শনিবার ১২ জুলাই ২০২৫, আষাঢ় ২৮ ১৪৩২, ১৬ মুহররম ১৪৪৭

ব্রেকিং

এনবিআর সংস্কার পরিষদের বহু সদস্যের ‘ক্ষমা প্রার্থনা’, মাঠে ফেরার প্রস্তুতি ৭.৭৫ কোটি টাকার স্থাপনা ভেঙে নতুন স্মৃতিস্তম্ভ গড়ার কাজ শুরু ইসরায়েল আমাকে হত্যা করতে চেয়েছিল: ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান সংস্কার ছাড়া যেনতেন নির্বাচন চায় না জামায়াত: শফিকুর রহমান আশরাফুল, সাকিবদের পর এবার নতুনদের চিনছে শ্রীলঙ্কা বিচার ও সংস্কারকে নির্বাচনের মুখোমুখি করা যাবে না: সাকি সংখ্যানুপাতিক ব্যবস্থায়(পিআর) ‘ভবিষ্যৎ বিভক্তি’র শঙ্কা তারেক রহমানের জুলাই বিপ্লব নিয়ে কটূক্তি করায় কুষ্টিয়ায় ট্রাফিক পুলিশ সদস্য ক্লোজড কলেজ প্যাডে ছাত্রদলের প্রচারণা? অধ্যক্ষের ব্যাখ্যা ঘিরে বিতর্ক মধ্যপ্রাচ্যে ইসরায়েলের সংঘাত বিস্তার: বিশ্লেষণ কলম্বিয়ায় পাহাড়ধসে মৃত্যু ১৬, নিখোঁজ অন্তত ৮ “ত্রাণ নিতে এলে গুলি করতাম”—গাজার ঘটনায় মুখ খুললেন ইসরায়েলি সেনারা তেহরানে ধ্বংসস্তূপে উদ্ধার চলছেই, মৃতের সংখ্যা ছাড়াল ৪৫০ ইরানে বাংলাদেশিদের সহায়তায় হটলাইন চালু উপদেষ্টার গাড়িবহর আটকে বিক্ষোভ: সিলেটে তিনজন কারাগারে ইসরায়েলের টার্গেটে ইরানের রাষ্ট্রীয় সম্প্রচার ভবন লন্ডনে ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও তারেক রহমানের বৈঠক ১৩ জুন তারেক রহমান শিগগিরই দেশে ফিরবেন: ফখরুল রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হবে কাঁচের মতো স্বচ্ছ ঘর: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা নির্বাচনের ঘোষিত সময় মাথায় রেখে যথাসময়ে রোডম্যাপ দেবে ইসি: উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন তুললেন ছাত্রদল নেতা নাছির উদ্দিন মণিপুরে আবার উত্তেজনা, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে প্রশাসনের চাপে ঢাকার ৪ থানায় সক্রিয় অর্ধশতাধিক অপরাধী দল জাতীয় নির্বাচন ২০২৬ সালের এপ্রিলের প্রথমার্ধে: প্রধান উপদেষ্টা প্রধান উপদেষ্টার ঘোষণায় জাতির প্রত্যাশা পূরণ হয়নি: সালাহউদ্দিন আহমদ জুলাই সনদ–ঘোষণাপত্র হলে ঘোষিত সময়ে নির্বাচনে আপত্তি নেই: এনসিপি ২৫ কিলোমিটার যানজট, ২৪ ঘণ্টায় পারাপার ৬৪ হাজার যানবাহন বান্দরবানের রুমা ও থানচি ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা আংশিকভাবে প্রত্যাহার গাজায় যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবে যুক্তরাষ্ট্রের ভেটো, জাতিসংঘ নিরাপত্তা গরম মসলার বাজার শীতল: ক্রেতা কমে যাচ্ছে, দাম কিছুটা স্থিতিশীল ঈদে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে দই-মিষ্টি মজুত, রংপুরে হিমাগারে অভিযান ও দুই লাখ টাকা জরিমানা বান্দরবানের লামায় পাহাড় ধসের শঙ্কায় ৬০ রিসোর্ট বন্ধ নির্বাচন নিয়ে তরুণদের প্রতি অসত্য অভিযোগ ও বাস্তবতা ভারতের মুসলমানদের কেন বারবার দেশপ্রেমের প্রমাণ দিতে হয় সংবিধান পরিবর্তন ছাড়া ফ্যাসিবাদ বিলোপ সম্ভব নয়: এনসিপি মুখ্য সমন্বয়ক একুশের বন্ধুত্বে আগামীর পথচলা: বার্ষিক সম্মেলনে ২১তম বিসিএস প্রশাসন ফোরাম বিজিএমইএ`র নতুন নেতৃত্বে আসছেন বাবু, নিরঙ্কুশ জয়ের ইঙ্গিত জিলহজ মাসের আমল ও কোরবানির তাৎপর্য চট্টগ্রামে নারীকে লাথির ঘটনায় ভাইরাল আকাশ চৌধুরী বহিষ্কৃত, জামায়াতের বিবৃতি সংকট নিরসনে উদ্যোগ নেই, আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিল পবিস শ্রমিকরা আনচেলত্তির স্বপ্ন - রিয়াল মাদ্রিদের মতো করে খেলাবেন ব্রাজিলকে ডিমের দাম এখনো চড়া, ডজন ১৩০–১৪০ টাকায় বিক্রি বৈরী আবহাওয়ার কারণে নোয়াখালীর হাতিয়া দ্বীপের সঙ্গে সারাদেশের নৌ-যোগাযোগ বন্ধ হারের পর লিটনের মনোভাব - এখনো দুই ম্যাচ বাকি কাল থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য দেশের সব জুয়েলারি দোকান বন্ধ ঘোষণা যুক্তরাষ্ট্র চীনা শিক্ষার্থীদের ভিসা বাতিলের প্রক্রিয়া শুরু করবে ডিএনএ টেস্ট করে নামফলক ও মর্যাদা চায় শহীদ পরিবারের সদস্যরা বেতন না পেয়ে ডাকাতি, জাহাজের চিফ ইঞ্জিনিয়ারসহ তিনজন আটক “বাংলাদেশে কৌশলগত স্বার্থ নেই দক্ষিণ কোরিয়ার”—রাষ্ট্রদূত পার্ক ইয়ং সিক “শাপলার হত্যাকাণ্ডের বিচার চাই”—হেফাজতের বিবৃতি মির্জা আব্বাস: “করিডর আর স্টারলিংক আনা হচ্ছে আরাকান আর্মির জন্য” জিলহজ মাসের চাঁদ দেখে যে দোয়া পড়বেন নির্বাচনের আগে যতটুকু দরকার, ততটুকুই সংস্কার করতে হবে: মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম ‘চিন্তার স্বাধীনতাও হারাচ্ছি?’— নারী কমিশন বিতর্কে গীতিআরার উদ্বেগ ইউক্রেনে রাশিয়ার টানা হামলায় নিহত ১২, কঠোর চাপের আহ্বান জানালেন জেলেনস্কি সংস্কার, বিচার ও নির্বাচন – তিনটি কঠিন দায়িত্ব পালনে সচেষ্ট আমরা জুলাই অভ্যুত্থান ক্ষমতার পালাবদল নয়, এটি মৌলিক সংস্কার: নাহিদ হলুদ সাংবাদিকতা’ বিরোধী স্লোগানে উত্তাল শিক্ষক মিছিল ভারতের নিষেধাজ্ঞায় আখাউড়া বন্দর দিয়ে রপ্তানি কমেছে ৪০% বিএনপির অবস্থান কর্মসূচি চলছে, দুই উপদেষ্টার পদত্যাগ দাবি জাতীয় স্বার্থে অভিমান ভুলে দায়িত্বশীল হওয়ার আহ্বান : জামায়াত আমির আন্দোলনের পর অবশেষে নিয়োগ পেলেন ৪৩তম বিসিএসের বাদ পড়া ১৬২ জন নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠনের দাবিতে ইসির সামনে এনসিপির বিক্ষোভ কাল বাংলাদেশে স্টারলিংকের যাত্রা, স্যাটেলাইট ইন্টারনেটের নতুন যুগ শুরু নরওয়ের দৃঢ় সমর্থন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি বিগত সরকারের সময় প্রতিষ্ঠানগুলো ধ্বংসপ্রাপ্ত, এমন অবস্থা ছিল যে খতিবকেও পালাতে হয়েছিল: বাণিজ্য উপদেষ্টা গায়ের জোরে নগর ভবন দখল করে আন্দোলন চালাচ্ছে বিএনপি আবারও রাজপথে নামার ইঙ্গিত আসিফের, সতর্ক করলেন হাসনাত গোপন অধ্যাদেশ বাতিলের দাবিতে আন্দোলন স্থগিত, ২০ মে আলোচনায় বসবে ঐক্য পরিষদ ভারতের আমদানি নিষেধাজ্ঞা সীমান্ত বাণিজ্যে অনিশ্চয়তা তৈরি করছে ভারতের নতুন সিদ্ধান্তে উত্তর-পূর্বাঞ্চল দিয়ে বাংলাদেশি ভোগ্যপণ্য আমদানি বন্ধ গত ৯ মাসে জুলাই-যোদ্ধাদের ওপর ৩৮টি হামলা জবি’র ৪ দফা দাবি মেনে নেওয়ায় আন্দোলনের সমাপ্তি ঘোষণা ডিবি থেকে মুক্তির পর আন্দোলনে উল্লাস জবি শিক্ষার্থীর গাজা দখলে নেওয়ার আকাঙ্ক্ষা পুনর্ব্যক্ত করলেন ট্রাম্প শাহরিয়ার হত্যাকাণ্ডে বিচার নিশ্চিতের অঙ্গীকার উপদেষ্টা আসিফের সোনার দাম ভরিতে কমল ৩ হাজার ৪৫২ টাকা, নতুন দর কার্যকর শুক্রবার থেকে ঢাবি শিক্ষার্থীর মৃত্যু: নিরাপত্তা নিশ্চিতে বড় পদক্ষেপ প্রশাসনের আওয়ামী লীগের কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধে ভারতের উদ্বেগ শ্রীনগরজুড়ে বিস্ফোরণ, যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের অভিযোগ ওমর আব্দুল্লাহর উপদেষ্টা পরিষদের সিদ্ধান্ত: আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে শাহবাগ অবরোধ ‘চলবে’, শনিবার গণজমায়েত ড্রোন যুদ্ধ: ভারত-পাকিস্তান বিরোধের নতুন অধ্যায় আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে সরকার গুরুত্বসহকারে বিবেচনায় নিচ্ছে: প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং আ.লীগ নিষিদ্ধ না হওয়া পর্যন্ত শাহবাগ ছাড়বেন না আন্দোলনকারীরা ‘আপ বাংলাদেশ’–এর আত্মপ্রকাশ পূর্বঘোষণা ছাড়া ভারত সফরে সৌদি প্রতিমন্ত্রী, পাকিস্তান-ভারত উত্তেজনায় কূটনৈতিক তৎপরতা তুঙ্গে দ্রুত সিদ্ধান্ত না এলে সারা দেশ থেকে ঢাকা অভিমুখে মার্চের হুঁশিয়ারি নাহিদ ইসলামের দেশীয় ওষুধ কোম্পানি রেনাটাকে ৭০০ কোটি টাকা ঋণ দিচ্ছে আইএফসি তারেক রহমান: সরকার হয়তো স্বৈরাচারের দোসরদের দেশত্যাগে সহায়তা করছে জাতীয় নিরাপত্তা ইস্যুতে ভারতের নির্দেশে ৪ বাংলাদেশি টিভি চ্যানেল ইউটিউবে বন্ধ

স্পেশাল

আমার ছেলেটা চোখের সামনেই মারা গেল, কিছুই করতে পারলাম না

 প্রকাশিত: ১১:৫০, ৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

আমার ছেলেটা চোখের সামনেই মারা গেল, কিছুই করতে পারলাম না

এইচএসসি পর্যন্ত পড়ালেখা করেছিলেন সিফাত। পরিবারের অর্থনৈতিক অভাবের কারণে আর বেশিদূর পড়তে পারেনি তিনি। ভবিষ্যতে চাকরি করার কোনো ইচ্ছা বা পরিকল্পনা ছিল না তাঁর। কিন্তু তবুও শহিদ আবু সাঈদের রক্তের ঋণ শোধ করার দৃঢ় প্রত্যয় নিয়ে সিফাত ঝাঁপিয়ে পড়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের প্রাণের দাবি কোটা সংস্কারের পক্ষে, রাষ্ট্র সংস্কারের পক্ষে। 

সেদিন ছিল ২০ জুলাই। ঘড়ির কাঁটায় সময় তখন দুপুর ১টা। কারফিউ চলাকালীন মিরপুর-১০ নম্বরের ২৫২ নম্বর মেট্রোরেলের পিলারের পাশে নির্মাণাধীন একটি ভবনের চতুর্থ তলায় অবস্থান করছিলেন সিফাত। সাথে ছিলেন তার অপর এক বন্ধু সিয়াম ও সিফাতের বাবা কামাল হাওলাদার। চতুর্থ তলা থেকে নিচে সিফাত দেখতে পায় বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে একটা মিছিল বের হয়। সাঁজোয়া যানে ওঁতপেতে থাকা ঘাতক পুলিশ সেই শিক্ষার্থীদের মিছিলে পাকহানাদার বাহিনীর মতো অতর্কিত গুলিবর্ষণ শুরু করে।

নারকীয় গণহত্যার সম্পূর্ণ এই ভিডিও সিফাত তার মোবাইলে ধারণ করে। নিচে থাকা ঘাতক পুলিশ তাদের নারকীয় গুলিবর্ষণের দৃশ্যধারণ করা দেখে ফেলে। তারা সিফাত ও তার বন্ধু সিয়ামকে লক্ষ্য করে নিচ থেকেই গুলি করতে শুরু করে। ঘাতকের একটি বুলেট এসে সিফাতের মাথা ভেদ করে অপর পাশ দিয়ে বের হয়ে যায়। অন্য আরেকটি বুলেট এসে সিফাতের বন্ধু সিয়ামের চোখের মণি ভেদ করে মাথার মধ্যে ঢুকে যায়।

গুলি লাগর পর সিফাত ‘আব্বু’ বলে শেষ চিৎকার দিয়ে মুহূর্তেই লুটিয়ে পড়ে ফ্লোরে। অপর রুম থেকে ওর বাবা এসে দেখেন, সন্তানের নিথর দেহ পড়ে আছে। পাশে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে সিফাতের মগজ। মাথা গড়িয়ে ফ্লোর ভেসে যাচ্ছিল সিফাতের শরীরের তাজা রক্তে। 

রাজধানীর মিরপুরে রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা বাসস’র প্রতিবেদকের সাথে আলাপকালে বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে শহিদ মো. সিফাত হোসেনের বাবা কামাল হাওলাদার এসব কথা জানান।

তিনি বলেন, ছেলে আমার ইতালি যাওয়ার ভিসা পেয়েছিল। গেল বছরের ২৫ জুলাই তার ইতালি যাওয়ার কথা ছিল। বিমান টিকিটও কাটা ছিল। কিন্তু তার সেই স্বপ্ন আর পূরণ হলো না। ইতালি যাওয়ার আগেই ২০ জুলাই আল্লাহর ডাকে সাড়া দিয়ে সবাইকে ছেড়ে চলে গেলো সে। আমার ছেলের ইচ্ছা ছিল বৈষম্যহীন একটি সমাজ গঠন। যেখানে সবার অধিকার থাকবে সমান।

সিফাতের (২৬) গ্রামের বাড়ি মাদারীপুর জেলার কালকিনী উপজেলার রমজানপুর ইউনিয়নের চড়পালরদি গ্রামে। বাবা কামাল হাওলাদার (৫১) ও মা পারভিন বেগম (৪২)। দুই ভাই ও এক বোনের মধ্যে সিফাত ছিলেন সবার বড়। সিফাতের ছোট ভাই রিফাত হোসেন (১৮) এবং ছোট বোন জান্নাত (১২)। ভাই রিফাত এই বছর এইচএসসি পরীক্ষা দেবেন।

বোন মিরপুরের মনিপুর স্কুলে পড়লেও, সিফাত নিহত হওয়ার পর তারা এখন গ্রামের বাড়িতে থাকেন এবং স্থানীয় একটি স্কুলে লেখা পড়া করছে জান্নাত। 

সিফাত হোসেন ২০ জুলাই মিরপুর ১০ নম্বর এলাকায় পুলিশের গুলিতে শহিদ হন। পরে সেই দিন রাতে ১০ টার দিকে গ্রামের বাড়িতে পারিবারিক কবরস্থানে সিফাতকে দাফন করা হয়।  

শহিদ সিফাতের বাবা কামাল হাওলাদার বলেন, টাকার অভাবে আমি ওকে লেখাপড়া করাতে পারি নাই। 

সিফাতের স্বপ্ন ছিল অনেক বড়। সেই স্বপ্নকে কাঁধে ভর করেই পাড়ি জমায় মধ্যপ্রাচ্যের দেশ সৌদি আরব। 

সিফাত সেই দেশে তিন বছর থেকে দেশে ফিরে আসে। পরে ঠিক করে ইউরোপের দেশ ইতালি যাবে। ইউরোপ পাড়ি দেওয়ার সব প্রক্রিয়াই শেষ হয়েছিল। ভিসাও পেয়েছিল সে। ২৫ জুলাই ইতালি যাওয়ার কথা ছিল তার। কিন্তু তা আর হলো না। 

সেদিনের ঘটনা বর্ণনা করতে গিয়ে তিনি বলেন, আমি বারবার আমার সন্তানদের আন্দোলনে যেতে নিষেধ করতাম। প্রথম দিকে ওরা তেমন একটা আন্দোলনে যেত না। কিন্তু রংপুরে আবু সাঈদ শহিদ হওয়ার পর তাদের আর ঘরে আটকে রাখতে পারিনি। ২০ জুলাই দুপুর ১টার দিকে মিরপুর-১০ নম্বরের ২৫২ নম্বর মেট্রোরেলের পিলারের পাশে নির্মাণাধীন একটি ভবনের চতুর্থ তলায় অবস্থান করছিল সিফাত ও তার বন্ধু। আমি খবর পেয়ে সেখানে যাই, ছেলেকে আন্দোলন থেকে বাসায় ফিরিয়ে নিতে। আমি অনেক বুঝাই ওকে, বাসায় যেতে। সিফাত বলে ‘তুমি যাও আমি একটু পরে আসছি’।  এই বলে আমি যখন নিচে নামতে থাকি তখনই শুনতে পাই সিফাতের ‘আব্বু’ বলে চিৎকার। আমি দৌড়ে গিয়ে দেখি সিফাত ফ্লোরে পড়ে আছে। পাশে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে মগজ। 
আমার সন্তানের রক্তে ফ্লোর ভেসে যাচ্ছিল।  আমি সিফাত বলে চিৎকার করে ওকে জড়িয়ে ধরি। তখন সে কি যেন বলার চেষ্টা করছিল। কিন্তু আমি ওর কথা বুঝতে পারি নাই।

আমার ছেলেটা চোখের সামনেই মারা গেল, কিছুই করতে পারলাম না। আমি যদি সিফাতকে সেই সময়ে জোর করে বাসায় নিয়ে যেতাম তাহলে ওকে জীবন দিতে হত না। বাবা হিসাবে আমি ব্যথর্, এই বলে তিনি কান্না করতে থাকেন।

নিজেকে একটু সামলে নিয়ে কামাল হাওলাদার বলেন, ওকে কয়েকজন মিলে বিল্ডিং থেকে নিচে নামাই। হাসপাতালে নেয়ার জন্যে কোন কিছু পাচ্ছিলাম না। তখন ওই এলাকায় পুলিশের সাথে সাধারণ জনতার গোলাগুলি চলছিল। পরে অনেক কষ্টে একটা রিকশায় করে সিফাতকে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাই। চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

তিনি বলেন, চিকিৎসকদের সাথে কথা বলে হাসপাতাল থেকে সিফাতের লাশ নিয়ে মিরপুরে আসি। তখন রাস্তায় পুলিশ অনেক ঝামেলা করে। লাশ নিয়ে যেতে দেবে না। রাস্তায় লাশ রাখতে দেবে না। পরে কোন রকম ভাবে একটি গাড়ী ভাড়া করে সিফাতের লাশ গ্রামের বাড়ি কালকিনীতে নিয়ে যাই এবং রাত ১০ টার দিকে পারিবারিক কবরস্থানে  দাফন করি।

কামাল হাওলাদার বলেন, ‘এই সরকার আমাদের সন্তানদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে গঠিত হয়েছে। আমাদের সন্তানদের যারা হত্যা করেছে, তারা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে। আমি তাদের বিচার চাই। 

খুনি আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীদের বিচারের জন্য প্রয়োজনে আমিও আমার সন্তানের মতো আবারও জীবন দেব।’

সহযোগিতার বিষয়ে জানতে চাইলে সিফাতের বাবা বলেন, জুলাই ফাউন্ডেশন থেকে ৫ লাখ টাকার চেক পেয়েছি। এছাড়াও জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে ২ লাখ টাকা সহযোগিতা দেওয়া হয়েছে।

বৈষম্য বিরোধী আন্দোলন চলাকালে রাজধানীর মিরপুরে মো. সিফাত হোসেন নিহতের ঘটনায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং সাবেক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরসহ ২৩ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। মিরপুর মডেল থানায় শহিদ সিফাতের বাবা কামাল হাওলাদার বাদী হয়ে এই মামলা করেন।