রোববার ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ভাদ্র ২৩ ১৪৩২, ১৪ রবিউল আউয়াল ১৪৪৭

আন্তর্জাতিক

ইরান-ইসরায়েল কি পারমাণবিক সংঘাতের পথে?

 প্রকাশিত: ১৩:০৩, ৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫

মধ্যপ্রাচ্যে আবারও পারমাণবিক যুদ্ধের আশঙ্কা ঘনীভূত হচ্ছে। কারণ, ইসরায়েলের নেগেভ মরুভূমিতে অবস্থিত গোপন পারমাণবিক স্থাপনা— শিমন পেরেজ নিউক্লিয়ার রিসার্চ সেন্টার—এ সম্প্রতি অস্বাভাবিক তৎপরতা ধরা পড়েছে। স্যাটেলাইট চিত্রে দেখা গেছে, সেখানে বিশাল আকারের কংক্রিট প্রাচীর, উঁচু ক্রেন এবং নতুন ভূগর্ভস্থ স্থাপনার কাজ চলছে।

কী তৈরি হচ্ছে দ্বিমোনায়?

বিশেষজ্ঞদের ধারণা, এই নির্মাণ কোনো সাধারণ গবেষণা প্রকল্প নয়। কেউ বলছেন, এটি একটি নতুন হেভি ওয়াটার রিঅ্যাক্টর, যেখানে প্লুটোনিয়াম উৎপাদন করা হবে—যা পারমাণবিক বোমার মূল উপাদান। অন্যরা মনে করছেন, এটি হতে পারে অস্ত্র সংযোজন কেন্দ্র, যেখানে ভবিষ্যতের উন্নতমানের পারমাণবিক বোমা তৈরি হবে।

সময়টা এত গুরুত্বপূর্ণ কেন?

মাত্র কয়েক সপ্তাহ আগে যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তায় ইসরায়েল ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় বিমান হামলা চালায়। ওই হামলায় ইরানের শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তা, পারমাণবিক বিজ্ঞানী ও সাধারণ মানুষ নিহত হন। আন্তর্জাতিক মহল মনে করছে, এটি শুধু আঞ্চলিক উত্তেজনা নয়, বরং পারমাণবিক অস্ত্র বিস্তার রোধ চুক্তি (NPT)-এর স্পষ্ট লঙ্ঘন।

ইসরায়েলের নীরব কৌশল

ইসরায়েলের হাতে ইতোমধ্যেই ২০০–৪০০ পারমাণবিক ওয়ারহেড রয়েছে বলে অনুমান করা হয়। তাদের কাছে ট্রিটিয়াম উৎপাদনের ক্ষমতাও আছে, যা বোমার ধ্বংসক্ষমতা আরও বাড়াতে পারে। তবুও দেশটি কখনো অস্ত্রভাণ্ডারের অস্তিত্ব স্বীকার করে না, অস্বীকারও করে না। এই নীতিকেই তারা বলে “ইচ্ছাকৃত অস্পষ্টতা” (Deliberate Ambiguity)।

কিন্তু প্রশ্ন হলো—
যেখানে ইরানসহ মধ্যপ্রাচ্যের প্রায় সব দেশ আন্তর্জাতিক পরিদর্শনের আওতায়, সেখানে কেন শুধু ইসরায়েলই বাইরে থাকবে? কেন তারা কোনো আন্তর্জাতিক পরিদর্শন বা চুক্তি মানে না? বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এর পেছনে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের নিঃশর্ত সমর্থন।

আন্তর্জাতিক মহল আশঙ্কা করছে, এই নীরবতা যদি ভেঙে পড়ে তবে তা শুধু মধ্যপ্রাচ্য নয়, বরং গোটা বিশ্বকে পারমাণবিক সংঘাতের দিকে ঠেলে দিতে পারে।

অনলাইন নিউজ পোর্টাল ২৪