সোমবার ১৬ জুন ২০২৫, আষাঢ় ২ ১৪৩২, ১৯ জ্বিলহজ্জ ১৪৪৬

ব্রেকিং

লন্ডনে ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও তারেক রহমানের বৈঠক ১৩ জুন তারেক রহমান শিগগিরই দেশে ফিরবেন: ফখরুল রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হবে কাঁচের মতো স্বচ্ছ ঘর: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা নির্বাচনের ঘোষিত সময় মাথায় রেখে যথাসময়ে রোডম্যাপ দেবে ইসি: উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন তুললেন ছাত্রদল নেতা নাছির উদ্দিন মণিপুরে আবার উত্তেজনা, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে প্রশাসনের চাপে ঢাকার ৪ থানায় সক্রিয় অর্ধশতাধিক অপরাধী দল জাতীয় নির্বাচন ২০২৬ সালের এপ্রিলের প্রথমার্ধে: প্রধান উপদেষ্টা প্রধান উপদেষ্টার ঘোষণায় জাতির প্রত্যাশা পূরণ হয়নি: সালাহউদ্দিন আহমদ জুলাই সনদ–ঘোষণাপত্র হলে ঘোষিত সময়ে নির্বাচনে আপত্তি নেই: এনসিপি ২৫ কিলোমিটার যানজট, ২৪ ঘণ্টায় পারাপার ৬৪ হাজার যানবাহন বান্দরবানের রুমা ও থানচি ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা আংশিকভাবে প্রত্যাহার গাজায় যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবে যুক্তরাষ্ট্রের ভেটো, জাতিসংঘ নিরাপত্তা গরম মসলার বাজার শীতল: ক্রেতা কমে যাচ্ছে, দাম কিছুটা স্থিতিশীল ঈদে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে দই-মিষ্টি মজুত, রংপুরে হিমাগারে অভিযান ও দুই লাখ টাকা জরিমানা বান্দরবানের লামায় পাহাড় ধসের শঙ্কায় ৬০ রিসোর্ট বন্ধ নির্বাচন নিয়ে তরুণদের প্রতি অসত্য অভিযোগ ও বাস্তবতা ভারতের মুসলমানদের কেন বারবার দেশপ্রেমের প্রমাণ দিতে হয় সংবিধান পরিবর্তন ছাড়া ফ্যাসিবাদ বিলোপ সম্ভব নয়: এনসিপি মুখ্য সমন্বয়ক একুশের বন্ধুত্বে আগামীর পথচলা: বার্ষিক সম্মেলনে ২১তম বিসিএস প্রশাসন ফোরাম বিজিএমইএ`র নতুন নেতৃত্বে আসছেন বাবু, নিরঙ্কুশ জয়ের ইঙ্গিত জিলহজ মাসের আমল ও কোরবানির তাৎপর্য চট্টগ্রামে নারীকে লাথির ঘটনায় ভাইরাল আকাশ চৌধুরী বহিষ্কৃত, জামায়াতের বিবৃতি সংকট নিরসনে উদ্যোগ নেই, আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিল পবিস শ্রমিকরা আনচেলত্তির স্বপ্ন - রিয়াল মাদ্রিদের মতো করে খেলাবেন ব্রাজিলকে ডিমের দাম এখনো চড়া, ডজন ১৩০–১৪০ টাকায় বিক্রি বৈরী আবহাওয়ার কারণে নোয়াখালীর হাতিয়া দ্বীপের সঙ্গে সারাদেশের নৌ-যোগাযোগ বন্ধ হারের পর লিটনের মনোভাব - এখনো দুই ম্যাচ বাকি কাল থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য দেশের সব জুয়েলারি দোকান বন্ধ ঘোষণা যুক্তরাষ্ট্র চীনা শিক্ষার্থীদের ভিসা বাতিলের প্রক্রিয়া শুরু করবে ডিএনএ টেস্ট করে নামফলক ও মর্যাদা চায় শহীদ পরিবারের সদস্যরা বেতন না পেয়ে ডাকাতি, জাহাজের চিফ ইঞ্জিনিয়ারসহ তিনজন আটক “বাংলাদেশে কৌশলগত স্বার্থ নেই দক্ষিণ কোরিয়ার”—রাষ্ট্রদূত পার্ক ইয়ং সিক “শাপলার হত্যাকাণ্ডের বিচার চাই”—হেফাজতের বিবৃতি মির্জা আব্বাস: “করিডর আর স্টারলিংক আনা হচ্ছে আরাকান আর্মির জন্য” জিলহজ মাসের চাঁদ দেখে যে দোয়া পড়বেন নির্বাচনের আগে যতটুকু দরকার, ততটুকুই সংস্কার করতে হবে: মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম ‘চিন্তার স্বাধীনতাও হারাচ্ছি?’— নারী কমিশন বিতর্কে গীতিআরার উদ্বেগ ইউক্রেনে রাশিয়ার টানা হামলায় নিহত ১২, কঠোর চাপের আহ্বান জানালেন জেলেনস্কি সংস্কার, বিচার ও নির্বাচন – তিনটি কঠিন দায়িত্ব পালনে সচেষ্ট আমরা জুলাই অভ্যুত্থান ক্ষমতার পালাবদল নয়, এটি মৌলিক সংস্কার: নাহিদ হলুদ সাংবাদিকতা’ বিরোধী স্লোগানে উত্তাল শিক্ষক মিছিল ভারতের নিষেধাজ্ঞায় আখাউড়া বন্দর দিয়ে রপ্তানি কমেছে ৪০% বিএনপির অবস্থান কর্মসূচি চলছে, দুই উপদেষ্টার পদত্যাগ দাবি জাতীয় স্বার্থে অভিমান ভুলে দায়িত্বশীল হওয়ার আহ্বান : জামায়াত আমির আন্দোলনের পর অবশেষে নিয়োগ পেলেন ৪৩তম বিসিএসের বাদ পড়া ১৬২ জন নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠনের দাবিতে ইসির সামনে এনসিপির বিক্ষোভ কাল বাংলাদেশে স্টারলিংকের যাত্রা, স্যাটেলাইট ইন্টারনেটের নতুন যুগ শুরু নরওয়ের দৃঢ় সমর্থন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি বিগত সরকারের সময় প্রতিষ্ঠানগুলো ধ্বংসপ্রাপ্ত, এমন অবস্থা ছিল যে খতিবকেও পালাতে হয়েছিল: বাণিজ্য উপদেষ্টা গায়ের জোরে নগর ভবন দখল করে আন্দোলন চালাচ্ছে বিএনপি আবারও রাজপথে নামার ইঙ্গিত আসিফের, সতর্ক করলেন হাসনাত গোপন অধ্যাদেশ বাতিলের দাবিতে আন্দোলন স্থগিত, ২০ মে আলোচনায় বসবে ঐক্য পরিষদ ভারতের আমদানি নিষেধাজ্ঞা সীমান্ত বাণিজ্যে অনিশ্চয়তা তৈরি করছে ভারতের নতুন সিদ্ধান্তে উত্তর-পূর্বাঞ্চল দিয়ে বাংলাদেশি ভোগ্যপণ্য আমদানি বন্ধ গত ৯ মাসে জুলাই-যোদ্ধাদের ওপর ৩৮টি হামলা জবি’র ৪ দফা দাবি মেনে নেওয়ায় আন্দোলনের সমাপ্তি ঘোষণা ডিবি থেকে মুক্তির পর আন্দোলনে উল্লাস জবি শিক্ষার্থীর গাজা দখলে নেওয়ার আকাঙ্ক্ষা পুনর্ব্যক্ত করলেন ট্রাম্প শাহরিয়ার হত্যাকাণ্ডে বিচার নিশ্চিতের অঙ্গীকার উপদেষ্টা আসিফের সোনার দাম ভরিতে কমল ৩ হাজার ৪৫২ টাকা, নতুন দর কার্যকর শুক্রবার থেকে ঢাবি শিক্ষার্থীর মৃত্যু: নিরাপত্তা নিশ্চিতে বড় পদক্ষেপ প্রশাসনের আওয়ামী লীগের কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধে ভারতের উদ্বেগ শ্রীনগরজুড়ে বিস্ফোরণ, যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের অভিযোগ ওমর আব্দুল্লাহর উপদেষ্টা পরিষদের সিদ্ধান্ত: আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে শাহবাগ অবরোধ ‘চলবে’, শনিবার গণজমায়েত ড্রোন যুদ্ধ: ভারত-পাকিস্তান বিরোধের নতুন অধ্যায় আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে সরকার গুরুত্বসহকারে বিবেচনায় নিচ্ছে: প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং আ.লীগ নিষিদ্ধ না হওয়া পর্যন্ত শাহবাগ ছাড়বেন না আন্দোলনকারীরা ‘আপ বাংলাদেশ’–এর আত্মপ্রকাশ পূর্বঘোষণা ছাড়া ভারত সফরে সৌদি প্রতিমন্ত্রী, পাকিস্তান-ভারত উত্তেজনায় কূটনৈতিক তৎপরতা তুঙ্গে দ্রুত সিদ্ধান্ত না এলে সারা দেশ থেকে ঢাকা অভিমুখে মার্চের হুঁশিয়ারি নাহিদ ইসলামের দেশীয় ওষুধ কোম্পানি রেনাটাকে ৭০০ কোটি টাকা ঋণ দিচ্ছে আইএফসি তারেক রহমান: সরকার হয়তো স্বৈরাচারের দোসরদের দেশত্যাগে সহায়তা করছে জাতীয় নিরাপত্তা ইস্যুতে ভারতের নির্দেশে ৪ বাংলাদেশি টিভি চ্যানেল ইউটিউবে বন্ধ

এডিটর`স চয়েস

সরকারি দপ্তরে ছবি স্থাপন বিতর্ক ॥ ব্যক্তি বন্দনা আইন করে নিষিদ্ধ

 প্রকাশিত: ১৫:৪৭, ১৬ ডিসেম্বর ২০২৪

সরকারি দপ্তরে ছবি স্থাপন বিতর্ক ॥ ব্যক্তি বন্দনা আইন করে নিষিদ্ধ

সম্প্রতি বঙ্গভবনের দরবার হল থেকে শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি নামিয়ে ফেলা প্রসঙ্গে পুরো জাতির বিবেকবান লোকেরা যেখানে সম্মতি ও সন্তোষ প্রকাশ করেছে, সেখানে বিএনপির একজন সিনিয়র নেতা উল্টো বক্তব্য দিয়েছেন। তিনি এ নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। (অবশ্য পরে তিনি আবার এ বিষয়ে ইউটার্ন নিয়েছেন।)

বিএনপি নেতার এমন বক্তব্যে দেশের বিবেকবান মানুষ হতভম্ব হয়ে গেছে। অথচ তাদের উচিত ছিল, এ বিষয়ে আরো আগেই দাবি নিয়ে অগ্রসর হওয়া যে, এখনো দেশের যে সমস্ত জায়গায় শেখ হাসিনা বা তার পরিবারের চিহ্ন আছে, সেগুলো যেন সরিয়ে ফেলা হয়। যা ইতিমধ্যে করা হচ্ছে, রাষ্ট্রীয় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে তাদের গোষ্ঠীর নাম সরানো হচ্ছে। এগুলো প্রয়োজনীয় বিষয়।

এ কাজে যাদের দাবি নিয়ে এগিয়ে আসা দরকার, তারাই কিনা উল্টো বক্তব্য দিচ্ছেন! তারা ‘উদারতা’ দেখাচ্ছেন। যাইহোক পরবর্তীতে পরিস্থিতি বুঝতে পেরে তাদের দলীয় সিদ্ধান্তের কারণে ওই নেতা পুনরায় বিবৃতি দিয়ে দুঃখ প্রকাশ করতে বাধ্য হয়েছেন। যদিও সে বিবৃতি যথাযথ ছিল না, একটা আমতা আমতা ভাব, ব্যাখ্যা দাঁড় করানোর চেষ্টা ছিল! যা তার করা উচিত হয়নি। নিঃশর্ত ক্ষমা চাওয়া দরকার ছিল।

বিগত দিনগুলোতে এ দেশে ব্যক্তি বন্দনা করতে গিয়ে রাষ্ট্রের এবং সাধারণ মানুষের শত শত কোটি টাকা নষ্ট করা হয়েছে। জাতীয় সংসদে প্রতি মিনিটে কয়েক লক্ষ টাকা খরচ হয়। সে সংসদের একেকজন নেতা, সংসদ সদস্যগণ বক্তব্য দিতে দাঁড়িয়ে যতটুকু দরকারি কথা বলেন, তার চেয়ে বেশি নিজ দলের বর্তমান ও সাবেক নেতাদের বন্দনা করেন। ছোটবেলায় গ্রামে-গঞ্জে জারি গান শোনা যেত— প্রথমে বন্দনা করি..., দ্বিতীয়ে বন্দনা করি..., তৃতীয়ে বন্দনা করি...। ঠিক তেমনি একটা ভাব! চলছে, চলছেই! অথচ সংসদে তার যা মূল কাজ সেটি করা হয়েছে খুবই কম!

বন্দনা করে সময় নষ্ট করা হয়েছে এবং রাষ্ট্রের টাকাও ব্যয় হয়েছে। আর এভাবেই অভ্যস্ত হয়েছিল নেতারা। তারা তাদের দলীয় নেতৃবৃন্দের নিঃশর্ত আনুগত্য করে গিয়েছে। তাই নেতাদের ফ্যাসিবাদী হয়ে ওঠার পেছনে এসব বন্দনাকারীদের দায়ও কিন্তু কম না। এ ধরনের একশ্রেণির লোকের উৎসাহেই হয়তো এসব ফ্যাসিবাদী নেতারা আরো জঘন্য হয়ে ওঠে।

আমরা দেখেছি, ১৯৯৬ থেকে ২০০১-এর আওয়ামী লীগ সরকার তাদের দলীয় লোকদের সুপ্রতিষ্ঠিত করার জন্য ততটুকু বন্দনা করেনি, ততটা আগ্রাসী হয়ে ওঠেনি, যতটা করেছে বিগত ১৬ বছরে। এর কারণ কী? কারণ তাদের দলীয় লোকজন এবং একশ্রেণির মতলবী মানুষ ব্যক্তিগত সুবিধা নেওয়ার জন্য ‘নাচুনি বুড়ি’র সাথে ঢোলে বাড়ি দিয়ে গেছে।

বিগত দিনগুলোতে দেখা গেছে, বছরাধিক কাল সময় নিয়ে এক ব্যক্তির জন্মশতবার্ষিকী পালন করা হয়েছে! রাষ্ট্রের কত শত কোটি টাকা অপচয় হয়েছে তখন! সাথে বেসরকারিভাবে বিভিন্ন ব্যাংক ও কোম্পানিকেও এটা করতে বাধ্য করা হয়েছে। মোট কত টাকা অপচয় হয়েছে— এর পূর্ণাঙ্গ হিসাব এখনো প্রকাশ্যে আসেনি।

প্রশ্ন হচ্ছে, ব্যক্তির বন্দনা করা হবে কেন? এটা তো কোনো রাজতান্ত্রিক দেশ না। জমিদারি প্রথাও তো অনেক আগেই এ দেশ থেকে বিলুপ্ত হয়েছে। আগে রাজা-বাদশাহর বন্দনা করা হত, জমিদারদের স্তুতিকাব্য পাঠ করতে হত; তা বিলুপ্ত হয়ে চালু হয়েছে এমন নীতি, যেখানে বলা হয়েছে, রাষ্ট্রের মালিক জনগণ! সংবিধানেও সেভাবেই লেখা। মালিক যদি জনগণই হয়, তাহলে এই মালিকদের অর্থ খরচ করে যেসব নেতারা এদেশে সেবা দিয়েছে, চাকরি করেছে, এসব করতে গিয়ে অনেকে রাষ্ট্রের বেতনসহ নানা সুবিধাও নিয়েছে, সেইসাথে রাষ্ট্রকে ধ্বংসও করেছে, কেউ একনায়কতন্ত্র কায়েম করেছে, কেউ ফ্যাসিবাদ কায়েম করেছে— তাদের কেন বন্দনা করতে হবে?

এরশাদ অনেক দিন ক্ষমতায় ছিলেন, জিয়াউর রহমান আর্মি থেকে এসেছেন, তারাও দোষে-গুণে মানুষ ছিলেন। এরশাদ যখন ক্ষমতায় ছিলেন, তিনি তো একনায়কতন্ত্র (Dictatorship) কায়েম করেছিলেন। তিনি জোর করে ক্ষমতায় বসেছেন। জিয়াউর রহমান সাহেবেরও দোষ-গুণ ছিল। এভাবে যার কথাই বলি, কেউ তো এমন না যে, তারা এ দেশকে সবকিছু দিয়ে চলে গেছেন! তাহলে কেন এ বন্দনা! এমন তো নয় যে, শেখ মুজিব শুধুই মঙ্গল করেছেন, খারাপ কিছুই করেননি।

আমরা মনে করি, এ অহেতুক কাজ আইন করে বন্ধ করা দরকার, যেন কোনো দপ্তরে কারো ছবি না থাকে।

কেন ব্যক্তি বন্দনায় এত খরচ করতে হবে! এ দেশ তো অঢেল সম্পদের মালিক বনে যায়নি! অপচয় করার মতো টাকা তো এদেশে নেই। সম্পদশালী হলেও তো অপচয় করবে না, নাগরিকদের সুবিধা দেবে। রাষ্ট্র যেখানে লক্ষ-কোটি টাকা ঋণী, জনগণের মাথায় ঋণের বোঝা, সেখানে শত কোটি টাকা অপচয় করে ব্যক্তির বন্দনা চলবে!

পুরো দেশে এ ছবি পাঠাতে এবং দপ্তরগুলোতে বসাতে কত টাকা লাগে? এটা কার পকেট থেকে যায়! বিগত সময়গুলোতে তো তারা এভাবে মূর্তি বানিয়েও বসিয়েছে বিভিন্ন স্থানে। সেখানেও কোটি কোটি টাকা খরচ করেছে। এখন রিজভী এটা বলে কী বোঝাতে চান? তারা ক্ষমতায় এলে কি চতুর্দিকে আবার মুজিব-জিয়ার মূর্তি বানানো শুরু করবে? তাদের মনে রাখতে হবে, এসব সুযোগ এদেশে আর হবে না। এখান থেকে শিক্ষা নেওয়া উচিত যে, এক রাতে কত মূর্তি ভাঙা হয়েছে! এটা কিন্তু কোনো আলেম-উলামার নেতৃত্বে করা হয়নি। সাধারণ মানুষই নিজেদের ক্ষোভ থেকে এসব করেছে।

আরেকটি বিষয়ের প্রতিও দৃষ্টি আকর্ষণ করছি— একটা তো হচ্ছে, একজন বড় নেতার ছবি দিয়ে সব জায়গা ভরে দেওয়া, আরেকটা হচ্ছে, কোনো অফিস বা কার্যালয়ে আগে যারা কাজ করে গেছেন, তাদের সবার ছবিও রাখা! অর্থাৎ এ পর্যন্ত যতজন প্রধানমন্ত্রী গত হয়েছেন, যতজন প্রেসিডেন্ট গত হয়েছেন তাদের সবার ছবি তাদের কার্যালয়ে টানিয়ে রাখা। তেমনিভাবে একটা থানায় বা জেলা প্রশাসকের অফিসে যতজন ওসি ও ডিসি কাজ করে গেছেন, তাদের সবার নাম ও কাজের মেয়াদসহ ছবি টানানো!  এটা কোন্ ধরনের কথা? এগুলো কেন থাকতে হবে? বাংলাদেশ কি কেবল ২০-৫০-১০০ বছর থাকবে? বহুকাল থাকবে এদেশ। এখন তা যদি কয়েক শ বছরব্যাপী হয়, তাহলে এত ছবির জায়গা হবে কোথায়? তখন ছবি সংরক্ষণের জন্যই তো কয়েকটা রুম লাগবে।

তাই আমরা মনে করি, এ প্রবণতা বন্ধ করা দরকার। শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি আইন করে বসানো হয়েছিল। ২০০১ সনে ক্ষমতায় আসার পর আইন করে ছবি বসানোর কাজ কিন্তু বিএনপিও করেছিল যে, প্রধানমন্ত্রীর ছবি বিভিন্ন জায়গায় বসাতে হবে। কিন্তু সেটা কি টিকেছে? বিএনপিকে এগুলো বুঝতে হবে। সেই আইনের সুযোগ নিয়ে, তাতে সংশোধনী এনে খালেদা জিয়ার পরবর্তীতে শেখ মুজিবের ছবি বসানোর আইন করা হল। শুধু ছবি বা প্রতিকৃতি স্থাপনের মতো একটি অযথা কাজের জন্য দু-দুবার সংবিধান সংশোধন করা হয়েছিল।

বিভিন্ন দল ক্ষমতায় আসে। সাধারণ জনগণ তো তাদের এজন্য ক্ষমতায় বসায় না যে, তারা জনগণের টাকা দিয়ে তাদের বিভিন্ন নেতার ছবি অফিসগুলোতে টাঙিয়ে রাখবে!

যেসব বিষয় সংবিধানে নেই, ঐতিহ্যগতভাবে নিয়ম হিসেবে চলে আসছে, যেমন, বিভিন্ন অফিসে গত হওয়া অফিসারদের নাম-মেয়াদ ও ছবি বসানো— এ ধারা বন্ধ করা উচিত, এগুলোও সরিয়ে দেওয়া উচিত। দেশের প্রধানমন্ত্রীর ভবনে এটা কেন লেখা থাকবে, এত সন থেকে এত সন পর্যন্ত শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী ছিলেন! এত সন থেকে এত সন এরশাদ ক্ষমতায় ছিলেন! তারা কি বৈধ ছিলেন? তাহলে কেন তাদের ছবি টানানো থাকবে, নাম উল্লেখ করা থাকবে?

এরপর যারা এত বছর পর্যন্ত বিনা ভোটের সংসদ সদস্যদের মাধ্যমে নির্বাচিত হয়ে রাষ্ট্রপতি হয়েছেন, তারা কীভাবে বৈধ হয়ে গেলেন? তাদের ছবিও কি শোভা পেতে থাকবে?

এই বিষয়ে ইসলামী শরীয়তের বিধান একেবারে স্পষ্ট। ইসলামে এ ধরনের ছবি প্রদর্শনের কোনো সুযোগই নেই। ডিজিটাল ছবি রাখা বা ওঠানো যাবে কি না— সেটা নিয়ে একাধিক মতামত আছে; কিন্তু ছবি প্রিন্ট করে সম্মান স্বরূপ প্রদর্শন করা স্পষ্ট হারাম। এটিকে কোনো নির্ভরযোগ্য আলেমই জায়েয বলেননি।

আমরা আশা করি, রাজনৈতিক দলগুলো এবং দেশের বিবেকবান মানুষ এ বিষয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সিদ্ধান্তকে সমর্থন করবে। তাদের প্রতি আরো দাবি জানাবে যে, গত হওয়া কর্মকর্তা ও বিভিন্ন পদের লোকদের যে ছবি এখনো দপ্তরে দপ্তরে টানানো, সেগুলোও যেন সরিয়ে ফেলা হয়।

বিভিন্ন দপ্তরে ফ্যাসিবাদের দোসর মন্ত্রী-এমপিরাও কাজ করে গেছেন। তাহলে কি রেওয়াজ অনুযায়ী, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আসাদুজ্জামান খান কামালের ছবি ঝুলতে থাকবে, সড়ক মন্ত্রণালয়ে ওবায়দুল কাদেরের ছবি ঝুলতে থাকবে, এভাবে যে মন্ত্রণালয়ে যারা ফ্যাসিবাদের দোসর হয়ে কাজ করে গেছে তাদের ছবি থাকবে, পাশে লেখা থাকবে, তারা এত এত বছর পর্যন্ত ক্ষমতায় ছিলেন! কত সুন্দর দেখাবে, তাই না!

বিএনপি ভেবেছে, তারা ক্ষমতায় গিয়ে উদারতা দেখাবে,  কারণ তাদের ছবিও তো আছে! কেমন দেখাবে, তারা ক্ষমতায় রয়েছে আর তাদের মাথার ওপর সেই ফ্যাসিবাদী লোকগুলোর ছবিও ঝুলছে! আল্লাহ তাআলা এদেশের নেতাদের মধ্যে শুভবুদ্ধি উদয় করুন। অযথা ও বেহুদা কাজে সময় নষ্ট না করে জাতির সেবায় মনোযোগ দেওয়ার তাওফীক দান করুন।

আলকাউসার