সোমবার ১০ নভেম্বর ২০২৫, কার্তিক ২৬ ১৪৩২, ১৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৭

ব্রেকিং

নির্বাচন পিছিয়ে গেলে দেশের সর্বনাশ হয়ে যাবে: মির্জা ফখরুল পুরান ঢাকায় হাসপাতালের সামনে একজনকে গুলি করে হত্যা এটা ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবর নয়: আওয়ামী লীগকে প্রেস সচিবের হুঁশিয়ারি নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের বিক্ষোভের দিনে ঢাকায় বোমাবাজি রাজধানীতে ভোরে দুই বাসে আগুন ৮ বছর পর ভারত থেকে হিলি বন্দর দিয়ে আপেল আমদানি শুরু সংসদ নির্বাচন: অঞ্চলভেদে থাকবে কমান্ডো বাহিনী, কঠোর বার্তা ইসির আকুর বিল পরিশোধের পর রিজার্ভ ৩১ বিলিয়নে নামলো লতিফ সিদ্দিকীর জামিন বহাল গোপালগঞ্জে দাঁড়িয়ে থাকা ট্রাকের পেছনে মোটরসাইকেলের ধাক্কা, নিহত ২ প্রাথমিক শিক্ষকদের সিদ্ধান্ত বদল, কর্মবিরতি চলবে একুয়াডোরে কারাগারে দাঙ্গার মধ্যে অন্তত ৩১ জনের মৃত্যু

জাতীয়

এটা ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবর নয়: আওয়ামী লীগকে প্রেস সচিবের হুঁশিয়ারি

 প্রকাশিত: ১৪:১৫, ১০ নভেম্বর ২০২৫

এটা ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবর নয়: আওয়ামী লীগকে প্রেস সচিবের হুঁশিয়ারি

নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের পক্ষে ঢাকার রাজপথে ঘোষিত কর্মসূচি কঠোরভাবে দমন করার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।

জুলাই বিপ্লবীদের ‘ধৈর্য্যের পরীক্ষা না নেওয়ার’ আহ্বান জানিয়ে সোমবার এক ফেইসবুক পোস্টে তিনি লিখেছেন, “এটা ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবর নয়, এটা নতুন বাংলাদেশ।”

জুলাই অভ্যুত্থান দমাতে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে শেখ হাসিনার বিচারের রায় ঘনিয়ে আসায় ১০ থেকে ১৩ নভেম্বর বিক্ষোভের কর্মসূচি দিয়েছে কার্যক্রম নিষিদ্ধ থাকা আওয়ামী লীগ। এর মধ্যে সোমবার ঢাকায় দুটি বাসে আগুন দেওয়া হয়েছে; কয়েক জায়গায় বোমাবাজির ঘটনাও ঘটেছে।

২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবর ঢাকায় আওয়ামী লীগের লগি-বৈঠা আন্দোলন জামায়াতকর্মীদের সঙ্গে সংঘাতের প্রসঙ্গ টেনে শফিকুল আলম বলেন, “বিএএল, তাদের সহযোগী এবং তাদের গণহত্যাকারী নেতারা মনে করছেন যেন আবারও ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবর ফিরে এসেছে। তারা কল্পনা করছে দিবালোকে এক ডজন মানুষ হত্যার পর হাজার হাজার গুণ্ডা নিয়ে মধ্য ঢাকার রাস্তায় দখল নেওয়ার দৃশ্য।

“কিন্তু দুঃখিত, এটা এখন একটি নতুন বাংলাদেশ। নিষিদ্ধ রাজনৈতিক বা সন্ত্রাসী সংগঠনগুলোর যে কোনো সমাবেশের প্রচেষ্টাই আইনের পূর্ণশক্তির মুখোমুখি হবে।”

আওয়ামী লীগের উদ্দেশে শফিকুল আলম বলেন, “জুলাইয়ের বিপ্লবীদের ধৈর্য্যের পরীক্ষা নেবেন না। আর মনে রেখ: এটা ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবর নয়, এটা জুলাই, চিরকালের জন্য।”

যা ঘটেছিল ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবর

সেদিন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তরের কথা ছিল বিএনপি সরকারের। দিনটিতে আওয়ামী লীগ জমায়েত হয় মুক্তাঙ্গনে, বিএনপি সমাবেশ আহ্বান করে নয়া পল্টনের দলীয় কার্যালয়ের সামনে, জামায়াত জড়ো হয় বায়তুল মোকাররমের উত্তর গেটে।

আগের কয়েক দিন ধরে থমথমে রাজনৈতিক পরিস্থিতির মধ্যে সেদিন সকাল থেকে সংঘাতময় হয়ে ওঠে পরিস্থিতি। পুরানা পল্টন মোড়ে আওয়ামী লীগ ও জামায়াত কর্মীদের মধ্যে বেধে যায় সংঘাত।

লগি বৈঠা নিয়ে আসা আওয়ামী লীগ কর্মীদের সঙ্গে লাঠিসোঁটা নিয়ে আসা জামায়াত কর্মীরা পেরে ওঠেনি। দিনভর মুহুর্মুহু গুলি চলে, জামায়াতের বেশ কয়েকজন নেতা-কর্মী নিহত হন।

সে সময় আওয়ামী লীগ ও তার রাজনৈতিক জোট আন্দোলনে ছিল তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান কে হবেন, সেই প্রশ্ন নিয়ে বিরোধে।

সে সময় বিধান ছিল, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান হবেন সদ্য অবসরে যাওয়া প্রধান বিচারপতি। বিএনপি সরকারের আমলে বিচারপতিদের অবসরের বয়স সীমা দুই বছর বাড়ানোর পর কে এম হাসানের তত্ত্বাবধায়কের প্রধান হওয়ার বিষয়টি সামনে আসে।

কে এম হাসান এক সময় ছিলেন বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক। এই কারণ দেখিয়ে আওয়ামী লীগ তাকে মেনে না নিয়ে আন্দোলনে যায়। একেবারে শেষ সময়ে কে এম হাসান দায়িত্ব নিতে অস্বীকার করেন।

পরে সংবিধানে উল্লেখিত আরও কিছু ধাপ বাদ দিয়ে সে সময়ের রাষ্ট্রপতি ইয়াজউদ্দিন আহমেদ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টার দায়িত্ব নেন।

২৮ অক্টোবর বিএনপি সরকারের ক্ষমতা হস্তান্তরের দিন সকাল থেকে শুরু হওয়া সংঘাত নিয়ন্ত্রণে পুলিশ ব্যর্থ হলে সন্ধ্যায় নামানো হয় বিজিবি।

এরপরও সংঘাত সহিংসতা অব্যাহত থাকে।

এক দফা পিছিয়ে ২০০৭ সালের ২২ জানুয়ারি স্থির হয় ভোটের তারিখ। নির্বাচনে না যাওয়ার ঘোষণা দিয়ে কর্মসূচি চালিয়ে যায় আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে মহাজোট।

ভোটের ১১ দিন আগে পাল্টে যায় পরিস্থিতি। হস্তক্ষেপ করে সেনাবাহিনী, প্রধান উপদেষ্টার পদ ছাড়েন ইয়াজউদ্দিন। শপথ নেয় ফখরুদ্দীন আহমেদের নেতৃত্বে নতুন তত্ত্বাবধায়ক সরকার। কিন্তু ৯০ দিনে ভোটের আয়োজন না করে তারা সময় নেয় প্রায় দুই বছর।