বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, বৈশাখ ১১ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

ইসলাম

জুমার দিনের বিশেষ আমল

 প্রকাশিত: ১১:৫৭, ১৯ জুন ২০২০

জুমার দিনের বিশেষ আমল

আমলের দিক থেকে আল্লাহ তায়ালা যেসব দিনকে ফজিলত ও বৈশিষ্ট্যপূর্ণ করেছেন এর অন্যতম হলো জুমার দিন। এ দিনের সঙ্গে জড়িয়ে আছে অনেক আহকাম ও ঐতিহাসিক নানা ঘটনা। সপ্তাহের দিনগুলোর মধ্যে জুমার দিন হচ্ছে সবচেয়ে বেশি ফজিলতপূর্ণ। জুমার গুরুত্ব আল্লাহ তাআলার কাছে এতোখানি যে, কোরআনে ‘জুমা’ নামে একটি স্বতন্ত্র সুরাও নাজিল করা হয়েছে।

কোরআন-হাদিসের বিভিন্ন ব্যাখ্যা দ্বারা এই দিনের মর্যাদার কথা জানা যায়। রাসুল সা. বলেন, ‘নিঃসন্দেহে জুমার দিন সেরা দিন ও আল্লাহর কাছে সর্বোত্তম দিন। আল্লাহর কাছে তা ঈদুল আজহা ও ঈদুল ফিতরের দিনের চেয়েও উত্তম।’ ইবনে মাজাহ

অন্য হাদিসে আছে, ‘যেসব দিনে সূর্য উদিত হয়েছে এরমধ্যে সর্বোত্তম হলো জুমার দিন।’ জুমার দিনকে মুসলমানদের ঈদের দিন হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়েছে।

জুমার ফজিলত সম্পর্কে রাসুল সা. বলেছেন, ‘এক জুমা থেকে অপর জুমা উভয়ের মাঝের (গোনাহের জন্য) কাফ্ফারা হয়ে যায়, যদি কবিরা গোনাহের সঙ্গে সম্পৃক্ত না হয়ে থাকে। মুসলিম

রাসুল সা. অন্য হাদিসে বলেন, যে ব্যক্তি জুমার দিন ভালো করে গোসল করে সকাল সকাল মসজিদে আসবে এবং ইমামের নিকটবর্তী হবে এবং মনোযোগ দিয়ে খুতবা শুনবে ও চুপ থাকবে তার জুমার সালাতে আসার প্রত্যেক পদক্ষেপে এক বছরের নামাজ ও রোজা পালনের সওয়াব হবে।’ তিরমিজি

মূলত জুমার দিনের বিশেষ কিছু আমল রয়েছে, যা সপ্তাহের অন্য কোনো দিন করা হয় না বা করার অবস্থা থাকে না। শুধু জুমাবারেই সেগুলো করার সুযোগ থাকে। তাই একটু চেষ্টা করলে সহজেই আমলগুলো করা যায়। জুমার দিনের বিশেষ কিছু আমল তুলে ধরা হলো।

১। জুমার দিন গোসল করা
২। জুমার নামাজের জন্য সুগন্ধি ব্যবহার করা
৩। মিস্ওয়াক করা
৪। উত্তম পোশাক পরিধান করে সাধ্যমতো সাজসজ্জা করা
৫। মুসল্লিদের ইমামের দিকে মুখ করে বসা
৬। মনোযোগ সহকারে খুত্‍বা শোনা এবং খুত্‍বা চলাকালীন চুপ থাকা- এটা ওয়াজিব
৭। আগে থেকেই মসজিদে যাওয়া
৮। পরে মসজিদে এসে মুসল্লিদের ডিঙিয়ে সামনে না যাওয়া
৯। সম্ভব হলে পায়ে হেঁটে মসজিদে যাওয়া
১০। জুমার দিন ও জুমার রাতে বেশি বেশি দরুদ পাঠ করা
১১। সূরা কাহাফ তেলাওয়াত: আবু সাইদ খুদরি (রা.) থেকে বর্ণিত, যে ব্যক্তি সূরা কাহাফ যেমনভাবে নাজিল হয়েছে সেভাবে পড়বে, তার জন্য কেয়ামতের দিন সেটা নূর (আলো) হবে। (শুয়াবুল ঈমান, হাদিস নং: ২২২১)
আবু দারদা (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে রাসূল (সা.) বলেন, যে ব্যক্তি সূরা কাহাফের প্রথম দশ আয়াত মুখস্ত করবে সে দাজ্জালের ফেৎনা থেকে হেফাজত থাকবে। (মুসলিম, হাদিস নং : ৮০৯, আবু দাউদ, হাদিস নং: ৪৩২৩)
১২। নিজের সবকিছু চেয়ে এ দিন বেশি বেশি দোয়া করা
১৩। খুতবার সময় কেউ মসজিদে কথা বললে ‘চুপ করুন’ বা এ জাতীয় কথাও না বলা।
১৪। দুই খুতবার মাঝখানে মহান আল্লাহর কাছে মনে মনে দোয়া করা
১৫। মসজিদে যাওয়ার আগে কাঁচা পেঁয়াজ-রসুন না খাওয়া ও ধূমপান না করা
১৬। খুত্‍বার সময় ইমামের কাছাকাছি বসা। কোনো ব্যক্তি যদি জান্নাতে প্রবেশের উপযুক্ত হয়, কিন্তু ইচ্ছা করেই জুমার নামাজে ইমাম থেকে দূরে বসে, তবে সে দেরিতে জান্নাতে প্রবেশ করবে
১৭। এতোটুকু জোরে আওয়াজ করে কোনো কিছু না পড়া, যাতে অন্যের ইবাদত ক্ষতিগ্রস্ত হয় বা মনোযোগে বিঘ্ন ঘটে

 

(ইবনে খুযাইমাহ, হাদিস নং: ১৭৫৮; নাসায়ি, হাদিস নং: ১৩৮৪; তিরমিজি, হাদিস নং ৪৯৬; আবু দাউদ, হাদিস নং: ৩৪৫)

অনলাইন নিউজ পোর্টাল

মন্তব্য করুন: