শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, বৈশাখ ৬ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

ব্রিজ নির্মাণে ব্যাপক অনিয়ম, কাজ বন্ধ

 প্রকাশিত: ১৩:১১, ২ মার্চ ২০২১

ব্রিজ নির্মাণে ব্যাপক অনিয়ম, কাজ বন্ধ

কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার জিসি গোপগ্রাম এলাকায় একটি ব্রিজ নির্মাণে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয়দের অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত করে অনিয়মের সত্যতা প্রমাণিত হওয়ায় উপজেলা প্রকৌশলী অফিস ব্রিজ নির্মাণের কাজ বন্ধ করে দিয়েছে।

উপজেলা প্রকৌশলী দাবি করেন, অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে তদন্ত করে ব্যাপক অনিয়মের সত্যতা মেলায় এই নির্মাণাধীন ব্রিজের কাজ বন্ধ করে দিয়েছেন তিনি। সোমবার বিকেলে ব্রিজের কাজ বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। 

জানা যায়, ব্রিজটির নির্মাণ কাজ করছিল নড়াইল জেলার লোহাগাড়া থানার লক্ষ্মীপাশার মেসার্স নূর কনস্ট্রাকশন। প্রতিষ্ঠানটি ২০২০ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি দুই কোটি ৪৯ লাখ ৯২ হাজার টাকা ব্যয়ে ব্রিজটি নির্মাণের চুক্তি করে। ব্রিজ নির্মাণ নির্ধারিত সময় থাকলেও সময়মতো কাজ করেনি তারা। নির্ধারিত সময়ের কয়েক মাস পেরিয়ে গেলেও প্রকল্পের কাজ শুরু করেছিল না নূর কনস্ট্রাকশন নামের ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান। ব্রিজ নির্মাণ কাজ শুরু করার নির্ধারিত তারিখ ছিল ২০২০ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি। নির্ধারিত সময়ের প্রায় পাঁচ মাস পরে ব্রিজ নির্মাণকাজের উদ্বোধন হয়। ১৭ জুলাই বৃষ্টি কাজের উদ্বোধন করেন কুষ্টিয়া -৪ আসনের এমপি সেলিম আলতাফ জর্জ। এ দুর্নীতির সঙ্গে উপজেলা প্রকৌশলী অফিসের কিছু অসৎ কর্মকর্তা জড়িত বলে এলাকাবাসীর অভিযোগ।

স্থানীয়রা অভিযোগ করে বলেন, এমপি উদ্বোধন করে যাওয়ার পর নির্মাণসামগ্রী ফেলা রাখা হয়েছিল। কাজ শুরু করতে অনেক দেরি করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি। পরে নির্ধারিত সময়ে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজ শুরু করেনি। এক বছর মেয়াদি কাজের মেয়াদ শেষ হলেও দেখা মেলেনি ব্রিজের। মাসখানেক আগে ব্রিজের মাটির নিচে কয়েকটি পিলারের কাজ শুরু করে তারা। প্রকল্পটির কাজের মেয়াদ শেষ হয়েছে গত শনিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি)। 

এদিকে এলাকাবাসী অভিযোগ করেন, উন্নয়নমূলক কাজের সঠিক মান সঠিকভাবে নিশ্চতকরণে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ।

স্থানীয় একজন জনপ্রতিনিধি নাম প্রকাশ না করার শর্তে অভিযোগ করেন, প্রকল্পের কাজ শুরুর আগে থেকেই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি ফাঁকিবাজি শুরু করে। নির্মাণের শুরুর দিন থেকেই তারা পাথরের সঙ্গে বালু মেশানো, পরিমাণে পাথর কম দেয়া, মোটা বালুর পরিবর্তে ফিলিং বালু মেশানো, দিনের পরিবর্তে রাতে ঢালাই, নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারসহ নানা অনিয়ম চালিয়ে যায়। 

তিনি আরো বলেন, এ অনিয়মের কারণে এলাকাবাসী ক্ষুব্ধ হয়ে উপজেলা প্রকৌশলী বরাবর অভিযোগ দেয়। অনিয়ম দুর্নীতি প্রমাণিত হওয়ায় কাজ বন্ধ করে দেন উপজেলা প্রকৌশলী। তারা ঘটনাস্থলে এসে তদন্ত করে এ অনিয়মের সত্যতা পেয়েছে।

গোপগ্রাম এলাকার মিজানুর রহমান বলেন, প্রতিষ্ঠানটি সব কাজের নয় ছয় করেছে। ব্রিজের পিলার নির্মাণে ব্যবহার করা হচ্ছে বালু মিশানো পাথর। মোটা বালুর সঙ্গে চিকন বালু ও দিনের পরিবর্তে রাতে চলছে ঢালাইয়ের কাজ। ব্রিজটি নির্মাণের শুরু থেকেই নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহার করে আসছিল তারা। 

অনলাইন নিউজ পোর্টাল

মন্তব্য করুন: