শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, চৈত্র ১৪ ১৪৩০, ১৯ রমজান ১৪৪৫

সাহিত্য

বিশ্বস্ততা - ফাতেমা বিনতু সালাহুদ্দীন

শিশু-কিশোর সিরিজ: ১

 প্রকাশিত: ২৩:৫০, ২৫ জুলাই ২০২০

বিশ্বস্ততা - ফাতেমা বিনতু সালাহুদ্দীন

হামেদ চাচা একজন জেলে। জাল দিয়ে সাগরে মাছ ধরেন। প্রতিদিনের মতো আজও তিনি নৌকা নিয়ে বের হয়েছেন এবং পানিতে জাল ফেলেছেন। বেলা গড়িয়ে যাচ্ছে। কিন্তু তার জালে কোনও মাছ ধরা পড়ছে না। চাচা খুব চিন্তিত;  আজ তার পরিবারকে কী খেতে দেবেন।

মাহমুদ এতিম ছেলে। সেও এসেছে সাগরপারে। বড়শি দিয়ে মা ও ভাইদের জন্য মাছ  ধরবে। পানিতে বড়শি ফেলেছে মাহমুদ। অপেক্ষা করছে মাছের জন্য। একটু পর নড়ে উঠলো তার ছিপ। একটা বড় মাছ ধরা পড়েছে তার বড়শিতে। সে বড়শি টানতে লাগলো। কিন্তু, কী আশ্চর্য, মাছটা যে উঠছে না! 

মাহমুদ দেখলো, মাছটা হামেদ চাচার জালে আটকে আছে। মাছটা তার খুব দরকার। কিন্তু সে জানতো, মাছটা তার অধিকারে নয়! কেননা সেটা প্রথমে জালে ধরা পড়েছে। হামেদ চাচা বিষণ্ণ মনে সাগর থেকে ফিরছেন। তার জালে একটা মাছও ধরা পড়েনি‌। ভাবছেন, আজ কী খাবে তার পরিবার!?

মাহমুদ ছুটে গেলো হামেদ চাচার কাছে। তার হাতে মাছটা তুলে দিলো। বলল, এটি আপনার আমানত, দয়া করে নিয়ে যান! চাচা বললেন, এটা আমার নয়, তুমি নিতে পারো। কেননা, আজ আমি কোনও মাছ পাইনি। পানি থেকে তোলার সময় আমার জাল খালিই ছিলো। মাহমুদ মাছটা নেয়নি। তার বিশ্বস্ততা দেখে চাচা খুব অবাক হলেন। খুশি হয়ে মাছটা দুজনের মাঝে ভাগ করে নিলেন। হামেদ চাচা মাহমুদকে বললেন, তুমি চাইলে আমার সঙ্গী হতে পারো; কাল থেকে আমরা একসাথে সাগরে মাছ ধরবো। 

মাহমুদ খুশি মনে বাড়ি ফিরছে। মা ও ভাইদের খাবার পেয়ে গেছে সে। চাচার দেয়া বড় মাছের অর্ধেকটা আজ তাদের খাবার হবে...!আবার, সাগরে যাবার সুযোগ তার আনন্দ আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। সেখানে আল্লাহর কুদরতের অনেক নিদর্শন আছে। সেসব হয়ত সে দেখতে পাবে...

মাহমুদ পরের দিন থেকে সাগরে যায়, হামেদ চাচার সাথে মাছ ধরতে। বড় বড় ঢেউ তার মনকে ভালো করে দেয়। নির্মল বাতাস তার প্রাণ জুড়িয়ে দেয়! হামেদ চাচার উদারতায় মাহমুদ আনন্দিত। চাচাও তার আচরণে মুগ্ধ! হামেদ চাচা ও এতিম বালক মাহমুদের শিকারকে আল্লাহ বরকতময় করেছেন। এখন তাদের জালে ধরা পড়ে প্রচুর মাছ। হামেদ চাচা তার পরিবারকে মাছ খেতে দেন। মাহমুদও মাছ নিয়ে আসে তার মা ও ভাইদের জন্য। এখন তারা সবাই খুব সুখী।


শিক্ষা:
দেখেছো ছোট্ট বন্ধুরা, মাহমুদের একটি ভালো গুণ আছে। বলোতো সে গুণটি কী? সেটি হলো আমানতদারিতা!  বাংলায় বলে- বিশ্বস্ততা। ভালো গুণ আল্লাহর অনেক পছন্দ। যাদের ভালো গুণ থাকে, আল্লাহ তাঁদেরও পছন্দ করেন। আল্লাহ যাদের পছন্দ করেন, তাদেরকে অনেক অনেক বরকত দেন। মাহমুদের জীবনেও তিঁনি বরকত দান করেছেন। ভালো গুণের কারণে সে এখন খুব সুখী! তোমরাও ’বিশ্বস্ততা’ গুণটি অর্জন করো, নিজেকে বিশ্বস্ত হিসেবে গড়ে তোলো। তোমাদের জীবনও রঙিন হবে। আনন্দে ভরে যাবে তোমাদের প্রতিটি প্রহর।

অনলাইন নিউজ পোর্টাল

মন্তব্য করুন: