শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, চৈত্র ১৪ ১৪৩০, ১৯ রমজান ১৪৪৫

ইসলাম

দুনিয়ার কাজ হোক পরকালে পাথেয়

 প্রকাশিত: ১১:৩৬, ১৭ জুন ২০২১

দুনিয়ার কাজ হোক পরকালে পাথেয়

আমরা  অনেকেই  দুনিয়ার জীবন কে বেশি প্রাধান্য দেই ,আবার আমাদের অনেকের প্রান্তিকতাও  রয়েছে। কেউ আখিরাতের চিন্তা করে পৃথিবীর অবস্থানকে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করে। বেঁচে থাকার প্রয়োজনীয় উপকরণ ও পরিবার-পরিজনদের জীবিকার ব্যবস্থাকে অগুরুত্বপূর্ণ ভাবে। আবার কেউ আখিরাতের জীবনকে উপেক্ষা করে দুনিয়ার অবস্থানকেই মনে করে আসল। তাই দুনিয়াতে স্বাধীনভাবে জীবন যাপনের নানা প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখে। অথচ দুনিয়ার ব্যাপারে সঠিক অবস্থান কী হবে তা বিস্তারিত কোরআন-হাদিসে উল্লেখ রয়েছে। দুনিয়ার ব্যাপারে বিশিষ্ট এক সাহাবির ন্যায়সংগত একটি মন্তব্য এখানে তুলে ধরা হলো।

তখন ইসলামের দ্বিতীয় খলিফা ওমর (রা.)-এর শাসন চলছিল। জাবের নামে এক ব্যক্তি সংকটে পড়ে এক রাতে মদিনায় পৌঁছেন। তিনি নিজেই বলেন, ‘সংকট সমাধানের জন্য সকাল সকাল আমি  ওমর (রা.)-এর দরবারে গেলাম। আমি বাকপটুতা ও  যুক্তি-তর্কে বেশ পারদর্শী ছিলাম। আলোচনার শুরুতেই আমি দুনিয়াকে হেয় ও তুচ্ছ-তাচ্ছিল্যভাবে উপস্থাপন করলাম। এক পর্যায়ে দুনিয়ার জীবনযাপনের সমালোচনা করে বিষয়টিকে এমন নিচু পর্যায়ে নিয়ে গেলাম যে তা আর কোনো কিছুর সমতুল্য রইল না। বৈঠকে ওমর (রা.)-এর পাশে শুভ্র আকৃতির এক ব্যক্তি বসা ছিলেন। আমার আলোচনা শেষে তিনি বলে উঠলেন, ‘দুনিয়ার ব্যাপারে তোমার সমালোচনা ছাড়া বাকি সব কথাবার্তাই ভারসাম্যপূর্ণ ছিল। আচ্ছা, তুমি কি জানো দুনিয়া কী? মূলত দুনিয়া আখিরাতে পৌঁছার সহজ রাস্তা এবং এই দুনিয়া হচ্ছে আমাদের সেসব আমল ও কাজকর্মের ক্ষেত্র, যার প্রতিদান আমরা আখিরাতে পাব।’

এ কথা শোনার পর জাবের বলেন, এভাবে দুনিয়ার বাস্তবতা ও স্বরূপ সম্পর্কে এমন এক ব্যক্তি বলা শুরু করলেন, যিনি দুনিয়া সম্পর্কে আমার চেয়ে অধিকতর ইলম ও জ্ঞান রাখেন।

আমি ওমর (রা.)-এর কাছে এই ব্যক্তির পরিচয় সম্পর্কে জানতে চাইলাম। উত্তরে তিনি বললেন, তিনি হলেন মুসলমানদের সরদার উবাই ইবনে কাব (রা.)। (আদাবুল মুফরাদ, হাদিস : ৪৭৬)

আর উবাই ইবনে কাব (রা.) সম্পর্কে রাসুলুল্লাহ বলেছেন, হে উবাই, আল্লাহ তোমাকে ‘লাময়া কুনিল্লাজিনা কাফারু মিন আহলিল কিতাব।’ অর্থাৎ কিনা সুরা বাইয়িনাহ পড়ে শোনানোর জন্য আমাকে আদেশ করেছেন। তখন উবাই ইবনে কাব (রা.) জিজ্ঞেস করলেন, আল্লাহ কি আমার নাম বলেছেন? নবী (সা.) বললেন, হ্যাঁ। তখন তিনি (আনন্দে) কেঁদে ফেললেন। (বুখারি, হাদিস : ৩৮০৯)

তাই শুধু দুনিয়ার সমালোচনা না করে এর বাস্তবতা বুঝে আখিরাতের সুখ-সমৃদ্ধি জীবন উপভোগে সচেষ্ট হই।

অনলাইন নিউজ পোর্টাল

মন্তব্য করুন: