বুধবার ২২ অক্টোবর ২০২৫, কার্তিক ৭ ১৪৩২, ২৯ রবিউস সানি ১৪৪৭

ব্রেকিং

সিলেটে চোরাচালানবিরোধী অভিযানে বিজিবির গুলি, যুবক নিহত বিএনপি তত্ত্বাবধায়ক সরকার চায়নি: আইন উপদেষ্টা ভোটের আগে সরকারের বিতর্কিত ব্যক্তিদের চলে যেতে হবে: আমীর খসরু ‘সাব-জেল’ কারা কর্তৃপক্ষের তত্ত্বাবধানে, খাবার-সাক্ষাৎ বিধি অনুযায়ী: আইজি প্রিজন ডেঙ্গু: ২ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ৭৬২ রোগী জুলাই শহীদের মেয়েকে দলবেঁধে ধর্ষণ: তিন কিশোর আসামির সাজা নাইজেরিয়ায় জ্বালানি ট্যাঙ্কার বিস্ফোরণে নিহত অন্তত ৩৫ কোনো চাপের কাছে ইসি ‘নতি স্বীকার করবে না’: সিইসি বিচার প্রক্রিয়ায় সেনাবাহিনীর সহযোগিতা প্রশংসনীয়: আইন উপদেষ্টা কিয়েভে রাশিয়ার হামলায় নিহত ২ ‘মানবতাবিরোধী অপরাধ’: ১৫ সেনা কর্মকর্তা কারাগারে উত্তর কোরিয়া ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে: দক্ষিণ কোরিয়া

খেলা

শ্বাসরুদ্ধকর ম্যাচে বাংলাদেশকে সুপার ওভারে হারিয়ে সিরিজে সমতা

 প্রকাশিত: ১৫:৫৮, ২২ অক্টোবর ২০২৫

শ্বাসরুদ্ধকর ম্যাচে বাংলাদেশকে সুপার ওভারে হারিয়ে সিরিজে সমতা

শ্বাসরুদ্ধকর দ্বিতীয় ওয়ানডে ম্যাচে বাংলাদেশকে সুপার ওভারে হারিয়ে তিন ম্যাচ সিরিজে ১-১ সমতা আনল ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেট দল। 

আজ সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডেতে নির্ধারিত ৫০ ওভারে সমান ২১৩ রান করে ম্যাচ টাই করে বাংলাদেশ ও ওয়েস্ট ইন্ডিজ। টাই হওয়া ম্যাচটি সুপার ওভারে গড়ায়। সুপার ওভারে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ১ উইকেটে ১০ রান করে। জবাবে ১ উইকেটে ৯ রান করে হেরে যায় বাংলাদেশ। সুপার ওভারে দ্বিতীয় ওয়ানডে জিতে সিরিজে ১-১ সমতা ফেরায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। সিরিজের প্রথম ম্যাচ ৭৪ রানে জিতেছিল বাংলাদেশ। 

ক্রিকেট ইতিহাসে এই প্রথম বাংলাদেশের কোন আন্তর্জাতিক ম্যাচ টাই হয়েছে।

মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস জিতে প্রথমে ব্যাটিং করতে নামে স্বাগতিক বাংলাদেশ। দলকে ২৮ বলে ২২ রানের শুরু এনে দিয়ে বিচ্ছিন্ন হন সাইফ হাসান ও সৌম্য সরকার। ১টি ছক্কায় ৬ রান করেন সাইফ। 

দ্বিতীয় উইকেটে সাবধানে খেলে ৩৬ বলে ১৯ রান যোগ করেন সৌম্য ও তাওহিদ হৃদয়। ১১তম ওভারে সৌম্য-হৃদয়ের জুটি ভাঙেন স্পিনার গুদাকেশ মোতি। ২ চারে ১২ রান করেন হৃদয়। 

দলীয় ৪১ রানে হৃদয় ফেরার পর নাজমুল হোসেন শান্তকে নিয়ে জুটি গড়ার চেষ্টা করেন সৌম্য। বড় জুটির ইঙ্গিত দিয়েও বেশি দূর যেতে পারেননি তারা। ৪১ বলে ২৭ রান যোগ হবার পর আউট হন শান্ত। ২টি বাউন্ডারিতে ১৫ রান করে স্পিনার অ্যালিক আথানাজের শিকার হন তিনি। 

নতুন ব্যাটার হিসেবে ক্রিজে এসেই ক্যাচ দিয়ে জীবন পান আগের ম্যাচে অভিষেক হওয়া মাহিদুল ইসলাম অঙ্কন। শূন্যতে জীবন পেয়েও ২টি চারে ১৭ রানের বেশি করতে পারেননি অঙ্কন। তার বিদায়ের পর সাজঘরে ফিরেন এক প্রান্ত আগলে খেলা সৌম্য। আকিলকে ছক্কা মারতে গিয়ে ডিপ মিড উইকেটে পাইরিকে ক্যাচ দেন তিনি। ৮৯ বল খেলে ৩টি চার ও ১টি ছক্কায় ৪৫ রানের ধৈর্য্যশীল ইনিংস খেলেন সৌম্য। ৩৩ রানে ক্যাচ দিয়ে জীবনও পেয়েছিলেন তিনি।

১০৩ রানে পঞ্চম উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে বাংলাদেশ। উইকেট পতন ঠেকিয়ে পরপর দুই জুটিতে ৬০ রান পায় টাইগাররা। ষষ্ঠ উইকেটে নাসুম আহমেদকে নিয়ে ২৫ এবং সপ্তম উইকেটে নুরুল হাসানের সাথে ৩৫ রান যোগ করেন অধিনায়ক মেহেদি হাসান মিরাজ। জুটিতে নাসুম ১৪ ও নুরুল ২৩ রানে আউট হলে, ৪৬ ওভার শেষে বাংলাদেশের স্কোর গিয়ে দাঁড়ায় ৭ উইকেটে ১৬৩ রান। এ অবস্থায় বাংলাদেশের ২শ করা অনিশ্চিয়তার মুখে পড়ে। 

কিন্তু ইনিংসের শেষ ২ ওভারে ব্যাট হাতে চার-ছক্কার বন্যা বইয়ে দেন আগের ম্যাচের হিরো রিশাদ হোসেন। মোতির করা ৪৯তম ওভারে ২টি ছক্কা ও ১টি চারে ১৮ এবং আকিলের শেষ ওভারে ১টি করে চার-ছক্কায় ১৬ রান তুলেন রিশাদ। তার ১৪ বলে ৩৯ রানের ক্যামিও ইনিংসের উপর ভর করে ৫০ ওভারে ৭ উইকেটে ২১৩ রানের সংগ্রহ পায় বাংলাদেশ। ৪৭তম ওভারে ক্রিজে আসা রিশাদের ৩টি করে চার-ছক্কায় সাজানো ইনিংসে স্ট্রাইক রেট ছিল ২৭৮.৫৭। 

১টি চারে ৫৮ বলে ৩২ রানে অপরাজিত থাকেন মিরাজ। ওয়েস্ট ইন্ডিজের মোতি ৩টি, আকিল ও আথানাজে ২টি করে উইকেট নেন।

২১৪ রানের টার্গেট তাড়া করতে নেমে ইনিংসের তৃতীয় বলে ধাক্কা খায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। রানের খাতা খোলার আগেই বাংলাদেশ স্পিনার নাসুম আহেমেদের শিকার হন ওপেনার ব্রান্ডন কিং। 

শুরুর ধাক্কা দারুণভাবে সামাল দেন আরেক ওপেনার আথানাজে ও কেসি কার্টি। ৭৮ বলে ৫১ রানের জুটি গড়েন তারা। আথানাজে ও কার্টিকে লেগ বিফোর আউট করে বাংলাদেশকে ম্যাচে ফেরান স্পিনার রিশাদ। ৪টি চারে আথানাজে ২৮ এবং ২টি চার ও ১টি ছক্কায় ৩৫ রান করেন কার্টি। 

দলীয় ৮২ রানের মধ্যে আথানাজে-কার্টি ফেরার পর দ্রুত আরও ২ উইকেট হারায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। আকিম আগস্তেকে ১৭ ও শেরফানে রাদারফোর্ডকে ৭ রানে বিদায় দেন স্পিনার তানভীর ইসলাম। 

এরপর জুটি গড়ার চেষ্টায় ২৫ রান যোগ করেন অধিনায়ক শাই হোপ ও মোতি। ৫ রানের ব্যবধানে মোতি ও চেজকে হারালে ১৩৩ রানে সপ্তম উইকেট হারায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। অষ্টম উইকেটে ৬৫ বলে ৪৪ রানের জুটিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের জয়ের আশা বাঁচিয়ে রাখেন হোপ ও জাস্টিন গ্রেভস। ব্যক্তিগত ২৬ রানে মিরাজের সরাসরি থ্রো রান আউট হন গ্রেভস। 

গ্রেভস যখন ফিরেন তখন ২ উইকেট হাতে নিয়ে ৩১ বলে ৩৭ রান দরকার পড়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজের। এরপর শেষ ২ ওভারে জয়ের সমীকরণ ১৪ রানে নামিয়ে আনেন হোপ ও আকিল হোসেন। মুস্তাফিজের করা ৪৯তম ওভার থেকে ৯ রান পায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। এতে শেষ ওভারে জয়ের জন্য ৫ রান দরকার পড়ে ক্যারিবীয়দের। স্পিনার সাইফের করা শেষ ওভারের প্রথম ৫ বল থেকে ১ উইকেট হারিয়ে ২ রান তুলে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। শেষ বলে ৩ রানের প্রয়োজনে ২ রান নিতে পারেন স্ট্রাইকে থাকা পেইরি। এতে ৫০ ওভারে ৯ উইকেটে ২১৩ রান করে ম্যাচ টাই করে ক্যারিবীয়রা। ফলে টাই হওয়া ম্যাচ সুপার ওভারে গড়ায়। হোপ অপরাজিত ৫৩ রান করেন। 

সুপার ওভারে প্রথমে ব্যাট করে ১০ রান করে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ১১ রানের টার্গেটে প্রথম ৩ বলে ৬ রান তুলে বাংলাদেশ। চতুর্থ বলে আউট হন সৌম্য। পঞ্চম বলে ১ রান আসলে শেষ ডেলিভারিতে ৪ রান দরকার পড়ে টাইগারদের। পরের ডেলিভারি ওয়াইড হয়। আর শেষ বল থেকে ৩ রানের দরকারে সাইফ ১ রান নিতে পারলে ম্যাচ হারে বাংলাদেশ।

আগামী ২৩ অক্টোবর একই ভেন্যুতে সিরিজ নির্ধারনী তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডে খেলতে নামবে বাংলাদেশ ও ওয়েস্ট ইন্ডিজ।

সংক্ষিপ্ত স্কোর :

বাংলাদেশ : ২১৩/৭, ৫০ ওভার (সৌম্য ৪৫, রিশাদ ৩৯*, মোতি ৩/৬৫)। 

ওয়েস্ট ইন্ডিজ : ২১৩/৯, ৫০ ওভার (হোপ ৫৩*, কার্টি ৩৫, রিশাদ ৩/৪২)। 

সুপার ওভার :

ওয়েস্ট ইন্ডিজ : ১০/১, ১ ওভার।

বাংলাদেশ : ৯/১, ১ ওভার।

ফল : ওয়েস্ট ইন্ডিজ সুপার ওভারে জয়ী।

সিরিজ : তিন ম্যাচ সিরিজে ১-১ সমতা।