কুমিল্লায় ১০০ শয্যা বিশিষ্ট বিশেষায়িত হাসপাতাল উদ্বোধন করলেন সমাজকল্যাণ উপদেষ্টা

কুমিল্লা, ১৭ অক্টোবর, ২০২৫ (বাসস) : অন্তর্বর্তী সরকারের মহিলা ও শিশু বিষয়ক এবং সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ বলেছেন, আধুনিক, সাশ্রয়ী ও মানসম্পন্ন স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা এখন সময়ের দাবি।
কুমিল্লায় ১০০ শয্যা বিশিষ্ট বিশেষায়িত হাসপাতাল উদ্বোধন অনুষ্ঠানে শুক্রবার সকালে অনলাইনে যুক্ত হয়ে বক্তব্যকালে তিনি একথা বলেন। স্বল্প খরচে প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষের চিকিৎসা সেবা পৌঁছে দিতে এই হাসপাতাল নির্মাণ করা হয়েছে।
শারমীন এস মুরশিদ বলেন, কুমিল্লায় আধুনিক, সাশ্রয়ী ও মানসম্পন্ন স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা এখন সময়ের দাবি। এই হাসপাতাল কুমিল্লার মানুষের চিকিৎসা ব্যবস্থায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। বক্তব্যের মধ্য দিয়েই তিনি ‘খায়রুন্নেসা-ইব্রাহিম জেনারেল হসপিটাল’ (১০০ শয্যা বিশিষ্ট বিশেষায়িত হাসপাতাল)-এর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন ঘোষণা করেন।
‘শৃঙ্খলাই জীবন’ এই শ্লোগান সামনে রেখে গড়ে ওঠা হাসপাতালটির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয় কুমিল্লা নগরীর বিষ্ণুপুর মুন্সেফ কোয়ার্টার এলাকায়।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মোহাম্মদ আবু ইউসুফ। সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ ডায়াবেটিক সমিতির সভাপতি জাতীয় অধ্যাপক এ কে আজাদ খান।
অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন বাংলাদেশ ডায়াবেটিক সমিতির মহাসচিব মোহাম্মদ সাইফ উদ্দিন, ন্যাশনাল হেলথকেয়ার নেটওয়ার্ক (এনএইচএন)- এর চেয়ারম্যান সৈয়দ রেজওয়ানুল কবির, কুমিল্লার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) এ.বি.এম. মশিউজ্জামান, ডেপুটি সিভিল সার্জন রেজা মো. সারোয়ার আকবর, প্রফেসর হাজেরা মাহাতাব, মরহুম এটিএম শামসুল হকের সহধর্মিণী মিসেস রাবেয়া হক ও এনএইচএনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ডা. এম এ সামাদ।
এছাড়া রাজনৈতিক ব্যক্তি, বীর মুক্তিযোদ্ধা, শিক্ষক, ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধি, সাংবাদিকসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ এতে অংশ নেন।
সভাপতির বক্তব্যে জাতীয় অধ্যাপক এ কে আজাদ খান বলেন, আস্থার স্বাস্থ্যসেবা প্রদানের প্রতিশ্রুতিতেই এই হাসপাতাল গড়ে তোলা হয়েছে। আধুনিক প্রযুক্তি ও দক্ষ চিকিৎসকের সমন্বয়ে এটি দেশের অন্যতম সেরা মানবিক স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র হবে।
বাংলাদেশ ডায়াবেটিক সমিতির মহাসচিব মোহাম্মদ সাইফ উদ্দিন বলেন, এই হাসপাতালের মাধ্যমে স্বল্প আয়ের মানুষকে আর চিকিৎসার জন্য ঢাকা যেতে হবে না। এখানে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক, আধুনিক ল্যাব ও নির্ভুল রিপোর্ট প্রদানের সুবিধা থাকবে। টাকার অভাবে কারও চিকিৎসা বন্ধ হবে না।
অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, কুমিল্লার মানুষের জন্য এমন একটি হাসপাতালের দীর্ঘদিনের প্রয়োজন ছিল। আজ তা বাস্তবে রূপ পেয়েছে। তারা আশা প্রকাশ করেন, ভবিষ্যতে এটি ২৫০ শয্যায় উন্নীত হবে এবং সমন্বিত চিকিৎসাসেবা দেবে।
অনুষ্ঠানের শুরুতে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান, সাবেক সচিব মরহুম এটিএম শামসুল হকের রুহের মাগফেরাত কামনায় এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। তিনি হাসপাতাল নির্মাণের জন্য নিজের মায়ের নামে ১২৫ শতক জমি দান করেছিলেন।
সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ ডায়াবেটিক সমিতির যৌথ অর্থায়নে প্রতিষ্ঠিত এই হাসপাতালে ডায়াবেটিসসহ সার্বিক রোগের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসা ও অত্যাধুনিক ডায়াগনস্টিক সেবা পাওয়া যাবে।
এখানে মেডিসিন, সার্জারি, গাইনী, শিশু, কিডনি, অর্থোপেডিক, কার্ডিওলজি, নিউরোলজি, চক্ষু ও দন্ত বিভাগের পাশাপাশি ইকো, এক্স-রে, আল্ট্রাসনোগ্রাফি, কালার ডপলার, ইসিজি, ফিজিওথেরাপি ও রিহ্যাবিলিটেশন সুবিধা রয়েছে।
অত্যাধুনিক অপারেশন থিয়েটার, চোখের অপারেশন ইউনিট, ২৪ ঘণ্টা জরুরি বিভাগ, অ্যাম্বুলেন্স ও ফার্মেসি সেবাও চালু করা হয়েছে।