সোমবার ০৩ নভেম্বর ২০২৫, কার্তিক ১৯ ১৪৩২, ১২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৭

ব্রেকিং

গণভোটের আলোচনায় ইউনূসকে ‘রেফারির ভূমিকায়’ চায় ধর্মভিত্তিক ৮ দল ১৯৪৯ কোটি টাকা আত্মসাৎ: সালমান এফ রহমান, ভাই, ছেলেদের বিরুদ্ধে ৫ মামলা ডেঙ্গুতে পাঁচজনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ১১৪৭ অভ্যুত্থানের পর প্রথম বছরে বৈদেশিক বিনিয়োগে রেকর্ড প্রাথমিকের সংগীত ও শারীরিক শিক্ষা শিক্ষক পদ বাদ রাজনৈতিক দলগুলোই ঠিক করবে গণভোটের সময় এমপিওভুক্তির দাবিতে ফের লাগাতার অবস্থানে শিক্ষকরা নির্বাচনের ওপর `নির্ভর করছে` দেশ কোন দিকে যাবে: সিইসি জাতীয় নির্বাচনে পোস্টাল ব্যালটে ভোট দেবেন প্রবাসীরা ভারতে বাস-ট্রাক সংঘর্ষে নিহত অন্তত ২০ লঘুচাপ: উপকূলে জোয়ারের উচ্চতা বাড়ার আভাস প্রার্থী চূড়ান্ত করতে বৈঠকে বসছে বিএনপির স্থায়ী কমিটি আফগানিস্তানে ৬.৩ মাত্রার ভূমিকম্পে নিহত ৮ আপাতত ইউক্রেইনের জন্য কোনো টমাহক নয়: ট্রাম্প দক্ষিণ আফ্রিকাকে কাঁদিয়ে প্রথমবারের মত বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ভারত

রাজনীতি

গণভোটের আলোচনায় ইউনূসকে ‘রেফারির ভূমিকায়’ চায় ধর্মভিত্তিক ৮ দল

 প্রকাশিত: ১৭:৫৯, ৩ নভেম্বর ২০২৫

গণভোটের আলোচনায় ইউনূসকে ‘রেফারির ভূমিকায়’ চায় ধর্মভিত্তিক ৮ দল

জুলাই সনদ বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া ও গণভোট আয়োজন নিয়ে মতপার্থক্য নিরসনে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সংলাপ চায় ধর্মভিত্তিক আট দল।

আর সেই আলোচনায় অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসকে ‘রেফারির’ ভূমিকায় থাকার আহ্বান জানিয়েছেন জামায়াতে ইসলামের নায়েবে আমির সৈয়দ আব্দুল্লাহ মো. তাহের।

যুগপৎ আন্দোলনের কর্মসূচি নির্ধারণে সোমবার বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস অফিসে আট দলের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে বৈঠক শেষে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ আহ্বান জানান।

তাহের বলেন, “আমরা যে ঐকমত্যে পৌঁছেছিলাম, তাতে হঠাৎ করে একটি দল বিরোধিতা করছে। আমরা আশা করি, তারা তাদের দলীয় অবস্থান স্পষ্ট করবে। জুলাই সনদ বাস্তবায়ন না হলে গণভোট আগে আর পরে করে লাভ নেই। বরং গণভোটের মাধ্যমে জুলাই সনদ বাস্তবায়ন করতে হবে। কারণ নির্বাচনের দিন ‘হ্যাঁ’ বা ‘না’ ভোটে কারও মনযোগ থাকবে না।”

জামায়াতের নায়েবে আমির বলেন, “আমি গতকালকে দলগুলোর মধ্যে একটি আলোচনার আহ্বান করেছিলাম।আজকে উপদেষ্টা পরিষদও সেই রকম একটি আহ্বান দলগুলোর কাছে জানিয়েছে। আমরাও দেখতে চাই মেইন স্টেক হোল্ডার দলগুলো এই আহ্বানে যেন সাড়া দেয়। তারাও যদি আমাদের মত একইভাবে সাড়া দেয়, তাহলে একটা রাস্তা বেরিয়ে আসবে।

“উপদেষ্টা পরিষদ যে মনে করেছে, তাদের আর কোনো দায়িত্ব নেই, তারা আর কিছুই করবে না, দলগুলো মিলে করবে… তাহলে এখানে একটা রেফারির অভাব হতে পারে। উপদেষ্টা পরিষদের পক্ষ থেকে, বিশেষ করে প্রধান উপদেষ্টা এখানে একটা রেফারির ভূমিকা পালন করবেন আগের মত, এটা আমরা আশা করি।”

জুলাই সনদ বাস্তবায়নের জন্য গণভোট আগামী সংসদ নির্বাচনের সঙ্গে হবে নাকি আগেই হবে— এ নিয়ে বিএনপির সঙ্গে জামায়াতসহ কয়েকটি দলের মতবিরোধ দেখা দিয়েছে।

সোমবার উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে এ বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে জানিয়ে আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, গণভোট কখন হবে, গণভোটের বিষয়বস্তু কী হবে, জুলাই সনদে বর্ণিত ভিন্ন মতগুলো প্রসঙ্গে কী পদক্ষেপ নেওয়া হবে, তা নিয়ে ঐকমত্য কমিশনের প্রস্তাবগুলোর আলোকে ‘জরুরি ভিত্তিতে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত’ গ্রহণ করা প্রয়োজন বলে উপদেষ্টা পরিষদ মনে করে।

“এসব ক্ষেত্রে ফ্যাসিবাদ বিরোধী আন্দোলনের দীর্ঘদিনের মিত্র রাজনৈতিক দলগুলোকে নিজস্ব উদ্যোগে নিজেদের মধ্যে আলাপ-আলোচনা করে সম্ভাব্য দ্রুততম সময়ে, সম্ভব হলে আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে সরকারকে ঐক্যবদ্ধ দিকনির্দেশনা প্রদান করার আহ্বান জানানো হয়।”

তবে এই ‘ঐক্যবদ্ধ দিকনির্দেশনা’ কীভাবে মিলবে, সরকারের তরফ থেকে নতুন করে সংলাপের উদ্যোগ নেওয়া হবে কি না, তা খোলাসা করেননি আইন উপদেষ্টা।

আট দলের সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমির মামুনুল হক বলেন, “বাংলাদেশ ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনের দ্বারপ্রান্তে উপনীত। তবে জুলাই সনদ নিয়ে দেশের মানুষ যে স্বপ্ন দেখেছিল এবং নতুন বন্দোবস্তের স্বপ্ন এখনো অধরা।”

পূর্ব ঘোষিত ৫ দফা দাবি আদায়ে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করে তিনি বলেন, “আমাদের আটটি দলের পাঁচ দফা দাবিতে সংগ্রাম অব্যাহত থাকবে। আমরা জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি প্রদানের দাবি জানিয়ে আসছি। অবিলম্বে জুলাই সনদ বাস্তবায়নের আদেশ জারি করতে হবে। জাতীয় নির্বাচনের আগেই পৃথকভাবে জুলাই সনদ বাস্তবায়নে গণভোট করতে হবে। আরপিও সংশোধন করা হলে আমরা সেটা মানব না। অর্থাৎ আরপিও আগের মতই রাখতে হবে। এগুলোই এখন আমাদের মূল দাবি।”

এসব দাবিতে ৬ নভেম্বর বেলা ১১টায় গণমিছিল করে প্রধান উপদেষ্টার কাছে স্মারকলিপি দেওয়া হবে বলে ঘোষণা দেন মামুনুল হক।

তিনি বলেন, “আশা করি আলোচনার ভিত্তিতে সকল রাজনৈতিক দল সমাধান করতে পারব এবং জুলাই সনদের আইনি ভিত্তির মাধ্যমে আগামী নির্বাচন হবে।”

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করিম (চরমোনাই পীর), ইউনুছ আহমাদ, ও অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন, জামায়াতের সহকারি সেক্রেটারি জেনারেল এএইচএম হামিদুর রহমান আযাদ, নেজামী ইসলাম পার্টির মুফতি হারুন ইজহার, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের মহাসচিব মাওলানা জালাল উদ্দিন, খেলাফত মজলিসের মহাসচিব আহমদ আবদুল কাদের, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টির (জাগপা) মুখপাত্র রাশেদ প্রধান সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।

এরআগে সকালে রাজধানীর পুরানা পল্টনে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বৈঠকে বসেন আট দলের শীর্ষ নেতারা। দলগুলো হল– বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস, খেলাফত মজলিস, খেলাফত আন্দোলন, নেজামে ইসলাম পার্টি, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি (জাগপা) ও ডেভেলপমেন্ট পার্টি।