শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, বৈশাখ ৭ ১৪৩১, ১১ শাওয়াল ১৪৪৫

ইসলাম

হিজাব নিয়ে বিজ্ঞপ্তি: জনস্বাস্থ্যের পরিচালককে কেন টার্গেট?

 প্রকাশিত: ১৯:৫৫, ২৯ অক্টোবর ২০২০

হিজাব নিয়ে বিজ্ঞপ্তি: জনস্বাস্থ্যের পরিচালককে কেন টার্গেট?

জনস্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের পরিচালক তার অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পোশাক বিষয়ে শালীনতা অবলম্বনের নির্দেশনা জারি করেছেন। ওই নির্দেশনায় দেখা গেছে, তিনি তার অফিসে কর্মরত মুসলিম নারীদের হিজাব পরা এবং মুসলিম পুরুষদের টাখনুর উপর কাপড় পরতে বিশেষভাবে আদেশ করেছেন। কিন্তু এজাতীয় আদেশের খবরে গণমাধ্যম ও ‘অতি চেতনাশীলদের’ একটি অংশকে উত্তেজিত হয়ে উঠতে দেখা যাচ্ছে।

তারা নানা রকম প্রশ্ন ও বাক্যবাণে জনস্বাস্থ্যের পরিচালক সাহেবকে বিদ্ধ করতে উঠে পড়ে লেগেছে।

জানা গেছে, ২৮ অক্টোবর বুধবার জনস্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের পরিচালক ডা. মুহাম্মদ আব্দুর রহীম তার অফিসে শালীন পোশাক ও ভদ্রোচিত জীবন-বিচরণ বজায় রাখার স্বার্থে একটি বিশেষ নির্দেশনায় বলেছেন, ‘অত্র ইনস্টিটিউটের সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অবগতির জন্য জানানো যাচ্ছে যে, অফিস চলাকালীন সময়ে মোবাইল সাইলেন্ট/বন্ধ রাখা এবং মুসলিম ধর্মাবলম্বীদের জন্য পুরুষ টাকনুর ওপরে এবং মহিলা টাকনুর নিচে কাপড় পরিধান করা আবশ্যক এবং পর্দা মানিয়া চলার জন্য নির্দেশ প্রদান করা হলো।’

আরো আশ্চর্যজনক খবর হলো, জনস্বাস্থ্য ইন্সটিটিউটের পরিচালকের এই নির্দেশনা নিয়ে নেতিবাচক খবর প্রকাশের কয়েক ঘন্টার মধ্যেই স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে কারণ দর্শানোর নোটিশ জারি করা হয়েছে। পুরো করোনাকালে ব্যাপক ধীরগতি ও ব্যর্থতার বোঝা মাথায় নিয়েও এই শোকজ নোটিশ জারিতে অবিশ্বাস্য ক্ষিপ্রতার স্বাক্ষর রেখেছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। খবর প্রকাশের ২/৩ ঘন্টার মধ্যে এবং আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা- ৬টার দিকে নোটিশ জারি করার ‘কৃতিত্ব’ দেখিয়েছে মন্ত্রণালয়। এ নিয়ে প্রগতিশীল মহলে মন্ত্রণালয়ের প্রতি বাহবাদানও শুরু হয়েছে।

অফিসের শৃংখলা ও শালীনতা বজায় রাখতে জনস্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের পরিচালকের দেওয়া এ নির্দেশনার কপি-ছবি ও খবর হাতে পেয়ে কোনো কোনো ‘অতি প্রগতিশীল’ গণমাধ্যমের রাগে ফেটে পড়ার দশা। ধর্ষণের খবর পেলেও তারা এত উত্তেজিত হতেন কিনা সন্দেহ! গত কয়েকদিন আগে একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা এমপির অপকর্মের বহুল ধিকৃত ভিডিও ক্লিপ সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে এবং দেশব্যাপী এ ঘটনায় রিরি পড়ে গেলেও এ নিয়ে তারা কোনো টু-শব্দ করেননি। অথচ এখন তারা শালীন পোশাকের নির্দেশনা দেওয়ায় জনস্বাস্থ্যের পরিচালককে টার্গেট করছেন। প্রশ্নে প্রশ্নে তাকে ঝালাপালা করে ফেলার মতো অবস্থা চলছে।

এই লেখা তৈরির সময় (সন্ধ্যা ৭টা/ ২৯ অক্টোবর) পর্যন্ত দেখা যাচ্ছে, ঢাকার একটি প্রভাবশালী পোর্টাল ও অত্যন্ত প্রভাবশালী বাংলা দৈনিকের অনলাইন সংস্করণে জনস্বাস্থ্যের পরিচালকের বিরুদ্ধে নেতিবাচক রিপোর্ট প্রকাশ হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, এই পরিচালক কেন তার সরকারি প্রতিষ্ঠানে ইসলামী নির্দেশনার আলোকে শালীন পোশাক পরার নির্দেশ দিলেন- এ নিয়ে কয়েক ঘন্টার মধ্যেই দেশি-বিদেশি আরো বিভিন্ন গণমাধ্যমের সাইট ‘গরম’ হয়ে উঠবে। ‘একাত্তর-বাহাত্তরের’ মতো বহু টেলিভিশন টকশোর রাতে ‘টেবিল থেকে মাছি তাড়াতে’ ব্যস্ত হয়ে যাবে। অথচ শালীন পোশাকের নির্দেশনার বিপরীতে এই পরিচালক সাহেবই যদি অশালীন পোশাক পরার কোনো নির্দেশনা (অফিস কোড/ড্রেস কোড) জারি করতেন তাহলে এই ‘দুর্গন্ধ শুঁকা’ গণমাধ্যমগুলো তালি বাজিয়ে ‍উল্লাস করতো।

আরো জানুন>>>জনস্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের মুসলিম কর্মকর্তাদের পোশাক নির্ধারণ

অনলাইন নিউজ পোর্টাল

মন্তব্য করুন: