মঙ্গলবার ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, আশ্বিন ১ ১৪৩২, ২৩ রবিউল আউয়াল ১৪৪৭

অর্থনীতি

যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ২০ শতাংশ শুল্ক নিশ্চিত করা সরকারের বড় সাফল্য

 প্রকাশিত: ২১:৪৩, ২৩ আগস্ট ২০২৫

যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ২০ শতাংশ শুল্ক নিশ্চিত করা সরকারের বড় সাফল্য

যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সাম্প্রতিক ট্যারিফ আলোচনায় ২০ শতাংশ শুল্ক নিশ্চিত করাকে অন্তর্বর্তী সরকারের অন্যতম বড় সাফল্য হিসেবে উল্লেখ করেছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।

শনিবার রাজধানীর ফার্মগেটের ডেইলি স্টার ভবনে বাংলাদেশ রিসার্চ এনালাইসিস অ্যান্ড ইনফরমেশন নেটওয়ার্ক (ব্রেইন) আয়োজিত এক গোলটেবিল আলোচনায় তিনি বলেন, “এই আলোচনা ছিল সরকারের সবচেয়ে বড় পররাষ্ট্রনীতি-সংক্রান্ত চ্যালেঞ্জ। কিন্তু সঠিক প্রস্তুতি ও আত্মবিশ্বাসের মাধ্যমে বাংলাদেশ কাঙ্ক্ষিত ফলাফল অর্জন করেছে।”

তিনি জানান, অনেকেই ভেবেছিলেন অন্তর্বর্তী সরকার দুর্বল হওয়ায় তারা যুক্তরাষ্ট্র থেকে ভালো চুক্তি আদায় করতে পারবে না। কিন্তু অভিজ্ঞ টিমওয়ার্ক এবং প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের আন্তর্জাতিক গ্রহণযোগ্যতার কারণে সরকার সফল হয়েছে।

শফিকুল আলম আরও বলেন, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ড. খলিলুর রহমান যুক্তরাষ্ট্র সফরে গিয়ে ট্রাম্প প্রশাসনের ট্যারিফ নীতি বোঝার পর থেকেই বাংলাদেশ যথাযথ প্রস্তুতি নিতে শুরু করে। আলোচনায় তিনটি মূল শক্তি কাজ করেছেপ্রধান উপদেষ্টার আন্তর্জাতিক পরিচিতি, খলিলুর রহমানের অভিজ্ঞতা এবং বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশির উদ্দিনের বৈশ্বিক বাজার বিশ্লেষণ।

তিনি জানান, কটন, তেল, পোল্ট্রি ফিড ও ভোজ্যতেলসহ বহু ক্ষেত্রে বাংলাদেশ বৈশ্বিক আমদানিকারক হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ অবস্থান তৈরি করেছে। আলোচনায় সেটিকে লেভারেজ হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে।

প্রেস সচিব বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ছাড়াও জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, ব্রাজিল, দক্ষিণ আফ্রিকা ও মধ্যপ্রাচ্যের বাজারে বাংলাদেশের রপ্তানি দ্রুত বাড়ছে। সমান্তরালে এসব বাজারের দিকেও সরকারের নজর রয়েছে।

তিনি উল্লেখ করেন, চট্টগ্রাম বন্দরকে আরও দক্ষ করা এবং সরবরাহ ব্যবস্থায় সংস্কার বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণে অপরিহার্য। “চট্টগ্রাম বন্দরকে যদি সিঙ্গাপুরের মতো আধুনিক না করা যায়, তাহলে বিদেশি বিনিয়োগ আটকে রাখা যাবে না,” বলেন তিনি।

শফিকুল আলম জানান, অন্তর্বর্তী সরকারের পদক্ষেপে ইতোমধ্যে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে এসেছে, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বেড়েছে এবং অর্থনীতিতে স্থিতিশীলতা ফিরছে। তার ভাষায়, “আমরা হয়তো ৮ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন করিনি, কিন্তু গণঅভ্যুত্থান-পরবর্তী সময়ে ৪ শতাংশ প্রবৃদ্ধি কোনোভাবেই খারাপ নয়।”

তিনি আশা প্রকাশ করেন, এই ট্যারিফ আলোচনার সাফল্য বাংলাদেশের অর্থনীতিকে নতুন প্ল্যাটফর্মে নিয়ে যাবে এবং যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য সম্পর্ক আরও গভীর হবে। “আমরা চাই যুক্তরাষ্ট্রের বিশাল বাজারে আরও প্রবেশাধিকার। এতে বাংলাদেশের সমৃদ্ধির নতুন পথ উন্মোচিত হবে,” বলেন প্রেস সচিব।