শত শত বাংলাদেশী লিবিয়ার ডিটেনশন ক্যাম্পে বন্দী
প্রকাশিত: ০৯:০৯, ২১ জুন ২০২১
ইতালিতে পাড়ি জমানোর স্বপ্ন দেখা এসব বাংলাদেশী, যুদ্ধবিধ্বস্ত লিবিয়ার ডিটেনশন ক্যাম্পগুলোতে শত শত বাংলাদেশী বন্দী অবস্থায় অনেকটা মানবেতর দিন যাপন করছেন। ইউরোপের দেশ ইতালিতে পাড়ি জমানোর স্বপ্ন দেখা এসব বাংলাদেশী মূলত সাগর পাড়ি দেয়ার সময় দেশটির আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর হাতে ধরা পড়েন। ডিটেনশন ক্যাম্পে থাকতে থাকতে অনেকেই শারীরিক ও মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। দূতাবাসের সহযোগিতায় আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার (আইওএম) মাধ্যমে মাঝে মধ্যে অনেকে মুক্তির পর দেশে ফেরত আসছেন।
অন্য দিকে আদালতের নির্দেশে দেশটিতে বাংলাদেশী শ্রমিক যাওয়া বন্ধ থাকলেও ‘বডি কন্ট্রাক্টের’ মাধ্যমে দালালদের হাত ধরে দুবাই-তিউনেশিয়া আবার কখনো দুবাই-মিসর হয়ে অনেকেই পাড়ি জমাচ্ছে অজানা গন্তব্যে। মাঝে মধ্যে সাগর পাড়ি দেয়ার সময় ট্রলারডুবিতে সলিল-সমাধির ঘটনাও ঘটছে।
সম্প্রতি গাদামেস শহরের নিকটবর্তী একটি ডিটেনশন সেন্টারে আটক বাংলাদেশীদের সর্বশেষ অবস্থা সরেজমিন দেখতে যায় লিবিয়ার ত্রিপোলিতে নিযুক্ত বাংলাদেশ দূতাবাসের কাউন্সেলরের (শ্রম) নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল। এ সময় দূতাবাসের পক্ষ থেকে আটক বাংলাদেশীদের কাউন্সেলিং করা হয়।
গত রোববার দুপুরে বাংলাদেশ দূতাবাসের কাউন্সেলর (শ্রম) আসাদুজ্জামান কবীর এ প্রসঙ্গে বলেন, ৭০০ কিলোমিটার দূরের গাদামেস ডিটেনশন সেন্টারে আমরা গিয়েছিলাম। তাদের সাথে আমরা কথা বলে দেশে ফিরে যাওয়ার অফার দিয়ে এসেছি। তারাও আমাদের প্রস্তাবে দেশে ফিরতে রাজি হয়েছে। ছয় মাস ধরে তারা সেখানে আছে। আইওএমের সহযোগিতায় তাদের দেশে পাঠানোর ব্যবস্থা করব জানিয়ে বলেন, মূলত এসব বাংলাদেশী দুবাই হয়ে বেনগাজি আসে দালালদের মাধ্যমে। এরপর সেখান থেকে ত্রিপোলি হয়ে ১১০ কিলোমিটার দূরের সাগরঘাট দিয়ে ট্রলারে ইতালি পাড়ি দেয়ার আগেই দেশটির আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর হাতে ধরা পড়ে। ডিটেনশন ক্যাম্পে বর্তমানে ৭৮ জনের মতো আছেন। যারা আছেন তাদের খাবারের কোনো অসুবিধা হচ্ছে না। তা ছাড়া একজন বাংলাদেশী নার্স আছেন। কেউ অসুস্থ হলে সাথে সাথে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, যারা অবৈধ পথে নানাভাবে আসছে তাদের বিষয়ে দূতাবাসের তেমন কিছু করার থাকে না। তারপরও মানবপাচার চক্রের নেটওয়ার্ক সম্পর্কিত প্রতিবেদন আমরা ঢাকায় পাঠাচ্ছি। পুরো লিবিয়াতে কতগুলো ডিটেনশন ক্যাম্প রয়েছে এবং সেখানে কী পরিমাণ বাংলাদেশী আটক আছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ দেশে তো ডিটেনশন ক্যাম্পের সংখ্যা অনেক। তবে সেখানে কী পরিমাণ বাংলাদেশী আছে সেটি বলা সম্ভব নয়। কারণ প্রতিনিয়ত লোক বাড়ে ও কমে।
অনলাইন নিউজ পোর্টাল
মন্তব্য করুন: