৮ আমলে আখেরাতে আলোকিত জীবন
প্রকাশিত: ১১:০২, ৫ ফেব্রুয়ারি ২০২১
আখিরাতে তারাই সফল, যাদের অন্তর পরিশুদ্ধ। পরিশুদ্ধ হৃদয়ের ভাগ্যবান ব্যক্তিরাই পরকালে আলোকিত জীবনের অধিকারী। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা আলোকিত তথা পরিশুদ্ধ অন্তরের সফলতার ঘোষণা দিয়ে বলেন, ‘কিয়ামত দিবসে ধন-সম্পদ ও সন্তান সন্ততি কোনো উপকারে আসবে না; কিন্তু যে আলোকিত ও পরিশুদ্ধ অন্তর নিয়ে আল্লাহর কাছে আসবে।’ (সুরা : শুআরা, আয়াত : ৮৮-৮৯)।
প্রিয় নবী মুহাম্মদ (সা.)-ও আলোকিত জীবনের জন্য সর্বদা আল্লাহর দরবারে প্রার্থনা করতেন। সহিহ বুখারির এক বর্ণনায় এসেছে, তিনি নামাজ আদায় করে এই দোয়া পড়তেন, ‘হে আল্লাহ, আপনি আমার অন্তরে, আমার চোখে, আমার কানে, আমার ডানে-বামে, আমার ওপর-নিচে, আমার সামনে-পেছনে, আমার জন্য নুর তথা আলো দান করুন।’ (বুখারি, হাদিস : ৬৩১৬)
এক. আমলের সঙ্গে দীর্ঘ বয়স : উত্তম আমলের সঙ্গে দীর্ঘ বয়স পরম সৌভাগ্যের বিষয়। এটা যেমনিভাবে পরকালে ব্যক্তির সম্মান, মর্যাদাকে উঁচু করে, তেমনি দুনিয়ায়ও সবার শ্রদ্ধা ও মর্যাদার আসনে সমাসীন করে। এক হাদিসে রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘আল্লাহ তাআলার পথে যে লোক তার চুল সাদা করেছে, অর্থাৎ বুড়ো হয়েছে, তার জন্য কিয়ামতের দিন একটি আলোকবর্তিকা থাকবে।’ (তিরমিজি, হাদিস : ১৬৩৫)
দুই. আল্লাহর জন্য ভালোবাসা : শুধু আল্লাহর জন্য একে অপরকে ভালোবাসা এটা মুমিনের প্রশংসনীয় ও ঈর্ষান্বিত একটি গুণ। খলিফা উমর ইবনুল খাত্তাব (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী (সা.) বলেছেন, নিশ্চয়ই আল্লাহর বান্দাদের মধ্যে এমন কিছু লোক আছে, যাঁরা নবী নন এবং শহিদও নন। কিয়ামতের দিন মহান আল্লাহর দরবারে তাঁদের মর্যাদার কারণে নাবীগণ ও শহিদগণ তাঁদের প্রতি ঈর্ষান্বিত হবেন। সাহাবিগণ বলেন, হে আল্লাহর রাসুল, আমাদের অবহিত করুন, তারা কারা? তিনি বলেন, তারা ওই সব লোক যারা আল্লাহর মহানুভবতায় পরস্পরকে ভালোবাসে, অথচ তারা পরস্পর আত্মীয়ও নয় এবং পরস্পরকে সম্পদও দেয়নি। আল্লাহর শপথ! তাদের মুখমণ্ডল যেন নূর এবং তারা নূরের আসনে উপবেশন করবে। তারা ভীত হবে না, যখন মানুষ ভীত থাকবে। তারা দুশ্চিন্তায় পড়বে না, যখন মানুষ দুশ্চিন্তায় থাকবে। তিনি এই আয়াত তিলাওয়াত করলেন, যার অর্থ ‘জেনে রাখো! আল্লাহর বন্ধুদের কোনো ভয় নেই এবং তারা দুশ্চিন্তাগ্রস্ত হবে না।’ (আবু দাউদ, হাদিস : ৩৫২৭)
তিন. অন্ধকারে মসজিদে গমন : দুনিয়াতে মহান আল্লাহর সবচেয়ে প্রিয় জায়গা মসজিদ। মুমিনের জন্য এটি আত্মিক প্রশান্তি লাভ, আল্লাহর নৈকট্য অর্জন ও অন্তর আলোকিত করার সর্বোত্তম জায়গা। সাহাবি বুরায়দাহ (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী (সা.) বলেছেন, যারা অন্ধকার রাতে মসজিদে যাতায়াত করে তাদের কিয়ামতের দিন পূর্ণ জ্যোতির সুসংবাদ দাও। (আবু দাউদ, হাদিস : ৫৬১)
চার. পবিত্র কোরআন শেখা-শেখানো : আখিরাতে আল্লাহর প্রিয় ও আলোকিত ব্যক্তি হওয়ার অন্যতম একটি উপায়, কোরআন মাজিদ শেখা-শেখানো। নবী (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি কোরআন শরিফ শিখবে এবং শেখাবে এবং সে অনুযায়ী আমল করবে, আল্লাহ তাআলা তাকে কিয়ামতের দিন একটি নূরের টুপি পরিধান করাবেন, যার আলো সূর্যের আলোর ন্যায় হবে। (মুস্তাদরাকে হাকেম, হাদিস : ২১২৮)
অনলাইন নিউজ পোর্টাল
মন্তব্য করুন: