শনিবার ১২ জুলাই ২০২৫, আষাঢ় ২৮ ১৪৩২, ১৬ মুহররম ১৪৪৭

ব্রেকিং

এনবিআর সংস্কার পরিষদের বহু সদস্যের ‘ক্ষমা প্রার্থনা’, মাঠে ফেরার প্রস্তুতি ৭.৭৫ কোটি টাকার স্থাপনা ভেঙে নতুন স্মৃতিস্তম্ভ গড়ার কাজ শুরু ইসরায়েল আমাকে হত্যা করতে চেয়েছিল: ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান সংস্কার ছাড়া যেনতেন নির্বাচন চায় না জামায়াত: শফিকুর রহমান আশরাফুল, সাকিবদের পর এবার নতুনদের চিনছে শ্রীলঙ্কা বিচার ও সংস্কারকে নির্বাচনের মুখোমুখি করা যাবে না: সাকি সংখ্যানুপাতিক ব্যবস্থায়(পিআর) ‘ভবিষ্যৎ বিভক্তি’র শঙ্কা তারেক রহমানের জুলাই বিপ্লব নিয়ে কটূক্তি করায় কুষ্টিয়ায় ট্রাফিক পুলিশ সদস্য ক্লোজড কলেজ প্যাডে ছাত্রদলের প্রচারণা? অধ্যক্ষের ব্যাখ্যা ঘিরে বিতর্ক মধ্যপ্রাচ্যে ইসরায়েলের সংঘাত বিস্তার: বিশ্লেষণ কলম্বিয়ায় পাহাড়ধসে মৃত্যু ১৬, নিখোঁজ অন্তত ৮ “ত্রাণ নিতে এলে গুলি করতাম”—গাজার ঘটনায় মুখ খুললেন ইসরায়েলি সেনারা তেহরানে ধ্বংসস্তূপে উদ্ধার চলছেই, মৃতের সংখ্যা ছাড়াল ৪৫০ ইরানে বাংলাদেশিদের সহায়তায় হটলাইন চালু উপদেষ্টার গাড়িবহর আটকে বিক্ষোভ: সিলেটে তিনজন কারাগারে ইসরায়েলের টার্গেটে ইরানের রাষ্ট্রীয় সম্প্রচার ভবন লন্ডনে ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও তারেক রহমানের বৈঠক ১৩ জুন তারেক রহমান শিগগিরই দেশে ফিরবেন: ফখরুল রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হবে কাঁচের মতো স্বচ্ছ ঘর: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা নির্বাচনের ঘোষিত সময় মাথায় রেখে যথাসময়ে রোডম্যাপ দেবে ইসি: উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন তুললেন ছাত্রদল নেতা নাছির উদ্দিন মণিপুরে আবার উত্তেজনা, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে প্রশাসনের চাপে ঢাকার ৪ থানায় সক্রিয় অর্ধশতাধিক অপরাধী দল জাতীয় নির্বাচন ২০২৬ সালের এপ্রিলের প্রথমার্ধে: প্রধান উপদেষ্টা প্রধান উপদেষ্টার ঘোষণায় জাতির প্রত্যাশা পূরণ হয়নি: সালাহউদ্দিন আহমদ জুলাই সনদ–ঘোষণাপত্র হলে ঘোষিত সময়ে নির্বাচনে আপত্তি নেই: এনসিপি ২৫ কিলোমিটার যানজট, ২৪ ঘণ্টায় পারাপার ৬৪ হাজার যানবাহন বান্দরবানের রুমা ও থানচি ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা আংশিকভাবে প্রত্যাহার গাজায় যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবে যুক্তরাষ্ট্রের ভেটো, জাতিসংঘ নিরাপত্তা গরম মসলার বাজার শীতল: ক্রেতা কমে যাচ্ছে, দাম কিছুটা স্থিতিশীল ঈদে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে দই-মিষ্টি মজুত, রংপুরে হিমাগারে অভিযান ও দুই লাখ টাকা জরিমানা বান্দরবানের লামায় পাহাড় ধসের শঙ্কায় ৬০ রিসোর্ট বন্ধ নির্বাচন নিয়ে তরুণদের প্রতি অসত্য অভিযোগ ও বাস্তবতা ভারতের মুসলমানদের কেন বারবার দেশপ্রেমের প্রমাণ দিতে হয় সংবিধান পরিবর্তন ছাড়া ফ্যাসিবাদ বিলোপ সম্ভব নয়: এনসিপি মুখ্য সমন্বয়ক একুশের বন্ধুত্বে আগামীর পথচলা: বার্ষিক সম্মেলনে ২১তম বিসিএস প্রশাসন ফোরাম বিজিএমইএ`র নতুন নেতৃত্বে আসছেন বাবু, নিরঙ্কুশ জয়ের ইঙ্গিত জিলহজ মাসের আমল ও কোরবানির তাৎপর্য চট্টগ্রামে নারীকে লাথির ঘটনায় ভাইরাল আকাশ চৌধুরী বহিষ্কৃত, জামায়াতের বিবৃতি সংকট নিরসনে উদ্যোগ নেই, আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিল পবিস শ্রমিকরা আনচেলত্তির স্বপ্ন - রিয়াল মাদ্রিদের মতো করে খেলাবেন ব্রাজিলকে ডিমের দাম এখনো চড়া, ডজন ১৩০–১৪০ টাকায় বিক্রি বৈরী আবহাওয়ার কারণে নোয়াখালীর হাতিয়া দ্বীপের সঙ্গে সারাদেশের নৌ-যোগাযোগ বন্ধ হারের পর লিটনের মনোভাব - এখনো দুই ম্যাচ বাকি কাল থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য দেশের সব জুয়েলারি দোকান বন্ধ ঘোষণা যুক্তরাষ্ট্র চীনা শিক্ষার্থীদের ভিসা বাতিলের প্রক্রিয়া শুরু করবে ডিএনএ টেস্ট করে নামফলক ও মর্যাদা চায় শহীদ পরিবারের সদস্যরা বেতন না পেয়ে ডাকাতি, জাহাজের চিফ ইঞ্জিনিয়ারসহ তিনজন আটক “বাংলাদেশে কৌশলগত স্বার্থ নেই দক্ষিণ কোরিয়ার”—রাষ্ট্রদূত পার্ক ইয়ং সিক “শাপলার হত্যাকাণ্ডের বিচার চাই”—হেফাজতের বিবৃতি মির্জা আব্বাস: “করিডর আর স্টারলিংক আনা হচ্ছে আরাকান আর্মির জন্য” জিলহজ মাসের চাঁদ দেখে যে দোয়া পড়বেন নির্বাচনের আগে যতটুকু দরকার, ততটুকুই সংস্কার করতে হবে: মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম ‘চিন্তার স্বাধীনতাও হারাচ্ছি?’— নারী কমিশন বিতর্কে গীতিআরার উদ্বেগ ইউক্রেনে রাশিয়ার টানা হামলায় নিহত ১২, কঠোর চাপের আহ্বান জানালেন জেলেনস্কি সংস্কার, বিচার ও নির্বাচন – তিনটি কঠিন দায়িত্ব পালনে সচেষ্ট আমরা জুলাই অভ্যুত্থান ক্ষমতার পালাবদল নয়, এটি মৌলিক সংস্কার: নাহিদ হলুদ সাংবাদিকতা’ বিরোধী স্লোগানে উত্তাল শিক্ষক মিছিল ভারতের নিষেধাজ্ঞায় আখাউড়া বন্দর দিয়ে রপ্তানি কমেছে ৪০% বিএনপির অবস্থান কর্মসূচি চলছে, দুই উপদেষ্টার পদত্যাগ দাবি জাতীয় স্বার্থে অভিমান ভুলে দায়িত্বশীল হওয়ার আহ্বান : জামায়াত আমির আন্দোলনের পর অবশেষে নিয়োগ পেলেন ৪৩তম বিসিএসের বাদ পড়া ১৬২ জন নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠনের দাবিতে ইসির সামনে এনসিপির বিক্ষোভ কাল বাংলাদেশে স্টারলিংকের যাত্রা, স্যাটেলাইট ইন্টারনেটের নতুন যুগ শুরু নরওয়ের দৃঢ় সমর্থন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি বিগত সরকারের সময় প্রতিষ্ঠানগুলো ধ্বংসপ্রাপ্ত, এমন অবস্থা ছিল যে খতিবকেও পালাতে হয়েছিল: বাণিজ্য উপদেষ্টা গায়ের জোরে নগর ভবন দখল করে আন্দোলন চালাচ্ছে বিএনপি আবারও রাজপথে নামার ইঙ্গিত আসিফের, সতর্ক করলেন হাসনাত গোপন অধ্যাদেশ বাতিলের দাবিতে আন্দোলন স্থগিত, ২০ মে আলোচনায় বসবে ঐক্য পরিষদ ভারতের আমদানি নিষেধাজ্ঞা সীমান্ত বাণিজ্যে অনিশ্চয়তা তৈরি করছে ভারতের নতুন সিদ্ধান্তে উত্তর-পূর্বাঞ্চল দিয়ে বাংলাদেশি ভোগ্যপণ্য আমদানি বন্ধ গত ৯ মাসে জুলাই-যোদ্ধাদের ওপর ৩৮টি হামলা জবি’র ৪ দফা দাবি মেনে নেওয়ায় আন্দোলনের সমাপ্তি ঘোষণা ডিবি থেকে মুক্তির পর আন্দোলনে উল্লাস জবি শিক্ষার্থীর গাজা দখলে নেওয়ার আকাঙ্ক্ষা পুনর্ব্যক্ত করলেন ট্রাম্প শাহরিয়ার হত্যাকাণ্ডে বিচার নিশ্চিতের অঙ্গীকার উপদেষ্টা আসিফের সোনার দাম ভরিতে কমল ৩ হাজার ৪৫২ টাকা, নতুন দর কার্যকর শুক্রবার থেকে ঢাবি শিক্ষার্থীর মৃত্যু: নিরাপত্তা নিশ্চিতে বড় পদক্ষেপ প্রশাসনের আওয়ামী লীগের কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধে ভারতের উদ্বেগ শ্রীনগরজুড়ে বিস্ফোরণ, যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের অভিযোগ ওমর আব্দুল্লাহর উপদেষ্টা পরিষদের সিদ্ধান্ত: আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে শাহবাগ অবরোধ ‘চলবে’, শনিবার গণজমায়েত ড্রোন যুদ্ধ: ভারত-পাকিস্তান বিরোধের নতুন অধ্যায় আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে সরকার গুরুত্বসহকারে বিবেচনায় নিচ্ছে: প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং আ.লীগ নিষিদ্ধ না হওয়া পর্যন্ত শাহবাগ ছাড়বেন না আন্দোলনকারীরা ‘আপ বাংলাদেশ’–এর আত্মপ্রকাশ পূর্বঘোষণা ছাড়া ভারত সফরে সৌদি প্রতিমন্ত্রী, পাকিস্তান-ভারত উত্তেজনায় কূটনৈতিক তৎপরতা তুঙ্গে দ্রুত সিদ্ধান্ত না এলে সারা দেশ থেকে ঢাকা অভিমুখে মার্চের হুঁশিয়ারি নাহিদ ইসলামের দেশীয় ওষুধ কোম্পানি রেনাটাকে ৭০০ কোটি টাকা ঋণ দিচ্ছে আইএফসি তারেক রহমান: সরকার হয়তো স্বৈরাচারের দোসরদের দেশত্যাগে সহায়তা করছে জাতীয় নিরাপত্তা ইস্যুতে ভারতের নির্দেশে ৪ বাংলাদেশি টিভি চ্যানেল ইউটিউবে বন্ধ

এডিটর`স চয়েস

স্বাধীনতা: ইসলামেই মুক্তি, ইসলামেই স্বাধীনতা

 আপডেট: ২৩:১৭, ১৬ জানুয়ারি ২০২২

স্বাধীনতা: ইসলামেই মুক্তি, ইসলামেই স্বাধীনতা

মুক্তি ও স্বাধীনতার চাহিদা মানুষের স্বভাবজাত চাহিদা। মানুষ মুক্তি চায়, মুক্ত ও স্বাধীন থাকতে চায়। পরাধীনতার শৃঙ্খলে তার প্রাণ হাঁপিয়ে ওঠে। মানুষের স্বভাবের এই মুক্তিপ্রিয়তা একটি প্রয়োজনীয় প্রেরণা। এটি কল্যাণকর হতে পারে, যদি তা সঠিক ক্ষেত্রে, সঠিক লক্ষ্যে পরিচালিত হয়। তদ্রƒপ এই প্রেরণাই হয়ে উঠতে পারে মানুষের ব্যক্তি-জীবন ও সমাজ-জীবনে অনিষ্ট-অকল্যাণের কারণ, যদি এর অপব্যবহার বা ভুল ব্যবহার হয়। অর্থাৎ মানুষের সকল প্রেরণার মতো এই প্রেরণাও একটি শক্তি, যার সঠিক ব্যবহার মানুষের কল্যাণ নিশ্চিত করে।

ইসলামী শিক্ষা ও দাওয়াতের এক গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য হচ্ছে, মানবীয় যোগ্যতা ও প্রেরণাসমূহের সঠিক ও নিয়ন্ত্রিত ব্যবহারের নির্দেশনা। পরিভাষায় একে বলা হয় ‘হিদায়া’ (পথনির্দেশ, সুপথে পরিচালনা)। কুরআনে কারীমের প্রথম দুই সূরায় ‘হিদায়া’ প্রসঙ্গটি সুস্পষ্টভাবে উল্লেখিত হয়েছে। প্রথম সূরা- সূরাতুল ফাতিহায় তা এসেছে বান্দার প্রার্থনারূপে-

اِهْدِنَا الصِّرَاطَ الْمُسْتَقِیْمَ.

‘আমাদের সরল পথে পরিচালিত করুন।’

আর দ্বিতীয় সূরা- সূরাতুল বাকারার শুরুতেই তা এসেছে নির্দেশনারূপে। বান্দাকে জানানো হয়েছে-

ذٰلِكَ الْكِتٰبُ لَا رَیْبَ  فِیْهِ  هُدًی لِّلْمُتَّقِیْنَ.

‘এই সেই কিতাব, এতে কোনো সন্দেহ নেই, এটি মুত্তাকীদের জন্য হেদায়েত।’

বস্তুত ‘হেদায়েত’ই হচ্ছে মানুষের সবচেয়ে বড় প্রয়োজন, যা দ্বারা তার সকল যোগ্যতা ও প্রেরণার যথার্থ ব্যবহার নিশ্চিত হয়। বলাই বাহুল্য যে, যেকোনো শক্তির যথার্থ ব্যবহারই লক্ষ্য-উদ্দেশ্য সাধনে সহায়ক হয়।

এর দৃষ্টান্ত হচ্ছে সফররত দুটি কাফেলা। একটি গন্তব্যের দিকে সঠিক পথে চলছে আর একটি চলছে ভুল পথে। উভয় কাফেলা পথ চলছে এবং তাদের চলার শক্তি ব্যবহার করছে। কিন্তু উভয় কাফেলার পরিণাম এক নয়।

যে কাফেলা সঠিক পথে চলছে, তার ব্যবহৃত শক্তি তাকে গন্তব্যের দিকে এগিয়ে নিয়ে চলেছে আর যে কাফেলা ভুল পথে চলছে সে তো গন্তব্যের দিকে এগুচ্ছেই না; বরং গন্তব্য থেকে বহু দূরে সরে যাচ্ছে। একারণে শুধু শক্তি যথেষ্ট নয়, শক্তির যথার্থ ব্যবহারও জরুরি। মানবের অন্তর্নিহিত শক্তিসমূহের কাক্সিক্ষত ফল লাভের জন্য ‘হেদায়েত’ ও নির্ভুল নির্দেশনা তাই অপরিহার্য। মানবস্বভাবের মুক্তি ও স্বাধীনতার যে প্রেরণা এরও সঠিক বিকাশ ঘটে আল্লাহ-প্রদত্ত হেদায়েতের মাধ্যমে।

মুক্তিকামী মানব-স্বভাবের সাথে ইসলামী দাওয়াত কত সামঞ্জস্যপূর্ণ! মানুষও মুক্তি পেতে চায়, ইসলামও এসেছে মুক্তি দেয়ার জন্য। ইসলাম মানুষকে পরিচিত করে মুক্তি ও স্বাধীনতার প্রকৃত সংজ্ঞা ও ক্ষেত্রসমূহের সাথে। ফলে ইসলামী জ্ঞানে আলোকিত হৃদয় ও মস্তিষ্ক কখনো এই ক্ষেত্রে প্রতারিত হয় না। জীবন ও জগতে পরাধীনতার ক্ষেত্রগুলো তার সামনে স্পষ্ট থাকে। মুক্তি ও স্বাধীনতার উপায় সম্পর্কেও সে থাকে ওয়াকিফহাল।

ইসলামী দাওয়াতের এক দায়ী হযরত রিবয়ী ইবনে আমের রা.-এর কণ্ঠে ধ্বনিত হয়েছিল ইসলামী দাওয়াতের এই মর্মবাণী। পারস্য-সেনাপতি রুস্তমের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেছিলেন- ‘আমরা এই ভূখণ্ডে প্রবেশ করেছি, মানুষকে সৃষ্টির দাসত্ব থেকে মুক্তি দিয়ে এক আল্লাহর ইবাদতে নিয়োজিত করার জন্য; পৃথিবীর সংকীর্ণতা থেকে মুক্তি দিয়ে পৃথিবীর প্রশস্ততার দিকে নিয়ে আসার জন্য এবং সকল ধর্ম ও মতবাদের যুলুম-অবিচার থেকে মুক্ত করে ইসলামের সাম্য ও সুবিচারের ছায়াতলে নিয়ে আসার জন্য।’

ইসলামের এই প্রাজ্ঞ দায়ী, আল্লাহর পথের এই মুজাহিদের কণ্ঠে উচ্চারিত এই বাক্যগুলোতে যেমন ধ্বনিত হয়েছে ইসলামী দাওয়াতের লক্ষ্য-উদ্দেশ্য তেমনি নির্দেশিত হয়েছে মানুষের দাসত্ব ও মুক্তির ক্ষেত্রগুলোও।

আর তা উচ্চারিত হয়েছিল তৎকালীন বিশ্বের এক ‘সুসভ্য’ পরাশক্তির মহাক্ষমতাধর সেনাপতির সম্মুখে। অর্থাৎ তৎকালীন বিশ্বে শক্তি-সভ্যতায় অনন্য জাতিটি দাসত্বের যে ডাণ্ডা-বেড়িতে বন্দী-জীবন যাপন করছিল তার প্রতিই অঙ্গুলি নির্দেশ করছিল মুসলিম বাহিনীর এই মহান দায়ী ও মুজাহিদের উচ্চারণ।

সেই দাসত্বের প্রধান শিরোনাম হচ্ছে, সৃষ্টির উপাসনা। মানুষের স্রষ্টা আল্লাহ। গোটা বিশ্বজগতের সৃষ্টিকর্তা তিনি। মানুষকে তিনি সৃষ্টি করেছেন তাঁর ইবাদতের জন্য আর পৃথিবীর সকল কিছুকে সৃষ্টি করেছেন মানুষের প্রয়োজন পূরণের জন্য; মানুষেরই কল্যাণার্থে। অথচ যুগে যুগে অসংখ্য মানুষ, অসংখ্য জাতি-গোষ্ঠী সৃষ্টির উপাসনায় লিপ্ত হয়েছে। অসংখ্য কল্পিত দেব-দেবীর উপাসনা ও প্রভুত্বের শৃঙ্খলে নিজেদের আষ্টেপৃষ্ঠে আবদ্ধ করেছে। ইসলাম এসেছে মানবজাতিকে এই পৌত্তলিকতার শৃঙ্খল থেকে মুক্তি দেয়ার জন্য।

মনুষ্যসমাজেও একশ্রেণির মানুষ প্রভুর আসনে সমাসীন হয়েছে; শক্তি, ক্ষমতা, নানাবিধ কুসংস্কার ও মতাদর্শের ভিত্তিতে এরা উঠে যায় সকল জবাবদিহিতার ঊর্ধ্বে। পক্ষান্তরে মানুষের বৃহত্তর শ্রেণিটি নেমে আসে দাসের পর্যায়ে, বঞ্চিত হয় যুক্তিসঙ্গত অধিকার থেকেও। মনুষ্যসমাজের এই দাস-প্রভুর সমীকরণ সমাজে অন্যায়-অবিচারের বিস্তার ঘটায়। মানুষের জান-প্রাণ, অর্থ-সম্পদ, ইজ্জত-আব্রুকে অনিরাপদ করে তোলে। বাহ্যত এই মানুষগুলো মুক্ত-স্বাধীন হলেও এরা বাস করে ভয় ও আতঙ্ক, অবিচার ও বঞ্চনার যিন্দানখানায়। ইসলাম মানুষে-মানুষে প্রভু-ভৃত্যের এই সংস্কৃতি নির্মূল করেছে। তার দ্ব্যর্থহীন ঘোষণা- সকল মানুষ আল্লাহর সৃষ্টি। তিনিই একমাত্র রব, প্রভু ও পরওয়ারদেগার। তাঁরই আদেশ পালনে সবাই বাধ্য। তাঁর বিধানে কেউ জবাবদিহিতার ঊর্ধ্বে নয়। আইন ও অধিকারের এই সাম্যই তো মুক্তি ও স্বাধীনতা।

বন্দিত্বের আরেক বিস্তৃত ও ভয়াবহ রূপ হচ্ছে, নানা অহেতুক রীতি-নীতিতে ভারাক্রান্ত জীবন। মানুষ যখন জীবন ও কর্মে আল্লাহর আনুগত্য ত্যাগ করে তখন ইচ্ছায়-অনিচ্ছায় সে বন্দি হয়ে পড়ে অসংখ্য মনগড়া বিধি-নিষেধের নিগড়ে। যে জীবনে আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস ও ভরসার অবলম্বন নেই সেই জীবনে সংশয় ও অস্থিরতার কোনো শেষ নেই। তেমনি জীবনের বিস্তৃত অঙ্গনে- শিক্ষা-দীক্ষা, বিয়ে-শাদি, দাম্পত্য, সামাজিক মান-মর্যাদা, আয়-ব্যয় ইত্যাদি নানা ক্ষেত্রে এমন সব রীতি-নীতি ও নিয়ম-কানুনের শাসন প্রতিষ্ঠিত হয়ে যায়, বাস্তবে যেগুলোর কোনোই অর্থ নেই। এ যেন এক স্বেচ্ছাবন্দিত্ব। সমাজের প্রচলিত ধারা ও ব্যবস্থাই এই অপ্রয়োজনীয় ভার বহনে মানুষকে বাধ্য করে।

বন্দিত্বের আরেক রূপ হচ্ছে, মানবরচিত নানা মতবাদের শৃঙ্খলে আবদ্ধ হওয়া? যুগে যুগে কত মতবাদ রচিত হয়েছে আর বিলুপ্ত হয়েছে কে তার হিসাব রাখে? আসমানী ধর্মসমূহের যে বিকৃত রূপ সে-ও তো এক অর্থে মানবরচিত মতবাদ। ধর্মের পাদ্রি-পুরোহিতেরা মূল ধর্ম-ব্যবস্থাকে পরিবর্তন করে তদস্থলে নানা মনগড়া চিন্তা ও বিশ্বাসের বাধ্যবাধকতা, বিভিন্ন আরোপিত রীতি-নীতি পালনের আবশ্যকতা ঘোষণা করেছে, যার ভার মানবজাতিকে বহন করে যেতে হচ্ছে। এইসব আরোপিত রীতি ও বিশ্বাসের কারণে যুগে যুগে কত যে মানুষের প্রাণহানী, সম্পদহানী ও সম্মানহানী ঘটেছে তার খবর কে রাখে? যুগে যুগে বিপ্লবের বার্তা নিয়ে একেক মতবাদের উদ্ভব ঘটেছে আর লক্ষ-কোটি আদমসন্তানের মেধা-শ্রম-আয়ু এর প্রচার-প্রতিষ্ঠায় শেষ হয়ে গিয়েছে। কিছুকাল পর এর অসারতা প্রমাণিত ও প্রকাশিত হওয়ার পর লোকেরা আরেক মতবাদের  পেছনে পঙ্গপালের মত ছুটে গিয়েছে। এই যে বন্দিত্ব ও দাসত্ব এর কি কোনো জবাব আছে?

মানুষ তো চিরজীবী নয়, তার আয়ুও লক্ষ বছরের নয়। প্রত্যেক মানুষকে নিজ নিজ বিশ্বাস ও কর্ম নিয়েই জবাবদিহিতার কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হবে। তাহলে বিভ্রান্তির এত চোরাগলিতে ঘুরে মরার অবকাশ মানুষের জীবনে কোথায়?

এই সকল প্রকারের বন্দিত্বের শৃঙ্খল থেকে মানুষকে মুক্তি দেয়ার জন্যই ইসলামের আবির্ভাব। মানুষের কর্তব্য, স্বাধীনতা ও পরাধীনতার স্বরূপ সঠিকভাবে উপলব্ধি করে মুক্তির পথের পথিক হওয়া।

আল্লাহ তাআলার মহা অনুগ্রহ যে, তিনি আমাদের ঈমানের সম্পদ দান করেছেন, ইসলামের মাধ্যমে আমাদের দান করেছেন এক যথার্থ বিশ্বাস-ব্যবস্থা ও ইবাদত-ব্যবস্থা, যা সবরকমের ভ্রান্তি, বিচ্যুতি ও কুসংস্কার থেকে মুক্ত। ইসলামের কল্যাণেই আমরা লাভ করেছি এক সাম্য ও সুবিচারভিত্তিক সমাজ-ব্যবস্থা, এক যথার্থ ও পূর্ণাঙ্গ জীবন-ব্যবস্থা।

এই মহা নিআমতের  মূল্যায়ন ও শোকরগোযারি আমাদের কর্তব্য। আর আমাদের ব্যক্তি-জীবন, পারিবারিক-জীবন, সমাজ-জীবন ও রাষ্ট্রীয়-জীবন যে অশান্তি-অস্থিরতা, অনাচার-অরাজকতা, অবক্ষয়-উচ্ছৃঙ্খলায় ভারাক্রান্ত; এর কারণ- ইসলামের জীবন-ব্যবস্থা ত্যাগ করে অনৈসলামিক জীবন-ব্যবস্থা গ্রহণ। ফলে মুসলিম হয়েও আমরা যাপন করে চলেছি এক বন্দী-জীবন।

আমাদের কর্তব্য, আবারো ইসলামের দিকে ফিরে আসা। পূর্ণাঙ্গরূপে ইসলামে দাখিল হওয়া। তাহলেই আমরা আবার মুক্ত হব, স্বাধীন হব।