর্ট বন্ধ নির্বাচন নিয়ে তরুণদের প্রতি অসত্য অভিযোগ ও বাস্তবতা ভারতের মুসলমানদের কেন বারবার দেশপ্রেমের প্রমাণ দিতে হয় সংবিধান পরিবর্তন ছাড়া ফ্যাসিবাদ বিলোপ সম্ভব নয়: এনসিপি মুখ্য সমন্বয়ক একুশের বন্ধুত্বে আগামীর পথচলা: বার্ষিক সম্মেলনে ২১তম বিসিএস প্রশাসন ফোরাম বিজিএমইএ`র নতুন নেতৃত্বে আসছেন বাবু, নিরঙ্কুশ জয়ের ইঙ্গিত জিলহজ মাসের আমল ও কোরবানির তাৎপর্য চট্টগ্রামে নারীকে লাথির ঘটনায় ভাইরাল আকাশ চৌধুরী বহিষ্কৃত, জামায়াতের বিবৃতি সংকট নিরসনে উদ্যোগ নেই, আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিল পবিস শ্রমিকরা আনচেলত্তির স্বপ্ন - রিয়াল মাদ্রিদের মতো করে খেলাবেন ব্রাজিলকে ডিমের দাম এখনো চড়া, ডজন ১৩০–১৪০ টাকায় বিক্রি বৈরী আবহাওয়ার কারণে নোয়াখালীর হাতিয়া দ্বীপের সঙ্গে সারাদেশের নৌ-যোগাযোগ বন্ধ হারের পর লিটনের মনোভাব - এখনো দুই ম্যাচ বাকি কাল থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য দেশের সব জুয়েলারি দোকান বন্ধ ঘোষণা যুক্তরাষ্ট্র চীনা শিক্ষার্থীদের ভিসা বাতিলের প্রক্রিয়া শুরু করবে ডিএনএ টেস্ট করে নামফলক ও মর্যাদা চায় শহীদ পরিবারের সদস্যরা বেতন না পেয়ে ডাকাতি, জাহাজের চিফ ইঞ্জিনিয়ারসহ তিনজন আটক “বাংলাদেশে কৌশলগত স্বার্থ নেই দক্ষিণ কোরিয়ার”—রাষ্ট্রদূত পার্ক ইয়ং সিক “শাপলার হত্যাকাণ্ডের বিচার চাই”—হেফাজতের বিবৃতি মির্জা আব্বাস: “করিডর আর স্টারলিংক আনা হচ্ছে আরাকান আর্মির জন্য” জিলহজ মাসের চাঁদ দেখে যে দোয়া পড়বেন নির্বাচনের আগে যতটুকু দরকার, ততটুকুই সংস্কার করতে হবে: মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম ‘চিন্তার স্বাধীনতাও হারাচ্ছি?’— নারী কমিশন বিতর্কে গীতিআরার উদ্বেগ ইউক্রেনে রাশিয়ার টানা হামলায় নিহত ১২, কঠোর চাপের আহ্বান জানালেন জেলেনস্কি সংস্কার, বিচার ও নির্বাচন – তিনটি কঠিন দায়িত্ব পালনে সচেষ্ট আমরা জুলাই অভ্যুত্থান ক্ষমতার পালাবদল নয়, এটি মৌলিক সংস্কার: নাহিদ হলুদ সাংবাদিকতা’ বিরোধী স্লোগানে উত্তাল শিক্ষক মিছিল ভারতের নিষেধাজ্ঞায় আখাউড়া বন্দর দিয়ে রপ্তানি কমেছে ৪০% বিএনপির অবস্থান কর্মসূচি চলছে, দুই উপদেষ্টার পদত্যাগ দাবি জাতীয় স্বার্থে অভিমান ভুলে দায়িত্বশীল হওয়ার আহ্বান : জামায়াত আমির আন্দোলনের পর অবশেষে নিয়োগ পেলেন ৪৩তম বিসিএসের বাদ পড়া ১৬২ জন নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠনের দাবিতে ইসির সামনে এনসিপির বিক্ষোভ কাল বাংলাদেশে স্টারলিংকের যাত্রা, স্যাটেলাইট ইন্টারনেটের নতুন যুগ শুরু নরওয়ের দৃঢ় সমর্থন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি বিগত সরকারের সময় প্রতিষ্ঠানগুলো ধ্বংসপ্রাপ্ত, এমন অবস্থা ছিল যে খতিবকেও পালাতে হয়েছিল: বাণিজ্য উপদেষ্টা গায়ের জোরে নগর ভবন দখল করে আন্দোলন চালাচ্ছে বিএনপি আবারও রাজপথে নামার ইঙ্গিত আসিফের, সতর্ক করলেন হাসনাত গোপন অধ্যাদেশ বাতিলের দাবিতে আন্দোলন স্থগিত, ২০ মে আলোচনায় বসবে ঐক্য পরিষদ ভারতের আমদানি নিষেধাজ্ঞা সীমান্ত বাণিজ্যে অনিশ্চয়তা তৈরি করছে ভারতের নতুন সিদ্ধান্তে উত্তর-পূর্বাঞ্চল দিয়ে বাংলাদেশি ভোগ্যপণ্য আমদানি বন্ধ গত ৯ মাসে জুলাই-যোদ্ধাদের ওপর ৩৮টি হামলা জবি’র ৪ দফা দাবি মেনে নেওয়ায় আন্দোলনের সমাপ্তি ঘোষণা ডিবি থেকে মুক্তির পর আন্দোলনে উল্লাস জবি শিক্ষার্থীর গাজা দখলে নেওয়ার আকাঙ্ক্ষা পুনর্ব্যক্ত করলেন ট্রাম্প শাহরিয়ার হত্যাকাণ্ডে বিচার নিশ্চিতের অঙ্গীকার উপদেষ্টা আসিফের সোনার দাম ভরিতে কমল ৩ হাজার ৪৫২ টাকা, নতুন দর কার্যকর শুক্রবার থেকে ঢাবি শিক্ষার্থীর মৃত্যু: নিরাপত্তা নিশ্চিতে বড় পদক্ষেপ প্রশাসনের আওয়ামী লীগের কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধে ভারতের উদ্বেগ শ্রীনগরজুড়ে বিস্ফোরণ, যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের অভিযোগ ওমর আব্দুল্লাহর উপদেষ্টা পরিষদের সিদ্ধান্ত: আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে শাহবাগ অবরোধ ‘চলবে’, শনিবার গণজমায়েত ড্রোন যুদ্ধ: ভারত-পাকিস্তান বিরোধের নতুন অধ্যায় আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে সরকার গুরুত্বসহকারে বিবেচনায় নিচ্ছে: প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং আ.লীগ নিষিদ্ধ না হওয়া পর্যন্ত শাহবাগ ছাড়বেন না আন্দোলনকারীরা ‘আপ বাংলাদেশ’–এর আত্মপ্রকাশ পূর্বঘোষণা ছাড়া ভারত সফরে সৌদি প্রতিমন্ত্রী, পাকিস্তান-ভারত উত্তেজনায় কূটনৈতিক তৎপরতা তুঙ্গে দ্রুত সিদ্ধান্ত না এলে সারা দেশ থেকে ঢাকা অভিমুখে মার্চের হুঁশিয়ারি নাহিদ ইসলামের দেশীয় ওষুধ কোম্পানি রেনাটাকে ৭০০ কোটি টাকা ঋণ দিচ্ছে আইএফসি তারেক রহমান: সরকার হয়তো স্বৈরাচারের দোসরদের দেশত্যাগে সহায়তা করছে জাতীয় নিরাপত্তা ইস্যুতে ভারতের নির্দেশে ৪ বাংলাদেশি টিভি চ্যানেল ইউটিউবে বন্ধ

অর্থনীতি

সরকারের নানা উদ্যোগ: ভাঙেনি সিন্ডিকেট, বাজারে অস্বস্তি

 প্রকাশিত: ১১:৫৩, ২৭ নভেম্বর ২০২৪

সরকারের নানা উদ্যোগ: ভাঙেনি সিন্ডিকেট, বাজারে অস্বস্তি

নিত্যপণ্যের দাম কমাতে অন্তর্বর্তী সরকার নানা উদ্যোগ নিলেও স্বস্তি ফেরেনি বাজারে। বাজার স্থিতিশীল রাখতে চাল, আলু, পেঁয়াজ, ভোজ্যতেল ও ডিম আমদানিতে শুল্ক ছাড়, নিত্যপণ্যের বাজার পরিস্থিতি ও সরবরাহ ব্যবস্থা পর্যালোচনা করতে বিশেষ টাস্কফোর্স গঠন, টিসিবি ও ওএমএস এবং খাদ্যবান্ধব কর্মসূচিবিষয়ক নীতিমালা যুগোপযোগী করাসহ জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করছে।

তারপরও বেশ কিছু নিত্যপণ্যের দাম আরও বেড়েছে।

এতে নতুন করে দাম বাড়ার তালিকায় যুক্ত হয়েছে আটা, ময়দা, আলু, পেঁয়াজ, সয়াবিন তেল, পাম অয়েল, মুরগি ও গরুর মাংস। মোটা চাল ও চিনির দাম সামান্য হলেও বেড়েছে। সবজির দাম এতদিন চড়া ছিল। কয়েক দিন ধরে কমছে। সব মিলিয়ে অস্বস্তিতে রয়েছে ভোক্তারা। সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছে স্বল্প আয়ের মানুষ। সংশ্লিষ্টরা বলেছেন, বাজারে এখনো সিন্ডিকেট কাজ করছে। এই সিন্ডিকেটের কারণেই বাজার ব্যবস্থা রীতিমতো অসহায়।

বাজার বিশ্লেষকেরা মনে করছেন, যেকোনো উদ্যোগের কার্যকারিতা নির্ভর করে তার ফলাফলের ওপর। অন্তর্বর্তী সরকার মূল্য নিয়ন্ত্রণে বেশ কিছু পদক্ষেপ নিলেও ফলাফলের নিরিখে এখনো বড় ধরনের কোনো প্রভাব পড়েনি। কারণ মূল্যস্ফীতির চাপ এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, বাজার শান্ত করতে মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলোর সমন্বিত প্রচেষ্টা প্রয়োজন। পণ্যের উৎপাদন, চাহিদা ও সরবরাহে তথ্যগত ঘাটতি রয়েছে। মূল্য নিয়ন্ত্রণে সরবরাহ বাড়ানো জরুরি। শুল্ক কমানো হলো; কিন্তু আমদানি বাড়ল না, তাতে সুফল পাওয়া যাবে না। চাল, পেঁয়াজ, আলু ও ডিমের বাজারে শুল্ক কমানোর ইতিবাচক প্রভাব না পড়ার বড় কারণ আমদানি বৃদ্ধি না পাওয়া। নিত্যপণ্যের সরবরাহ ব্যবস্থা ঠিক রাখা ও এই ব্যাপারে বিঘ্ন সৃষ্টিকারীদের যত দূর সম্ভব নিয়ন্ত্রণে আনাটা জরুরি বলে মনে করেন তারা। এ ছাড়া টিসিবি ও খাদ্য অধিদপ্তরের মাধ্যমে আরও বিস্তৃত পরিসরে নিত্যপণ্য বিক্রি করা দরকার, যাতে আরও বেশি মানুষ সুফল পান।

জানা গেছে, সরকার খাদ্য অধিদপ্তরের মাধ্যমে খোলাবাজারে বিক্রি (ওএমএস) কর্মসূচির আওতায় ৩০ টাকা কেজি দরে চাল ও ২৪ টাকা কেজি দরে আটা বিক্রি বাড়িয়েছে। খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির আওতায় ৫০ লাখ পরিবারের জন্য সেপ্টেম্বর থেকে নভেম্বর এবং মার্চ ও এপ্রিল—এই পাঁচ মাস ১৫ টাকা কেজি দরে ৩০ কেজি চাল দেওয়ার আগের কর্মসূচি চালু রাখা হয়েছে। সুলভ মূল্যে ডিম, আলু, পেঁয়াজ, কাঁচা পেঁপে ও বিভিন্ন ধরনের সবুজ শাকসবজিসহ প্যাকেজ আকারে ১০টি কৃষিপণ্য বিক্রি করছে কৃষি বিপণন অধিদপ্তর। ১৫ অক্টোবর শুরু হওয়া এ কার্যক্রমের নাম ‘কৃষি ওএমএস কর্মসূচি’।

টিসিবির ফ্যামিলি কার্ডধারীর মধ্যে ভোজ্যতেল ও মসুর ডাল বিক্রি করা হচ্ছে। আগে পেঁয়াজ বিক্রি করা হলেও আপাতত বন্ধ। এর বাইরে টিসিবি ট্রাকে করে ভর্তুকি মূল্যে নিত্যপণ্য বিক্রি করছে। তবে টিসিবির ট্রাকের পেছনে লাইনে দাঁড়িয়ে পণ্য না পেয়ে অনেককেই ফেরত যেতে হয়। এ কার্যক্রম শুধু শহরাঞ্চলে সীমাবদ্ধ।

ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) তথ্য অনুযায়ী, গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে মাঝারি চাল, নন-ব্র্যান্ড খোলা সয়াবিন তেল, পাম তেল, আলু, পেঁয়াজ, রসুন ও এলাচের দাম বেড়েছে।

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) হিসাবেও মূল্যস্ফীতি বেড়েছে। অক্টোবরে সার্বিক মূল্যস্ফীতি বেড়ে হয়েছে ১০ দশমিক ৮৭ শতাংশ, যা গত তিন মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ। খাদ্যমূল্য স্ফীতি দাঁড়িয়েছে ১২ দশমিক ৬৬ শতাংশে। উচ্চ মূল্যস্ফীতির কারণে ভর্তুকি মূল্যে টিসিবির পণ্য কিনতে মানুষের দীর্ঘ লাইন দেখা যাচ্ছে।

এ বছরের নভেম্বরের শুরুতে জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর প্রকাশিত ইন্টিগ্রেটেড ফুড সিকিউরিটি ফেজ ক্লাসিফিকেশনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার প্রায় ২৩ দশমিক ৩ মিলিয়ন বা ২৬ শতাংশ মানুষ তীব্র খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে।

ওই প্রতিবেদনে ও স্থানীয় ব্যবসায়ীরা এজন্য অভ্যন্তরীণ ও বাহ্যিক কারণগুলোকে দায়ী করেছে। এর মধ্যে একটি কারণ হলো আমদানি কমে যাওয়া। অভ্যন্তরীণ কারণগুলোর মধ্যে আছে বন্যার কারণে ফসলের ক্ষতি, এ সময়ে সরবরাহ ব্যবস্থা ব্যাহত হয়েছে। এ ছাড়া বাজার সিন্ডিকেট আরেকটি কারণ। বাজার সিন্ডিকেটের কারণে নিত্যপণ্যের দাম বেড়েছে।

রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, প্রতি কেজি প্যাকেট ময়দায় ৬৫ থেকে ৭৫ টাকা, দেশি পেঁয়াজ ১১০ থেকে ১২০ টাকা ও আমদানিকৃত পেঁয়াজ ১০০ থেকে ১১০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া পাঁচ লিটারের বোতলজাত সয়াবিন তেলে ৮০০ থেকে ৮১০ টাকা ও খোলা পামঅয়েলে ১৪৪ থেকে ১৪৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। গরুর মাংসের কেজি ৭৫০ থেকে ৮০০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে। ফার্মের বাদামি রঙের ডিমের হালি ৫০ টাকা ও ব্রয়লার মুরগির কেজি ১৯০ থেকে ২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

রাজধানীর সুত্রাপুর বাজারে মেসার্স আদনান অ্যান্ড আরাফাত ট্রেডার্সের মালিক মো. ফারুক বাংলানিউজকে বলেন, গত দুই-তিন মাস ধরে অনেক নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বেড়েছে। ফলে, মানুষ খরচ কমাতে বাধ্য হচ্ছেন। তারা পরিস্থিতির সঙ্গে মানিয়ে চলতে লড়াই করছেন। বেশির ভাগ ভোক্তা চাহিদার তুলনায় পণ্য কম নিচ্ছেন। আগে যারা পাঁচ কেজি আটা কিনতেন, তারা এখন দুই থেকে তিনি কেজি আটা কিনছেন। অন্যান্য পণ্যও কেনা কিছুটা কমিয়ে দিয়েছেন।  

রায়সাহেব বাজারে কেনাকাটা করতে আসা বেসরকারি চাকরিজীবী সাইফুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, নিত্যপণ্যের দাম অনেক বেশি। মাসে যে টাকা আয় করি তার অর্ধেক চলে যায় বাসা ভাড়ায় আর বাকিটা যায় বাজার খরচে। মাস শেষে আবার ঋণও করতে হচ্ছে। এভাবে চলা যায় না। সরকার বাজারে সরবরাহ বাড়ানোর জন্য পদক্ষেপ নিলেও কোনো কাজে আসছে না কিছু অসাধু ব্যবসায়ীদের কারণে। তারা সিন্ডিকেট করে বাজার নিয়ন্ত্রণ করে। তারা হঠাৎ বাজারে সরবরাহ কমিয়ে দিয়ে কৃত্রিম সংকট তৈরি করে। পরে দাম বাড়িয়ে বাজারে নতুন করে পণ্য ছাড়ে। যেটা বিগত সরকারের সময়ও আমরা দেখেছি। বর্তমান সরকারের কাছে এসব প্রত্যাশা করিনি। এক্ষেত্রে সরকারকে আরও কঠোর হতে হবে। সাধারণ মানুষকে স্বস্তি দিতে সরকারকে যত রকমের বংবস্থা আছে নিতে হবে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় চলতি বছরের জুলাই থেকে অক্টোবর পর্যন্ত চার মাসে অন্তত ছয় ধরনের নিত্যপণ্যের এলসি কম খোলা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে অপরিশোধিত সয়াবিন তেল, পাম তেল, পেঁয়াজ, ছোলা, পরিশোধিত চিনি ও খেজুর। ঋণপত্র খোলা বেশি কমেছে পেঁয়াজের। গত বছরের তুলনায় চলতি অর্থবছরের প্রথম চার মাসে পেঁয়াজ আমদানিতে ঋণপত্র খোলা কমেছে দুই লাখ টনের কাছাকাছি। অবশ্য সয়াবিনের বীজ, মসুর ডাল ও অপরিশোধিত চিনি আমদানির জন্য ঋণপত্র খোলা বেড়েছে।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) তথ্য বলছে, চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে সয়াবিন তেল, পাম অয়েল ও পেঁয়াজের আমদানি গত বছরের একই সময়ের তুলনায় কমেছে। চলতি অর্থবছরের গত তিন মাসে ৩ লাখ ৩২ হাজার টন পাম তেল আমদানি হয়েছে, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ১৭ শতাংশ কম। এ সময়ে অপরিশোধিত চিনি আমদানি হয়েছে ২ লাখ ৩৯ হাজার টন, যা গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ৫১ শতাংশ কম। কমেছে পেঁয়াজের আমদানিও। গত তিন মাসে পেঁয়াজ আমদানি হয়েছে ১ লাখ ৫৫ হাজার টন। গত বছর একই সময়ে আমদানি হয়েছিল সাড়ে ৩ লাখ টন।

বাজার সংশ্লিষ্টরা বলেছেন, কী কারণে পণ্যগুলোর আমদানি কম হয়েছে, সরকারের উচিত বিষয়টি খতিয়ে দেখা। তা না হলে পণ্যগুলোর দামের লাগাম টেনে ধরা কঠিন হবে। ইতোমধ্যে এসব পণ্যের দাম বাড়তে শুরু করেছে।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, বিশ্ববাজারে ভোজ্যতেল, পাম তেল, চিনি ও গমসহ কয়েকটি পণ্যের দাম বেড়েছে। সেপ্টেম্বরের তুলনায় অক্টোবরে পাম অয়েলের দাম টনপ্রতি ৯৪ ডলার বেড়েছে। একই সময়ে সয়াবিন তেলের দাম টনপ্রতি ৫১ ডলার, গমের দাম ১৩ ডলার এবং চিনির দাম টনপ্রতি চার ডলার বেড়েছে।

সম্প্রতি ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) জানিয়েছে, পণ্য উৎপাদন খরচের ক্রমাগত উচ্চ মূল্য, অদক্ষ বাজার ব্যবস্থা, পণ্য পরিবহনের উচ্চ হার, বাজার আধিপত্য ও উৎপাদনকারীদের খুচরা বাজারে প্রবেশাধিকার স্বল্প সুযোগ ইত্যাদি কারণে খাদ্য মূল্যস্ফীতি বেড়েছে।

ডিসিসিআই সুপারিশ করেছে, মধ্যস্থতাকারীদের তৎপরতা কমিয়ে ও অত্যাবশ্যকীয় খাদ্যপণ্য আমদানির মাধ্যমে সরবরাহ ব্যবস্থা শক্তিশালী করতে হবে। বিশেষ করে যেসব পণ্যের উৎপাদন ও চাহিদার মধ্যে ভারসাম্য নেই। এ ছাড়া স্থানীয় ও আমদানি করা খাদ্যপণ্যের নগদ মেমোর জন্য ট্র্যাকিং সিস্টেম বাস্তবায়ন করতে হবে। পাশাপাশি উৎপাদন খরচ কমাতে সার, তেল ও বিদ্যুতে ভর্তুকি দেওয়ার সুপারিশ করা হয়।

কনজুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট হুমায়ুন কবীর ভূঁইয়া বাংলানিউজকে বলেন, সরকার যেসব উদ্যোগ নিয়েছে সেগুলোতে ব্যাবসায়ীরা লাভবান হলেও ভোক্তা পর্যায়ে গিয়ে সে সুবিধাটা পৌঁছাচ্ছে না। একটা শ্রেণি চায় না পণ্যের দাম কমুক। এজন্য পণ্যের দাম কমছে না। তারা অতিমুনাফা করার জন্য এটা চায় না। সরকার অনেক পণ্যে শুল্ক প্রত্যাহার করেছে, আমদানির অনুমতি দিয়েছে, টাক্সফোর্স গঠন করেছে, ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করছে, টিসিবির মাধ্যমে সুলভমূল্যে পণ্য দিচ্ছে। সরকার আর কী উদ্যোগ নেবে?

তিনি বলেন, মূলত অসাধু ব্যবসায়ীদের কারসাজিতেই পণ্যের দাম বাড়ছে। ব্যবসায়ীদের একটি সিন্ডিকেট আছে, যেটা বিগত সরকারও ভাঙতে পারেনি। তখন আমরা মনে করেছি ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আতত আছে দেখে তারা সিন্ডিকেট ভাঙতে পারে নাই। কিন্তু বর্তমান সরকারের সঙ্গে তো ব্যবসায়ীদের কোনো আঁতাত নেই। তারপরও তারা কারসাজিকারীদের বা সিন্ডিকেট যারা করে তাদের শাস্তির আওতায় আনতে পারেনি। যদি দুই-একজন ব্যবসায়ীকে শাস্তির আওতায় আনতে পারতো তাহলে বাজার কিছুটা হলেও নিয়ন্ত্রণে আসতো বলে আমি মনে করি।

ক্যাব সাধারণ সম্পাদক আরও বলেন, আমরা সবাই জানি সিন্ডিকেট কারা করে, সেক্ষেত্রে সরকারকে আরও কঠোর হতে হবে। সরকার কঠোর হচ্ছে না বিধায় ব্যবসায়ীরা সুবিধা পেয়ে যাচ্ছে, তারা ভোক্তাদের পকেট খালি করার সুযোগ পাচ্ছে। সরকারের অনেক সংস্থা রয়েছে অথচ ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর ছাড়া আর কেউ কোনো কাজ করছে না।

সিন্ডিকেটের পাশাপাশি কর্পোরেট ব্যবসায়ীরাও এই পরিস্থিতির জন্য দায়ী বলে জানিয়ে হুমায়ুন কবীর বলেন, কর্পোরেট ব্যবসায়ীরা অতিরিক্ত মজুদ করে বা বাজারে সরবরাহ কমিয়ে দিয়ে কৃত্রিম সংকট তৈরি করে পণ্যের দাম বাড়িয়ে দেয়। তারা রীতিমতো ভোক্তাদের লুট করে নিচ্ছে। এটা কর্পোরেট ব্যবসায়ীদের খারাপ একটা অভ্যাস। একই সঙ্গে পরিবহন ভাড়া নিয়েও কারসাজি করা হচ্ছে। ১৫ হাজার টাকার ট্রাক ভাড়া এখন ২০ হাজার টাকা করেছে। এই পরিস্থিতিতে ভোক্তাদের একটু স্বস্তি দিতে পারে টিসিবির পণ্য, সেখানেও দীর্ঘ লাইন, চাহিদার তুলনায় পণ্য কম। এ জায়গায় টিসিবির কার্ডের সংখ্যা ও পণ্য আরও বাড়ানো অনুরোধ করেন তিনি।

এ বিষয়ে বাণিজ্যসচিব সেলিম উদ্দিন গণমাধ্যমকে বলেছেন, সরবরাহ ও দাম ঠিক রাখতে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠক করেছি। তারা সহযোগিতা করবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন। তাদের সমস্যাগুলো সমাধানের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।