মেয়েদের যেসব গুণ দেখে বিয়ে করতে বলেছেন নবীজি (সা.)

বিয়ে মানবজীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। এটি মানুষকে শালীন, পবিত্র ও পরিপূর্ণ জীবনযাপনের পথে পরিচালিত করে। ইসলামে বিয়েকে বরকতময় ও উত্তম আমল হিসেবে গণ্য করা হয়েছে।
রাসুলুল্লাহ ﷺ বলেছেন—
“হে যুবসমাজ! তোমাদের মধ্যে যার বিয়ের সামর্থ্য আছে, সে যেন বিয়ে করে। কেননা বিয়ে দৃষ্টি সংযমে ও লজ্জাস্থানের হেফাজতে সহায়ক। আর যার সামর্থ্য নেই, সে যেন রোজা রাখে, কারণ রোজা তার খায়েশ কমিয়ে দেয়।”
(বোখারি : ৫০৬৫, মুসলিম : ১৪০০)
বিয়ের সময় নির্ধারণে ইসলামের দৃষ্টিভঙ্গি
ইসলামে বিয়ের জন্য নির্দিষ্ট দিন, তারিখ বা মাস নির্ধারিত নেই। বরং নবীজি ﷺ পরামর্শ দিয়েছেন, সামর্থ্য হলে দেরি না করে বিয়ে করে নেওয়া উত্তম। কারণ অযথা বিলম্ব শয়তানের প্ররোচনার সুযোগ তৈরি করে।
পাত্রী দেখার নির্দেশনা
বিয়ের আগে পাত্র-পাত্রী সম্পর্কে খোঁজ নেওয়া ও পাত্রী দেখা নবীজির ﷺ সুন্নত।
জাবির ইবনে আবদুল্লাহ (রা.) বর্ণনা করেন,
“রাসুল (সা.) বলেছেন, তোমাদের কেউ যখন কোনো নারীকে বিয়ের প্রস্তাব দেয়, তখন সম্ভব হলে এমন কিছু দেখে নিক, যা তাকে বিয়েতে উৎসাহিত করে।”
(আবু দাউদ : ২০৮২)
আর মুগিরা ইবনে শোবা (রা.) বলেন,
“আমি এক নারীকে বিয়ের প্রস্তাব দিলে নবীজি (সা.) জিজ্ঞেস করলেন, তুমি কি তাকে দেখেছ? আমি বললাম—না। তখন তিনি বললেন, ‘তাকে দেখে নাও, এতে দাম্পত্য জীবনে ভালোবাসা বৃদ্ধি পাবে।’”
(তিরমিজি : ১০৮৭)
ফকিহগণ বলেন, পাত্রীকে গোপনে দেখা উত্তম। দেখা হলে মুখমণ্ডল ও হাত দেখা যেতে পারে, তবে বিয়ের উদ্দেশ্য ছাড়া দেখা হারাম। (হিদায়া : ৪/৪৪৩)
যেসব গুণ দেখে পাত্রী বাছাই করবেন
নবী করিম ﷺ নারীর বাহ্যিক সৌন্দর্যের চেয়ে তার দ্বীনদারি ও চরিত্রকে প্রাধান্য দিতে বলেছেন।
তিনি বলেন.
“নারীদের চারটি গুণ দেখে বিয়ে করা হয়— তার সম্পদ, বংশমর্যাদা, রূপ-সৌন্দর্য ও দ্বীনদারি। তবে তুমি দ্বীনদারিকে প্রাধান্য দাও, নতুবা তুমি ক্ষতিগ্রস্ত হবে।”
(বোখারি : ৫০৯০)
আরও এক হাদিসে তিনি সতর্ক করেছেন—
“যখন তোমাদের কাছে কেউ বিবাহের প্রস্তাব পাঠায়, তখন তার দ্বীনদারি ও সচ্চরিত্র মূল্যায়ন করে বিবাহ সম্পন্ন করো। যদি তা না করো, তাহলে দুনিয়ায় বড় ফিতনা ও বিশৃঙ্খলা দেখা দেবে।”
(মিশকাত : ৩০৯০)
বিয়ে শুধু সামাজিক প্রথা নয়, বরং এটি ইমান ও নৈতিকতার পূর্ণতা অর্জনের এক গুরুত্বপূর্ণ ধাপ।
তাই নবীজি ﷺ-এর নির্দেশনা অনুযায়ী, পাত্র-পাত্রী নির্বাচনে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিতে হবে দ্বীনদারি, চরিত্র ও মানবিক গুণাবলিকে। কারণ সুন্দর মুখ ক্ষণস্থায়ী, কিন্তু সুন্দর চরিত্র