শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, বৈশাখ ১৩ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

আন্তর্জাতিক

যুক্তরাজ্যে অনেক নারী ফেসবুকে খুঁজে নিচ্ছেন শুক্রাণুদাতা

 প্রকাশিত: ১০:১২, ১ মার্চ ২০২১

যুক্তরাজ্যে অনেক নারী ফেসবুকে খুঁজে নিচ্ছেন শুক্রাণুদাতা

ফলে এদের কেউ কেউ গর্ভধারণের জন্য ফেসবুকের বিভিন্ন গ্রুপ থেকে খুঁজে নিচ্ছেন স্পার্ম ডোনার বা শুক্রাণুদাতা।

এক বছর ধরে সন্তান নেওয়ার চেষ্টা করে যাচ্ছিলেন ক্লো আর তার সঙ্গী। কিন্তু কিছুতেই তার গর্ভসঞ্চার হচ্ছিল না।

পারিবারিক ডাক্তার তাদের বললেন, জাতীয় স্বাস্থ্যসেবা বা এনএইচএসের স্থানীয় ফার্টিলিটি ক্লিনিকে যেতে।

সেখানে গিয়ে নানা পরীক্ষার পর দেখা গেল, ক্লোর সঙ্গীর শুক্রাণুর কিছু সমস্যা রয়েছে এবং গর্ভধারণ করতে হলে তাকে কোনো একজন দাতার শুক্রাণু নিতে হবে।

ক্লিনিক থেকে তাদের শুক্রাণুদাতার একটি তালিকা দেওয়া হলো। সেই তালিকা থেকে মাত্র একজন উপযুক্ত দাতার সন্ধান পেলেন তারা; যে ক্লোর মতো একই জাতিগোষ্ঠীর এবং যাকে অন্য কোনো দম্পতি এখনও বেছে নেননি।

তার শুক্রাণু ব্যবহার করে ২০১৭ সালের অক্টোবরে ক্লোর প্রথম আইভিএফ বা কৃত্রিম গর্ভসঞ্চারের চেষ্টা করা হলো। কিন্তু তাতে কোনো কাজ হলো না।

তখন ক্লিনিক থেকে ক্লোকে বলা হলো– তারা আইসিএসআই নামে আরেকটি পদ্ধতি চেষ্টা করে দেখতে পারেন; যাতে সরাসরি ডিম্বাণুর ভেতরে শুক্রাণু প্রবেশ করিয়ে দেওয়া হয়।

কিন্তু এ পদ্ধতিটি আরও ব্যয়বহুল এবং এর খরচ তাদেরই বহন করতে হবে। কিন্তু ক্লো জানালেন, তাদের পক্ষে তখন হাজার হাজার পাউন্ড খরচ করা সম্ভব ছিল না।

ততদিনে ক্লো আর তার সঙ্গী বিয়ে করেছেন। তার স্বামীই একদিন বললেন, অনলাইনে একজন শুক্রাণুদাতার খোঁজ করলে কেমন হয়? ক্লো তাই করলেন।

তবে তার বন্ধুরা ও পরিবার যাতে ব্যাপারটি জানতে না পারে, সে জন্য তিনি একটা ভুয়া নাম নিয়ে ফেসবুকে কিছু গ্রুপে যোগদান করলেন এবং কয়েক দিনের মধ্যে একজন সম্ভাব্য শুক্রাণুদাতা পেয়েও গেলেন।

সেই শুক্রাণুদাতা লোকটি তার মেডিক্যাল ও পারিবারিক ইতিহাস জানালেন। তার কোনো যৌন রোগের সংক্রমণ হয়েছিল কিনা, তা চেক করার দলিলপত্রও দিলেন।

এসব কিছুর পর ক্লো যেখানে থাকতেন, তার কয়েক মাইল দূরে একটি কারপার্কে লোকটির সঙ্গে দেখা করার পরিকল্পনা করা হলো।

পরিকল্পনা ছিল, সেই দাতা তার নিজের বীর্য নিয়ে আসবেন, তাদের দেখা হবে। তিনি ক্লোর হাতে জিনিসটা তুলে দেবেন। তার পর ক্লো একটা টয়লেটে ঢুকবেন এবং যা করতে হবে তা করবেন। তাই করা হলো।

ক্লোর নিরাপত্তার কথা ভেবে তার স্বামীও সঙ্গে এসেছিলেন এবং গাড়িতে বসে অপেক্ষা করছিলেন। তারা মোট ছয় বার এটি করেছিলেন।

ক্লো এতে একবার গর্ভবতী হয়েছিলেন ঠিকই, কিন্তু তার মিসক্যারেজ বা গর্ভপাত হয়ে যায়। ক্লোর দাতা একটি ক্লিনিকে শুক্রাণু দান করেন, যা থেকে ১০টি সন্তানের জন্ম হয়।

প্রতিবার তারা সেই দাতা লোকটিকে তার শুক্রাণুর জন্য ৫০ পাউন্ড এবং যাতায়াতের জন্য ১০ পাউন্ড দিয়েছিলেন।

এ ধরনের কর্মকাণ্ডের ক্ষেত্রে ব্রিটেনের আইনকানুনে কিছু অস্পষ্টতা আছে। এর মধ্যে শুরু হলো করোনাভাইরাস মহামারি।

লকডাউনের কারণে কোথাও যাতায়াত করার ওপর বিধিনিষেধ থাকায় ক্লো এবং তার স্বামী ভিন্ন উপায় বের করলেন।

তারা ফেসবুক থেকেই অন্য একজন শুক্রাণুদাতা খুঁজে বের করলেন। এই লোকটি এলেন ক্লোর বাড়িতে। এতে ব্যাপারটা তার জন্য অনেক বেশি স্বস্তিদায়ক হয়েছিল- বলছিলেন ক্লো।

অনলাইন নিউজ পোর্টাল

মন্তব্য করুন: