শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, বৈশাখ ১৩ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

ইসলাম

যে সাহাবীর মৃত্যুতে আল্লাহর আরশ কেঁপে উঠেছিলো

 প্রকাশিত: ০৯:৫৫, ৪ জুলাই ২০২১

যে সাহাবীর মৃত্যুতে আল্লাহর আরশ কেঁপে উঠেছিলো

সা'দ রাঃ হচ্ছেন সেই আর্মি জেনারেল যিনি গোটা আরব,তৎকালীন দুই সুপার পাওয়ার রোম ও পারস্য সহ পুরো পৃথিবীর বিরুদ্ধে যেয়ে ইসলামের পক্ষে মদীনার সামরিক শক্তিকে নিয়ে বায়'আত দিয়েছিলেন। যে বায়'আতের আগে রাসুল সা: প্রায় ৫৪ টার মতো গোত্র প্রধানদের কাছে গিয়ে ব্যর্থ হয়েছিলেন। 

সা'দ ইবনে মুয়ায রা: এর পুরো নাম সা'দ ইবনে মুয়ায ইবনে নুমান। পিতা মুয়ায ও মায়ের নাম কাবশা বিনতে রাফে। পরিচিত ছিলেন আবু আমর এবং সাইয়্যেদুল আওস নামে। 

সা'আদ ইবনে মুয়ায রা: সেইসব আনসারদের একজন যিনি রাসুল সা: এর জন্য মদীনার দরজা খুলে দিয়েছিলেন এবং মৃত্যুর আগ পর্যন্ত রাসুলুল্লাহর প্রতিরক্ষার কাজে নিয়োজিত ছিলেন।

৬২৪ সালে যখন ঐতিহাসিক বদর যুদ্ধ আসন্ন। কুরাইশ বাহিনীর সর্বশেষ গতিবিধি অবগত হয়ে রাসুল সা: মুহাজির ও আনসারদের সাথে পরামর্শে বসলেন। আনসারদের লিডার সা'আদ ইবনে মুয়ায বললেন,'আমরা আপনার প্রতি ঈমান এনেছি,আপনাকে সত্যবাদী বলে জেনেছি আর আমরা সাক্ষ্য দিয়েছি যে,যা কিছু আপনি নিয়ে এসেছেন তা সত্য।ইয়া রাসুলুল্লাহ!আপনার যা ইচ্ছে করুন।সেই সত্তার নামে শপথ যিনি আপনাকে সত্য সহকারে পাঠিয়েছেন।যদি আপনি  আমাদেরকে এখন সাগরে ঝাপিয়ে পরার নির্দেশ দেন,আমরা ঝাপিয়ে পরবো।আমাদের একজনও পিছনে থাকবে না।

খন্দকের যুদ্ধে সা'আদ ইবনে মুয়ায তীরের আঘাতে আহত হন। কিছুদিন পর আঘাতপ্রাপ্ত হাতের ক্ষতস্থান থেকে তীব্র বেগে রক্তক্ষরন হলে ৫ম হিজরীতে মাত্র ৩৭ বছর বয়সে সা'দ রা: শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন।

ইন্তেকালের পর রাসুলুল্লাহ সা: তাকে বহন করেছিলেন। বিশাল দেহের অধিকারী সাদ রাঃ কে বহনের সময় মনে হচ্ছিলো একেবারে হালকা। মুনাফিকরা যখন এব্যাপারে কানাঘুষা শুরু করলো তখন রাসুল সা: তাদের কথা শুনে বললেন-'নিশ্চয়ই তোমাদের ছাড়াও তার বহনকারী রয়েছে।'

তিনি সা: আরোও বললেন,'নিশ্চয়ই এই সা'আদ অতি নেক্কার বান্দা। তার জন্য আল্লাহর 'আরশ' কেপে উঠেছে,আসমানের দরজাসমূহ খুলে গেছে এবং তার জানাযায় এমন ৭০ হাজার ফিরিশতা যোগদান করেছে যারা এর আগে আর কখনোও পৃথিবীতে আসেনি।

সেই বিশাল আরশ কেঁপে উঠেছিলো যার সম্পর্কে রাসুল সা: বলেছেন,'কুরসীর মধ্যে সাত আকাশের অবস্থান যেনো একটি ঢালের মধ্যে নিক্ষিপ্ত সাতটি দিরহাম।আর আরশের মধ্যে কুরসীর অবস্থান ঠিক তেমন,যেমন খোলা ময়দানে পরে থাকা একটি আংটি।'

সাদ রাঃ কে দাফন করার পর রাসুল সঃ সেখানে বসে দু'আ করেন এবং বলেন 'কবরের একটি চাপ অবশ্যই আছে।যদি কেউ এ চাপ থেকে রেহাই পেয়ে থাকে,তাহলে সে সা'আদ ইবনে মুয়ায।

আবু সা'ঈদ আল খুদরী রা: থেকে জানা যায় যারা জান্নাতুল বাকীতে সা'আদের কবর খুড়েছিলো আমি তাদের একজন।আমরা কবরের মাটি খোড়ার সময় মিশকের ঘ্রান পাচ্ছিলাম।'

মহান এই সাহাবীর মৃত্যুর সংবাদ নিয়ে মহানবী সঃ এর কাছে এসেছিলেন স্বয়ং জিবরাইল আঃ। সংবাদ পেয়ে যখন রাসুল সঃ সাদ রাঃ এর মৃত দেহের কাছে যান, তিনি রুমে এমনভাবে প্রবেশ করেন যেন রুমভর্তি মানুষ সরিয়ে প্রবেশ করছেন। এবং তিনি লাশের পাশে পা গুটিয়ে বসে জানান যে রুম ভর্তি ফেরেশতারা আছেন। এই মহান সাহাবীর জীবনজুড়ে রয়েছে আমাদের জন্য জীবনাদর্শ।

অনলাইন নিউজ পোর্টাল

মন্তব্য করুন: