শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, বৈশাখ ৭ ১৪৩১, ১১ শাওয়াল ১৪৪৫

আন্তর্জাতিক

কাশ্মীরে যেকোনো ভারতীয়কে জমি কেনার অনুমতি কেন্দ্রীয় সরকার

 প্রকাশিত: ১৭:২৩, ২৮ অক্টোবর ২০২০

কাশ্মীরে যেকোনো ভারতীয়কে জমি কেনার অনুমতি কেন্দ্রীয় সরকার

ভারত শাসিত জম্মু-কাশ্মীরে এখন থেকে যেকোনো ভারতীয় জমি কিনতে পারবে বলে ঘোষণা দিল দেশটির কেন্দ্রীয় সরকার।

জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ স্বায়ত্তশাসন সংক্রান্ত ৩৭০ ধারা বিলোপ এবং রাজ্যের মর্যাদা কেড়ে নেওয়ার প্রায় এক বছর পার হতেই এ ঘোষণা দিল দেশটির সরকার।

এর আগ পর্যন্ত জম্মু-কাশ্মীরের স্থায়ী বাসিন্দা হলেই কেবল সে রাজ্যে জমি কেনা যেত। কিন্তু এখন থেকে আর সেই বাধ্যবাধকতা থাকছে না।

কেন্দ্রীয় সকারের এক বিবৃতিতে জানানো হয়, ইউনিয়ন টেরিটরি অব জম্মু অ্যান্ড কাশ্মীর রিঅর্গানাইজেশন (অ্যাডপশন অব সেন্ট্রাল ল’) থার্ড অর্ডার-২০২০ অনুযায়ী সেখানে জমি কিনতে পারবেন যেকোনো ভারতীয়।

 

এই সময় জানায়, ৩৭০ ধারা তুলে নেওয়ার পর থেকেই জম্মু-কাশ্মীরে জমি কেনা নিয়ে উৎসাহ তুঙ্গে উঠেছিল। এবার আইনের করেই সেই প্রক্রিয়াকে সম্পূর্ণ করে দিল কেন্দ্রীয় সরকার।

ভারত নিয়ন্ত্রিত জম্মু-কাশ্মীর সংবিধান থেকে বিশেষ মর্যাদা হারিয়েছে মাত্র এক বছর আগে। ২০১৯ সালের ৫ আগস্ট সংবিধানের ৩৭০ ধারা অনুযায়ী জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বাতিল ঘোষণা করে বিজেপিশাসিত কেন্দ্রীয় সরকার। সঙ্গে বাতিল করা হয় ৩৫(এ) সহ আনুষঙ্গিক সাংবিধানিক বিধান। ফলে পৃথক রাজ্যের মর্যাদা হারিয়ে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে পরিণত হয় কাশ্মীর।

৩৭০ অনুচ্ছেদের কারণে জম্মু ও কাশ্মীর অন্য যেকোনো ভারতীয় রাজ্যের চেয়ে বেশি স্বায়ত্তশাসন ভোগ করে আসছিল। এই ধারাটি খুবই তাৎপর্যপূর্ণ, কারণ এর ভিত্তিতেই কাশ্মীর রাজ্য ভারতের অন্তর্ভুক্ত হয়েছিল।

অনুচ্ছেদ ৩৭০ ভারতীয় রাজ্য জম্মু ও কাশ্মীরকে নিজেদের সংবিধান ও একটি আলাদা পতাকার স্বাধীনতা দেয়। এছাড়া পররাষ্ট্র সম্পর্কিত বিষয়াদি, প্রতিরক্ষা এবং যোগাযোগ বাদে অন্যান্য সকল ক্ষেত্রে স্বাধীনতার নিশ্চয়তাও দেয়।

প্রতিরক্ষা, বিদেশ, অর্থ এবং যোগাযোগ ছাড়া অন্য কোনো বিষয়ে জম্মু-কাশ্মীরে হস্তক্ষেপের অধিকার ছিল না কেন্দ্রীয় সরকারের। এমনকি কোনো আইন প্রণয়ন করতে হলেও জম্মু-কাশ্মীর রাজ্যের মতামত নিতে হতো।

কেবল স্থায়ী বাসিন্দারাই ওই রাজ্যে সম্পত্তির মালিকানা, সরকারি চাকরি বা স্থানীয় নির্বাচনে ভোট দেওয়ার অধিকার পেতেন। যা এখন বাতিল হয়ে যাবে।

৩৭০ ধারা অনুযায়ী কাশ্মীরের স্থায়ী বাসিন্দা কারা তা নির্ধারণ করার অধিকার ছিল রাজ্যটির বিধানসভার ওপরেই।

রাজ্যের বাসিন্দা কোনো নারী রাজ্যের বাইরের কাউকে বিয়ে করলে সম্পত্তির অধিকার থেকে বঞ্চিত হতেন। তার উত্তরাধিকারীদেরও সম্পত্তির ওপরে অধিকার থাকত না।

মূলত সেখানকার জনসংখ্যার আনুপাতিক স্থিতি বজায় রাখতে বহিরাগত বসতিস্থাপন বন্ধে এসব সুরক্ষা দেওয়া হয়েছিল।

বিজেপি সরকারের এই সিদ্ধান্তের পর এইসব অধিকার হারাবে কাশ্মীরের জনগণ। মূলত হিন্দু জনগণকে অঞ্চলটিতে বসবাসের সুযোগ করে দিতে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে কাশ্মীর পরিস্থিতি পর্যবেক্ষকদের অভিমত।

অনলাইন নিউজ পোর্টাল

মন্তব্য করুন: