মঙ্গলবার ১৬ ডিসেম্বর ২০২৫, পৌষ ২ ১৪৩২, ২৫ জমাদিউস সানি ১৪৪৭

ব্রেকিং

নারায়ণগঞ্জে ‘নিরাপত্তা শঙ্কায়’ ভোট থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা বিএনপি প্রার্থীর একাত্তর ও চব্বিশের দালালদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ আছি: নাহিদ স্বাধীনতার শত্রুরা আবার মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে চায়: ফখরুল সৌদি আরবে এ বছর রেকর্ড ৩৪০ জনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর বীর আহমেদকে দেখতে হাসপাতালে অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী প্রশান্ত মহাসাগরে মাদকবাহী জাহাজে মার্কিন হামলায় ৮ নিহত ‘ঘৃণার প্রতীক’ পাকিস্তানের পতাকা আঁকা নিয়ে জবিতে তুলকালাম বীর শহীদদের শ্রদ্ধা জানালেন রাষ্ট্রপতি-প্রধান উপদেষ্টা মহান বিজয় দিবস আজ ওসমান হাদিকে গুলি: শ্যুটার ফয়সালের সহযোগী গ্রেপ্তার বিবিসির বিরুদ্ধে ১০ বিলিয়ন ডলারের মানহানির মামলা ট্রাম্পের

ইসলাম

মিরাসের সুষ্ঠু বণ্টন, ধর্মীয় ও সামাজিক জিম্মাদারি

 প্রকাশিত: ১২:৫৪, ১৬ ডিসেম্বর ২০২৫

মিরাসের সুষ্ঠু বণ্টন, ধর্মীয় ও সামাজিক জিম্মাদারি

 

শিরোনাম :

 আট দলের আসন সমঝোতার জট খুলবে কবে?  স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি মাথাচাড়া দিয়ে ওঠার চেষ্টা করছে : মির্জা ফখরুল  ওয়াজ মাহফিলে লাগবে ইসির অনুমতি  মুসলিম উম্মাহর সূর্যসন্তান পীর জুলফিকার আহমাদ নকশবন্দী রহ.-এর মিশন  বিজয় দিবসে দেশবাসীকে জমিয়তের শুভেচ্ছা  টান দিয়ে মুসলিম নারীর হিজাব খুলে সমালোচনার মুখে বিহারের মুখ্যমন্ত্রী  খুলনায় চলছে পাঁচ দিনের ইসলামি বইমেলা  মসজিদে যাতায়াতের রাস্তা বন্ধ করার প্রতিবাদে মানববন্ধন  ফেনীতে নবম আন্তর্জাতিক কেরাত সম্মেলন বৃহস্পতিবার  আধ্যাত্মিক বাদশার রাজকীয় বিদায়

 

  1.  
  2. ইসলাম
  3. মিরাসের সুষ্ঠু বণ্টন, ধর্মীয় ও সামাজিক জিম্মাদারি

প্রকাশ: ১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫, ০২:৫২ দুপুর

মিরাসের সুষ্ঠু বণ্টন, ধর্মীয় ও সামাজিক জিম্মাদারি

 নিউজ ডেস্ক
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  

 

মুফতী রবিউল ইসলাম রফিক

মৃত ব্যক্তির রেখে যাওয়া সম্পদ হচ্ছে মিরাস, যা মৃত ব্যক্তির নিকটাত্মীয়রা পেয়ে থাকে। আদি কাল থেকেই মৃতের সন্তানাদি ও আত্মীয়দের মাঝে সম্পত্তি বন্টনের নিয়ম চলে আসছে। সম্পদ বন্টনে অনিয়ম হলে তাদের মাঝে ঝগড়া-বিবাদ সৃষ্টি হয়। তা প্রতিহিংসার চরম পর্যায়ে পৌঁছে যায়। তাই মৃত ব্যক্তির সম্পদের সুষ্ঠ বন্টন এর গুরুত্ব অপরীসিম। এতে দুনিয়া ও আখিরাতে কল্যাণ নিহিত রয়েছে। তাই এই বিষয়ে আমাদের যতœবান হওয়া কাম্য।

মিরাস এর অর্থ:

মিরাস শব্দটি ميراث যা وَرَثَ থেকে গঠিত। আভিধানিক অর্থ: অংশীদার হওয়া। ইরশাদ হয়েছে, وَوَرَثَ سُلَيْمَانُ دَاوُدَ সুলায়মান দাউদের ওয়ারিশ হয়েছে। (সুরা নামল, আয়াত: ১৬)

পারিভাষিক অর্থে: মিরাস হলো মৃত ব্যক্তি হতে তার জীবিত ওয়ারিশদের নিকটে মালিকানা স্থানান্তরিত হওয়া।

মৃতের পরিত্যক্ত সম্পদের সাথে সম্পর্কিত বিষয়াদি:

মৃত ব্যক্তির পরিত্যক্ত সম্পদের সাথে বেশ কিছু কর্তব্য রয়েছে। প্রথমত মৃত্যুর সময় থেকে মৃতের পরিত্যক্ত সম্পদ দ্বারা তার গোসল, কাফন-দাফন পর্যন্ত সমস্ত ব্যয়ভার বহন করতে হবে। সেক্ষেত্রে তার সম্পদের উপর ভিত্তি করে মধ্যমপন্থা অবলম্বন করে মৃতের দাফন সংশ্লিষ্ট কার্যাবলি সমাপ্ত করতে হবে। দ্বিতীয়ত: তার ঋণ পরিশোধ করা। মৃতের নিকট কোনো ব্যক্তির ঋণ থাকলে তার পরিত্যক্ত সম্পদ থেকে তা আদায় করে দেওয়া। তৃতীয়ত: মৃতের অছিয়ত পূর্ণ্য করা। মৃতের অছিয়ত বাস্তবায়ন করতে হবে দাফন, কাফন ও ঋণ পরিশোধের পর। চতুর্থ: পরিত্যক্ত সম্পদ ওয়ারিসদের মাঝে বন্টন করা।

মিরাসের একাল-সেকাল

জাহেলি যুগে আরবে মহিলাদেরকে কোনো অংশ দেওয়া হতো না। তাদের মনোভাব ছিলো, যারা যুদ্ধ করতে পারে না বা যারা শত্রুর আক্রমণ থেকে কোনোভাবে আমাদেরকে রক্ষা করতে পারে না, তাদেরকে কিভাবে আমরা সম্পদ প্রদান করতে পারি? অথচ ইসলামি শরিয়ত মিরাসে তাদের হক প্রতিষ্ঠা করেছে। এটা কারো দয়া বা কারো অনুগ্রহ নয়। বরং আল্লাহ তা’আলার পক্ষ থেকে সুনির্ধারিত অংশ।

মিরাসের আয়াতসমূহ অবর্তীর্ণ হওয়ার পর আরবদের কাছে তা অত্যন্ত কঠিন মনে হলো। তারা এই হুকুমের রহিত হয়ে যাওয়া কামনা করতে থাকে। কারণ এই আদেশ ছিলো তাদের অভ্যাসের বিপরীত। তারা বলতে লাগলো, স্ত্রীকে এক -চতুর্থাংশ বা এক অষ্টমাংশ এবং মেয়েকে অর্ধেক ও ছোট শিশুর অংশও বাদ দেওয়া হয়নি। অথচ তারা ঘোড়ায় আরোহন বা যুদ্ধ করতে পারে না।

ভারতীয় উপমহাদেশে হিন্দু সমাজে পিতার পক্ষ থেকে নারীর কোনো মিরাস পায় না। বরং বিয়ের সময় যতটুকু দিয়ে নারীকে বিদায় করা হয়, তা-ই নারীর শেষ প্রাপ্য হিসেবে বিবেচিত হয়। অথচ ইসলামের বিধান ভিন্ন। ইসলাম নারীকে মিরাস প্রদান করে তার প্রতি যুলুম ও বাড়াবাড়ির পথকে রুদ্ধ করেছে। তাকে সম্পদের উত্তরাধিকারী করা হয়েছে। তাকে মর্যাদা দিয়েছে। যা অন্য কোনো ধর্ম দিতে পারেনি।

পবিত্র কুরআনে মিরাসের বিধান:

মহান আল্লাহ তা’আলা কুরআন মাজীদে সূরা নিসার ১১-১২ ও ১৭৬ নং আয়াতে মিরাস বন্টনের নিয়ম-নিতী বর্ণনা করেছেন। আল্লাহ তা’আলা বলেছেন,

یُوصِیكُمُ ٱللَّهُ فِیۤ أَوۡلَـٰدِكُمۡۖ لِلذَّكَرِ مِثۡلُ حَظِّ ٱلۡأُنثَیَیۡنِۚ فَإِن كُنَّ نِسَاۤءࣰ فَوۡقَ ٱثۡنَتَیۡنِ فَلَهُنَّ ثُلُثَا مَا تَرَكَ وَإِن كَانَتۡ وَ ا⁠حِدَةࣰ فَلَهَا ٱلنِّصۡفُۚ وَلِأَبَوَیۡهِ لِكُلِّ وَ احِدࣲ مِّنۡهُمَا ٱلسُّدُسُ مِمَّا تَرَكَ إِن كَانَ لَهُۥ وَلَد، فَإِن لَّمۡ یَكُن لَّهُۥ وَلَد، وَوَرِثَهُۥۤ أَبَوَاهُ فَلِأُمِّهِ ٱلثُّلُثُۚ فَإِن كَانَ لَهُۥۤ إِخۡوَةࣱ فَلِأُمِّهِ ٱلسُّدُسُۚ مِنۢ بَعۡدِ وَصِیَّةࣲ یُوصِی بِهَاۤ أَوۡ دَیۡنٍ.

‘‘আল্লাহ তোমাদের সন্তান-সন্ততি সম্পর্কে তোমাদেরকে নির্দেশ দিচ্ছেন যে, পুরুষের অংশ দুই নারীর সমান’’। যদি কেবল দুই-ততোধিক নারী থাকে, তবে মৃত ব্যক্তি যা কিছু রেখে গেছে, তারা তার দুই তৃতীয়াংশ পাবে। যদি কেবল একজন নারী থাকে, তবে সে পরিত্যক্ত সম্পত্তির অর্ধেক পাবে। মৃত ব্যক্তির পিতা-মাতার মধ্য হতে প্রত্যেকের প্রাপ্য পরিত্যক্ত সম্পত্তির এক ষষ্ঠাংশ, যদি মৃত ব্যক্তির সন্তান থাকে।

আর যদি তার কোনো সন্তান না থাকে এবং তার পিতা-মাতাই তার ওয়ারিশ হয়, তবে তার মায়ের প্রাপ্য এক তৃতীয়াংশ। অবশ্য তার যদি কয়েক ভাই থাকে, তবে তার মায়ের জন্যে এক ষষ্ঠাংশ। আর এ বন্টন করা হবে মৃত ব্যক্তি যেই অছিয়ত করে গেছে তা কার্যকর করার কিংবা (তার যদি কোনো) দেনা (থাকে, তা) পরিশোধ করার পর’’।