শুক্রবার ৩১ অক্টোবর ২০২৫, কার্তিক ১৫ ১৪৩২, ০৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৭

জাতীয়

নীতিনির্ধারণে নমনীয়তা ও নাগরিক দায়িত্বের ওপর প্রধান উপদেষ্টার গুরুত্বারোপ

 প্রকাশিত: ২২:৪০, ৩০ অক্টোবর ২০২৫

নীতিনির্ধারণে নমনীয়তা ও নাগরিক দায়িত্বের ওপর প্রধান উপদেষ্টার গুরুত্বারোপ

ঢাকা, ৩০ অক্টোবর, ২০২৫(বাসস) : প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস নীতিনির্ধারণ প্রক্রিয়ায় সঠিক দিকনির্দেশনা, সময়োপযোগী সমন্বয় এবং শিক্ষার্থীদের নাগরিক দায়িত্ব পালনের ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন।

আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেছেন যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়  আয়োজিত জাতীয় নীতি প্রতিযোগিতা,  ২০২৫-এ বিজয়ী দশ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এসময় প্রফেসর ইউনূস একথা বলেন।

শিক্ষার্থীরা প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে মতবিনিময় করেন এবং প্রতিযোগিতায় অংশগহণলব্ধ অর্জিত অভিজ্ঞতা ও নীতি প্রস্তাবনা তুলে ধরেন।

প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের অভিনন্দন জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘তোমাদের সবাইকে অভিনন্দন জানাচ্ছি এই বিজয় অর্জনের জন্য। এটা বহু জনের সঙ্গে প্রতিযোগিতার ফলাফল।’

তিনি বলেন, প্রতিযোগিতার আসরটি আসলে এক ধরনের ক্যাবিনেট, যেখানে বিতর্ক ও আলোচনা হয়। ‘তোমরা কাল্পনিক পরিস্থিতি সৃষ্টি করে তার ওপর বিতর্ক করছো।

ভবিষ্যতে এই এক্সারসাইজটাই কাজে লাগবে। কারণ একদিন তোমাদেরই আসল ক্যাবিনেট রুমে বসে নীতি নির্ধারণ করতে হবে— সেটা সরকারি, বাণিজ্যিক কিংবা ব্যক্তিগত পর্যায়েই হোক,’ বলেন তিনি।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘সুন্দর প্রস্তাব, বড় বাজেট বা লোকবল থাকলেও ভুল নীতির কারণে সবকিছু মাঠে মারা যায়। নীতি যদি সঠিক হয়, তাহলে জিনিসটা সুষ্ঠুভাবে ঠিক জায়গায় পৌঁছায়।’

তিনি বলেন, ‘পলিসি ব্যর্থতার জন্য অনেক কিছু আমাদের শেষ হয়ে যায়। কখনো নীতি একেবারে ব্যর্থ হয়, কখনো দুর্বল হয়—ফলে প্রত্যাশিত ফল আসে না। নীতি শুধু সরকার বা ব্যবসা নয়, ব্যক্তিগত জীবনের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য।’

তিনি আরও বলেন, ‘যারা পলিসি নির্ধারণ করে, তাদের পুরো প্রেক্ষাপট বুঝে সিদ্ধান্ত নিতে হয়। যেমন একজন চিকিৎসক রোগীর অবস্থা জেনে প্রেসক্রাইব করেন, তেমনি নীতিনির্ধারককেও জানতে হয় কোন সিদ্ধান্তের কী প্রতিক্রিয়া হবে।’

পরিবর্তিত পরিস্থিতি অনুযায়ী নীতি সংশোধনের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘দুনিয়া বদলে গেলেও যদি আমরা পুরনো নীতিতে আটকে থাকি, তাহলে তা কোনো কাজে আসবে না। পারিপার্শ্বিকতার পরিবর্তন, উদ্দেশ্যের পরিবর্তনের সঙ্গে নীতিরও পরিবর্তন হতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘যেদিন প্রকৃত ক্যাবিনেট রুমে বসে সত্যি সত্যি সারা দেশের পলিসি নির্ধারণ হবে, সেদিন এই অনুশীলনের গুরুত্ব বোঝা যাবে। অংশগ্রহণই গুণগত মান অনেক উন্নত করেছে।’

নাগরিক দায়িত্ব প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘নাগরিক মানে মালিক। মালিক হিসেবে আমাদের হক আছে জানতে— যে পলিসি হচ্ছে সেটা সঠিক হচ্ছে কি না। ভুল দিকে গেলে সোচ্চার হয়ে বলতে হবে। নাগরিক যদি চুপ থাকে, তাহলে কিছুই সোজা হবে না।’

প্রধান উপদেষ্টা সবাইকে অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, ‘চিন্তা করো— নীতিটা তোমার ক্ষেত্রে ঠিক হচ্ছে কি না, দেশের ক্ষেত্রেও ঠিক হচ্ছে কি না। এটাও তোমার কাজ, নাগরিক হিসেবে।’