খালেদা জিয়ার ‘ভিভিআইপি মর্যাদা’ কার্যকরের নির্দেশ সরকারের
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন গুরুতর অসুস্থ খালেদা জিয়াকে রাষ্ট্রের ‘অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি’ (ভিভিআইপি) ঘোষণা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার।
এই সিদ্ধান্ত অবিলম্বে কার্যকরের জন্য সংশ্লিষ্ট প্রতিটি সংস্থাকে নির্দেশনাও দেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত হয়েছে। পরে যমুনার সামনে এক সংবাদ সম্মেলনে এসে সরকারের সিদ্ধান্ত জানিয়েছে পরিকল্পনা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ।
এ সময় আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল ও প্রধান উপদেষ্টার প্রেসসচিব শফিকুল আলম উপস্থিত ছিলেন।
ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন, “আজ মাননীয় প্রধান উপদেষ্টার সভাপতিত্বে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় উপদেষ্টা পরিষদের একটি বিশেষ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে।
“এই সভায় তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী, সাবেক রাষ্ট্রপতির স্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপরসন বেগম খালেদা জিয়ার আশু রোগমুক্তি কামনা করে দোয়া ও প্রার্থনা করা হয় এবং জাতির কাছে তার জন্য দোয়া ও প্রার্থনার আহ্বান জানানো হয়।”
তিনি বলেন, “'সভায় বেগম খালেদা জিয়ার বর্তমান শারীরিক অবস্থা বিবেচনায় হাসপাতালে তার নির্বিঘ্ন চিকিৎসা, প্রয়োজনে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা, তার নিরাপত্তা ও যাতায়াতের সুবিধা এবং উচ্চ মর্যাদা বিবেচনায় তাকে রাষ্ট্রের অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি (ভিভিআইপি) ঘোষণা করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এই সিদ্ধান্ত অবিলম্বে কার্যকরের জন্য সংশ্লিষ্ট সকল সংস্থাকে নির্দেশনা প্রদান করা হয়।”
এই বিষয়ে খালেদা জিয়ার পরিবার এবং দল ‘অবগত আছেন’ বলেও জানিয়েছেন ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ।
এর আগে সোমবার সরকার বলেছিল, অসুস্থ খালেদা জিয়াকে ‘অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি’ ঘোষণা করা হয়েছে। যার মাধ্যমে তার নিরাপত্তার দায়িত্ব এসএসএফকে দেওয়ার সুযোগ তৈরি হল।
গত ২৩ নভেম্বর রাতে স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য খালেদা জিয়াকে এভারকেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হয়েছিল, কিন্তু বুকে সংক্রমণ ধরা পড়ায় তাকে ভর্তি করে নেওয়া হয়। সোমবার ভোর সাড়ে ৩টার দিকে শারীরিক অবস্থার অবিনতি হলে তাকে হাসপাতালে রাখা হয়েছে ‘স্পেশাল কেয়ারে’।
তার চিকিৎসায় যুক্তরাজ্যের বিশেষজ্ঞ বুধবার দল আসছেন বলে খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক এজেডএম জাহিদ হোসেন জানিয়েছেন।
যুক্তরাষ্ট্র, চীন, কাতার, সৌদি আরব, পাকিস্তান ও ভারত ইতোমধ্যে চিকিৎসা সহায়তার হাত বাড়িয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, “খালেদার জন্য দেশের বাইরে নেওয়ার জন্য যে কথাটি আমি পূর্বেও বলেছি, মেডিকেল বোর্ডের সদস্যরা উনাকে দেখেছেন। আজকেও ইউকে থেকে উনাকে দেখার জন্য বিশেষজ্ঞ আসবেন এবং উনারা দেখবেন।
“দেখার পরবর্তীতে উনাকে যদি ট্রান্সফারেবল হয়, আমাদের যদি ট্রান্সফার করার প্রয়োজন পড়ে— মেডিকেল বোর্ড মনে করে, তখনই সেই যথাযথ সময়ে উনাকে চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরে নিয়ে যাওয়া হবে।”
বিএনপি চেয়ারপারসনকে এ মুহূর্তে দেশের বাইরে নেওয়ার সুযোগ নেই বলেও জানান ডা. জাহিদ।