শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, বৈশাখ ১৩ ১৪৩১, ১৮ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

সারি সারি মৃত রেইনট্রি গাছ - সাতক্ষীরা

 প্রকাশিত: ১৮:৫৬, ২৭ জানুয়ারি ২০২৩

সারি সারি মৃত রেইনট্রি গাছ - সাতক্ষীরা

সাতক্ষীরার বিভিন্ন সড়ক-মহাসড়কের পাশে লাগানো পাঁচ হাজারের বেশি রেইনট্রি গাছ মরে গেছে। আশাশুনি-সাতক্ষীরা, বৈকারী-সাতক্ষীরা, ভোমরা-সাতক্ষীরা, ফিংড়ি-সাতক্ষীরা, মুন্সিগঞ্জ-সাতক্ষীরা ও যশোর-সাতক্ষীরা সড়কে এ চিত্র দেখা গেছে। তবে সবচেয়ে বেশি পরিমাণ মারা গেছে আশাশুনি-সাতক্ষীরা সড়কে। অধিকাংশ মরা গাছে ছাল দেখা যাচ্ছে না। 
বহু বছরের মুল্যবান এসব গাছ এখন সড়কে ঝুঁকির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে জনসাধারনের জন্য। মাঝেমধ্যে শুকনো ডাল ভেঙে যানবাহন ও পথচারীদের গায়ে পড়তেও দেখা যায়। জেলা পরিষদের কর্মকর্তারা জানান, কয়েক কোটি টাকা মূল্যের এসব মরা গাছ সড়ক থেকে অপসারণ করার ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।

উদ্ভিদ বিষেশজ্ঞ ও পরিবেশবিদের মতে, জলবায়ু পরিবর্তন জনিতকারণে লবণাক্তরা বেড়ে যাওয়া, খাদ্য সংকট ও মাটির ক্ষার বাড়ায় এসব গাছ মারা যেতে পারে।

আশাশুনি-সাতক্ষীরা সড়কের পুরনো সাতক্ষীরা এলাকার বাসিন্দা আছের আলী ও আজিজুর রহমান জাননা, গত দুই থেকে আড়াই বছরের ব্যবধানে আশাশুনি সড়কের অন্তত এক হাজারের বেশি বড় বড় রেইনট্রি গাছ মরে গেছে। তবে কী কারণে এসব গাছ মারা গেছে তা বলতে পারেননি। তারা আরো জানান, এসব সমস্ত মরা গাছের পচনশীল অংশ ও পোকা সংগ্রহ করে নিয়ে যাচ্ছে কিছু সংখ্যক লোক। শোনা যাচ্ছে এসব গাছের পচা অংশ ও পোকা ভারতে পাচার করা হচ্ছে।

বৈকারী সাতক্ষীরা সড়কের ভাদড়া এলাকার স্থানীয় ইউপি সদস্য গোলাম হোসেন জানান, শুনেছি ভারতে প্রতি কেজি রেইনট্রি গাছের ছাল ও পোকার মুল্য ৮০০ থেকে ৯০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
সাতক্ষীরা জেলা পরিষদের প্রশাসনিক কর্মকর্তা খলিলুর রহমান জানিয়েছেন, সাতক্ষীরা জেলা পরিষদের অধীনে কমপক্ষে ৫ হাজারের অধিক রেইট্রি গাছ মারা গেছে। এসব গাছের মূল্য আনুমানিক তিন থেকে সাড়ে তিন কোটি টাকা।  দ্রুত এ সমস্ত গাছ অপসারণ করা হবে।

সাতক্ষীরা সড়ক ও জনপদ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আজহারুল ইসলাম বণিক বার্তাকে জানিয়েছেন, মরা গাছগুলোর অধিকাংশ গাছ সাতক্ষীরা জেলা পরিষদের। খুব কমসংখ্যক গাছ মারা গেছে সড়ক ও জনপথ বিভাগের।। তারপরও দ্রুত মুন্সিগঞ্জ সড়ক ও যশোর সাতক্ষীরা সড়কের মৃত বা ঝুঁকিপূর্ণ গাছগুলো সরিয়ে ফেলার উদ্যোগ নেয়া হবে। 

সাতক্ষীরার সামাজিক বনবিভাগের সহকারী বন রক্ষক নুরুন্নাহার বলেন, মরে যাওয়া গাছগুলোর বয়স কমপক্ষে ২০ থেকে ২৫ বছর হবে। গাছগুলো মরে যাওয়ার বিষয়ে বনবিভাগের গবেষণা কেন্দ্রে জানানো হয়েছে।

সাতক্ষীরা সরকারী কলেজের উদ্ভিদবিদ্যা বিভাগীয় প্রধান ড. নাসরিন আক্তার জানিয়েছেন, রেইনট্রি গাছ মরে যাওয়ার অনেকগুলো কারণের মধ্যে অন্যতম কারণ হচ্ছেমাটির লবণাক্তা ও ক্ষার বেড়ে যাওয়া। তাছাড়া প্রত্যেক গাছের আলাদা আলাদা স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট থাকে। রেইনট্রি গাছ মৌসুমী বৃষ্টিপাত না হলে তার মাটির খাদ্য সংকটে পড়ে। ফলে বিভিন্ন ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা যেতে পারে।

বাংলাদেশ পরিবেশ অধিদপ্তর সাতক্ষীরা সহকারী পরিচালক সরদার শরিফুল জানিয়েছেন, জলবায়ু পরিবর্তন জনিতকারণে রেইনট্রি গাছ মারা যেতে পারে। লবণাক্ততা বেড়ে মাটির উর্বররা শক্তি হারিয়ে নানা ধরনের রোগে আক্রান্ত হয়ে গাছ মরে যেতে পারে। 

অনলাইন নিউজ পোর্টাল ২৪

মন্তব্য করুন: