বৃহস্পতিবার ২৩ অক্টোবর ২০২৫, কার্তিক ৮ ১৪৩২, ০১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৭

ব্রেকিং

ট্রাইব্যুনালে হাসিনার রায় কবে, জানা যাবে ১৩ নভেম্বর অতীতের ভুলের জন্য নিঃশর্ত ক্ষমা চাইলেন জামায়াত আমির রোববারের মধ্যে যুবলীগ নেতা সম্রাটকে আদালতে হাজিরের নির্দেশ উপদেষ্টা পরিষদের সভা অনুষ্ঠিত ১ কোটি ৭০ লাখ শিশুকে টাইফয়েড টিকা দেওয়া হয়েছে প্যাসিফিক জিনসের আট কারখানা সচল, মালিক-শ্রমিক-পুলিশে স্বস্তি সাভারে পূর্ব শত্রুতার জেরে এক ব্যক্তিকে কুপিয়ে হত্যা জেনিভা ক্যাম্পে দুই পক্ষের সংঘর্ষের মধ্যে পড়ে যুবক নিহত প্রবাসী করদাতাদের জন্য ই-রিটার্ন দাখিল সহজ হল জুলাই আন্দোলন: ইরেশ যাকেরকে অব্যাহতি দিতে দেখানো হলো তিন কারণ আরও ৩০ ফিলিস্তিনির লাশ হস্তান্তর করল ইসরায়েল কোনো ফরম্যাট থেকে অবসর নিইনি, দেশের মাটিতে বিদায় নিতে চাই: সাকিব

জাতীয়

জুলাই আন্দোলন: ইরেশ যাকেরকে অব্যাহতি দিতে দেখানো হলো তিন কারণ

 প্রকাশিত: ১১:২৬, ২৩ অক্টোবর ২০২৫

জুলাই আন্দোলন: ইরেশ যাকেরকে অব্যাহতি দিতে দেখানো হলো তিন কারণ

অভিনেতা ইরেশ যাকেরের বিরুদ্ধে করা যে মামলা নিয়ে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছিল, জুলাই আন্দোলনের সেই শ্রাবণ হত্যা মামলা থেকে তাকে অব্যাহতির আবেদন করা হয়েছে।

গত ৯ অক্টোবর আদালতে অন্তর্বর্তী প্রতিবেদন দাখিল করে অব্যাহতি চেয়েছেন তদন্ত কর্মকর্তা মিরপুর মডেল থানার পরিদর্শক সাজ্জাদ রোমন।

বিজ্ঞাপন ও ব্র্যান্ড কমিউনিকেশন গোষ্ঠী এশিয়াটিক থ্রিসিক্সটির এমডি ইরেশের সঙ্গে সহযোগী কোম্পানি ফোরথট পিআরের এমডি ইকরাম মঈন চৌধুরীকেও অব্যাহতি চাওয়া হয়েছে এ প্রতিবেদনে।

জানতে চাইলে তদন্ত কর্মকর্তা পরিদর্শক সাজ্জাদ রোমন বলেন, “প্রাথমিক অনুসন্ধানে ইরেশ যাকের এবং ইকরাম মঈন চৌধুরীর বিরুদ্ধে মামলার ঘটনার সাথে সম্পৃক্ত থাকার প্রমাণ পাওয়া যায়নি।

“এজন্য মামলা থেকে তাদের অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। পরবর্তীতে তাদের বিরুদ্ধে সাক্ষ্যপ্রমাণ পাওয়া গেলে প্রতিবেদন দাখিল করব।”

মামলার বিবরণ অনুযায়ী, আওয়ামী লীগের সরকারের পতনের দিন ৫ অগাস্ট দুপুরে মিরপুর শপিং কমপ্লেক্স ও মিরপুর মডেল থানার মধ্যবর্তী রাস্তা দিয়ে ছাত্রজনতার মিছিল চলাকালে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা আক্রমণ করে। তখন আসামিদের গুলিতে বিএনপিকর্মী মাহফুজ আলম শ্রাবণ আহত হন। তাকে রিকশায় করে মিরপুরের একটি হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

শ্রাবণের ভাই মোস্তাফিজুর রহমান বাপ্পী গত ২৭ মার্চ ঢাকার মহানগর হাকিম হাসিবুজ্জামানের আদালতে এ মামলার আবেদন করেন। ওইদিন আদালত বাদীর জবানবন্দি নিয়ে অভিযোগটি মিরপুর মডেল থানার ওসিকে নিয়মিত মামলা হিসেবে নেওয়ার নির্দেশ দেয়।

ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনাসহ ৪০৭ জন আসামির মধ্যে ইরেশ, মঈন ছাড়াও সাবেক মন্ত্রী-এমপি, ঢাকার সাবেক দুই মেয়র, সাংবাদিক, ব্যবসায়ী, নির্বাচন কমিশনার, আইনজীবী রয়েছেন।

জুলাই আন্দোলনের বিভিন্ন মামলায় ঢালাও আসামি করা নিয়ে সমালোচনার মধ্যে ২৮ এপ্রিল সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী বলেছিলেন, ইরেশ যাকেরের বিরুদ্ধে জুলাই আন্দোলনের হত্যা মামলা হওয়া ‘বিরক্তিকর’। ইরেশকে তিনি ব্যক্তিগতভাবে চেনেন। তিনি জুলাই আন্দোলনেও জড়িত ছিলেন। এ ঘটনায় পুলিশ সঠিক তদন্ত করবে।

ইরেশ-মঈনকে অব্যাহতি দেওয়ার প্রশ্নে তিনটি কারণ দেখিয়েছেন তদন্ত কর্মকর্তা সাজ্জাদ রোমন। প্রতিবেদনে তিনি বলেছেন, তারা ২০২৪ সালের ৫ অগাস্ট বেলা আড়াইটার দিকে মামলার ঘটনাস্থল উপস্থিত ছিলেন বলে কোন প্রত্যক্ষদর্শী এবং সুনির্দিষ্ট সাক্ষ্য প্রমাণ পাওয়া যায়নি। ওই সময় ঘটনাস্থলে এ দুজনর উপস্থিতির স্থিরচিত্র বা কোনো ভিডিও পাওয়া যায়নি। তারা ঘটনাস্থলে উপস্থিত থেকে মামলার ঘটনা সংঘটিত করেছিলেন বলে কোনো দালিলিক সাক্ষ্য প্রমাণ পাওয়া যায়নি।

এ তিন কারণ দেখিয়ে অন্তর্বর্তী প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভবিষ্যতে আসামিদের বিরুদ্ধে মামলার ঘটনায় জড়িত থাকার প্রামাণ্য দালিলিক এবং বাস্তবভিত্তিক সাক্ষ্য প্রমাণ পাওয়া গেলে ‘বিধি মোতাবেক’ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

জানতে চাইলে মামলার বাদী মোস্তাফিজুর রহমান বাপ্পি বলেন, “আমি নওগাঁতে থাকি। আমার ভাই ঢাকার মিরপুরে থাকতো। সে পড়াশোনার পাশাপাশি একটি প্রতিষ্ঠানে চাকরিও করতো। ৫ অগাস্ট গুলিতে নিহত হয়।

“আমি নওগাঁ থেকে ঢাকায় গিয়ে মামলা করি। আমি ঘটনাস্থলে ছিলাম না। আমি জেনে-শুনে, সহযোগী শুভাকাঙ্ক্ষীদের কাছ থেকে তথ্য নিয়ে মামলাটা করি।"

তিনি বলেন, “মামলায় ৪০৭ জনকে আসামি করা হয়েছে। আওয়ামী লীগের সাথে যারা সম্পৃক্ত, তাদেরই আসামি করি। সবার নাম তো মনে রাখা সম্ভব না।

“আর চারশ আসামির মধ্যে ১০ জন ঘটনায় জড়িত নাও থাকতে পারে। বিষয়টি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, আদালত দেখবে। ভাই হত্যার বিচার চাই। তবে একজন শহীদের জন্য যেন কোনো নির্দোষ মানুষ হয়রানির শিকার না হয়।”

এ মামলার আসামিদের মধ্যে রয়েছেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়, আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, দলের নেতা শামীম ওসমান, বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহান, ব্যবস্থাপনা পরিচালক সায়েম সোবহান আনভীর, এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম, দুদকের সাবেক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ, সাবেক বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক, সাংবাদিক মোজাম্মেল হক বাবু, নাইমুল ইসলাম খান, ফরিদা পারভীন, সাবেক তিন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী রকিবউদ্দীন আহমেদ, কে এম নূরুল হুদা ও কাজী হাবিবুল আউয়াল।