মঙ্গলবার ৩০ এপ্রিল ২০২৪, বৈশাখ ১৭ ১৪৩১, ২১ শাওয়াল ১৪৪৫

এডিটর`স চয়েস

সপ্তাহের আলোকবর্তিকা জুমার দিনের আমল

 প্রকাশিত: ১১:১৪, ১৯ মার্চ ২০২১

সপ্তাহের আলোকবর্তিকা জুমার দিনের আমল

জুমার দিন আদম (আ.)-কে সৃষ্টি করা হয়েছে : জুমার দিন বেশির ভাগ মানুষের ছুটির দিন। একজন মুসলিম হিসেবে দিনটি আনন্দ ও ইবাদতের দিন বলে উদযাপন করা জরুরি। রাসুল (সা.) এই দিনটিকে বিশেষ গুরুত্ব দিতেন। তিনি বলেন, ‘দিনগুলোর মধ্যে জুমার দিনই সর্বোত্তম। এই দিনে আদম (আ.)-কে সৃষ্টি করা হয়েছে। এই দিনে তিনি ইন্তেকাল করেছেন। এই দিনে শিঙ্গায় ফুঁ দেওয়া হবে। এই দিনে সব সৃষ্টিকে বেহুঁশ করা হবে। অতএব তোমরা এই দিনে আমার ওপর বেশি পরিমাণে দরুদ পাঠ করো। কেননা এদিন তোমাদের দরুদ আমার কাছে পেশ করা হয়। (আবু দাউদ, হাদিস : ১০৪৭)

এমনকি তিনি তাঁর উম্মতদের এই দিনের কিছু বিশেষ সুন্নতও শিক্ষা দিয়েছেন, যেগুলোর ওপর আমল করলে সপ্তাহব্যাপী হয়ে যাওয়া সগিরা গুনাহগুলো মাফ হয়ে যায়। এই দিনে বিশেষ আমলের মধ্যে পবিত্র কোরআনেরও কিছু সুরা আছে, যা তিলাওয়াত করলে অশেষ পূণ্য হাসিল হবে বলে রাসুল (সা.)-এর বিভিন্ন হাদিসে বর্ণিত হয়েছে। নিম্নে সেই সুরাগুলো সম্পর্কে কিছুটা আলোকপাত করা হলো—

সুরা কাহফ পাঠ সপ্তাহের আলোকবর্তিকা : আবু সাঈদ খুদরি (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘যে ব্যক্তি জুমার দিনে সুরা কাহফ পাঠ করবে, তার ঈমানের নূর এক জুমা থেকে অন্য জুমা পর্যন্ত বিচ্ছুরিত হতে থাকবে।’ (বায়হাকি, সুনানে সুগরা, হাদিস : ৬৩৫; বায়হাকি, সুনানে কুবরা, হাদিস : ৫৭৯২)। 

আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি জুমার দিন সুরা কাহাফ পাঠ করবে কেয়ামতের দিন তাঁর পায়ের নিচ থেকে একটি আলো জ্বলে ওঠবে যা আকাশ পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়বে এবং দুই জুমার মধ্যবর্তী সময়ের গুনাহ ক্ষমা করা হবে।’ (আত তারগিব ওয়াত তারহিব, পৃষ্ঠা : ২৯৮/১)

হাদিসে বর্ণিত ‘নুর’ দ্বারা উদ্দেশ্য হলো, আল্লাহ তাআলা সুরা পাঠকারীর অন্তর, জ্ঞান, দৃষ্টি ও সব কাজকে আলোকিত করেন। ‘নুর’ দ্বারা আরেকটি উদ্দেশ্য হলো, মানুষের আমলের সঙ্গে বর্ণিত ‘নুর’ আকাশে চলে যায়। আর তা ফেরেশতারা দেখতে পান। কিংবা তা পাঠকারীর জন্য আখেরাতে অন্যদের তুলনায় উজ্জ্বল আলো হয়ে দেখা দেয়। সর্বোপরি এই ‘নুর’ পাঠকারীর জন্য এক জুমা থেকে আরেক জুমা পুরো সপ্তাহ ব্যাপী আলো হয়ে থাকে। 
 
দাজ্জালের পরীক্ষা থেকে মুক্তি : আবু দারদা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি সুরা কাহাফের প্রথম ১০ আয়াত মুখস্ত করবে সে দাজ্জালের পরীক্ষা থেকে রেহাই পাবে। তোমাদের কেউ তার দেখা পেলে সে যেন সুরা কাহাফের প্রথম আয়াতগুলো পাঠ করে।’ (মুসলিম, হাদিস নং : ৮০৯)
 
মেঘখণ্ডের নেমে আসা : সুরা কাহফের বিশেষ মর্যাদা সম্পর্কে বারাআ (রা.) বলেন, এক ব্যক্তি ‘সুরা কাহফ’ তিলাওয়াত করছিলেন। তাঁর ঘোড়াটি দুটি রশি দিয়ে তাঁর পাশে বাঁধা ছিল। তখন এক টুকরা মেঘ এসে তাঁর ওপর ছায়া দিতে শুরু করে। মেঘখণ্ড ক্রমেই নিচের দিকে নেমে আসতে লাগল। আর তাঁর ঘোড়াটি ভয়ে লাফালাফি শুরু করে দিল। সকাল বেলা যখন লোকটি নবী (সা.)-এর কাছে উক্ত ঘটনার কথা ব্যক্ত করেন, তখন তিনি বলেন, এটি ছিল সাকিনা (প্রশান্তি), যা কোরআন তিলাওয়াতের কারণে নাজিল হয়েছিল। (বুখারি, হাদিস : ৫০১১)

ফজর ও জুমার নামাজে বিশেষ সুরা পাঠ : আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী (সা.) জুমার দিন ফজরের নামাজে ‘আলিফ লাম মিম সাজদাহ’ (সুরা আস সাজদাহ) ও ‘হাল আতা আলাল ইনসা-নি হিনুম মিনাদ দাহর’ (সুরা আদ দাহর) এবং জুমার নামাজে সুরা জুমা ও সুরা মুনাফিকুন পাঠ করতেন। (মুসলিম, হাদিস : ১৯১৬)

জুমার রাতে সুরা পাঠ : আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি জুমার রাতে (বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে) সুরা হা-মীম আদ-দুখান পাঠ করবে তাকে ক্ষমা করা হবে।’ (তিরমিজি, হাদিস : ২৮৮৯)

অনলাইন নিউজ পোর্টাল

মন্তব্য করুন: