শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, বৈশাখ ৭ ১৪৩১, ১১ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

মজুরি ৫০ টাকা, ইটভাটায় কাজ করছে দেড় হাজার শিশু

 প্রকাশিত: ১৫:৩০, ২৯ জানুয়ারি ২০২১

মজুরি ৫০ টাকা, ইটভাটায় কাজ করছে দেড় হাজার শিশু

স্কুলের গণ্ডি না পেরোতেই পড়াশোনা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় দিন দিন শিশু শ্রমিকের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। দৈনিক মাত্র ৫০ টাকা মজুরিতে ইটভাটায় কাজ করছে প্রায় দেড় হাজার শিশু শ্রমিক। পরিবারে অর্থ উপার্জনের জন্য ইটভাটায় ৫০-৬০ টাকা মজুরিতে দিন-রাত কাজ করে এই শিশুরা। 

টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলার প্রায় শতাধিক ইটভাটায় দেড় সহস্রাধিক শিশু শ্রমিক কাজ করছে। বৃহস্পতিবার উপজেলার বেশ কয়েকটি ইটভাটা ঘুরে শিশু শ্রমিকদের এমন চিত্রই দেখা গেছে।

উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) অফিস সূত্র জানায়, পৌরসভা ও ১৪ ইউনিয়নে ১১২ ইটভাটা গড়ে উঠেছে। পৌরসভা, মহেড়া, জামুর্কি, গোড়াই, লতিফপুর, তরফপুর, আজগানা ও বাঁশতৈল ইউনিয়নেই রয়েছে ৯২ ইট ভাটা। এসব ইটভাটায় কাজ করছে উত্তরাঞ্চলের সিরাজগঞ্জ, রংপুর, বগুড়া, কুড়িগ্রাম, দিনাজপুর, সাতক্ষীরা, নাটোর, কুষ্টিয়া, জামালপুর, শেরপুরসহ বিভিন্ন জেলার শ্রমিকরা। বাবা-মায়ের সঙ্গে ইটভাটায় কাজ করছে শিশুরা। যাদের বেশির ভাগ বয়স ৮-১১ বছর। দিনরাত কাজ করে এসব শিশু মজুরি পায় ৫০-৬০ টাকা।

কথা হয় কুড়িগ্রাম থেকে ইটভাটায় কাজ করতে আসা শিশু সাব্বির (৯), রাসেল (১০) এবং মনির (৯) সঙ্গে। তিন বন্ধু একই গ্রামের বাসিন্দা। তারা নিজ এলাকায় চতুর্থ শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করেছে। গত বছরের মার্চ মাসে স্কুল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় তারা বাবা-মায়ের সঙ্গে বাড়ি থেকে মির্জাপুরে এসেছে ইটভাটায় কাজের সন্ধানে। বাবা-মা দিনে রাতে কাজ করে পায় ৩০০-৪০০ টাকা। আর সাব্বির, রাসেল ও মনির পায় ৫০-৬০ টাকা বলে জানায়।

হারভাঙ্গা পরিশ্রম করার পরও তাদের মুখে দেখা গেছে ক্লান্তি, আবার এক ঝিলিক হাসির ছাঁপও দেখা গেছে। তিন বন্ধু জানায়, পড়াশোনার অনেক ইচ্ছে ছিল। বাবা-মায়ের অভাবের সংসার। স্কুল বন্ধ থাকায় তারা আমাদের সঙ্গে নিয়ে ইটভাটায় কাজের সন্ধানে এসেছে। কি আর করবো। এখন আমরা কম মজুরিতে ইটভাটায় কাজ করি। একই অবস্থা দেখা গেছে উপজেলার বাইমহাটি, দেওহাটা, সোহাগপুর, ধেরুয়া, সৈয়দুপর, কোদালিয়া, হাটুভাঙ্গা, আজগানা, বাঁশতৈল, তরফপুরসহ বিভিন্ন ইটভাটায়।

রংপুর থেকে ইট ভাটায় কাজ করতে আসা মতিয়ার রহমান ও তার স্ত্রী সালমা বেগম জানান, অভাবের সংসার। কি আর করবো। দুটি ছেলেকে নিয়ে ইটভাটায় কাজ করি। দুই ছেলে দিনে ১২০ টাকা পায় আর আমরা স্বামী-স্ত্রী পাই ৬শ’ টাকা। নিজেরে খেয়ে-দেয়ে কিছু টাকা বাড়ি পাঠাই।

অনলাইন নিউজ পোর্টাল

মন্তব্য করুন: