বরিশালে গৃহবধূকে ধর্ষণ: চার জনের মৃত্যুদণ্ড
বরিশালে গৃহবধূকে দলবেঁধে ধর্ষণের মামলায় চার জনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে আদালত।
রোববার বরিশালের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মুহা. রকিবুল ইসলাম নয় বছর আগের এ মামলার রায় ঘোষণা করেন বলে বেঞ্চ সহকারী আজিবর রহমান জানিয়েছেন।
দণ্ডিতরা হলেন- নগরীর রূপাতলী ধান গবেষণা রোডের বাসিন্দা মানিক গাজী কালুর ছেলে রাসেল গাজী (৪৪), রূপাতলী গ্যাসটারবাইন এলাকার ভাড়াটিয়া ও বাকেরগঞ্জের আউলিয়াপুর গ্রামের বাসিন্দা আইয়ুব আলী খানের ছেলে খোকন খান (৩২), ধান গবেষণা রোড খেয়াঘাট এলাকার বাসিন্দা খলিল জমাদ্দারের ছেলে রাজিব জমাদ্দার (৩৪) ও একই এলাকার মোহাম্মদ আলী হাওলাদারের ছেলে জাহিদ হাওলাদার (৩৫)।
রায় ঘোষণার সময় খোকন খান আদালতের কাঠগড়ায় উপস্থিত ছিলেন না। তিনি পলাতক রয়েছেন। বাকি তিন আসামি উপস্থিত ছিলেন।
মামলার বরাতে ট্রাইব্যুনালের বিশেষ পিপি আব্দুল মন্নান মৃধা বলেন, ২০১৬ সালের ১০ নভেম্বর সন্ধ্যার দিকে বরিশাল নগরীর ২৪ নম্বর ওয়ার্ড ধান গবেষণা রোডের বাসিন্দা ১৯ বছর বয়সী এক গৃহবধূ তার মায়ের সঙ্গে ঝগড়া করে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যায়। এরপর অটোরিকশায় করে বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে থাকা স্বামীর উদ্দেশ্যে রওনা দেয়।
অটোরিকশা চালক তাকে হাসপাতালে নিয়ে না গিয়ে ভুল পথে নগরীর ত্রিশ গোডাউন ব্রিজের ওপর নিয়ে যায়। সেখানে ওই গৃহবধূকে হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে হাত-পা বেঁধে খ্রিস্টান পাড়া এলাকায় জঙ্গলে নিয়ে যায়। পরে দণ্ডিত চার জনসহ অজ্ঞাত পরিচয় আরও ৮ থেকে ১০ জন রাতভর পালাক্রমে তাকে ধর্ষণ করে।
ভোর রাতে একটি বাড়ির সামনে বিবস্ত্র অবস্থায় গৃহবধূকে ফেলে যায়। পরে ওই বাড়ির অজ্ঞাত ব্যক্তিও তাকে ধর্ষণ করে। সকালে স্থানীয় কয়েক নারী পুরুষ ওই নারীকে সেখানে পড়ে থাকতে দেখেন। কিন্তু তারা তার কথা বিশ্বাস না করে তাকে মারধর করে ফেলে চলে যায়। তখন ঘটনাস্থলে পড়ে থাকা বোরখা পেয়ে সেটি পরে বাড়িতে যায়।
এ ঘটনায় ১১ নভেম্বর চারজনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত পরিচয় আরও দশ জনকে আসামি করে মামলা করেন ওই গৃহবধূ। তদন্ত শেষে কোতোয়ালি মডেল থানার পরিদর্শক মো. আতাউর রহমান ২০১৭ সালের ২৩ নভেম্বর আদালতে চার জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দিলে এ মামলার বিচারকাজ শুরু হয়।
বিচারক ১১ জন স্বাক্ষীর স্বাক্ষ্য গ্রহণ শেষে রায় দিয়েছেন বলে আদালতের বেঞ্চ সহকারী আজিবর রহমান জানান।