গাজায় ইসরায়েলি হামলায় দুই শিশুসহ ৭ ফিলিস্তিনি নিহত
ফিলিস্তিনি ছিটমহল গাজায় ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর হামলায় দুই শিশুসহ সাতজন নিহত হয়েছেন।
ইসরায়েলের বুধবারের এ হত্যাকাণ্ড গাজায় যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় চলা যুদ্ধবিরতির সর্বশেষ লঙ্ঘন। ১০ অক্টোবর থেকে যুদ্ধবিরতি শুরু হলেও প্রত্যাশা অনুযায়ী ভূখণ্ডটিতে ফিলিস্তিনিদের হত্যা করা বন্ধ করেনি ইসরায়েলি বাহিনী।
ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, গাজার মিশর সীমান্তের কাছে হামাসের যোদ্ধাদের হামলায় তাদের চার সেনা আহত হয়েছেন। এ ঘটনার প্রতিক্রিয়ায় পাল্টা হামলা চালানো হয়েছে।
গাজার চিকিৎসা কর্মীদের বরাত দিয়ে আল জাজিরা জানিয়েছে, ভূখণ্ডটির দক্ষিণাঞ্চলের আল-মাওয়াসি শিবিরে ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় পাঁচ ফিলিস্তিনি নিহত হন। এখানে তাদের ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পর আগুন ধরে যায় আর তাতে শিবিরের বেশ কয়েকটি তাঁবু পুড়ে যায়।
গাজার দমকল বাহিনীর মুখপাত্র মাহমুদ বাসাল বলেন, “ইসরায়েলি ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে দুটি শিশুসহ পাঁচ নাগরিক নিহত ও অন্যরা আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে বেশ কয়েকজনের আঘাত গুরুতর।”
গাজার কুয়েতি হাসপাতালের সূত্রগুলো আল জাজিরাকে জানিয়েছে, নিহত শিশুদের বয়স আট ও ১০ বছর আর এ হামলার ঘটনায় আরও ৩২ ফিলিস্তিনি আহত হয়েছেন।
ফিলিস্তিনি বার্তা সংস্থা ওয়াফা জানিয়েছে, আহতদের মধ্যে কয়েকজন মারাত্মকভাবে দগ্ধ হয়েছেন।
ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাস আল-মাওয়াসিতে হওয়া হামলার নিন্দা জানিয়েছে। এই হামলাকে ‘যুদ্ধাপরাধ’ বলে বর্ণনা করে এর মাধ্যমে ‘যুদ্ধবিরতি চুক্তির প্রতি ইসরায়েলের অবজ্ঞা’ প্রদর্শিত হয়েছে বলে অভিযোগ হামাসের।
আল-মাওয়াসি শিবিরের পাশাপাশি গাজার উত্তরাঞ্চলে গাজা সিটির জেইতুন এলাকায় ইসরায়েলি সেনাদের গুলিতে আরও দুই ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।
গাজার কর্তৃপক্ষের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, যুদ্ধবিরতি শুরু হওয়ার পর থেকে ইসরায়েলি বাহিনী অন্তত ৫৯১ বার যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করে ৩৬০ জন ফিলিস্তিনিকে হত্যা ও আরও ৯২২ জনকে আহত করেছে।
এদিকে বুধবার হামাস বলেছে, তারা তাদের হাতে থাকা শেষ দুই জিম্মির একজনের মরদেহ ইসরায়েলকে ফেরত দিয়েছে। রেডক্রসের মাধ্যমে এই ‘সম্ভাব্য জিম্মির’ দেহাবশেষ গ্রহণ করার কথা নিশ্চিত করেছে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী।
ইসরায়েল জানিয়েছে, সব জিম্মির মৃতদেহ ফিরে পাওয়া মাত্রই গাজার মিশর সীমান্তবর্তী রাফা ক্রসিং খুলে দেবে তারা।
হামাস এর আগেও মঙ্গলবার একটি মরদেহ হস্তান্তর করেছিল। কিন্তু পরে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর দপ্তর জানায়, দেহাবশেষটি কোনও জিম্মির নয়, অন্য কারো।
গাজায় নড়বড়ে যুদ্ধবিরতি শুরু হওয়ার পর থেকে হামাস এ পর্যন্ত ২০ জন জীবিত ও ২৬ জন মৃত জিম্মির দেহাবশেষ ইসরায়েলকে ফেরত দিয়েছে। এর বিনিময়ে ইসরায়েল প্রায় ২০০০ ফিলিস্তিনি বন্দিকে মুক্তি দিয়েছে।