মঙ্গলবার ২৩ ডিসেম্বর ২০২৫, পৌষ ৯ ১৪৩২, ০৩ রজব ১৪৪৭

ব্রেকিং

নোয়াখালীতে ‘দুদল সন্ত্রাসীর’ মধ্যে সংঘর্ষে ৫ জন নিহত প্রশাসন ও পুলিশের আশ্বাসে ‘বুকের জোর বেড়েছে’ সিইসির কলকাতায় বাংলাদেশ উপদূতাবাসের বাইরে হিন্দুত্ববাদীদের বিক্ষোভ-সংঘর্ষ দিল্লি-আগরতলা-শিলিগুড়িতে বাংলাদেশের ভিসা সাময়িক বন্ধ: মুখপাত্র ইনকিলাব মঞ্চের শহীদী শপথ, হত্যার বিচার ছাড়া রাজপথ না ছাড়ার ঘোষণা টিএফআই’তে গুম-নির্যাতন: হাসিনা, কামাল ও ১৫ সেনা কর্মকর্তার বিচার শুরুর আদেশ তারেক আসছেন, শাহজালালে ২৪ ঘণ্টা দর্শনার্থী নিষিদ্ধ আইনজীবী আলিফ হত্যা মামলা বিচারের জন্য গেল জজ আদালতে জমিয়তে উলামায়ের সঙ্গে ৪ আসনে সমঝোতা বিএনপির মাদুরোর পদত্যাগই হবে ‘বুদ্ধিমানের কাজ’: ট্রাম্প খুলনায় এনসিপি নেতাকে গুলির ঘটনায় সেই নারী আটক ভেনেজুয়েলার জাহাজ জব্দ: যুক্তরাষ্ট্রের সমালোচনায় চীন

জাতীয়

প্রশাসন ও পুলিশের আশ্বাসে ‘বুকের জোর বেড়েছে’ সিইসির

 প্রকাশিত: ১৭:৫৪, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৫

প্রশাসন ও পুলিশের আশ্বাসে ‘বুকের জোর বেড়েছে’ সিইসির

নির্বাচন সুষ্ঠু করতে মাঠ প্রশাসন ও পুলিশের আশ্বাসে ‘বুকের জোর’ বেড়ে যাওয়ার কথা বললেন

আসন্ন ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচন এবং গণভোটে রিটার্নিং কর্মকর্তাসহ মাঠ প্রশাসন ও পুলিশ কর্মকর্তাদের নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালনের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার এএমএম নাসির উদ্দিন।

তিনি বলেছেন, “কোনো ধরনের পক্ষপাতিত্ব নিয়ে কাজ করবেন না; পেশাদারত্বের সাথে নিরপেক্ষভাবে কাজ করতে হবে। আজকে খুব অসম্ভব রকমভাবে আমার বুকের জোর বেড়েছে আপনাদের কথাবর্তা শুনে।”

মঙ্গলবার নির্বাচন ভবনে মাঠ প্রশাসনের কর্মকর্তাদের নির্বাচন ব্যবস্থা নিয়ে মত বিনিময় ও ব্রিফিংয়ে একগুচ্ছ নির্দেশনা দেন সিইসি।

চার নির্বাচন কমিশনার, ইসি সচিব, বিভিন্ন মন্ত্রণালয় সচিব ও বিভাগের প্রতিনিধি, আইজিপি, বিভাগীয় কমিশনার, ডিআইজি, পুলিশ কমিশমনার, রিটার্নিং অফিসার ও জেলাপ্রশাসক, এসপি, আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্টরা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

নির্বাচন ভবনে সকালে এ মত বিনিময় সভা শুরু হয়, বেলা ২টার পরে সমাপনী বক্তব্য দেন সিইসি।

সকালে স্বাগত বক্তব্যে তিনি বলেছিলেন, মাঠ কর্মকর্তারা ভালো কাজ না করলে ইসির ‘ঘুম হারাম’ হবে।

কর্মকর্তাদের সঙ্গে কয়েক ঘণ্টা মত বিনিময় করে ‘আশ্বস্ত’ হওয়ার কথা জানিয়ে সমাপনী ভাষণে তিনি ‘বুকের জোর’ বেড়ে যাওয়ার কথা বললেন।

নাসির উদ্দিন বলেন, “আপনারা আমাকে আশ্বস্ত করেছেন। আমি আশ্বস্ত হয়ে ফিরে যাচ্ছি। ইনশাআল্লাহ, যে উদ্দেশ্যে আজকে এখানে একত হয়েছি, সে উদ্দেশ্য আমরা ডেলিভার করতে পারব।”

৬৪ জন জেলা প্রশাসক, ৬৪ জন এসপি। আটজন বিভাগীয় কমিশনার, আট জন ডিআইজি, ৬৪ জন জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা, ১০ জন আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা এবং অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা মিলিয়ে মোট ২২৬ জন এদিন সভায় অংশ নেন।

দুই ভিভিআইপি

১২ ফেব্রুয়ারির নির্বাচন সামনে রেখে ইতোমধ্যে আইন শৃঙ্খলাবাহিনীর সঙ্গে ইসি বৈঠক করেছে। মঙ্গলবার মাঠ প্রশাসন ও পুলিশের শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গেও আলোচনা হল।

মত বিনিময়ের সমাপনী ভাষণে সিইসি বলেন, “দুজন ব্যক্তি আমাদের কাছে ভিভিআইপি; যদি কোনো আইন থাকত, আমি ভিভিআইপি ঘোষণা করতাম এই মুহূর্তে। একজন রিটার্নিং অফিসার, আরেকজন প্রিজাইডিং অফিসার।”

ইসির সব সার্কুলার, পরিচালনা বিধিসহ সব আইন-বিধি, নির্দেশনা রিটার্নিং অফিসারকে ভালোভাবে পড়ে নেওয়ার পাশাপাশি প্রিজাইডিং অফিসারদের ‘গাইড করার’ নির্দেশনা দেন তিনি।

আচরণবিধি প্রতিপালন, জরিমানা ও প্রতিটি ‘অ্যাকশন’ এর বিষয়ে সচনেতা বাড়াতে গণমাধ্যমের সঙ্গে ভালো সমন্বয় করে ব্যাপক প্রচার চালানোর ওপর জোর দেন সিইসি।

সোশাল মিডিয়ায় সবাই যে এখন সক্রিয়, সে বিষয়টি তুলে ধরে যে কোনো ধরনের অপতথ্য, মিথ্যা তথ্য ও গুজব রোধের পাশাপাশি ভালো উদ্যোগের প্রচারে কার্যকর ভূমিকা রাখতে সবার সহযোগিতা চান তিনি।

সিইসি বলেন, “ঢাকা পোস্টারে ছেয়ে গেছে, এটা দেখা যাচ্ছে। আপনারা যে সরাচ্ছেন, রিমুভ করছেন-সেটার কোনো খবর নেই। প্রতিটি অ্যাকশন, প্লিজ গিভ পাবলিসিটি। আপনার অফিসে এত লোক আছে, সবাই তো সারারাত বসে ফেইসবুক ঘাটাঘাটি করে। ফ্যামিলি মেম্বারকে বলে দিন– ‘এটা দিয়ে দাও’।

“আপনি ছেলেকে বলেন, আপনার মেয়েকে বলেন। আপনার বাসায় যারা আছে কাজের মেয়ে পর্যন্ত ফেইসবুক চালায় আজকাল। সুতরাং আপনারা যে কাজটা করছেন, এটা পাবলিশ করতে হবে।”

অভিযোগ পেলে তার সুরাহা করতে রিটার্নিং ও সহকারী রিটার্নিং অফিসারকে তৎপরত হওয়ার তাগিদ দেন নাসির উদ্দিন।

ভোটের মৌসুমে কারো কোনো অভিযোগ থাকলে তা রিটার্নিং অফিসার, সহকারী রিটার্নিং অফিসার কিংবা নির্বাচনি তদন্ত কমিটির কাছে জানানোর নিয়ম। কিন্তু তফসিল ঘোষণার পর থেকে নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ আসা শুরু করেছে বলে জানান সিইসি।

তিনি বলেন, “প্রতিনিয়ত কমপ্লেইন আমাদের এখানে চলে আসছে। মানুষ জানে না যে কমপ্লেইনটা রিটার্নিং অফিসারের কাছে করতে হয়। ইলেকশন কমিশন বিকাম কমপ্লেইন লজিং সেন্টার।… কেউ যদি ভায়োলেশন করে, কোনো ক্যান্ডিডেট যদি সমস্যা করে, কোথায় কমপ্লেইন করবে– কার কাছে করবে? তাকে জানাতে হবে? মানুষকে জানতে হবে।”

সেজন্য রিটার্নিং অফিসার ও সহকারী রিটার্নিং অফিসারদের অফিসের সামনে নাম ও ফোন নম্বর ‘দৃষ্টিগোচর হয়’ এমন রাখার ব্যবস্থা করতে বলেন সিইসি।

তিনি বলেন, “কারো অভিযোগ থাকলে, আচরণবিধি ভঙ্গের অভিযোগ থাকলে, কোনো প্রতিদ্বন্দী প্রার্থী যদি হ্যারাস করে, দয়া করে এই নম্বরে অমুকের কাছে কমপ্লেইন করবেন–এটা আপনার অফিসের সামনে ঝুলিয়ে দিতে হবে।”

সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত ও নির্বিঘ্ন পরিবেশে জোর

সম্প্রতি ময়মনসিংহে একজনকে পুড়িয়ে মারা ঘটনার প্রসঙ্গ টেনে সম্প্রীতি বজায় রাখা এবং নিরাপত্তা নিশ্চিতের নির্দেশনা দেন সিইসি এএমএম নাসির উদ্দিন।

প্রশাসন ও পুলিশ কর্মকর্তাদের উদ্দেশে তিনি বলেন, “কমিউনাল হারমনি মাস্ট বি মেনটেইন। এটা সর্বোচ্চ অগ্রাধিকারের মধ্যে রাখতে হবে। আর বয়স্ক, ফিজিক্যালি ডিজঅ্যাবল যারা আছেন, তারা যেন কেন্দ্রে এসে ভোট দিতে পারেস এই ব্যবস্থাটা করতে হবে ।”

ভোটের সময় সংখ্যালঘুরা যাতে নির্ভয়ে ভোট দিতে পারেন, সে বিষয়ে গুরুত্ব দিয়ে সিইসি বলেন, “দুর্গাপূজা ও ইলেকশনে তাদের ভয়ের কথা বলেছে। মাইনরিটি কমিউনিটির নেতারা বলেছেন, দুর্গাপূজা এলে তাদের ওপরে আক্রমণ হয়, মূর্তি ভাঙ্গা হয়; তবে এবারের মত সুন্দর করে পূজা উদযাপন আমরা জীবনে করতে পারি নাই। আমি বলেছি, ইলেকশনও ইনশাল্লাহ এরকম হবে।”

প্রশাসন ও পুলিশকে ভোটের পরিবেশ নিশ্চিত করার নির্দেশনা দেন সিইসি।

তিনি বলেন, “মাইনরিটি কমিউনিটির যারা ভোট দিতে আসতে চান, তারা যাতে সেইফলি আসতে পারে; শান্তিপূর্ণভাবে আসতে পারে, ভোটটা দিতে পারে; দিয়ে বাড়ি পর্যন্ত যেতে পারে এবং শান্তিতে ঘুমাতে পারে, সে ব্যবস্থা আপনাদেরকে নিশ্চিত করতে হবে। এটা ভেরি ইম্পর্টেন্ট।”