শনিবার ১৩ ডিসেম্বর ২০২৫, অগ্রাহায়ণ ২৯ ১৪৩২, ২২ জমাদিউস সানি ১৪৪৭

ব্রেকিং

যেকোনো মূল্যে দেশে নির্বাচন হতে হবে: তারেক রহমান নির্বাচনে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ নিশ্চিতে ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেইজ-২’ চালু করা হবে : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ওসমান হাদির অবস্থা আশঙ্কাজনক : মেডিকেল বোর্ড চলতি বছর ডেঙ্গু রোগে হাসপাতালে ভর্তি লাখেরও বেশি কেরাণীগঞ্জের আগুন নিয়ন্ত্রণে, নির্বাপণে লাগবে ১ দিন ওমান উপসাগরে ট্যাঙ্কার জব্দ, বাংলাদেশিসহ ১৮ ক্রুকে আটক করেছে ইরান হাদিকে গুলির পেছনে ‘বিরাট শক্তি’, ঐক্যবদ্ধ থাকার ঘোষণা রাজনৈতিক দলগুলোর হাদির আততায়ীকে ধরিয়ে দিতে ৫০ লাখ টাকা পুরস্কার ঘোষণা হাদির পরিবারের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার সাক্ষাৎ, সর্বোত্তম চিকিৎসার আশ্বাস বিএনপির ৩১ দফায় জুলাই যোদ্ধাদের অধিকার যুক্ত করাসহ ৫ দাবি ২৫ ডিসেম্বর নতুন গণতান্ত্রিক জোয়ারের সূচনা হবে: আমীর খসরু ১ জানুয়ারি শিক্ষার্থীরা সব নতুন বই পাবে: উপদেষ্টা মেসির কাছে ক্ষমা চাইলেন মমতা, সল্টলেকের ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন ব্রাজিলের বিচারকের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার জাতিসংঘ: পশ্চিম তীরে ইসরাইলি বসতি ২০১৭ সালের পর সর্বোচ্চ যুদ্ধবিরতির আহ্বানের পরও থাইল্যান্ডের বোমাবর্ষণ: কম্বোডিয়া

জাতীয়

কেরাণীগঞ্জের আগুন নিয়ন্ত্রণে, নির্বাপণে লাগবে ১ দিন

 আপডেট: ১৯:০৭, ১৩ ডিসেম্বর ২০২৫

কেরাণীগঞ্জের আগুন নিয়ন্ত্রণে, নির্বাপণে লাগবে ১ দিন

সাড়ে ১১ ঘণ্টা বাদে নিয়ন্ত্রণে এল ঢাকার কেরাণীগঞ্জের বহুতল ভবনের আগুন।

ফায়ার সার্ভিসের ২০টি ইউনিটের চেষ্টায় শনিবার বিকাল ৫টা ৩ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে।

এর পরপরই ঘটনাস্থলে ব্রিফিংয়ে আসেন ফায়ার সার্ভিসের পরিচালক (অপারেশন ও মেনটেন্যান্স) লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম চৌধুরী।

তিনি বলেন, “মার্কেট এবং আবাসিক বাণিজ্যিক একটা মিক্সড অকুপেন্ট বিল্ডিংয়ে আমরা আগুনের খবর পাই ৫টা ৩৭ মিনিটে। ৫টা ৪৫ মিনিটে আমরা এখানে এসে পৌঁছেছি। তারপর থেকে আমরা একে একে প্রায় ২০টা ইউনিট কাজ করছি। এই বিল্ডিং এ বর্তমান অবস্থা আমরা আগুন নিয়ন্ত্রণ এনেছি ৫টা ৩ মিনিটে।

“তবে এখানে অনেক কথা রয়েছে; এখানে একটা বিল্ডিং বললে ভুল হবে, এখানে টোটাল সাতটা বিল্ডিং; এটা ইউ শেপের বিল্ডিং। ...এই বিল্ডিং মিক্সড অকুপেন্ট হলেও এটার আরো কিছু বৈশিষ্ট্য রয়েছে যে, এর বেজমেন্ট আবার একই জায়গায়। বিল্ডিংয়ের প্রতিটা জায়গায় আপনার ঝুট এবং গার্মেন্টসের এক্সেসরিজ দিয়ে পুরা বোঝাই করা।”

তাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, “প্রতিটা ছোট-বড় শাটার দিয়ে ক্লোজ করা, কলাপসিবল গেট দিয়ে ক্লোজ করা, যার কারণে আমাদের এত সময় লাগছে। এখানে আপনার বিল্ডিংটা অবশ্যই ঝুঁকিপূর্ণ। বিল্ডিংয়ে আপনার যেহেতু এখানে ভেন্টিলেশন একেবারে কম, ভেন্টিলেশন নাই বললেই চলে; যার কারণে আমাদের ফায়ার ফাইটাররা অনেক ঝুঁকির মধ্যে দিয়ে ধাপে ধাপে কাজ করছে।

“এই কাজের জন্য তাদেরকে অনেক ঝুঁকি নিতে হচ্ছে। এবং আপনারা জেনে থাকবেন যে—অনেক ব্যাকড্রাফট (হঠাৎ আগুন ধরে যাওয়া) হচ্ছে। অনেকে ভয়েতে বলছে যে কোনো সিলিন্ডার বিস্ফোরণ কি না, আসলে এটা ব্যাকড্রাফট হচ্ছে বিভিন্ন জায়গায়; বিকজ টোটাল এরিয়াটা ভেন্টিলেশনটা খুবই কম। যার কারণে আমাদের ব্রিদিং ব্যতীত আমরা একেবারেই ভেতরে প্রবেশ করতে পারছি না।”

তিনি বলেন, “অতিরিক্ত কালো ধোঁয়া- কারণ গার্মেন্টসের এক্সেসরিজগুলো পুড়ে যেয়ে এটা কালো ধোঁয়া সৃষ্টি করছে। এবং ঝুটের যেই গাইডগুলো তোলা হচ্ছে, তখনই আবার আগুন ধপ করে জ্বলে উঠতেছে; যার কারণে আগুনটা আমাদের নিয়ন্ত্রণ আনতে প্রায় সাড়ে ১১ ঘণ্টা লেগেছে।”

আগুন নির্বাপণে আনতে রোববার পর্যন্ত সময় লেগে যাবে জানিয়ে ফায়ার সার্ভিসের পরিচালক তাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, “কারণ এই মালামালগুলো ওই জায়গা থেকে ধাপে ধাপে বের করা হচ্ছে, আপনারা দেখতে পাচ্ছেন। এটা বের করা হলেই আস্তে আস্তে আগুনের সোর্সগুলো কমতে থাকবে।

“কারণ এখানে কয়েকশ ছোট-বড় আলাদা শাটার রয়েছে, যে শাটারগুলো কাটার দিয়ে কেটে কেটে ওপেন করে আমাদের কাজ করতে হচ্ছে। যখনই শাটারটা খোলা হচ্ছে, তখনই কালো ধোঁয়া আসছে।

“সুতরাং এই যে ফ্লেম এবং কালো ধোঁয়া; এটার কারণে আমাদের প্রচুর বেগ পেতে হচ্ছে। এবং পুরা এরিয়াটাই কালো ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন এবং বেজমেন্ট, দোতলা, মাঝে মাঝে তিনতলা পর্যন্ত এই কালো ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন হয়ে গেছে।”

তিনি বলেন, “আমাদের হয়তো আপনারা বিভিন্ন জায়গায় কালো ধোঁয়া দেখবেন, তাতে ভয় পাওয়ার কিছু নেই। কিন্তু আমরা এটুকু বলতে পারি আগুনটা আমরা নিয়ন্ত্রণে আনতে পেরেছি। আশা করছি, আর বড় কোনো দুর্যোগ ঘটবে না। তবে এইটার নির্বাপণ প্রক্রিয়া অনেকটাই কষ্টসাধ্য, সময় লাগবে।

“আর এখন পর্যন্ত আমরা কোনো হতাহতের কেউ কোনো খবর দেয়নি আমাদেরকে, আমরা পাইনি। তবে আমাদের ফায়ার ফাইটার আপনারা দেখে থাকবেন অনেকে মানে বারবার আমরা চেঞ্জ করছি এবং এটা সময় লাগছে। আমরা ইউনিটও চেঞ্জ করছি, নতুন রিলিভার টিমও চলে আসছে। আমরা এটার কাজ মানে আমরা সবাই মিলে কাজ করে যাব, এটা সময় লাগবে আরকি নির্বাপণের জন্য।”

আগুনের উৎস কী, ভবনটি এখন ঝুঁকিপূর্ণ কি না, এমন প্রশ্নের উত্তরে তাজুল ইসলাম বলেন, “আগুন লাগার বিষয়টি এখনো আসলে এটা মানে খোঁজ নিতে হবে, কারণ বিভিন্ন জন বিভিন্ন কথা বলছেন। আমাদের আগুনটা নির্বাপন আমাদের প্রথম প্রায়োরিটি, যেহেতু নিয়ন্ত্রণ হয়েছে। আগুন নির্বাপনের পরে এটা আমরা তদন্ত করে তারপর বলতে পারব।

“এই বিল্ডিংটা আসলে মানে আমরা যেটা দেখতে পাচ্ছি যে—কন্টিনিউয়াসলি বিভিন্নভাবে ভায়োলেশন করা হচ্ছে। আমাদের ইন্সপেক্টর এবং অন্যরা চার-পাঁচবার এখানে বলে গিয়েছিল এবং নোটিস দিয়ে গিয়েছে অফিসিয়ালি দুইবার এবং আলাদা করে প্রায় পাঁচবার তারা এসেছে এবং এই মালিকের সঙ্গে দেখা করেছে; বলেছে যে- আপনারা এই বিল্ডিংটা কিন্তু ঝুঁকিপূর্ণ অগ্নি দৃষ্টিকোণ থেকে।”

এক প্রশ্নের জবাবে ফায়ার সার্ভিসের পরিচালক তাজুল বলেন, “নির্বাপন হয়ে গেলেও আমি বলব যে, এটা জরিপ করে দেখতে হবে। যেহেতু এটা দীর্ঘক্ষণ ধরে পুড়ছে, টেম্পারেচার বেশি হওয়ার কারণে এর স্ট্রাকচারাল যেই অডিট- এটা করা খুবই জরুরি। এবং এটা করে যে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ রয়েছেন, এটা করে উনারা বলতে পারবে যে এখানে বসবাস করার উপযোগী কি অনুপযোগী।

“এখন পর্যন্ত আমরা যেহেতু নির্বাপণ ঘোষণা করিনি, এটা সময় লাগবে এবং বললাম যে, ঝুটের এই গোডাউনে প্রচুর পরিমাণে যে মালামাল, এই মালামালগুলো অপসারণ না করা পর্যন্ত এটা আসলে বলা যাচ্ছে না।”

ভবন মালিকের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি জানিয়ে তিনি বলেন, “আমাদের ইন্সপেক্টর ওনার ম্যানেজারের সাথে কথা বলেছেন মোবাইল ফোনে।

“…যেটা বুঝলাম যে, এখানে আপনার ওই স্ট্রাকচারাল যে ইস্যু, মানে এইটা এখানেও সমস্যা রয়েছে। এবং আমাদের তো কোন অগ্নির মানে অগ্নি নিরাপত্তার দৃষ্টিকোণ থেকে কোনো সেফটি গ্রহণ করা হয়নি এবং কোনো রকম ইকুইপমেন্ট কোনো কিছুই নাই আরকি।”

ফায়ার সার্ভিসের একাধিক কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বেজমেন্টে বিভিন্ন দোকান ছাড়াও ঝুটের গোডাউন রয়েছে। সেসবে আগুন বিস্তৃত হওয়ায় এবং ঝুটের স্তূপে আগুন থাকায় নিয়ন্ত্রেণে আনতে দীর্ঘ সময় লেগেছে।

এর আগে শাহজাহান শিকদার বলেছিলেন, “জাবালে নূর টাওয়ারটি কয়েকটি স্বতন্ত্র ভবন নিয়ে গঠিত; কিন্তু এগুলোর বেজমেন্ট একটি। এটি বাণিজ্যিক কাম আবাসিক ভবন।

“প্রথম ও দ্বিতীয় তলায় বিভিন্ন গার্মেন্টস পণ্যের দোকান ও ছোট ছোট ঝুট গোডাউন রয়েছে। উপরে রয়েছে আবাসিক কোয়ার্টার। বেজমেন্টে প্রবেশপথ মাত্র দুইটি। বেশিরভাগ দোকানের তালা ও শাটার কেটে কেটে আগুন নেভাতে হচ্ছে। এ কারণে আগুন নেভাতে সময় লাগছে।”

তিনি দুপুরে বলেন, প্রচুর ধোঁয়ার কারণে ব্রিদিং, হ্যাজম্যাটসহ মোট ২০টি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে। ভবনে আটকে পড়া আরো তিনজনকে সুস্থ অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে।

এর আগে সকাল ৯টা পর্যন্ত ভবনটি থেকে ৪২ জনকে উদ্ধার করার কথা জানান ফায়ার সার্ভিসের মিডিয়া কর্মকর্তা আনোয়ারুল ইসলাম।

তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, আগুন লেগেছে একটি বেজমেন্টে, যার উপরে সাতটি ভবন রয়েছে।

“বেজমেন্টে গোডাউন আছে, তার উপরে রয়েছে মার্কেট; এর উপরে আবাসিক অংশ। খুবই কমপ্লিকেটেড জায়গা। বেজমেন্টে ঢোকার একদিক থেকে অ্যাকসেস পাচ্ছি।”