শনিবার ২২ নভেম্বর ২০২৫, অগ্রাহায়ণ ৮ ১৪৩২, ০১ জমাদিউস সানি ১৪৪৭

জাতীয়

নতুন হল ভবনের দাবি: কর্মচারীদের ফ্ল্যাটে রাত্রিযাপন ঢাবি শিক্ষার্থীদের

 প্রকাশিত: ১১:১১, ২২ নভেম্বর ২০২৫

নতুন হল ভবনের দাবি: কর্মচারীদের ফ্ল্যাটে রাত্রিযাপন ঢাবি শিক্ষার্থীদের

শক্তিশালী ভূমিকম্পের পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে নতুন ভবন নির্মাণের দাবিতে হাজী মুহম্মদ মুহসীন হলের আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা কর্মচারীদের এক ভবন দখল করে রাত্রিযাপন করলেন।

শুক্রবার রাত দেড়টা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠক করেন আন্দোলনরতরা। তবে নতুন ভবন নির্মাণের আশ্বাস না পাওয়ায় কর্মচারীদের ভবনেই রাত্রিযাপনের সিদ্ধান্ত নেন তারা।

হাজী মুহম্মদ মুহসীন হলের প্রাধ্যক্ষ ড. সিরাজুল ইসলাম শুক্রবার রাতে বলেন, “আমাদের শিক্ষার্থীরা এ ভূমিকম্পে অনেকটাই ভয়ে আছে। তারা যেহেতু হলে অবস্থান করতে ভয় পাচ্ছে, উপাচার্য স্যার আমাদেরকে বলেছেন—আপাতত অন্যান্য হলে শিফট করে তাদেরকে রাখার ব্যাবস্থা করতে।

“হলটাকে একটা রিচেক দিয়ে তারপর হয়তো সবকিছু ঠিক থাকলে তাদেরকে হলে ফিরে আসতে বলব। তারা এখানে (কর্মচারীদের ভবনে) থাকতে পারবে না। যেহেতু তারা ভয়ে আছে; আপাতত চাইলে থাকবে।”

হলের প্রায় দেড় শতাধিক আবাসিক শিক্ষার্থীর কর্মচারী ভবনে রাত কাটানোর কথা জানান হল ছাত্র সংসদের পাঠকক্ষ সম্পাদক জাহিদ উদ্দিন হিমেল।

তিনি রাতে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “এখানে প্রায় দেড় শতাধিক শিক্ষার্থী আছে। প্রশাসনের সাথে মিটিং হয়েছে। তবে নতুন ভবন নির্মাণের নিশ্চয়তা না পাওয়ায় এখানে অনেকে রাত কাটাচ্ছেন।”

শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হল সংলগ্ন ১০ তলা এ কর্মচারী ভবনে গিয়ে দেখা যায়, যেসব ফ্ল্যাটে কর্মচারীরা নেই, সেসবে শিক্ষার্থীরা অবস্থান করছেন। যেসব ফ্ল্যাটে কর্মচারীরা আগে থেকে ছিলেন, তারা তাদের বাসায় অবস্থান করছেন।

হল ছাত্র সংসদের সমাজসেবা সম্পাদক এম সাইফুল্লাহ বলেন, “আমরা মৃত্যুপুরী মুহসীন হলে আর যাচ্ছি না। সিদ্ধান্ত একটাই আসতে হবে, সেটা হলো—আমাদের জন্য মুহসীন হল ব্যতীত অন্য কোনো নিরাপদ আবাসনের ব্যবস্থা করা।

“এই বাইরে কোনো মুলা ঝুলানো আশ্বাসে আমরা আমাদের অবস্থান থেকে সরে আসব না।”

এর আগে শুক্রবার দুপুরে মুহসীন হল পুনঃনির্মাণের দাবিতে কর্মচারী ভবনের ফটক আটকে বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থীরা।

পরে বেলা ২টার দিকে কর্মচারীদের ফ্ল্যাটে তালা দেয় শিক্ষার্থীরা। সেখানে তাদের শান্ত করতে যান উপাচার্য নিয়াজ আহমদ খান, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, প্রক্টর সাইফুদ্দিন আহমদ।

তবে শিক্ষার্থীরা আশ্বাস না পাওয়ায় তাদের আন্দোলন চালিয়ে যায়। পরে রাত ১১টার দিকে আবার প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠকে বসেন শিক্ষার্থীরা।

কয়েক দশকের মধ্যে দেশের সবচেয়ে প্রাণঘাতী ভূমিকম্পে শুক্রবার তিন জেলায় ১০ জনের মৃত্যু হয়, আহত হয় ছয় শতাধিক মানুষ। ঢাকার বহু ভবন ফাটল ও হেলে পড়ার ঘটনার মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েও কয়েকজন আহত হয়েছেন।

সেদিন সকালে ১০টা ৩৮ মিনিটের এ ভূমিকম্পে মাত্রা রিখটার স্কেলে ছিল ৫ দশমিক ৭; উৎপত্তিস্থল ছিল ঢাকার পাশে নরসিংদীর মাধবদীতে।