বিয়ারিং প্যাড কী, কেন বসানো হয়?
এক বছরের ব্যবধানে মেট্রো লাইনের বিয়ারিং প্যাড দুইবার খসে পড়ার পর এর কাঠামো ও কাজ নিয়ে কৌতূহল তৈরি হয়েছে।
কেউ কেউ জানতে চাইছেন, এই প্যাড যদি রাবার দিয়েই তৈরি হয়, তার আঘাতে কি মৃত্যু ঘটা সম্ভব?
গত বছরের ১৮ সেপ্টেম্বরও বিয়ারিং প্যাড খুলে পড়েছিল, তাতে ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়েছিল; তবে প্রাণহানি হয়েছে এবারই।
আসলে এই প্যাডের ওজন অনেক ভারী হয়; বসানো হয় কম্পন প্রতিরোধের জন্য সেতু বা উড়াল সেতুতে। ইলাস্টোমোরিক বিয়ারিং প্যাড নিওপ্রেন বা প্রাকৃতিক রাবার দিয়ে তৈরি, যা পিয়ার ও ভায়াডাক্টের সংযোগস্থলে বসানো হয়। কোনোটির ভেতরে কয়েক পরতে থাকে স্টিলের কাঠামো, আর উপরে থাকে রাবার।
জানতে চাইলে সড়ক ও জনপথ বিভাগের প্রকৌশলী কামরুল হাসান বলেন, “কোনো সেতুর পিয়ার ও গার্ডারের মধ্যে স্থিতিস্থাপকতা সৃষ্টির জন্য এই ধরনের রাবার প্যাড ব্যবহার করা হয়। এগুলো বাংলাদেশেও তৈরি হয়, আবার বিদেশ থেকেও আনানো যায়।
“এক একটি প্যাডের ওজন হতে পারে ৫০ থেকে ২০০ কেজি পর্যন্ত। বুয়েট এসব রাবার প্যাডের কার্যকারিতা পরীক্ষা করে ছাড়পত্র দেয়।”
এখন প্রশ্ন উঠেছে সেপ্টেম্বর ঘটনার পর তদন্ত কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী ব্যবস্থা হয়েছিল কি না। হয়ে থাকলে আবার কেন এ ঘটনা ঘটল।
এ বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে মেট্রোরেল পরিচালনকারী কোম্পানি ডিএমটিসিএলের এমডি ফারুক আহমেদ বলেছেন, “আগের কমিটির রিপোর্ট অনুযায়ী সমস্ত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল। সবগুলো পিলার ফিজিক্যালি এক্সপার্ট দিয়ে পরিদর্শন করা হয়েছিল।”
রোববার দুপুরে ঘটনাস্থলে দাঁড়িয়ে যখন তিনি কথা বলছিলেন, পাশেই ছিলেন সড়ক পরিবহন উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান। আঙ্গুল তুলে তিনি প্রশ্ন করেন, “তাহলে এটা হলো কীভাবে?”
ওই ঘটনায় কারো বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল কি না, জানতে চান সংবাদকর্মীরা।
জবাবে ডিএমটিসিএলের এমডি ফারুক বলেন, “তখন বলা হয়েছিল ডিফেক্ট লাইবেলিটি পিরিয়ডের মধ্যে এই ঘটনা ঘটেছে। তাই ওই বিষয়টি সংশোধনের সুযোগ দেওয়া হয়েছিল তাদেরকে (ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে)। তারা তখন বলেছে, তারা সেটা সংশোধন করেছে।"
এ সময় উপদেষ্টা ফাওজুল বলেন, “এটা জাপানি ঠিকাদাররা করেছে। এখানে বলা হচ্ছে এটা ডিফেক্ট লাইবেলিটি পিরিয়ডের মধ্যে ঘটেছে। তবে এখন যে কমিটি হচ্ছে এই কমিটি আগের কমিটির রিপোর্টও দেখবে।”
রোববার দুর্ঘটনায় পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে জানান তিনি।