কবি নজরুলের পাশে শায়িত হাদি
কবি কাজী নজরুল ইসলামের কবরের পাশে সমাহিত করা হয়েছে ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরীফ ওসমান হাদিকে।
শনিবার ৪টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদের পাশে জাতীয় কবির সমাধিসৌধে তাকে দাফন করা হয়।
সেখানে আমার দেশ সম্পাদক মাহমুদুর রহমান বলেন, “আজকে আমি সাধারণ মানুষের সাথে হাদির জানাজা পড়েছি। আজকে প্রধান উপদেষ্টা ডেকেছেন, আমি যাইনি।
“আল্লাহ হাদিকে শাহাদাতের জজবা হিসেবে কবুল করে নিয়েছেন। ভারতীয় আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে এ পর্যন্ত তৃতীয় শহীদ হিসেবে আল্লাহ কবুল করেছেন।
“আমি হাদিকে নিয়ে আমার মাকে শুইয়ে দিয়েছি, আজ আমি হাদিকে কবরে শুইয়ে দিতে এসেছি।”
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়াজ আহমদ খান বলেন, “শহীদ শরীফ ওসমান হাদি ইতিহাসের অংশ হয়ে গেছে। দেশের জন্য তার যে ত্যাগ আল্লাহ তাআলা কবুল করুক।
“তার পরিবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্প্রসারিত পরিবারের অংশ। আমরা চূড়ান্তভাবে সম্মান জানাতে আমাদের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের পাশে তাকে কবরস্থ করা হয়েছে। আমরা মনে করি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় তার সন্তানকে বুকে নিয়েছে। মা তার ছেলেকে বা বিশ্ববিদ্যালয় তাকে গ্রহণ করেছে।”
বক্তব্য শেষে দোয়া পরিচালনা করেন হাদির বড় ভাই আবু বকর সিদ্দিক।
এর আগে দুপুর আড়াইটায় জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় হাজার হাজার মানুষের অংশগ্রহণে তারা জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। তার কফিন কবি নজরুলের সমাধিসৌধে পৌঁছায় বিকাল পৌনে ৩টায়।
দাফনের সময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর সহযোগী অধ্যাপক সাইফুদ্দিন আহমদ, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, জাতীয় নাগরিক পার্টির আখতার হোসেন, হাসনাত আবদুল্লাহ, নাসির উদ্দিন পাটওয়ারী এবং হাদির পরিবারের সদস্যরা।
গত ১২ ডিসেম্বর দুপুর সোয়া ২টার দিকে রাজধানীর বিজয়নগর পানির ট্যাংকির সামনে রিকশায় করে যাওয়ার সময় ওসমান হাদির উপর আক্রমণ হয়। ওই সময় মোটরসাইকেলে করে এসে দুজন তাকে খুব কাছ থেকে গুলি করে পালিয়ে যায়।
পরে আশঙ্কাজনক অবস্থায় দ্রুত তাকে ঢাকা মেডিকেলের জরুরি বিভাগে নেওয়া হয়। একপর্যায়ে পরিবারের ইচ্ছায় তাকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। এরপর সেখানে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) তার চিকিৎসা চলে।
পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য সোমবার এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে হাদিকে সিঙ্গাপুর নিয়ে যাওয়া হয়েছিল; সেখানেই বৃহস্পতিবার তার মৃত্যু হয়।