বিক্ষোভ শেষে শহীদ মিনারে ফিরলেন এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা

মূল বেতনের ২০ শতাংশ বাড়ি ভাড়া ভাতা ঠিক করাসহ সব বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জাতীয়করণের দাবিতে আন্দোলনরত এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করেছে গণধিকার পরিষদ।
শনিবার দুপুরে হাই কোর্টের সামনে কদম ফোয়ারা সংলগ্ন সড়কে শিক্ষকদের বিক্ষোভ সমাবেশে অংশ নেন দলটির সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খাঁন।
পরে দুপুর ১টার দিকে শিক্ষক-কর্মচারীরা শহীদ মিনারে ফিরে যান। এর আগে দুপুর সোয়া ১২টায় ‘কালো পতাকা মিছিল’ নিয়ে কদম ফোয়ারা সংলগ্ন সড়কে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন।
এদিকে আন্দোলনকারী একাংশ শহীদ মিনারে ‘আমরণ অনশন’ চালিয়ে যাচ্ছেন।
বিক্ষোভ সমাবেশে গণ অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খাঁন বলেন, “শিক্ষকরা কোনো দুর্নীতি করে না, দুর্নীতি করে আমলারা। আমলাদের গাড়ি-বাড়িসহ যাবতীয় সুবিধা রয়েছে।
“আর শিক্ষকরা সামান্য অধিকার আদায়ে তীব্র গরমে রাস্তায় আন্দোলন করছেন। এটা আমাদের জন্য লজ্জাজনক।”
গণ অধিকার পরিষদের অবস্থান তুলে ধরে রাশেদ খাঁন বলেন, “আমরা মনে করি, আমলাদের চেয়ে শিক্ষকদের বেতন বেশি হওয়া উচিত।”
শিক্ষকদের দাবি আদায় হওয়া পর্যন্ত তাদের পাশে গণ অধিকার পরিষদ থাকবে বলে আশ্বাস দেন তিনি।
রাশেদ খাঁন বলেন, “আপনাদের সঙ্গে সচিবালয় ঘেরাও করার জন্য আমরা প্রস্তুত রয়েছি। আপনাদের দাবি আদায় করতে যদি যমুনা ঘেরাও করতে হয়, গণ অধিকার পরিষদ আপনাদের সব সহযোগিতা করবে।”
আন্দোলনকারীরা রোববার পরিবারের সদস্যদের নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন ও রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনা অভিমুখে ‘মার্চ টু যমুনা’ কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দিয়েছেন।
এর আগে গত ১২ অক্টোবর ‘পুলিশি হামলার’ প্রতিবাদে সোমবার থেকে সব বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে লাগাতার কর্মবিরতিও পালন করেছেন শিক্ষক-কর্মচারীরা; দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত এ কর্মসূচি চলবে।
গত মঙ্গলবার সচিবালয় অভিমুখে লংমার্চ কর্মসূচি পালন করতে গেলে পুলিশ বাধা দেয়। গত বুধবার তাঁরা শাহবাগ মোড় অবরোধ করেন। সর্বশেষ বৃহস্পতিবার মার্চ টু যমুনা কর্মসূচি পালনের কথা থাকলেও পরে তারা সেই কর্মসূচি স্থগিত করেন।
বৃহস্পতিবার আলোচনার পর অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে শিক্ষক-কর্মচারীদের বাড়ি ভাড়া ভাতা মূল বেতনের ৫ শতাংশ বা ন্যূনতম ২ হাজার টাকা নির্ধারণের প্রস্তাব দিয়েছিলেন শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক চৌধুরী রফিকুল আবরার। তবে শিক্ষক-কর্মচারীরা তা প্রত্যাখ্যান করে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন।
গত ৩০ সেপ্টেম্বর এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের বাড়িভাড়া ৫০০ টাকা বাড়িয়েছে সরকার; তবে গত ৫ অক্টোবর এই ঘোষণা প্রকাশ্যে এলে শিক্ষকরা তা প্রত্যাখ্যান করে আন্দোলনের ডাক দেন।
এরপর গত ৬ অক্টোবর এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের বাড়ি ভাড়া ভাতা অন্তত দুই হাজার বা তিন হাজার টাকা করার প্রস্তাব অর্থ বিভাগে পাঠায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীরা জাতীয় বেতন স্কেল অনুযায়ী বেতন পান। তারা মূল বেতনের সঙ্গে মাসে ৫০০ টাকা চিকিৎসা ভাতা পান। আর ১ হাজার টাকা বাড়িভাড়া ভাতা পেতেন, যা বাড়িয়ে ৫০০ টাকা করা হয়েছে।
এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা আগে বছরে ২৫ শতাংশ হারে বছরে দুইটি উৎসব ভাতা পেলেও গত মে মাসে বাড়ানোর পর তারা ও এমপিওভুক্ত কর্মচারীরা মূল বেতনের ৫০ শাতাংশ হারে উৎসব ভাতা পাচ্ছেন।