শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, বৈশাখ ১৩ ১৪৩১, ১৮ শাওয়াল ১৪৪৫

শিক্ষা

"হল বন্ধ রেখেও শেষ বর্ষের পরীক্ষা সম্ভব"

 প্রকাশিত: ১০:১৬, ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২১

বৈশ্বিক মহামারি ও করোনা পরিস্থিতির জন্য ২০২০ সালের মার্চের মাঝামাঝি থেকে দেশের প্রায় সকল পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। পরবর্তীতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সুস্পষ্ট দিক নির্দেশনা এবং শিক্ষা মন্ত্রনালয় ও বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের সহযোগিতায় অনলাইন ক্লাস শুরু হয়। ফলশ্রুতিতে দেশের প্রায় ৫০টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের আনুমানিক সাড়ে আট লাখ ছাত্র-ছাত্রীর শিক্ষাজীবন অনিশ্চয়তা থেকে কিছুটা হলেও লাঘব হয়।

অনলাইন ক্লাসের জন্য অনেককে গাছের ডালে, বাড়ির ছাদে কিংবা দূরবর্তী কোথাও গিয়ে ইন্টারনেট পেতে হচ্ছে। নেটওয়ার্ক সমস্যা, ইন্টারনেটে ধীরগতি, লোডশেডিং, ডিভাইসের অভাব থাকা সত্ত্বেও আমরা দেখেছি শিক্ষার্থীরা অনলাইন ক্লাসে স্বতঃস্ম্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করছে। শ্রেণি কার্যক্রমে অংশ নিতে তাদের আগ্রহ অনিশেষ। চলমান অতিমারিতে অনেকেই আর্থিক, পারিবারিক ও সামাজিক সমস্যার পাশাপাশি মনস্তাত্ত্বিক দিক থেকেও সমস্যায় রয়েছে। তারপরও তারা অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করছে। এর মাধ্যমে সহপাঠী ও শিক্ষকদের সঙ্গে যোগাযোগ হচ্ছে, নিজেদের বিষয়গুলো শেয়ার করতে পারছে; সেটিও এর একটি ইতিবাচক দিক বটে।

দীর্ঘ এক বছরের বেশি সময় বন্ধের পর আগামী ২৪ মে (পবিত্র ঈদুল ফিতরের পর) থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস শুরু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। ১৭ মে থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব আবাসিক হল খুলে দেয়ার ঘোষণা দেয়া হয়েছে। গত বছরের ১৭ মার্চ করোনার প্রাদুর্ভাব রুখতে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়। কয়েক ধাপে বাড়ানোর পর ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ছুটি ঘোষণা করা হয়। করোনার প্রাদুর্ভাব কমে আসায় চলতি বছরের শুরু থেকেই বিভিন্ন মহল থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো খুলে দেয়ার দাবি আসতে থাকে। এ নিয়ে আন্দোলনে নামে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। কিন্তু সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের শ্রেণি-ক্লাস চালুর আগ পর্যন্ত অনলাইনে ক্লাস চলমান থাকলেও কোন ধরনের পরীক্ষা নেয়া যাবে না। শ্রেণি-ক্লাস খোলার পর পরীক্ষা নেয়া হবে। বিশ্ববিদ্যালয় খোলার আগে দীর্ঘদিন বন্ধ থাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস ও আবাসিক হলগুলো পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন কাজ শেষ করতে হবে। ক্যাম্পাস ও হলে স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয় খোলার আগে শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের করোনার টিকাদান নিশ্চিত করা হবে বলেও সরকারের পক্ষ থেকে ঘোষণা দেয়া হয়েছে।

সত্যি বলতে এটা নিঃসন্দেহে বলা যায়, বাংলাদেশ সরকার মহামারি পরিস্থিতির শুরু থেকে সাধারণ শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার ব্যাপারে বেশ দায়িত্বশীল আচরণ ও বিচক্ষণতার পরিচয় দিয়ে অনলাইন ক্লাশ চালু করেছে এবং এখনো চালু রেখেছে। ঠিক তেমনি করোনার মধ্যে শিক্ষার্থীদের মহামারি থেকে রেহাই পেতে এখন পর্যন্ত সরকার ছিল সর্বদা অটল যা বেশ প্রশংসনীয় উদ্যোগ।

যেহেতু, অধিকাংশ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের চুড়ান্ত বর্ষের শিক্ষার্থী ব্যাতিত অন্য বর্ষের শিক্ষার্থীরা নিয়মিত অনলাইন ক্লাস বেশ সফলতার সাথে চালিয়ে যাচ্ছে তাই তাদের সেশন-জট কিংবা মহামারীর কারণে পড়াশোনার সমস্যা কিছুটা হলেও লাঘব হয়েছে। কিন্তু মহামারির কারণে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে অধিকাংশ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের চুড়ান্ত বর্ষের শিক্ষার্থীরা। কারণ তাদের অনেকেরই মহামারি পূর্বে শেষ বর্ষের শেষ টার্মের ক্লাস প্রায় শেষ হয়েছিলো, এমনকি অনেকেই তখন পরীক্ষাও শুরু করেছিলো। অর্থাৎ, দীর্ঘ প্রায় ১ বছরের মধ্যে তাদের কোনো ক্লাসে অংশগ্রহণের সুযোগ ছিলো নাহ কারণ মহামারির পূর্বেই অধিকাংশের শেষ বর্ষের ক্লাস শেষ হয়েছিলো। ফলশ্রুতিতে উক্ত শিক্ষার্থীদের মানসিকভাবেও বেশ চাপে থাকতে হয়েছিলো, কারণ তাদের মধ্যে একটা উৎকন্ঠা কাজ করেছিলো কখন পরীক্ষা সফলভাবে শেষে গ্রাজুয়েশন শেষ করে চাকরীর পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করবে।

অনলাইন নিউজ পোর্টাল

মন্তব্য করুন: