১৭ ঘণ্টা পার হলেও উদ্ধার হয়নি সাজিদ, খোঁড়া হচ্ছে সুড়ঙ্গ
রাজশাহীর তানোরে গভীর নলকূপের জন্য খনন করা ৮ ইঞ্চি ব্যাসের গর্তে পড়ে যাওয়া দুই বছরের শিশু সাজিদকে উদ্ধারে চলছে টানা প্রচেষ্টা। ১৭ ঘণ্টা পার হলেও তাকে এখনও উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি।
বুধবার (১০ ডিসেম্বর) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে রাজশাহীর তানোর উপজেলায় পরিত্যক্ত গভীর নলকূপটিতে পড়ে যায় সাজিদ। তাকে উদ্ধারের জন্য ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) ভোর থেকে সুড়ঙ্গ খোঁড়ার কাজ শুরু করছেন।
জানা গেছে, মাটির নিচে সাজিদ পর্যন্ত পৌঁছতে মূল গর্তের পাশে ৫০ ফুট গভীর পর্যন্ত বড় গর্ত খনন করেছে ফায়ার সার্ভিস। সেই গর্ত থেকে সরু মূল গর্তের দিকে সুড়ঙ্গ তৈরির কাজ চলছে।
সাজিদকে বাঁচিয়ে রাখতে বুধবার থেকেই গর্তে পাইপের মাধ্যমে অক্সিজেন সরবরাহ করা হচ্ছে।
পরিবারের লোকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ১টার দিকে মায়ের পেছনে হাঁটার সময় অসাবধানতাবশত ওই গর্তে পড়ে যায় সাজিদ। ঘটনার পরপরই ফায়ার সার্ভিসকে জানানো হলে তানোর, চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও রাজশাহী সদর স্টেশনের তিনটি ইউনিট এসে উদ্ধার অভিযান শুরু করে।
তানোর অঞ্চলে ভূগর্ভস্থ পানির স্তর অত্যন্ত নিচে হওয়ায় এখানে গভীর নলকূপ বসাতে কমপক্ষে ১২০ থেকে ১৩০ ফুট পর্যন্ত খনন করতে হয়। কছির উদ্দিন নামে এক ব্যক্তি কৃষিকাজের জন্য একটি গভীর নলকূপ স্থাপন করতে গিয়ে বছর খানেক আগে ৮ ইঞ্চি ব্যাসের সেই গর্ত খনন করেছিলেন। কিন্তু পানি না পাওয়ায় নলকূপ বসানো হয়নি। সেই ফাঁকাই গর্তে পড়ে যায় স্থানীয় রাকিবুল ইসলামের ছেলে সাজিদ। ফায়ার সার্ভিসের ধারনা, শিশুটি প্রায় ৩৫ ফুট নিচে পড়ে থাকতে পারে।
বুধবার গর্তে পড়ে যাওয়া সাজিদের কান্না শোনা যাচ্ছিল। ক্যামেরা নামিয়ে তাকে সনাক্তের চেষ্টা চালানো হলেও দেখা যায়নি। এরপর বিকেল থেকে গর্তের পাশেই স্কেভেটর দিয়ে খনন শুরু করে ফায়ার সার্ভিস। পরপর তিনটি স্কেভেটর এনে রাতভর কাজ চালানো হয়। এর মাধ্যমে ভোরের দিকে প্রায় ৪০ ফুট গভীর পর্যন্ত গর্ত খনন সম্ভব হয়। পরে শুরু হয় সুড়ঙ্গ তৈরির কাজ।
ফায়ার সার্ভিসের রাজশাহী স্টেশনের সহকারী পরিচালক দিদারুল ইসলাম বলেন, উদ্ধার কাজ এখনও চলছে। গর্ত কাটা শেষ হয়েছে, এখন সুড়ঙ্গ করা হচ্ছে। আমরা শিশুটিকে অক্ষত অবস্থায় উদ্ধার করতে চাই।
এদিকে ঘটনাস্থলে ভিড় করছেন অসংখ্য মানুষ। তাদের ভিড় সামাল দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে।