মঙ্গলবার ০১ জুলাই ২০২৫, আষাঢ় ১৭ ১৪৩২, ০৫ মুহররম ১৪৪৭

ব্রেকিং

মধ্যপ্রাচ্যে ইসরায়েলের সংঘাত বিস্তার: বিশ্লেষণ কলম্বিয়ায় পাহাড়ধসে মৃত্যু ১৬, নিখোঁজ অন্তত ৮ “ত্রাণ নিতে এলে গুলি করতাম”—গাজার ঘটনায় মুখ খুললেন ইসরায়েলি সেনারা তেহরানে ধ্বংসস্তূপে উদ্ধার চলছেই, মৃতের সংখ্যা ছাড়াল ৪৫০ ইরানে বাংলাদেশিদের সহায়তায় হটলাইন চালু উপদেষ্টার গাড়িবহর আটকে বিক্ষোভ: সিলেটে তিনজন কারাগারে ইসরায়েলের টার্গেটে ইরানের রাষ্ট্রীয় সম্প্রচার ভবন লন্ডনে ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও তারেক রহমানের বৈঠক ১৩ জুন তারেক রহমান শিগগিরই দেশে ফিরবেন: ফখরুল রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হবে কাঁচের মতো স্বচ্ছ ঘর: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা নির্বাচনের ঘোষিত সময় মাথায় রেখে যথাসময়ে রোডম্যাপ দেবে ইসি: উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন তুললেন ছাত্রদল নেতা নাছির উদ্দিন মণিপুরে আবার উত্তেজনা, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে প্রশাসনের চাপে ঢাকার ৪ থানায় সক্রিয় অর্ধশতাধিক অপরাধী দল জাতীয় নির্বাচন ২০২৬ সালের এপ্রিলের প্রথমার্ধে: প্রধান উপদেষ্টা প্রধান উপদেষ্টার ঘোষণায় জাতির প্রত্যাশা পূরণ হয়নি: সালাহউদ্দিন আহমদ জুলাই সনদ–ঘোষণাপত্র হলে ঘোষিত সময়ে নির্বাচনে আপত্তি নেই: এনসিপি ২৫ কিলোমিটার যানজট, ২৪ ঘণ্টায় পারাপার ৬৪ হাজার যানবাহন বান্দরবানের রুমা ও থানচি ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা আংশিকভাবে প্রত্যাহার গাজায় যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবে যুক্তরাষ্ট্রের ভেটো, জাতিসংঘ নিরাপত্তা গরম মসলার বাজার শীতল: ক্রেতা কমে যাচ্ছে, দাম কিছুটা স্থিতিশীল ঈদে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে দই-মিষ্টি মজুত, রংপুরে হিমাগারে অভিযান ও দুই লাখ টাকা জরিমানা বান্দরবানের লামায় পাহাড় ধসের শঙ্কায় ৬০ রিসোর্ট বন্ধ নির্বাচন নিয়ে তরুণদের প্রতি অসত্য অভিযোগ ও বাস্তবতা ভারতের মুসলমানদের কেন বারবার দেশপ্রেমের প্রমাণ দিতে হয় সংবিধান পরিবর্তন ছাড়া ফ্যাসিবাদ বিলোপ সম্ভব নয়: এনসিপি মুখ্য সমন্বয়ক একুশের বন্ধুত্বে আগামীর পথচলা: বার্ষিক সম্মেলনে ২১তম বিসিএস প্রশাসন ফোরাম বিজিএমইএ`র নতুন নেতৃত্বে আসছেন বাবু, নিরঙ্কুশ জয়ের ইঙ্গিত জিলহজ মাসের আমল ও কোরবানির তাৎপর্য চট্টগ্রামে নারীকে লাথির ঘটনায় ভাইরাল আকাশ চৌধুরী বহিষ্কৃত, জামায়াতের বিবৃতি সংকট নিরসনে উদ্যোগ নেই, আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিল পবিস শ্রমিকরা আনচেলত্তির স্বপ্ন - রিয়াল মাদ্রিদের মতো করে খেলাবেন ব্রাজিলকে ডিমের দাম এখনো চড়া, ডজন ১৩০–১৪০ টাকায় বিক্রি বৈরী আবহাওয়ার কারণে নোয়াখালীর হাতিয়া দ্বীপের সঙ্গে সারাদেশের নৌ-যোগাযোগ বন্ধ হারের পর লিটনের মনোভাব - এখনো দুই ম্যাচ বাকি কাল থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য দেশের সব জুয়েলারি দোকান বন্ধ ঘোষণা যুক্তরাষ্ট্র চীনা শিক্ষার্থীদের ভিসা বাতিলের প্রক্রিয়া শুরু করবে ডিএনএ টেস্ট করে নামফলক ও মর্যাদা চায় শহীদ পরিবারের সদস্যরা বেতন না পেয়ে ডাকাতি, জাহাজের চিফ ইঞ্জিনিয়ারসহ তিনজন আটক “বাংলাদেশে কৌশলগত স্বার্থ নেই দক্ষিণ কোরিয়ার”—রাষ্ট্রদূত পার্ক ইয়ং সিক “শাপলার হত্যাকাণ্ডের বিচার চাই”—হেফাজতের বিবৃতি মির্জা আব্বাস: “করিডর আর স্টারলিংক আনা হচ্ছে আরাকান আর্মির জন্য” জিলহজ মাসের চাঁদ দেখে যে দোয়া পড়বেন নির্বাচনের আগে যতটুকু দরকার, ততটুকুই সংস্কার করতে হবে: মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম ‘চিন্তার স্বাধীনতাও হারাচ্ছি?’— নারী কমিশন বিতর্কে গীতিআরার উদ্বেগ ইউক্রেনে রাশিয়ার টানা হামলায় নিহত ১২, কঠোর চাপের আহ্বান জানালেন জেলেনস্কি সংস্কার, বিচার ও নির্বাচন – তিনটি কঠিন দায়িত্ব পালনে সচেষ্ট আমরা জুলাই অভ্যুত্থান ক্ষমতার পালাবদল নয়, এটি মৌলিক সংস্কার: নাহিদ হলুদ সাংবাদিকতা’ বিরোধী স্লোগানে উত্তাল শিক্ষক মিছিল ভারতের নিষেধাজ্ঞায় আখাউড়া বন্দর দিয়ে রপ্তানি কমেছে ৪০% বিএনপির অবস্থান কর্মসূচি চলছে, দুই উপদেষ্টার পদত্যাগ দাবি জাতীয় স্বার্থে অভিমান ভুলে দায়িত্বশীল হওয়ার আহ্বান : জামায়াত আমির আন্দোলনের পর অবশেষে নিয়োগ পেলেন ৪৩তম বিসিএসের বাদ পড়া ১৬২ জন নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠনের দাবিতে ইসির সামনে এনসিপির বিক্ষোভ কাল বাংলাদেশে স্টারলিংকের যাত্রা, স্যাটেলাইট ইন্টারনেটের নতুন যুগ শুরু নরওয়ের দৃঢ় সমর্থন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি বিগত সরকারের সময় প্রতিষ্ঠানগুলো ধ্বংসপ্রাপ্ত, এমন অবস্থা ছিল যে খতিবকেও পালাতে হয়েছিল: বাণিজ্য উপদেষ্টা গায়ের জোরে নগর ভবন দখল করে আন্দোলন চালাচ্ছে বিএনপি আবারও রাজপথে নামার ইঙ্গিত আসিফের, সতর্ক করলেন হাসনাত গোপন অধ্যাদেশ বাতিলের দাবিতে আন্দোলন স্থগিত, ২০ মে আলোচনায় বসবে ঐক্য পরিষদ ভারতের আমদানি নিষেধাজ্ঞা সীমান্ত বাণিজ্যে অনিশ্চয়তা তৈরি করছে ভারতের নতুন সিদ্ধান্তে উত্তর-পূর্বাঞ্চল দিয়ে বাংলাদেশি ভোগ্যপণ্য আমদানি বন্ধ গত ৯ মাসে জুলাই-যোদ্ধাদের ওপর ৩৮টি হামলা জবি’র ৪ দফা দাবি মেনে নেওয়ায় আন্দোলনের সমাপ্তি ঘোষণা ডিবি থেকে মুক্তির পর আন্দোলনে উল্লাস জবি শিক্ষার্থীর গাজা দখলে নেওয়ার আকাঙ্ক্ষা পুনর্ব্যক্ত করলেন ট্রাম্প শাহরিয়ার হত্যাকাণ্ডে বিচার নিশ্চিতের অঙ্গীকার উপদেষ্টা আসিফের সোনার দাম ভরিতে কমল ৩ হাজার ৪৫২ টাকা, নতুন দর কার্যকর শুক্রবার থেকে ঢাবি শিক্ষার্থীর মৃত্যু: নিরাপত্তা নিশ্চিতে বড় পদক্ষেপ প্রশাসনের আওয়ামী লীগের কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধে ভারতের উদ্বেগ শ্রীনগরজুড়ে বিস্ফোরণ, যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের অভিযোগ ওমর আব্দুল্লাহর উপদেষ্টা পরিষদের সিদ্ধান্ত: আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে শাহবাগ অবরোধ ‘চলবে’, শনিবার গণজমায়েত ড্রোন যুদ্ধ: ভারত-পাকিস্তান বিরোধের নতুন অধ্যায় আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে সরকার গুরুত্বসহকারে বিবেচনায় নিচ্ছে: প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং আ.লীগ নিষিদ্ধ না হওয়া পর্যন্ত শাহবাগ ছাড়বেন না আন্দোলনকারীরা ‘আপ বাংলাদেশ’–এর আত্মপ্রকাশ পূর্বঘোষণা ছাড়া ভারত সফরে সৌদি প্রতিমন্ত্রী, পাকিস্তান-ভারত উত্তেজনায় কূটনৈতিক তৎপরতা তুঙ্গে দ্রুত সিদ্ধান্ত না এলে সারা দেশ থেকে ঢাকা অভিমুখে মার্চের হুঁশিয়ারি নাহিদ ইসলামের দেশীয় ওষুধ কোম্পানি রেনাটাকে ৭০০ কোটি টাকা ঋণ দিচ্ছে আইএফসি তারেক রহমান: সরকার হয়তো স্বৈরাচারের দোসরদের দেশত্যাগে সহায়তা করছে জাতীয় নিরাপত্তা ইস্যুতে ভারতের নির্দেশে ৪ বাংলাদেশি টিভি চ্যানেল ইউটিউবে বন্ধ

ইসলাম

র‍্যাগিং: শিক্ষাঙ্গণে অপরাধ ও অশ্লীলতার দাগ!

মাওলানা শরীফ মুহাম্মাদ

 প্রকাশিত: ১৫:০৭, ২১ জানুয়ারি ২০২২

র‍্যাগিং: শিক্ষাঙ্গণে অপরাধ ও অশ্লীলতার দাগ!

।এক।

ঈমান ও দ্বীনের সৌন্দর্যই জীবনের সৌন্দর্য। শিক্ষাদীক্ষা, আচার-আচরণ, আমল-আখলাক সব ক্ষেত্রে এই সৌন্দর্যের পরিচর্যা ও যত্নশীলতা মুমিনের জীবনের প্রধান বৈশিষ্ট্য। মুমিনের জীবনে উভয় জগতের (দুনিয়া-আখেরাত) সাফল্য নিয়ে আসে এই ঈমানী ও দ্বীনী সৌন্দর্য। সতর্ক, বুদ্ধিমান ও সুপথের পথিক ঈমানদারদের জীবনের পথচলা হয়ে থাকে এই সৌন্দর্যের পথেই। তবে ইবলিসের হাতছানি ও শয়তানী আহ্বানে এই সুস্থ দ্বীনী সৌন্দর্যের সঙ্গে সবসময় সব মুসলমান যুক্ত থাকার সৌভাগ্য লাভ করতে পারেন না। বরং একটি শ্রেণী নানাভাবে ঈমানী রাহনুমায়ী ও দ্বীনের পথ থেকে নিজেদের জীবনচর্চাকে দৃষ্টিকটূভাবে দূরে সরিয়ে নিয়ে যায়।

 

এবং অনেক সময় দ্বীনী সৌন্দর্য থেকে তাদের এই দূরত্বের মুঃখটা শুধু তাদের মধ্যেই আবদ্ধ থাকে না, বরং জীবনের দৃষ্টিকটূ অসৌন্দর্যগুলো তারা অন্যের মধ্যে ছড়িয়ে দেওয়ার বেদনা তৈরি করে। জোর, চাপ ও অসহিষ্ণুতার মধ্য দিয়ে অশ্লীলতা ও অপরাধের দাগ তৈরিতে উদ্যোগী ও উৎসাহী কর্মীর ভূমিকা পালন করতে লেগে যায়। এসব উদ্যোগ ও উৎসাহের মধ্য দিয়ে জীবনে ঈমান ও দ্বীনের সৌন্দর্য থেকে সে নিজে কেবল দূরে থাকা বা বঞ্চিত হওয়ার পরিস্থিতির মধ্যে নিজেকে নিয়ে যায় না, বরং অন্য বহু মানব-মানবীর জীবনেও অশালীনতার বিষ ছড়িয়ে দিয়ে যায়।

 

। দুই।

জীবনে ঈমানী ও দ্বীনী সৌন্দর্যের অন্যতম বিষয় হচ্ছে, শালীনতা। কথাবার্তা, পোশাক-আশাক, চলাফেরায় শ্লীলতা, শালীনতা ও লজ্জাশীলতা ধরে রাখাই মুমিনের জীবনের অন্যতম বৈশিষ্ট্য। কোনো মুসলিম-সমাজে এই শালীনতা ও যৌন সুস্থতার বিষয়ে একসময় আলাদা করে কোনো কথা বলতে হতো না। দ্বীনের সঙ্গে ন্যুনতম সম্পর্কের সূত্র হিসেবেই শিক্ষিত-শিক্ষাবঞ্চিত সব শ্রেণির মুসলমান জীবন-শালীনতার এই সৌন্দর্য ধরে রাখতো। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়গুলোতে ইবলিসি আধুনিকতা, বেহায়া তথ্যস্রােত এবং দুষ্ট জীবনচর্চার অংশ হিসেবে ঘরে-বাইরে, পথে-ঘাটে, ক্যাম্পাসে এই অশালীনতার চর্চা শুরু হয়েছে। এবং একই সঙ্গে চর্চা হচ্ছে নানারকম জুলুম, উৎপীড়ন ও নির্যাতনের। পশ্চিমা জীবনজগত থেকে আমদানি করা র‌্যাগিং-র‌্যাগ-ডের নামে এসব অশ্লীল ও উৎপীড়ক জীবনচর্চা অতি উৎসাহে ক্ষেত্র বিশেষে মূল ভূখন্ডের চেয়েও বিকুত রূপে চালানো হচ্ছে এদেশে। এর সঙ্গে যুক্ত করা হচ্ছে নানারকম জুলুমের উপাদান।

 

র‌্যাগ-ডে ও র‌্যাগিংয়ের নামে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে নানারকম উৎপীড়নমূলক ঘটনার খবর আগে থেকেই আসতো। সম্প্রতি বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশাপাশি মফস্বলের কলেজগুলো থেকেও এ জাতীয় ঘটনার খবর গণমাধ্যমে আসছে। আর এর সঙ্গে বড় হয়ে আসছে নানারকম অশ্লীল উক্তি, কুরুচিপূর্ণ আচরণ ও লেখাজোখার বিভিন্ন চিত্র। দৃশ্যটা এমন হয় যে মনে হতে থাকে, কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে, প্রকাশ্য অনুষ্ঠানে তরুণ-তরুনীদের মধ্যে এরকম অশ্লীলতার চর্চা চারপাশের অভিভাবকরা যেন স্বাভাবিকভাবেই মেনে নিচ্ছে। যেন আধুনিক উচ্চ শিক্ষা ও সময়ের বিবর্তনে এরকম অশালীনাতার চর্চা (র‌্যাগ ডে-র নামে) এটা তেমন কোনো মন্দ বিষয় নয়। জীবনের সৌন্দর্য ও সুস্থতা বিঘিœত হওয়ার মতো কোনো উপাদান এতে নেই। অথচ বাস্তবতাটা তো এরকম না। কারণ, আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআলা ইরশাদ করেন-

اِنَّ الَّذِیْنَ یُحِبُّوْنَ اَنْ تَشِیْعَ الْفَاحِشَةُ فِی الَّذِیْنَ اٰمَنُوْا لَهُمْ عَذَابٌ اَلِیْمٌ  فِی الدُّنْیَا وَ الْاٰخِرَةِ  وَ اللهُ یَعْلَمُ وَ اَنْتُمْ لَا تَعْلَمُوْنَ.

নিশ্চয়ই যারা চায় মুমিনদের মধ্যে অশ্লীলতা ছড়িয়ে পড়ুক, তাদের জন্য দুনিয়া ও আখেরাতে রয়েছে মর্মন্তুদ শাস্তি। আল্লাহ জানেন এবং তোমরা জান না। -সূরা নূর (২৪) : ১৯

আল্লাহ তাআলার এই বাণী এবং এই বাণীর মধ্যে যে ভয়াবহ শাস্তির সতর্কবার্তা রয়েছে তা যেন আমাদের আধুনিক শিক্ষাপিঠের অভিভাবকেরা অনুধাবন করেন।

 

। তিন।

র‌্যাগ-ডে ও র‌্যাগিংয়ের নামে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে চলা উৎপীড়নমূলক ঘটনার খবর গত কয়েক বছরে দেশব্যাপী ব্যাপক উত্তেজনা ও ক্ষোভ তৈরি করেছে। এসব র‌্যাগিংয়ের ঘটনায় অনেক তরুণ-তরুনীর জীবন বিপন্ন হওয়ার মতো ঘটনাও ঘটেছে। তারপরও দেখা যাচ্ছে, কখনো কোনো রাজনৈতিক শক্তির সহযোগিতায় কখনো কোনো সাংস্কৃতিক রীতির দোহাই দিয়ে এ- জাতীয় উৎপীড়নধর্মী অনুষ্ঠানে একশ্রেনির ছাত্র-শিক্ষক উৎসাহী ভূমিকা রাখছেন। কেউ কেউ সংবাদপত্রে কলাম লিখে জানাচ্ছেন, র‌্যাগ-ডে মূলত কলেজে বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভিন্ন বিভাগের ছাত্রদের বিদায় অনুষ্ঠানের দিন। এ উপলক্ষে কিছু দেখা-সাক্ষাত, মজা-ফূর্তি করার আয়োজন থাকে। র‌্যাগ-ডে  মৌলিকভাবে অতো খারাপ কিছু না! অপরদিকে গত নভেম্বরে নেত্রকোনা অঞ্চলের একটি সরকারি কলেজে র‌্যাগ-ডে পালন করতে না দেওয়ায় কলেজে গিয়ে ক্ষুব্ধ ছাত্ররা বিভিন্ন আসবাবপত্র কুপিয়ে নষ্ট করেছে বলে সংবাদপত্রে খবর এসেছে। অনেকটা নেশায় আসক্ত তরুণদের মতো কাজ করেছে এরা। উৎপীড়ন ও অশ্লীলতার বাহক র‌্যাগ-ডে পালন করতে না দেওয়ায় নিজেদের কলেজে গিয়ে কোপানো ও ভাংচুরের মহড়া দিয়ে গোটা দেশের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে।

র‌্যাগ-ডে কেন্দ্রিক এসব অস্থিরতা-উত্তেজনা, ক্ষোভ এবং এজাতীয় ঘটনাপ্রবাহ একটি তিক্ত বাস্তবতাকে চোখের সামনে নিয়ে আসে। সেটি হচ্ছে, র‌্যাগিংয়ের মধ্য দিয়ে অশালীনতা-উৎপীড়নকে শিক্ষাঙ্গনের সহজাত বিনোদন কার্যক্রম হিসেবে প্রতিষ্ঠা করার প্রকাশ্য চেষ্টা ও মনোভাব বিভিন্ন ক্যাম্পাসে বিদ্যমান। একইভাবে এ-জাতীয় উৎপীড়ন, জুলুম-নির্যাতনের ঘটনাকে স্বাভাবিক ঘটনা হিসেবে দেখা ও দেখানোর মতো মানসিকতাও সমাজে সক্রিয়। অশ্লীলতার বাইরে কেবলমাত্র এই জুলুমের ঘটনাও একটি ভয়ংকর ব্যাপার। স্বাভাবিক পরিসরে, ছোট-বড় শিক্ষাঙ্গনে।

হযরত লুকমান আ. তার ছেলেকে যে উপদেশ দিয়েছেন তার একটি বর্ণনা কালামুল্লাহ শরীফে-

وَ لَا تُصَعِّرْ خَدَّكَ لِلنَّاسِ وَ لَا تَمْشِ فِی الْاَرْضِ مَرَحًا اِنَّ اللهَ لَا یُحِبُّ كُلَّ مُخْتَالٍ فَخُوْرٍ.

এবং মানুষের সামনে (অহংকারবশত) নিজের গাল ফুলিও না এবং মাটিতে সদম্ভে চলো না। নিশ্চয়ই আল্লাহ কোনো দর্পিত অহংকারীকে পছন্দ করেন না। -সূরা লুকমান (৩১) : ১৮

রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন-

اتّقُوا الظّلْمَ، فَإِنّ الظّلْمَ ظُلُمَاتٌ يَوْمَ الْقِيَامَةِ.

তোমরা জুলুম/সীমালংঘন/অত্যাচার করাকে ভয় করো। কারণ, কিয়ামতের দিনে জুলুম হবে অনেক অন্ধকার। -সহীহ মুসলিম, হাদীস ২৫৭৮

এই জুলুম ও উৎপীড়নে যুক্ত হওয়া এবং শিকার হওয়ার হাত থেকে তরুণ-তরুণী শিক্ষার্থী নতুন প্রজন্মকে বাচানোর পদক্ষেপ নেওয়ার বড় দায়িত্ব অভিভাবকদের। এক্ষেত্রে ঘর ও বিদ্যালয়ের অভিভাবকদের পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি। রাষ্ট্রের অভিভাবকরাও চোখ খুলতে পারেন মন চাইলে।

 

। চার।

সুস্থ জীবন ও জীবন সৌন্দর্য থেকে সরে যাওয়ার উপায়-উপলক্ষ সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে। হাটে-ঘাটে, চলার পথে, ঘরে-কার্যালয়ে এবং ব্যক্তি জীবনের নিভৃতে অ-সুস্থতা ও গোনাহর হাতছানি এখন অনেক বেশি সক্রিয় ও বিস্তৃত। নফস ও ইবলিসের বাহ্য শক্তির চকমকা প্রভাব এমনিতেও একটু বেশি হয়ে থাকে। এবং একইভাবে এ-জাতীয় দুষ্ট হাতছানি যেমন তরুণ-তরুনীদের মাঝে চলে, তেমনি যুবক ও মধ্যবয়সী এমনকি জীবচনের পড়ন্ত বেলার মানুষদের মধ্যেও আল্লাহর স্মরণ থেকে মানুষকে দূরে সরিয়ে রাখার আয়োজনের নানা রূপ নখদাঁত বিকশিত করে আছে। এমন একটি সময়ে মুসলিম সমাজের বৃহত্তম নতুন প্রজন্মের বিদ্যাপিঠগুলোতে অশ্লীলতা ও জুলুমের বিস্তারকে ‘সয়ে যাওয়ার’ চোখে দেখতে থাকা বড়দের জন্য দায়িত্বশীল কোনো জীবন-অবস্থান হতে পারে না।

 

নানা রকম অশ্লীলতা ও অপরাধের উসকানি যারা দেয় এবং যারা উদ্যোগী হয়ে এসব অপকর্মে নিজেরা যুক্ত হয়ে অন্যদেরও শিকার বানায়, তারা তো অবশ্যই অপরাধী। যারা অভিভাবকত্বের জায়গায় অবস্থান করে এসব অপকর্ম ও অ-সুস্থতার নতুন নতুন প্রচলন ও প্রতিষ্ঠাকে নীরবে সহ্য করে ‘সহযোগিতা’ৎ করে, তারাও কম অপরাধী নন। কারণ দায়িত্বশীল জায়গা থেকে এভাবে জোর করে চাপিয়ে এবং চালিয়ে দেওয়া অসভ্যতার গতি রোধ করে দিলে ভুল ও বর্জনযোগ্য একটি রেওয়াজ উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে জায়গা পেতে পারে না।

রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন-

مَنْ سَنَّ فِي الْإِسْلَامِ سُنَّةً حَسَنَةً، فَلَهُ أَجْرُهَا، وَأَجْرُ مَنْ عَمِلَ بِهَا بَعْدَهُ، مِنْ غَيْرِ أَنْ يَنْقُصَ مِنْ أُجُورِهِمْ شَيْءٌ، وَمَنْ سَنَّ فِي الْإِسْلَامِ سُنَّةً سَيِّئَةً، كَانَ عَلَيْهِ وِزْرُهَا وَوِزْرُ مَنْ عَمِلَ بِهَا مِنْ بَعْدِهِ، مِنْ غَيْرِ أَنْ يَنْقُصَ مِنْ أَوْزَارِهِمْ شَيْءٌ

যে ব্যক্তি ইসলামের মধ্যে কোনো সুন্দর ধারা চালু করলো পরে লোকেরা সে সুন্দর ধারা অনুযায়ী কাজ করলো, সেই ব্যক্তি পরবর্তীদের আমলের সমান সওয়াব পাবে; যতিও পরবর্তীদের সওয়াবের কোনো ঘাটতি হবে না। এবং যে ব্যক্তি ইসলামের মধ্যে মন্দ কোনো ধারা চালু করলো, পরে লোকেরা সে মন্দ ধারা অনুযায়ী কাজ করলো, সেই ব্যক্তির আমলনামায় পরবর্তীদের গোনাহে কোনো হ্রাস ঘটানো ছাড়াই তাদের গোনাহের দায় লেখা হবে। সহীহ মুসলিম, হাদীস ১০১৭

 

নৈতিক অপরাধ, জুলুম ও অ-সুস্থতা জীবনকে ক্ষতিগ্রস্ত করে দুনিয়া এবং আখেরাতে। এ ধরনের পাপে ব্যক্তিগত যুক্ততা কিংবা অন্যদের উপর চাপিয়ে দেওয়ার দায় আরো মারাত্মক রকম ক্ষতিকর হয়ে উঠতে পারে। বিশেষত নতুন নতুন মন্দকর্মের প্রচলনের বিষয়কে রুখে দেওয়ার চেষ্টা করা সবার দায়িত্ব। আমাদের নিজেদের জন্য, নতুন প্রজন্মের জন্য এবং সমাজের সুস্থ জীবনচর্চা ও জীবন-সৌন্দর্যের জন্য এসব নেতিবাচক বিষয়ের শুদ্ধির বিষয়ে আমাদের উদ্যোগী হওয়া আমাদের ভবিষ্যতকে কল্যাণময় করবে ইনশাআল্লাহ। শুধু র‌্যাগ -ডে বা র‌্যাগিংয়ের ঘটনা নয়, শুধু অশ্লীলতার সামাজিক চর্চা কিংবা ক্যাম্পাস-উৎপীড়ন নয়; সমাজের বিভিন্ন কোনায় কোনায়, বিভিন্ন অলিতে-গলিতে চালু করা মন্দের স্রাতে নির্জীব করে দিয়ে নেকির বাতাস বেগবান করার চেষ্টা করাই মুমিনের কাজ, মুমিনের সৌভাগ্য। ঈমান ও দ্বীন কেন্দ্রিক সুস্থতা এবং এর সৌন্দর্য ছাড়া মুমিনের জীবন সুন্দর পরিণতির দিকে এগিয়ে যেতে পারে না। সেজন্যই ছোট-বড়, সমাজের যে স্তর থেকেই জীবন-সৌন্দর্যের জন্য হানিকর কোনো উপাদান এসে যুক্ত হতে চাইলে তাকে থামিয়ে দেওয়া এবং রুখে দেওয়া অপরাপর সব সুস্থ মুমিনের দায়িত্ব হয়ে যায়।