শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, বৈশাখ ৬ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

শ্যামলী টিবি হাসপাতালে কেনাকাটা ও নিয়োগে দুর্নীতি

 প্রকাশিত: ১০:৪১, ৪ ফেব্রুয়ারি ২০২১

শ্যামলী টিবি হাসপাতালে কেনাকাটা ও নিয়োগে দুর্নীতি

রাজধানীর শ্যামলীতে অবস্থিত ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট টিবি হাসপাতালে দীর্ঘদিন ধরে কেনাকাটা ও নিয়োগে দুর্নীতি ও অনিয়ম চলে আসছে। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) একটি টিম সম্প্রতি তদন্ত করে এ হাসপাতালে কেনাকাটা ও নিয়োগে দুর্নীতির প্রমাণ পেয়েছে। যার পরিপ্রেক্ষিতে দুদক হাসপাতালের উপপরিচালকের বিরুদ্ধে মামলা করার প্রস্তুতি নিচ্ছে।

জানা গেছে, অতীতে একটি শক্তিশালী গোয়েন্দা সংস্থা দেশের আটটি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল তদন্ত করে। এসব হাসপাতালের পরিচালক থেকে সুইপার পর্যন্ত দায়িত্বরতরা কী ধরনের দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত তার সার্বিক তথ্য তারা খুঁজে বের করেন। একই সঙ্গে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে মন্ত্রণালয় পর্যন্তও দুর্নীতির সিন্ডিকেটে কারা জড়িত সেটিও লিখিত আকারে সরকারের কাছে জমা দেয়। কিন্তু জড়িতদের বিরুদ্ধে আজো কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। তদন্ত প্রতিবেদনের সুপারিশ আলোর মুখ দেখেনি। এছাড়া স্বাস্থ্য সেক্টরের দুর্নীতিবাজদের বাঁচাতে অধিকাংশ কর্মকর্তা কাজ করেন।

এ কারণে স্বাস্থ্য খাতের মাফিয়া ডন হিসেবে পরিচিত সেই দুর্নীতিবাজরা অব্যাহতি পেয়ে যান। বিতর্কিত ঠিকাদারদের নিরপরাধ প্রমাণে উঠেপড়ে লাগেন একশ্রেণির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। কারণ এই কর্মকর্তারা ঐ সব ঠিকাদারদের বদৌলতে কোটি কোটি টাকার মালিক হয়েছেন। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের একজন শীর্ষ কর্মকর্তা বলেন, জরুরি চিকিত্সাসেবা ব্যাহত যাতে না হয় সেই কারণে স্থানীয় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে ওষুধসহ জীবন রক্ষাকারী সামগ্রী কেনার দায়িত্ব দেওয়া হয়। কিন্তু অধিকাংশ হাসপাতালে কেনাকাটার নামে হচ্ছে অনিয়ম আর দুর্নীতি।

জানা গেছে, শ্যামলীর ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট টিবি হাসপাতালে উপপরিচালকের নেতৃত্বে গড়ে উঠেছে শক্তিশালী সিন্ডিকেট। কর্মরত একশ্রেণির কর্মকর্তা-কর্মচারী ঠিকাদারদের সঙ্গে সিন্ডিকেট করে কোটি কোটি টাকার যন্ত্রপাতি, ওষুধ ও পথ্যবাণিজ্য নিয়ন্ত্রণ করে। অনেকে হাসপাতালের ওষুধ চুরি করে বিক্রির সঙ্গেও জড়িত। স্থানীয় সন্ত্রাসী, দলবাজ ও প্রভাবশালী ঠিকাদারের সঙ্গে যোগসাজশ করে তারা হাসপাতালগুলোকে বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তুলেছেন।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, হাসপাতালের চত্বরেই পাতা হয়েছে টেবিল। সেখানে সাজিয়ে রাখা একাধিক মদের গ্লাস। চানাচুর, ঝুরিভাজা, তেলেভাজার মতো রকমারি খাবার। পাশেই ছোট গাড়িতে বাজছিল গান। জনা কয়েক যুবক গানের সঙ্গে তালমিলিয়ে গ্লাসে চুমুক দিচ্ছিল। হাসপাতালে সন্ধ্যার পরে মদের এই আসরের বিষয়টি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জেনেও কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করে না।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের একাধিক শীর্ষ কর্মকর্তা বলেন, ঐ হাসপাতালে মদের আসরসহ অনিয়ম সম্পর্কে আমরা অবহিত। মন্ত্রণালয়ের একাধিক কর্মকর্তা বলেন, তাকে কয়েক বার এখান থেকে বদলি করে সরানোর চেষ্টা করেও পারিনি। কতিপয় প্রভাবশালী ব্যক্তি তদবির করে তার বদলি ঠেকিয়ে দিয়েছেন।

অনলাইন নিউজ পোর্টাল

মন্তব্য করুন: